হাঁটি হাঁটি পা পা করে শেষ পর্যন্ত র্সুয টা মেঘের পিছনেই চলে গেল/
অনেকক্ষন ধরেই এ খেলাটা চলছিলো /হঠাৎ ছায়া ছায়া আবার হঠাৎই চোখ ধাঁধানো রোদ/ পিচ ঢালা পথটাতে পা রাখাই দায়/ চোখেরও স্বস্তি মিলছে না/তারপরেও কাঠপাথরের এই শহরটাতে লোক বেড়েই চলছে/
কি এক আকর্ষনে সবুজ অবারিত মাঠ , নিবীড় মমতায় ছাওয়া হোগলা পাতার ঘরবাড়ি ছেড়ে কাঠ পাথরের এ শহরে বাসা বাঁধে মানুষ/গাদাগাদি করে থাকে বাসের অযোগ্য ভাড়া বাসা বাড়িতে/রাত ভোর না হতেই পিল পিল করে রাস্তায় বের হয়ে আসে /তারপর মাঝরাতের অনেক পর পর্যন্ত শুধুই ছোটা আর ছোটা /কিসের যেন ব্যস্ততা !
এরই মাঝে জ্যামে আটকে থাকে শহরের অনেক রাস্তা/ সারি সারি গাড়ি আর গাড়ি আর এলোমেলো
রিক্সার সারি/যান্ত্রিক আওয়াজের সাথে সাথে চলে খিস্তি খেউর/
’ওই হালার পুত ,ওভার টেক করলি ক্যা ?’
’…. পুত !তোর মায়েরে বাপ !’
‘শওরের পুত ,ট্রাফিকের বাচ্চা যে কিসের জন্য দাড়াইয়া থাকে- মনটা চায় হালার পুতরে ধইরা পিটাই/’
‘ ইস রোদে যে শরীর পুড়ে যাচ্ছে/’
’মা আর কতক্ষন ? স্কুল তো শুরুই হয়ে গেল /‘
রাস্তার উল্টো সাইড দিয়ে আ্যামবুলেন্স এর প্যাঁ প্যাঁ পুঁ পুঁ / এরই মধ্যে কোনো গাড়ি চালকের মনে আশা জাগে গাড়ি ঘোরাবার/গাড়ি মাঝ রাস্তায় আড়াআড়ি হয়ে যায় হঠৎই/আরেক মালিক বিহীন গাড়ির ড্রাইভার চিৎকার করে শিলার জওয়ানী বিষয়ক গান বাজানো শুরু করে/ ঘামে ভেজা রোদে পোড়া রিক্সাওয়ালারা বিরক্ত নিয়ে তাকিয়ে এক জন আরেক জনরে বলে,
সমুন্দির পুত, সাহেব অইছে /
সচকিত বাজনার সাথে সাথে দু একটা চ্যাঙরা রিকসাওয়ালা –এই গরমেও দু এক পাক নেচে উঠলো/হুডতোলা রিক্সায় দু তিন জোড়া যুগল এত বেশী আবেগপ্রবন হয়ে উঠলো যে তাদের কাছে আশেপাশের সব কিছু যেন নাই হয়ে গেল/
ব্যাপার দেখে কেউ কেউ চোখ কুচকায় কিন্তু পুরুষেরা তাকিয়েই থাকে/অতি সংবেদনশীল যারা তাদের কেউ কেউ লজ্জায় অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়/যে চ্যাঙরা রিকসাওয়ালা একবার নেচে উঠেছিলো তার কাছে হঠাৎই মনে হলো বাংলা সিনেমা দেখছে, জোরে সিটি বাজিয়ে উঠলো সে/
হঠাৎই সার্জেন্ট এসে হাজির/দুম দাম রিক্সায় বাড়ি/গালি গালাজের তুবরি ছোটে তার মুখ দিয়ে/তাড়াতাড়ি গাড়ি সোজা করার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠে ড্রাইভার-ফুল ভলিউমের গানও থেমে যায়/যুগলরাও সচকিত হয়ে সরে বসে/ দশমিনিটের মধ্যে জ্যাম ছেড়ে দেয়/
হাঁফ ছেড়ে বাচেঁ নুপুর/জোরে করে শ্বাস ছাড়ে/
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৩৩