মাঝরাতে দরজায় খট খট শব্দের মতো ভয়ঙ্কর কিছু নেই। চিন্তা করেন না, আপনি অফিস থেকে ফিরে এসে দেখলেন, আপনার এই এক রুমের সাবলেটের বাসায়, আপনার বুয়া পাবদা মাছ রান্না করে গিয়েছে। আপনার রুমমেট বাসায় নেই, ফিরবে সকাল। নাইট ডিউটি আছে। আপনি আনন্দে পেট পুরে খেয়ে শুয়ে পড়লেন। মাঝরাতে আপনার একটা তীক্ষ্ম শব্দে ঘুম ভেঙে গেল। কেউ আপনার বাসার দরজা খোলার চেষ্টা করছে, খুব ধীরে ধীরে। মুহূর্তে আপনার রাতের সুন্দর স্বপ্ন গুলো তীব্র ভয়ে পরিণত হবে!
চোর? ডাকাত? না আপনাকে কেউ খুন করতে পাঠিয়েছে - এই সব ভাবার সময়ই পাবেন না। দরজা খোলাটা বোকামি হবে। কারণ, এই মাঝরাতে চোর আসুক আর খুনি আসুক, তার কাছে অস্ত্র আছে। ছুরি? না রিভলভার!
আপনার মাথা রীতিমতো হ্যাং হয়ে যাবে। যতক্ষণ দরজার এপাশে আছেন, ততক্ষণ নিরাপদ! হৃদস্পন্দন হু হু করে বেড়ে যাবে। আপনার নিঃশ্বাস নিতেও ভয় হবে। ওদিকে ওই তীক্ষ্ণ শব্দটা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।
দাঁড়িয়ে যাবেন আপনি। কি করবেন, বুঝতে পারবেন না। কাউকে ফোন দিয়ে সাহায্য চাওয়া উচিত? মাঝ রাতে কেইবা সাহায্য করতে আসবে?
যা করার এক্ষুণি করতে হবে। আবছা অন্ধকারে আপনার চোখ পড়ল দরজার কোণে থাকা কলেজ সময়ে কেনা কাঠের বলের ব্যাটটা। নিঃশব্দে আপনার ব্যাটটা নিয়ে মারার ভঙ্গিতে দরজার দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছেন। যেই আসুক, যে অস্ত্রই থাকুক, এত সহজে মরতে দিব না নিজেকে!
আপনার হাত কাঁপবে। হৃদস্পন্দন যেন সারা ঘর শুনবে! এই সময়টায়, আপনার কেবল কোনও মতে নিজেকে বাঁচানোর কথা মনে হবে! তখন কোনও ওয়াদার কথা মনে পড়বে না। পরের দিন অফিসে গুরুত্বপূর্ণ মিটিং আছে, তাও মনে পড়বে না। মনে পড়বে না, প্রেমিকার কথাও...
জীবন সংশয়ের মূহুর্তে একটা মানুষ সবচেয়ে বেশি স্বার্থপর...
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:১৬