ভালোবাসা ....!!!!
সে এক আশ্চর্য্য শব্দ । হাজার বছরে ধরে মানুষ খুঁজেছে ভালোবাসার রহস্য । ভালোবাসার জন্য বদলে ফেলেছে নিজেকে । প্রেমের জন্য অতিক্রম করেছে হাজারো অনতিক্রম্য বাঁধা । কিন্তু কিনারা হয়নি রহস্যের- কী এমন আছে ওই ভালোবাসার মধ্যে !?
কেন যেন কাউকে কাউকে দেখলে বুকের মধ্যে দ্রিম দ্রিম ঢোল বেজে উঠে । কেন মনে হয় ওই মানুষটি ছাড়া অসম্ভব বেঁচে থাকা ??
হাজার বছর ধরে মানুষ ভুল ভেবে আসছে । তারা মনে করেছে ভালোবাসার সৃষ্টি ও বেড়ে ওঠা হৃদপিন্ডের ভেতরে । প্রেমে পড়লে বুকের ভেতর ধুকপুক করে ওঠে বলেই হয়তো লেখকরা ভালোবাসা খুঁজেছেন হৃদয়ে। সাধারণ মানুষ বুকের বাঁ দিকে নির্দেশ করে প্রকাশ করেছে ভালোবাসার কথা ।
হয়তো তাই, কিন্তু বহু আগেই বিজ্ঞানীরা বের করে ফেলেছেন ভালোবাসার জন্ম কিংবা বেড়ে ওঠা কোনটাই হৃদপিন্ডে নয় । হৃদপিন্ড রক্ত পাম্প করার একটা জীবন্ত যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয় । বিজ্ঞানী, চিকিৎসকদের তথ্য সাধারন মানুষ জেনেছেন, কিন্তু কি এক দুর্বোধ্য টানে বারবার ফিরে গেছেন হৃদপিন্ডের কাছেই ।
ভালোবাসা বা লাভ চিহ্ন কিন্তু- "হৃদপিন্ড" ।
আসলে কিই বা করবে মানুষ ! মন যে মানেনা ।
এই মন না মানাটাই বোধ হয় ভালোবাসার সবচেয়ে বড় ভিত্তি । সবচেয়ে বড় শান্তি । মন মানেনা বলেই প্রিয়ার কাছে সব ফেলে মানুষ ছূটে যায় । সবকিছু তুচ্ছ করে পরষ্পরকে কাছে পেতে চায় । সবকিছুর বিনিময়েও ভালোবাসা পেতে পিছপা হয়না । তবুও সত্য অস্বীকার করা যায়না ।
সত্য হলো, ভালোবাসা আসলে মস্তিষ্কের একটা অনুভূতি । শরীরজুড়ে কয়েকটি রাসায়নিক পদার্থের অনুপাতের পরিবর্তন ।
যখন কেউ কারো প্রতি আকর্ষণ বোধ করে তখন শরীরে "এড্রেনালিন হরমোনের" নিঃসরণ বেড়ে যায় । "ফিনাইল ইথাইল অ্যামাইন" স্নায়ু কোষগুলোর মধ্যে চলমান তথ্য বিনিময়কে আরো গতিশীল করে । অনভূতির আদান প্রদান হতে থাকে আরো দ্রুতগতিতে ।
ভালোবাসা বা প্রেমে পড়লে শরীরে যে কয়টি রাসায়নিক পদার্থ কাজ করে তার মথ্যে দুটি হলো 'ডোপামিন' ও 'নিউরো এপিনোফ্রিন' । 'ডোপামিন'-- নিঃসরণ বেশি হলে ভালোলাগার অনুবূতি তৈরি হয় । সবকিছু ভালো লাগতে থাকে । নিজেকে সুখি সুখি মনে হয় ।
আর নিউরো এপিনেফ্রিন-- বাড়িয়ে দেয় এড্র্রেনালিন নিঃসরণ ।
আর এই এড্রেনালিনই হৃদয়ের মধ্যে ধুকপুক বাড়িয়ে দেয় । মানে হার্টবিট বাড়িয়ে দেয় । হৃদপিন্ডের স্পন্দন বেড়ে যায় ।
এ জন্যই প্রেমে পড়লে পৃথিবীকে সুন্দর লাগে, পাখির গান পাগল করে, প্রিয়ার সঙ্গ বদলে দেয় স্বপ্নের জগৎ । সে তখন উড়তে থাকে আকাশে । প্রিয়ার জন্য সারারাত জেগে থাকা, ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করা- কোন ব্যাপারই মনে হয়না । আর এটাকেই তো কবিরা বলে এসেছেন- প্রেম । পৃথিবীর মানুষ জেনেছে ভালোবাসা হিসেবে ।
বাট আওয়ার কিউরিয়াস মাইন্ড ওয়ান্টস টু নো, যে কাউকে দেখলেই তো ভালোবাসা তৈরি হয়না !!?? কেন কেবল বিশেষ কাউকে দেখলেই ভালো লাগে ...??
শুধু চেহারা দেখে প্রেমে পড়ে বোকারা । এটা আসল প্রেমই নয়-কেবল শারীরিক চাহিদা ছাড়া এটা কিছু নয় । ছেলে হোক বা মেয়ে, প্রেমে পড়ার জন্য কয়েকটি গুণ অবচেতন মনে কাজ করে । সততা, দায়িত্ববোধ, বুদ্ধিমত্তা, রসবোধ, সহযোগীতা এবং আরো কয়েকটি বিষয় অনুঘটকের কাজ করে ।
প্রেম বা ভালেঅবাসা- যে নামেই ডাকা হোক, হৃদপিন্ড বা মস্তিষ্ক যেখানেই এর উৎস হোক - যে ভালোবাসে, যে প্রেমে পড়ে তার জন্য তাতে কিছূই আসে যায়না ।
সে শুধু জানে- বিশেষ কাউকে দেখলে হার্টবিট মিস হয়, তার কথা ভাবলে বুকের ভেতর আকুপাকু করে, তাকে ছাড়া সবকিছু শূন্য মনে হয় ।
আর সে যখন মায়াবী স্পর্শ করে- মনে হয় লক্ষ ভোল্টের বিদ্যুৎ বয়ে গেলো শরীরে । এই অনুভূতির ব্যাখ্যা যার যা খুশি দিক - আমরা বলে যাবো ভালোবাসার গল্প ।
আমরা লিখে যাবো প্রেমের ইতিহাস ।
আমরা ছড়িয়ে দেবো ভালোবাসা- পৃথিবীময় ।
আআ