সুহাসিনী,
''শুরুতেই অনেক ভালবাসা নিও''- কথাটা না লিখেই শুরু করলাম । কারন কথাটা তোমার তেতো লাগতে পারে । জানি, আমার ঘাসফুল ভালোবাসা অনেক আগেই প্রয়োজনহীন হয়েছে তোমার কাছে। এতদিন পরে কোন দাবী নিয়ে নয়, অনুরোধ নিয়ে লিখছি- নিজের প্রয়োজনেই।
যেদিন আমায় অপূর্ণ রেখে চলে ...গেলে , নিয়ে গেলে যা দিয়েছিলে, আজ তার অল্প কিছু ফেরত পাবার আশায় আবারো লিখছি তোমায়- নিয়ম ভেঙে।
কোন এক হেমন্ত বিকালে, লাল ইটের পথঘেঁষা নিয়ন আলোর নিচে প্রথম দেখার স্মৃতিটুকু ফেরৎ পাঠিও । ফেরৎ পাঠিও -সেই মুগ্ধ শ্রোতার মত তোমার কথা শুনতে শুনতে হেঁটে আসা ক্ষণটুকু । প্রতিদিনই পথের ধারে সেই স্মৃতিটা আমি মগ্ন হয়ে খুঁজে বেড়াই। তবুও পাইনা।
রাতের পর রাত জেগে, অনুভূতির সুঁই-সুতোয় তোমায় নিয়ে একটা স্বপ্ন বুনেছিলাম । মাঝরাতে গ্রীল ধরে দাড়িয়ে আছো / অবাধ্য হাওয়ায় এলোমেলো চুল/ তোমার মুখের একপাশ জোৎস্নায় লুটোপুটি / আর তুমি উদাসী চোখে পেজা তুলোর মতো আকাশ দেখছো । আমার সেই স্বপ্নটুকু ফেরৎ পাঠিও । আর কোন স্বপ্ন দেখার বোধটুকু আমি যে হারিয়ে ফেলেছি ।
হোটেল ‘কৃষ্ণচূড়া’-য় পাশাপাশি বসে চা-পানের ফাঁকে অতি অভদ্রতায় তোমার আহত নাকটাকে ছুঁয়ে দেয়া আমার হাতের সেই উষ্ণতাটুকু ফেরত পাঠিও। যে উষ্ণতার জন্য এখন আমার হাত সারাটিক্ষণ মৃত উষ্ণতায় জমে থাকে। সেই উষ্ণতাটুকু খুব দরকার।
আমার শেষরাতের জড়সড় ঘুমগুলোকেও ফেরত পাঠিও। অনেকদিন ঘুমাইনি। কোটরে ঢুকে যাওয়া অনিদ্র চোখদুটো এখন আর আমাকে স্পষ্ট দেখতে দেয়না।
প্রতিসকালে তোমার চায়ের কাপে জমিয়ে রাখা আমার সাদাকালো স্বপ্নগুলো পাঠিয়ে দিও।
সাদা না হোক, অন্তত কালো স্বপ্নগুলো দিও। সাদা-কালোর মাঝামাঝিতে আটকে যাওয়া স্বপ্নগুলোকে টানতে টানতে আমি আজ হাঁপিয়ে উঠেছি।
আর হ্যাঁ, তোমার ড্রয়ারে অবহেলায় পড়ে থাকা আমার অনুভূতির কাঠপেন্সিলটাও মনে করে পাঠিও। অনেকদিন হল কবিতা লেখিনা, আবারও নিজেকে কবিতায় হারাতে চাই।
আর কিছুই চাইবার নেই। ''ভালো থেকো'' যদি নাও বলি- তবুও অন্যায় হবেনা জানি। শুধু বলতে চাই, ''ভাল রেখো''। কারন, ভালো থাকাটাই সবকিছু নয়, ভালো রাখাটাও অনেক কিছু || —
ইতি
'অন্যরকম একজন'
আআ