সেই সবুজ সালোয়ার কামিজ পড়া নিশিকন্যারাও এখানে আছে / তবে কি অবস্থায় যে আছে , বোঝার উপায় নেই /
তবে এ টুকু বুঝতে পারছি আমার আত্মহননের মিশন এখন আর সফল হচ্ছে না/আপাততঃ স্থগিত/ কারন আজরাতের ডলামিশনে হয়ত এমনি এমনি আমার প্রানপাখি মুক্ত হতেপারে/পত্রিকায় খবর হবে পুলিশের ক্রসফায়ারে (ডলায়)টপটেরর সন্ত্রাসী অভিনাথ বোসের মৃত্যু/
কিন্তু সুখীর ব্যাপার টা কি ?বলা নেই কওয়া নেই পট করে কেন মরল ?নিজে মরলো তো মরল, আমাকেও জেলে ঢোকানোর ব্যবস্থা করে গেল/
কেন মরে গেল? কে মেরে ফেললো ? ছিল কোথায় এই দুইদিন ?ওহহহ্ পুলিশতো বললো দুই দিনের মরা /তাহলে তো লেকের তলাতেই ছিলো / সুখীর মত মেয়েকে মারার কেন প্রয়োজন পড়ল ?টাকা দিয়ে আনন্দ কেনার পর তাকে কেন গলা টিপে নিস্তব্দ করে দেবার প্রয়োজন পড়ে /
আচ্ছা পুলিশ আমাকে কি ভাবছে ?
সুখীর খদ্দের ? খুনী না দালাল ??
শংকর বোসের বিশাল সাম্রজ্যের একমাত্র উত্তরাধিকারী অভিনাথ বোস এক নিশিকন্যাকে হত্যার দায়ে দুই নিশিকন্যা সহ গ্রেপ্তার/
হা হা হা হা ……
অপর দলের মন্ত্রীমহোদয়ও তার শেষ চালটা এবার চালবেন /
আর সামনাসামনি দেখাও হবে না সেই মায়াময়ীর সাথে, কোনো এক সন্ধায় মুখোমুখি হব না আর দুজনা/একটু খানিও ছোঁয়া হবে না তার শ্যামলা কাঠালীচাঁপার মত আঙ্গুল/
এটা আমার শাস্থি / কি না পেয়েছি আমি ..সব পেয়েছি / মেনকা ,রুবা শায়লাদের আমি দ্বিধাহীন চিত্তে গ্রহন করেছি / কোনো সংকোচ কোনো অপরাধবোধ আমার মধ্যে কখনও কাজ করেনি/ আমি ওদের কাছে দ্বিতীয়বার কখনও ফিরেও যেতে চাইনি/
তবে আজ কেন কাছে না পাওযার এত কষ্ট/ আজ কেন আমার এত এত পাওয়ার কোনো দামই নেই ? কেন এত হাহাকার ? কেন আমি ফিরে যেতে পারছি না সেই স্বপ্নের জানালাটার পাশে ??
বলতাম আমি , ডোন্ট সে লাভ মি .. আই হেইট এসব ভালোবাসাবাসি / ব্ন্ধু আমরা ..ব্যস/
বুঝতো না কেন যেন মেয়েগুলা , কারন আমি কখনও বুঝতেই দিতাম না / নতুন নতুন পারফিউমের সুবাস চাই যে আমার / ধোয়াশা থাকলেও ওদের কাছে মনে হত ভালোবাসা / তাই আমার পাওনাটা আদায় করা ছিল অনেক সহজ /
শুধু হেরে গেছি এখানে/পারিনি আমার যাদুর বাশিঁটাকে বের করতে .. কারন আমি চাইনি তাকে আর সবার মত ,সে যে আলাদা , অন্যরকম /
অভিনাথ বোস……
চমকে্ উঠলাম /
অনেকদিন পর নিজের পুরো নাম !
বের হয়ে আসেন ?
হুম/ মনে হয় ডলা দেয়ার সময় হইছে/
সাদা পান্জাবীর এই ডিজাইনটা আমার চেনা , চেনা ওই যে শিড়দাড়া সোজা করে বসার ভঙ্গি/
বাবা ! এখানে কেন ? জানলো কেমনে ? আর জানলেও তো এখানে আসার কথা না !
আমি তো তার এতদিনের তিলতিল করে গড়ে তোলা সাম্রাজ্যে সুনামী এনেছি , রিদিমা ফুফীকেও ভুলে গিয়েছি, মা হাসপাতালে ..তবে বাবা কেন এখানে /
স্যার নেন এখানে সাইন করেন , কি যে করেন না , আগে বলবেন তো আপুনি কে ?তা হলে তো আর এত হয়রানি হইতো না/
ওই মেয়েদুটোকেও ছেড়ে দেন, ওদের দোষ নাই /
ওদের কথা বাদ দেন /ওরা প্রায়ই আসে আর যায়/যান ওখন স্যারের লগে বাড়িতে যান /আর হ্যা ,আপনার ১৩১ টা ঘুমের বড়ি রাইখ্যা দিলাম, এই কারনেও আপনার জেল হতে পারতো /
একটা অভিমান গলার মধ্যে দলা বাধছিলো , বাবা এক কথাও কেন বলছে না? কেন একবারও মাথা তুলে দেখলো না আমাকে /
সেই অভিমান থেকেই বলালাম , তা হলে আমাকে জেলেই রেখে দিন /
গমগম করে উঠল রুমটা , অফিসার ওকে বলেন বাইরে একা একজন দাড়িয়ে আছে /
বাবা…..
হাত উচু করলেন বাবা,
আমি এখন তোমার সাথে কথা বলতে ইচ্ছুক না, যাও …
ধীর পায়ে থানা থেকে বের হয়ে এলাম/
এখন কি অনেক রাত!! কয়টা বাজে ?আচ্ছা কি দরকার সময়ের ?? আসলে মানুষের যখন কোনো কাজ থাকে না তখনই মানুষের সময় দেখতে ইচ্ছা করে/
তবে রাত যে অনেক হয়েছে তা বোঝা যাচ্ছে/
মান্যগন্য লোকের ছেলে হওয়ার সুবিধা আছে / খুনের আসামী ,অথচ সন্ধা আর সকাল হলো না ,তার আগেই ছাড়া পেয়ে গেলাম/
বাইরে বেশী আলো নেই/রহস্যময় অন্ধকার এখানে ওখানে/ এক টুকরো চাঁদ আকাশে/ আবছা/মেঘে ঢাকা/ হালকা মেঘ / মেঘের কিনারা গুলো রুপালী / মায়াবী আলো সারা আকাশ জুড়ে/
বাবা বলছিলো কেউ একজন অপেক্ষা করছে /
ইচ্ছে করছে না খুজতে/
সোজা রাস্তা ধরে চলে যেতে ইচ্ছা করছে দুরে বহু দুরে /
রহস্যময় আলোয় পা রাখলাম, হাঁটবো বলে না.. যেতে হবে বলেই এগিয়ে যাওয়া/
বেশ ঠান্ডা আর নিঝুম রাত/যতদুর দেখা যায় খালি রাস্তা /একটু দুর থেকে থানাকেও ঘুমু ঘুমু দেখাচ্ছে/
শুধু ডলা মাষ্টার জেগে কাউকে না কাউকে ডলা দিচ্ছে/
একটু এগিয়ে যেতেই পেছনে হালকা পায়ের শব্দ পেলাম /পেছন পেছন আসছে/ বাতাসে আসছে দেশী কোনো ফুলের গন্ধ/
জানি আমি নামটা এই ফুলের /অনেক রাত সেই ফুলের গন্ধে আমার ঘুম আসেনি , আবার অনেক রাত ধরে ঘুম আসছে না সেই সুবাস নেই বলে/
পাখির পালকের মত নরম একট হাত আমার ডান হাতটি জড়িয়ে ধরলো/
জানি পাশ ফিরে তাকালে আমি কি দেখবো , জানি আমি /মনে ভয় স্বপ্ন নাতো !যদি হারিয়ে যায় !
শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম সেই হাত… বড্ড ভয় মনে, হারাবার/
আমার আরো কাছে সে ঘেষে এলো - দম বন্ধ হয়ে আসছে আমার- অনেক অনেক ভালো লাগায় /
কি বলবো একে – ভালোবাসা ! সখী কারে কয় ভালোবাসা !
মন্ত্রীমহোদয়ের দারুন ব্যস্ত সময় কাটছে এখন /এখনও কত জনকে দাওয়াত দেয়া বাকী/শোনা যাচ্ছে অনেক উপর মহলের গেষ্ট রয়েছে সেই লিষ্টে/ কি মেন্যু হবে না হবে তাও এখনও ঠিক হয় নাই /ইস্ রে একলা আর কত দিক সামলাবেন !
ওদিকে শংকর বোসও অলকা বোসের আনণ্দ দেখছেন/ দেখে বলার উপায় নাই যে উনি মৃত্যুর দুয়ার থেকে ঘুরে এসেছেন /একবার রাজ্যের গহনা নিয়ে বসছেন , আরেকবার শাড়ির জন্য একে ওকে ফোন করছেন/
নীলাচল ফ্লাট বাড়িটির অনেক দিন ধরে ঘুম নেই/নীল আর সবুজ বাতিতে অপরুপ লাগে তাকে/ শুধু পথের যে ধারটায় অন্ধকার সেখানে ৮/৯ বছরের একটি ছেলে দাড়িয়ে থাকে/ এক বুক প্রত্যাশা নিয়ে/
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫০