ঈদ উপলক্ষে আরিফদের স্কুল বন্ধ হয়ে গেল দশ দিনের জন্য। প্রায় প্রতিবারের মত এবারের ঈদও আরিফরা উদযাপন করবে তাদের গ্রামের বাড়িতে। আজকের রাতের বাসেই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যাবে তারা।
স্কুল ছুটির পর বাসায় ফিরে আরিফ দেখে- ইতিমধ্যেই তাদের বাসায় পড়ে গেছে গোছগাছের ধুম। আলমারির দরজাগুলো খোলা, ওয়ারড্রবের ড্রয়ারগুলো হা; ধুলায় ধুসর ব্যাগগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মেঝেতে। আর বিছানায় ছড়ানো এলোমেলো কাপড়চোপড়ের মাঝে বসে কাপড় ভাজ করছে তার মা। ভীষণ ব্যস্ত।
ভাজ করতে করতেই হঠাত এদিক ওদিক ছুটে যাচ্ছেন তিনি; আবার ফিরেও আসছেন এটা ওটা নিয়ে। কখনো তড়িতাহতের মত স্থির হয়ে ঠোঁট কামড়ে, ভ্রূ কুঁচকে কী যেন মনে করার চেষ্টা চালাচ্ছেন আপ্রাণ। এবং তাকে ঘিরে, সমস্ত বকা অগ্রাহ্য ক’রে আরিফের ছোট বোন, ‘হিয়া’, কখনো শোবার ঘরের বিছানায়, কখনো বসার ঘরের সোফায়, কিংবা সোফার সামনের টেবিলের উপরে ফুর্তিতে ব্যাপক লাফঝাঁপ দিচ্ছে; ফ্রি-স্টাইলে।
এই অবস্থায়, কাঁধের ব্যাগটা ছুঁড়ে ফেলে আরিফও যোগ দিল হিয়ার লম্ফঝম্পে। তাদের চিৎকার সময়নে মনে হল যেন একদল দুরন্ত শালিক এক্ত্র হয়েছে অমীমাংসিত কোনো ঝগড়ার সুরহায়। গোছগাছে ব্যস্ত অবস্থায় মেয়ের এই কাণ্ডে অত্যন্ত বিরক্ত ছিলেন আরিফের মা; কিন্তু আরিফও যখন পাগলের মত লাফাতে লাফাতে বোনের সাথে যোগ দিল, হেসে উঠলেন তিনি বাধ্য হয়ে। প্রশ্রয়দাতা এই হাসি গোপন করতে ব্যর্থ হয়ে, গোছগাছের কাজটা আরও কঠিন করে তুললেন তিনি।
আরিফের বাবা ঘরে ফিরলেন সন্ধ্যার পর। ফিরেই, তাড়াহুড়ো করে নিজের কাপড়-চোপড় গুছিয়ে নিলেন দ্রুত। তার স্ত্রীই অবশ্য সব কিছু বের করে গুছিয়ে রেখেছিলেন ইতিমধ্যেই; তিনি কেবল দেখে টেখে ব্যাগে ভরে নিলেন যত্ন ক’রে। আরো কি কি নিতে হবে, বা সবকিছু ঠিকঠাক মত নেয়া হয়েছে কিনা সেই বিষয়ে, মাথাব্যথায় কাতর, বিরক্ত স্ত্রীর সাথে নিচু কণ্ঠে, সতর্ক আলোচনা জুড়ে দিলেন।
এইসব মহনীয় গোছগাছ, ঘরের জিনিসপত্রের এলোমেলো অবস্থা, মা-বাবার তীব্র ব্যস্ততা, দীর্ঘ স্কুল-ছুটি, শীত আর প্রত্যাসন্ন ঈদ– শীতের এক অদ্ভুত নির্জলা ঘ্রাণে ভরা আনন্দে ভাসিয়ে দিল আরিফ ও হিয়ার ছোট্ট হৃদয়গুলোকে। এই শৈশব ঘ্রাণ, এই অবর্ণনীয় সুখের স্মৃতি তাদের সম্মুখে বিস্তৃত কঠিন জীবনে যোগাবে অফুরন্ত শক্তি এবং অজেয় আশা।
রাতের ভাত খেয়েই (আরিফ কিছুই খেতে পারল না খুশির তোরে) একটা ট্যাক্সি নিয়ে আসলেন আরিফের বাবা। আর ঠিক রাত দশটায়, প্রচণ্ড ভিড়ভাড় ঠেলে, হর্ন বাজাতে বাজাতে তাদের গ্রামের বাড়ির দিকে রওনা হয়ে গেল বাস। গাড়ি ছাড়তেই নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ল আরিফ ও হিয়া। আর ছুটির আমেজে, সুস্থ শিশু কোলে আনন্দিত দম্পতি কেবল মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে রইল কখনো জানালায় ভেসে থাকা ঠাণ্ডা অন্ধকারের দিকে, কখনো পরস্পরের সুখী চোখের তারায়।
আরিফরা তাদের বাস স্টপে পৌঁছল খুব ভোরে। বাস স্টেশন থেকে প্রায় বিশ কিলোমিটারের মত দূরে তাদের গ্রাম। তাদের ভাড়া করা ট্যাক্সিটি যখন আরিফদের গ্রামের বাড়ির সরু রাস্তা দিয়ে সন্তর্পণে প্রবেশ করছিল উঠোনের ভেতর, তখন ভোরের আলো ফুটে, আলতো হয়ে ভেসে থাকা শিশির-বিন্দুর বাতিতে জ্বল জ্বল করছিল চারিদিক। কুয়াশার চাদরে আচ্ছাদিত ভেজা ভেজা গ্রামগুলো মৃদু কথাবার্তার গুঞ্জন, নিত্যদিনের কাজের খুট-খাটের ভেতর দিয়ে জেগে উঠছিল ধীরে। তাদের দেখা প্রথম ব্যক্তির ‘আয়া পড়ছে রে’ বলা চিৎকারে বাড়ির সবাই হৈ হৈ করে দৌড়ে এসে ঘিরে ধরল তাদের। আর মুহূর্তের মধ্যে আরিফ ও হিয়া কোল থেকে কোলে ব’য়ে যেতে লাগল মিউজিক পিলোর বালিশের মত। তাদের ঠাণ্ডা গাল ও কপালগুলো স্নেহের চুম্বনে সিক্ত হয়ে উঠল। বেচারি হিয়া ঘুম থেকে উঠে কিছু বুঝে উঠতে না পেরে, ভয় পেয়ে জুড়ে দিল কান্না।
একদিন পরেই ঈদ। আরিফরা যেদিন গ্রামে এসে পৌঁছল, সেদিন থেকেই সরকারী ছুটি শুরু হল ব’লে, শহরে বসবাসরত তাদের সকল আত্মীয়স্বজন সেদিনই বাড়িতে আসতে শুরু করল। যতই বেলা গড়াল, শহর-ফেরত লোকজন ও তাদের ঘিরে উৎফুল্ল গ্রামবাসীর প্রাণবন্ত কোলাহলে উৎসব মুখর হয়ে উঠল আরিফদের ও সংলগ্ন বাড়িগুলো। গাছের চিরল পাতার মিহি ছায়ায় ভরা রৌদ্রজ্জ্বল উঠানগুলো অস্থির হয়ে উঠল বাচ্চাদের ছোটাছুটি আর খেলাধুলায়। তাদের অতি আদর ও উৎপাতে উৎকণ্ঠিত হয়ে উঠল বাড়ীর পালা মুরগীগুলো। বাচ্চাদের ছুঁড়ে দেয়া রুটি, ময়দা, ভাতের আকর্ষণে লোভী ছোট মাছগুলো পানির উপরিভাগে দল বেঁধে ছুটে এলে, ঘাট বাঁধানো পুকুরগুলো টগবগিয়ে উঠল ফুটন্ত পানির মত। গ্রামের নিত্যদিনের বিজনতা ভাঙা আকস্মিক এই কলরবে, গোয়ালঘরে সাধারণত শান্ত, অলস গরুগুলো হয়ে উঠল অস্থির। আর তাদের দাপাদাপিতে খড় বিচালি গোবরের মিশ্রিত একটা ভেজা, সোঁদা গন্ধে ভারী হয়ে উঠল সুখী মানুষের অস্থির সঞ্চালনে উষ্ণ বাড়ির আলোড়িত বাতাস।
বিকেলের দিকে আরিফ তার ছোট চাচার হাত ধরে ঘুরতে গেল বাজার ও আশপাশের গ্রামগুলোতে। দীর্ঘ যাত্রায় ক্লান্ত হিয়া তখনো ঘুমিয়ে ছিল বলে (যদিও মাঝখানে সে জেগে উঠেছিল) তাকে আর নেয়া গেল না সাথে। বাজারের কাছেই একটি স্থানে শামিয়ানা টাঙ্গিয়ে আয়োজন করা হচ্ছিল ঈদের জামাতের। সারাটা বিকাল আরিফ ও তার চাচা এদিক সেদিক ঘুরে বেড়িয়ে, এটা সেটা নানান কিছু খেয়ে যখন বাড়ি ফিরে আসল, তখন সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত। ঝিঁঝিঁ পোকার ঝিঁঝিঁ ডাকে মুখর। প্যাঁচার ডাকে ছমছম করছে চাঁদের আলোয় ভেসে যাওয়া গাছপালা, উঠানের গায়ে ডালপালার ফাঁকফোকর গ’লে এসে পড়া মৃদু আলোর আলপনা, মৃদুমন্দ বাতাসে দোলে অলস ছন্দে। পুকুরের শান্ত জলে ক্ষণে ক্ষণে ক্লান্ত হুটোপুটি ক’রে তন্দ্রালু মাছের দল।
তখনো উঠানে বাড়ির লোকজনের ভিড়। কিন্তু তাদের কথোপকথনের গুঞ্জন, কণ্ঠের সুরে এমন কিছু একটা ছিল যে ছোট আরিফও বুঝতে পারল- গুরুতর কিছু একটা ঘটেছে বাসায়। এই গুঞ্জন আর সকালের কলরব এক নয়। তাদের দেখতে পেয়ে ভীরের অন্ধকার থেকে আরিফের মা ছুটে এসে, ছো মেরে আরিফকে কোলে তুলে নিলেন; দেরি ক’রে ফেরার জন্য দেবরকে তিরস্কার করে ছুটে ঢুকে গেলেন ঘরের ভেতর। এটা অস্বাভাবিক। উঠানের আরামপ্রদ অন্ধকার ফেলে ঘরের ভেতর যেতে মৃদু প্রতিবাদ করতে গিয়ে বকা খেল আরিফ। পরে আর কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস পায়নি সে। মায়ের এমন রূপ খুব কমই দেখেছে তার ছোট জীবনে। তার মা সবসময়ই অনেক রাগী বটে। কিন্তু সেদিন তার আচরণে শুধু রাগ নয়; আরও ছিল একটা বিজাতীয় ভয় এবং বিপন্নতা।
ঘরের ভেতর থেকে আরিফ শুনতে পাচ্ছিল উঠানে জড় লোকজনের উত্তেজিত, ভীত কোলাহল। কেউ বলছিল, ”রাতে পাহারায় থাকা দরকার”। কেউ বলছিল ”এত ভয়ের কিছু নেই, কিছু হবে না, কেউ আসবে না”। কেউ বলছিল, ”এমন তো এখানে কখনো হয়নি আগে”। কেউ বলছিল ”হে আল্লাহ্, কি হবে! হ্যাঁ”। কিছুক্ষণ আগেও খুশী আর হাসিতে ডগমগ বাড়িটা, আরিফের অজানা কারণে ডুকরে উঠল ত্রস্ত মানুষের এমন বিচ্ছিন্ন উৎকণ্ঠিত আলাপ ও বিলাপে।
রাতে আরিফের মা-বাবা যখন ঘুমাতে এলেন, বাচ্চারা ঘুমিয়ে গেছে ভেবে, কণ্ঠ খাদে নামিয়ে রীতিমত ঝগড়াই শুরু করে দিলেন তারা। অন্তত আরিফের মনে হল তাই। ঘুমিয়ে পড়ার আগে আরিফ শুনতে পেল তার মা কাঁদো কাঁদো হয়ে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলছেন, “চল, চলে যাই আমরা। গ্রামে বিপদ আরও বেশি! এই দেশেই আর এভাবে থাকতে পারি না আমি! শহর কী গ্রাম! এত ভয় নিয়ে কিভাবে বেঁচে থাকি? আমার বাচ্চাগুলা! যদি আগুন দেয়, যদি হামলা করে রাতে?”
আরিফের বাবা খেঁকিয়ে উঠেন, “তোমার আছে সব ফালতু কথা! কোথায় যাবে হ্যাঁ? কোথায় যাবে?
রাগে তোতলান। কণ্ঠ খাঁদে নামিয়ে অভিমান ভরা কণ্ঠে বলেন “এই দেশ আমাদের। এই ভিটে-বাড়ি আমার মা-বাবার, আমার পূর্ব পুরুষের! এই গ্রাম, এই দেশ ...।”- বার বার একই কথা বলতে বলতে রাগে, দুঃখে তার কম্পিত ঠোটের কোণায় ফেনিয়ে উঠে থুতু।
আতঙ্কে, সঙ্কটে, স্বামীর রুক্ষ ভৎর্সনা কেঁদেই ফেলেন আরিফের মা। আরিফও ভয় পেয়ে ধুকধুকে বুকের উপর ভর করে ঘুমিয়ে পড়ে ধীরে। ভয়কে বুকে নিয়েও, এত সহজে, এমন শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়া একমাত্র বাচ্চাদের পক্ষেই সম্ভব।
খুব ভোরে, আরিফ ঘুম থেকে জেগে ওঠে বাড়ির লোকজনের ব্যস্ত কথাবার্তা আর চাপকলের, প্রতিদিনের ব্যবহারে মসৃণ হয়ে উঠা নাট-বল্টুর মিহি ক্যাঁচর ক্যাঁচর শব্দে। ঘরের বাতাসে জর্দা, গুড়ের পায়েসের মিষ্টি ঘ্রাণ।
মায়ের ডাকাডাকি উপভোগ করতে করতে লেপের ভেতর আরও কিছুক্ষণ গড়াগড়ি দিতে চাইলেও আরিফের ছোট চাচা রীতিমত ছোঁ মেরে আরিফকে কোলে তুলে নিয়ে গেলেন নদীতে। তাদের বাড়ির কাছেই বয়ে গেছে নদীটি। গ্রামের কনকনে শীতের ভোরে, তারা দাপাদাপি করে স্নান করল নদীর বুকে গোপনে বয়ে চলা কুমকুমে উষ্ণ জলে।
গোছল সেরে এসে তারা প্রস্তুত হয় ঈদের নামাজের জন্য; নতুন, ধবধবে সাদা ও রঙিন পায়জামা পাঞ্জাবীতে। তাতে তারা মেখে নেয় সুগন্ধি আতর। মাথায় চড়ায় সুন্দর, সাদা টুপি। পায়ে চামড়ার নতুন স্যান্ডেল ভোরের চনমনে রোদে চিকচিক করে।
তারপর সাথে জায়নামাজ, বগলে চাটাই নিয়ে ছেলেরা সবাই জড়ো হয় উঠানে; দেরি ক’রে ফেলাদের ডাকাডাকি করে উচ্চস্বরে। খানিক বাদে বিলম্বিতরা লজ্জিত মুখে যোগ দিলে তারা এক সাথে, ফুরফুরে মনে রওনা হয় বাজারের কাছের সেই ঈদগার দিকে।
মনোরম গাছের ছায়া আর গাছের আড়ালে, ছোট্ট পাখিদের অস্থির ডাকাডাকিতে মুখর ঈদের সকাল। খুব ভোরে এক পশলা বৃষ্টি হওয়ায় বাতাসটা নির্মল, ধুলাবালি-মুক্ত। সবার পরিষ্কার সাজপোশাক, বাতাসে আতরের ঘ্রাণ, মাড় দেয়া পাঞ্জাবীর মৃদু খসখস আর বাপ-চাচাদের ঘুম ঘুম, সতেজ, আত্মবিশ্বাসী মুখগুলোতে ফুটে থাকা কান্তি, আরিফের শিশু মনকে প্লাবিত করে অবর্ণনীয় এক দৃঢ় আনন্দে। কে জানত, স্বপ্নের মত, শিশুর নিষ্পাপ এই শৈশব স্মৃতি অচিরেই রূপ নেবে ভয়াল এক দুঃস্বপ্নে! ভয়ানক-ভাবে আক্রান্ত হবে, রক্তমাংসের মানুষেরই নির্মম, অকারণ আঘাতে!
তাদের ছোট দলটি ঈদগার মাঠে এসে পৌঁছলে, তারা ভীত, বিস্ফোরিত চোখে দেখে–পাঞ্জাবী পরিহিত লোকজন দিক্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পাগলের মত ছোটাছুটি করছে এদিক ওদিক। তাদের মত অনেকেই আবার হতবিহবল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, ঈদগার দিকে ফ্যালফ্যাল, শূন্য দৃষ্টি মেলে।
কে বা কারা, তাদের সমাবেশের সমস্ত আয়োজন ভেঙে দিয়ে গেছে রাতের অন্ধকারে।
এদিক সেদিক পরে থাকা ভাঙা বাঁশ; ছেড়া, দোমড়ানো শামিয়ানা, মঞ্চের চেয়ার, টেবিল, পুরো আয়োজনের লণ্ডভণ্ড অবস্থার ছবি সহ তাদের আহাজারি নিশ্চয়ই ছাপা হবে দৈনিক খবরের কাগজগুলোতে। চ্যানেলগুলোতে কেউ হয়ত অসাম্প্রদায়িক সরকারের কাছে তাদের সংখ্যালঘু পরিবারগুলোর নিরাপত্তা দাবী করবে দুঃখিত, ক্লান্ত, আতঙ্কগ্রস্ত কণ্ঠে। কিন্তু দুর্বৃত্তরা; যারা আরিফদের খুশী, আনন্দ, সারা জীবন ধরে লালন করতে পারার মত সুখময় স্মৃতির আকাঙ্ক্ষিত সম্ভাবনা ধুলায় মিশিয়ে দিয়ে যায়, সাম্প্রদায়িক-অসাম্প্রদায়িক, কোনও সরকারই তাদের কোনোদিন খুঁজে পাবে না।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:০৬