বৃষ্টি মন ছুঁয়ে যায়না এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। বৃষ্টির সময় মনে ভালোলাগার যে অনুভূতি হয় তাতে কত কবিতা, কত গান সৃষ্টি হয়। কিন্তু কখনো ভেবেছেন যিনি এই বৃষ্টি ঝরাচ্ছেন সেই মহিমান্বিত স্রষ্টা’র কথা?
বৃষ্টি আল্লাহর রহমতের এক অন্যতম নিদর্শন, যে সময় তিনি বান্দার দোয়া কবুল করে থাকেন। তাই যখন বৃষ্টি পড়ে তখন নিজের এবং অন্যের জন্য আল্লাহর কাছে অন্তর থেকে দোয়া করুন, দেখবেন ঠিক কবুল করবেন ইন শা’ ল্লাহ। কত কিছুর জন্যইতো আপনার আক্ষেপ এটা হলোনা, ওটা হলোনা, এটা চাই, ওটা চাই... . তবে আর সময় নষ্ট করা কেন, বৃষ্টিতো শুরু হয়ে গেলো, চাইতে থাকুন মহান আল্লাহ্র কাছে যা কল্যাণময়।
আল্লাহ্ সুবহানু তায়ালা কতো সুন্দর করেই না বলেছেনঃ
"আমি আকাশ থেকে কল্যাণময় বৃষ্টি বর্ষণ করি এবং যা দ্বারা বাগান ও শস্য উদগত করি, যেগুলোর ফসল আহরণ করা হয়। (ক্বাফঃ৯)
"তিনিই বৃষ্টির পূর্বে সুসংবাদবাহী বায়ু পাঠিয়ে দেন। এমনকি যখন বায়ুরাশি পানিপূর্ন মেঘমালা বয়ে আনে, তখন আমি এ মেঘমালাকে একটি মৃত শহরের দিকে বয়ে দেই। অতঃপর এ মেঘ থেকে বৃষ্টি ধারা বর্ষণ করি। অতঃপর পানি দ্বারা সব রকমের ফল উৎপন্ন করি। এমনি ভাবে মৃতদেরকে বের করব যাতে তোমরা চিন্তা কর।" (আল আরাফঃ৫৭)
"মানুষ নিরাশ হয়ে যাওয়ার পরে তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং স্বীয় রহমত ছড়িয়ে দেন। তিনিই কার্যনির্বাহী, প্রশংসিত।" (আশ শুরাঃ২৮)
"তোমরা যে পানি পান কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি? তোমরা তা মেঘ থেকে নামিয়ে আন, না আমি বর্ষন করি? আমি ইচ্ছা করলে তাকে লোনা করে দিতে পারি, অতঃপর তোমরা কেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না?" (ওয়াক্বিয়াঃ ৬৮-৭০)
তবে যারা বলে বৃষ্টি একদম ভাল লাগেনা কারণ, রাস্তা কাদায় ভরে যায়, স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া, তাদের জন্য খুব আফসোস হয়।কারণ তারা হয়ত জানেননা এই সময়টা কত রহমতের।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ
“দুই সময়ের দুয়া কখনও ফিরিয়ে দেওয়া হয়না, আযানের পরের দুয়া এবং বৃষ্টির সময়ের দুয়া” [আবু দাউদ]
এই বৃষ্টি আবার কোন কোন ক্ষেত্রে আযাবেরও কারণ হতে পারে, যেমন অতিমাত্রায় ঝড় ও বৃষ্টির কারনে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে থাকে। এই মেঘ দিয়েই মহান আল্লাহ্ আদ জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন।
তাই হাদীসে ঝড়-বৃষ্টির সময় পড়ার জন্য কিছু দোয়া'র কথা বলা হয়েছে----
(১) “হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট এর কল্যাণ চাই। আর আমি আপনার নিকট এর অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাই।” --[আবূ দাউদ ৪/৩২৬, নং ৫০৯৯; ইবন মাজাহ্ ২/১২২৮, নং ৩৭২৭। আরও দেখুন, সহীহ ইবন মাজাহ্ ২/৩০৫।]
(২) “হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট প্রার্থনা করি এর কল্যাণ, এর মধ্যকার কল্যাণ এবং যা এর সাথে প্রেরিত হয়েছে তার কল্যাণ। আর আমি আপনার আশ্রয় চাই এর অনিষ্ট থেকে, এর ভেতরে নিহিত অনিষ্ট থেকে এবং যা এর সাথে প্রেরিত হয়েছে তার অনিষ্ট থেকে।” --[মুসলিম, ২/৬১৬, নং ৮৯৯; বুখারী, ৪/৭৬, নং ৩২০৬ ও ৪৮২৯।]
আসুন, বৃষ্টির সময় গুলোতে যতটুকু সম্ভব আল্লাহর কাছে নিজের হালাল চাওয়াগুলো চাইতে থাকি। মনে রাখবেন আল্লাহর ভাণ্ডার অনেক বড়, তিনি কখনও দিতে ক্লান্ত হবেননা, কিন্তু আপনি চাইতে চাইতে ক্লান্ত হয়ে পরবেন। সুবহানাল্লাহ। মহান আল্লাহ্ আমাদের সকলকে হেদায়াত দান করুন, আমীন ।।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:০৪