কাউকে সাহায্য করা প্রত্যেক ছেলের কর্তব্য কিন্তু কোনও সুন্দরী মেয়েকে সাহায্য করা প্রত্যেক ছেলের ধর্ম।
আমি সাধারণ স্কুলে হেঁটেই যাই। আমার বাসা থেকে স্কুলের দূরত্ব, আমার রুম থেকে বাথরুমের দূরত্বের মতোই। তবুও পরীক্ষার সময় রিকশা করে স্কুলে যাওয়ার চেষ্টা করি। যদিও কখনওই রিকশা পাই না। তাই পরীক্ষার সময়েও বাধ্য হয়ে হেঁটেই স্কুলে যেতে হয়। কিন্তু হঠাত্ একদিন কোনও এক পরীক্ষার সময় স্কুলে যাওয়ার জন্য রিকশা পেয়ে যাই!
.
আমাদের পাশের বাসার একটা মেয়ে থাকে। ঠিক সুন্দরী না, ভীষণ রকমের সুন্দরী। ভীষণ রকমের সুন্দরীরা সাধারণ ভীষণ রকমের রাগী হয় কিন্তু ওই মেয়ে নির্বাক! আমি কখনও ওই মেয়েকে কথা বলতে দেখিনি। একদিন শীতের সময় বাসার নিচে ক্রিকেট খেলছিলাম, ওই মেয়েটা কোথায় যেন যাচ্ছিল। আমি চোখ বন্ধ করে দাঁত মুখ খিচ মেরে ব্যাট চালিয়ে দিলাম। ছক্কা হলো না, বলটা সোজা গিয়ে মেয়েটা মাথায়!
সেদিন মেয়েটার কান্না থামাতে বেশ কসরত করতে হয়েছিল। বেচারির মাথা আলু বোখারার মতো ফুলে গিয়েছিল। ওই মেয়ের আম্মু আমাকে বেশ ভাল জানে তাই তেমন কিছু বলেনি আমাকে কিন্তু আমার আম্মু সবার সামনে আমাকে একটা রাম থাপ্পড় মেরে আমার মান ইজ্জত লুটিয়ে দেয়। সেদিন পর থেকে আমি আর ক্রিকেট খেলিনি।
মেয়েটা তিন বছর ধরে আমাদের পাশের বাসায় থাকে কিন্তু আমি মেয়েটার নামই জানতাম না। ওই দিনের ঘটনার পর নামটা জানি। এও জানালাম যে, মেয়েটা আমাদের স্কুলেই পড়ে, আমার এক বছরের জুনিয়র।
.
সেদিন মেয়েটারও পরীক্ষা ছিল। কোনও রিকশা খুঁজে পাচ্ছে না সে। এদিক ওদিক করছে আর হাঁটছে। সাধারণ ভীষণ সুন্দরী মেয়েদের জন্য সবসময় রিকশা রেডি থাকে কিন্তু সেদিন কোনও রিকশা নেই।
আমি পিছনের দিকে তাকিয়ে মেয়েটাকে দেখে রিকশা থামালাম। ও এদিকেই আসছে। আমার রিকশার কাছাকাছি আসার সাথে সাথে আমি "এহাম এহাম" করে শব্দ করলাম। ও আমার দিকে তাকালো। আমি রিকশার সিটের মাঝখানে ছিলাম, ও আমার দিকে তাকানোর সাথে সাথে সিটের একপাশে চলে গিয়ে ওর বসার জায়গা করে দেই। মেয়েটা একটু এদিক ওদিক করে একটু ইতস্তত ভঙ্গিতে রিকশায় উঠল।
সব ভীষণ সুন্দরী মেয়েদের গায়ে থেকে একটা ভীষণ সুন্দর গন্ধ পাওয়া যায়। ওই মেয়ের গায়েও ছিল। আমি ওই মিষ্টি গন্ধে প্রায় মাতাল।
অতঃপর...
অতঃপর?
আমার ওই দিনের পরীক্ষা ভীষণ খারাপ হলো...
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০১৬ দুপুর ২:৫৫