আমি আসলে ঘরোয়া শিবির করতাম। রিপোর্ট রাখতাম, ঘরোয়া প্রোগামগুলোতে অংশ নিতাম, সিলেবাসের বই পড়তাম আর চাদা দিতাম। বাইরের কোন মিছিল-মিটিংএ যেতাম না। সংগঠন থেকেও এ ব্যাপারে কোন চাপ ছিল না। একদিন বিকালে কি ভেবে মিছিলে যোগ দিলাম। সাধারণতঃ আসরের নামাজের পর মিছিল শুরু হয়ে মাগরিবের আগেই শেষ হতো। মিছিলগুলো খুব লম্বা হতো। সে দিন এসএসসির রেজাল্ট বের হয়েছিল। ভেবেছিলাম, বাবা কিছু বলবেন না।
বাসায় এসে দেখি অবস্থা খারাপ। কলিং বেল টিপতেই বাবা দরজা খুলে খুব বকাবকি করলেন। বললেন তার বাড়ীতে আমার কোন যায়গা নেই। আমার খু্বই খারাপ লাগলো। বিশেষ করে সেদিন আমার রেজাল্ট দিয়েছে। আমি ভাবতেও পারিনি, প্লেস করবো। কোথায় আমাকে নিয়ে সকলে মাতামাতি করবে, তা না বাড়ী থেকে বের করে দেয়া।
মনের দুঃখে গিয়ে হাজির হলাম আমার দায়িত্বশীলের বাসায়। তিনি খুব ঠান্ডা মাথার মানুষ ছিলেন। বললেন, বাবার রাগ হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। তিনি তো এতোদিন কো বাধা দেননি। আজ হয়তো ভাবছিলেন, এই আনন্দের দিনে আপনি বাসায় থাকবেন। কিছু হাদীসও বললেন। বাবা-মার সাথে কেমন ব্যবহার করতে হবে, সে সম্পর্কে। আমার দুঃখ কমে গেলো বটে, কিন্তু, নিজে নিজে বাসায় ফেরাটা মেনে নিতে পারলাম না। অবশেষে তিনি তার সাইকেলে করে আমাকে নিয়ে গেলেন দাদাবাড়ী। দাদা ও অন্যান্য চাচারা থাকতেন আমাদের গ্রামের বাড়ীতে। শহর থেকে মাইল দুয়েক দূরে।
এ খবর শুনে দাদা তো বাবার উপর ভীষণ রেগে গেলেন। সেই রাত্রে দাদীকে (এবং আমাকে) সাথে নিয়ে আমাদের বাসায় আসলেন। বাবাকে খুব বকাবকি করলেন। বাবা বললেন, বিভিন্ন স্থানে শিবিরের ছেলেদেরকে উপর আক্রমণ হচ্ছে, তাদেরকে মেরে ফেলছে। তাই তিনি বকাবকি করেছেন। এরপর ঠিক হলো যে, আমি কোন মিছিল-মিটিংএ যাবো না।