ইতিমধ্যে বাক্ষনবাড়িয়া ট্রাজেডীর সাথে কমবেশি সবাই অবগত হয়েছেন।রসরাজ নামক এক সনাতনী দ্বারা ফেইসবুকে পবিত্র কাবা শরিফে শিবের প্রতিমা বসিয়ে আপলোড করাকে কেন্দ্র করে বর্তমানে হিন্দু-মুসলিম বিদ্বেষ চরম পর্যায়ে।পরে এই ন্যাক্কারজনক কান্ড’র পর হিন্দু ধর্মাবলম্বী সাধারণদের উপর যে অমানবিক কান্ড ঘটে গেল, নিরীহ হিন্দুদের যেভাবে বাড়ীঘর লুটপাট,ভাঙচুর এবং মন্দিরের প্রতিমাগুলো যেভাবে ভাঙ্গা হয়েছে তা কোনমতেই সমর্থনযোগ হতেই পারে না। এটাযে আগে থেকে ছক আকানো গভীর ষড়যন্ত্র’র ধারাবাহিকতা তারই প্রতিফলন। কিন্তু কিভাবে? আসুন দেখি..... তার আগে ইতিমধ্যে ষড়যন্ত্রকারীদের নতুন নাটক দেখুন।
মোল্লারা নাকি মুর্তি চুরি করে মসজিদে রেখেছে। হাসিতো পাইলাম কিন্তু আফসোস হচ্ছে দুর্বল এই নাটকের রচয়িতা কথিত হিন্দু ও নাস্তিকদের প্রতি। যারা মুর্তি ভাঙতেছে তারা সেটা চুরি করতে যাবে কোন সূত্রে? আচ্ছা চুরি যখন করলই তাহলে মসজিদেই বা রাখতে যাবে কেন আর কোন যায়গায় পাইনি? আচ্ছা আপনাদের মতে মোল্লারা মুর্তি চুরি করে মসজিদে রেখেছে এর প্রমানতো বাপজনমে দিতে পারবেন না কিন্তু এটা ভাবতে সমস্যা কোথায় যে হতে পারে কিছু উগ্র হিন্দু সুবিধাবাদীরা মুর্তি মসজিদে রেখে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা বাধাতে চাচ্ছে। যেসব সুবিধা বাদীরা মসজিদের মুর্তি রেখে মসজিদের অবমাননা করেছে সেসব হিন্দুদেরও কঠিন শাস্তির দাবী জানাচ্ছি যেমন দাবী রইলো মুর্তিভাঙ্গা দাঙ্গাবাজ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে।
আচ্ছা ইমরান ভাই মোল্লারা যে মুর্তি চুরি করে মসজিদে রেখেছে আপনি কিভাবে জানলেন? আপনি দেখেছেন নাকি? সাম্প্রদায়িক উস্কানী বাড়িয়ে আপনারা যে লীলা খেলা শুরু করেছেন তার ফল ভাল হবে না ভাই। যদি নিরপেক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে হিন্দু-মুসলিম হিংসা কিভাবে কমানো যায় সেটা চিন্তুা করুন উস্কানী দিয়ে হিংসাকে আরো বাড়াবেন না দয়া করে। নাহলে অচিরেই সাম্প্রদায়িক উস্কানী বৃদ্ধির দায়ে আপনারও বিচারের দাবীতে রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে সাধারন জনগন
এবার দেখুন নাটকের চিত্র......
> প্রথমে কিছুদিন আগে গভির রাতে একটি মসজিদে কুরআন পুড়ানো,মসজিদে মল ত্যাগ যদিও তখন উপজেলা প্রশাসনের অনুরোধে সেটা মিডিয়া তেমন আসেনি দাঙ্গা প্রশমিত হওয়ার আশংকায়।
> তার কিছুদিন পর রসরাজ নাম হিন্দু যুবকের দ্বারা পবিত্র কাবার অবমাননা, তারপর নিরীহ হিন্দুদের মন্দির ভাংচুর,লুটপাত।
> এরপর দেশজুড়ে মন্দির ভাঙ্গার প্রতিবাদ সুশিল সমাজ থেকে শুরু করে শাহবাগ আর সকল হিন্দু সংগঠন কঠোর প্রতিবাদে নামে (যদিও পবিত্র কাবার অবমাননা যে অপরাধ তা কমই শুনা গেছে উনাদের কাছে)
> দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঠিক ৫ দিনের মধ্যেই আবার বাক্ষনবাড়িয়ার নাসির নগরে হিন্দুদের বাড়ী ঘরে আগুন।
> তারপরের দিন আবার বাক্ষনবাড়িয়ার এ্কটি ইউনিয়নের মসিজদে কে বা কারা মুর্তি রেখে অবমানার উস্কানী।
(৫ দিন তীব্র বিক্ষোভের পর আবার হিন্দুদের বাড়ীঘরে আগুন আর আবার একটি মসজিদে মুর্তি নিক্ষেপ করে হিন্দু-মুসলিম হিংসাকে যে পরিকল্পিত ভাবে বাড়িয়ে দিতে চাই একটি মহল তাতে কি কারোর সন্ধেহ থাকতে পারে..???)
*
সংক্ষিপ্ত এসব কয়েকদিনের ঘটনায় প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে যে একটি মহল খুব গভীর ভাবে হিন্দু-মুসলিম হিংসা ছড়ানোতে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে কিন্তু কারা? কারা চাচ্ছে না দেশ সমাজ স্থিতিশিল থাকুক। কারা সে?
প্রথমে আসুন মুসলমানদের বিক্ষোভ নিয়ে। রসরাজ কর্তৃক অবমাননার পর ব্রাক্ষনবাড়িয়া মুসলিম সম্প্রদায় বিক্ষোবের ডাক দেয়। একটি পক্ষ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত অপর পক্ষ হেফাজতে ইসলাম। পাঠক একটু কি খেয়াল করেছেন সেদিন হিংস্র হেফাজতে ইসলাম হঠাত খাটি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত নাম ধারন করে এর ব্যানারে বিক্ষোভে অংশ নিলো কেন? অথচ ইতিহাস বলছে অহিংসা সুফিবাদী সংগঠন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত বরাবরই অহিংস নীতি অবলম্বন করেছে এমনকি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে,ইসলামের অপব্যাখ্যার বিরুদ্ধে যখন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত কঠোর অবস্থানে তখন সেই হিংস্রবাদী জঙ্গিবাদী সংগঠনের রোষানলে প্রাণ হারান আহলে সুন্নাতের প্রেসিডিয়াম সদস্য চ্যানেল আই এর ইসলামী কাফেলা অনুষ্ঠানের মাওলানা ফারুকী, এর পর সেই জঙ্গিদের হাতে একে এখে পীর খিজির খান সহ একে একে ৮ জন প্রাণ হারান এই জঙ্গিদের হাতে।
অপরদিকে হেফজাতে ইসলাম নামের উগ্র সংগঠনের বায়োডাটা সবারই জানা, নিজেদের ইসলামী সংগঠন দাবী করেও শাপলা চত্ত্বরে তাদের হিংস্রতায় শত শত গাছপালা নিধন, শত শত পবিত্র কুরআনে আগুন, জাতীয় মসজিদের কার্পেটে আগুন, হরতার ডেকে হিংস্র পিকেটিং করে শত শত যানবাহন ভাঙচুর সহ আর কতকি । তাজ্জবের কথা নয় কি যে মুসলিম হয়েও কুরআনে, মসজিদে আগুন লাগানো এর মানে কি, মানে পরিস্কার পবিত্র ইসলামকে ব্যবহার করে নিজ স্বার্থ হাসিল করা। এবং তাদের স্বার্থ কিছুটা হাসিল হয়েছে বলেই ৫ মে এর পর শত কোটি টাকা আর বিশাল রেলের জমি নিয়ে এখন কথিত হেফাজতী তেতুল হুজুর নাকে তেল দিয়ে কিছুটা আরামে।
অপরদিকে দেখুন বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্য আল্লামা মাওলানা ফারুকী হত্যার পর আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত এর ডাকে হওয়া হরতারে একটিও গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে এমন নিউজ কোন মিডিয়াও দেখাতে পারিনি কারন তাদের নিতী অহিংস।
কিন্তু ব্রাক্ষনবাড়িয়া ট্রাজেডী নিয়ে আমি যেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি সেটি হলো সেদিন হেফাজতে ইসলাম কেন খাটি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত নাম ধারন করে বিক্ষোভে অংশ নেয়? এটার মানে কি? এক ঢিলে দুই পাখি শিকারের ছক নইতো??? অনেকটা তাই, একদিকে, যেমন নিরীহ হিন্দুদের কাফির মালাউন বলে তাদের দেশছাড়া করে অপরদিকে আহলে সুন্নাতের নাম ব্যবহার করে তাদের অহিংসরুপকে কলুষিত করা। ইতিমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এর সত্যতাও মিলতে শুরু করেছে। কারন সেদিন আহলে সুন্নাতের সভা ছিল শান্তিপূর্ন এবং শান্তিপূর্ণভাবে সভা শেষ করায় সেদিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের ধণ্যবাদও দেওয়া হয়।
কিন্তু খাটি আহলে সুন্নাত নামধালী তথা হেফাজতীদের উগ্র ভাসন ইতিমধ্যে উক্ত এলাকার একটি মসজিদের এজন কওমী ইমাম শনাক্ত হয়েছেন যার উগ্র ভাসনে উপস্থিত কওমী হেফাজতীরা সেদিন নিরীহ হিন্দুদের উপর হামলা চালায়, তাদের মন্দির ভাঙচুর করে, লুটপাত করে। অবশ্যই এর জন্য সরকার দায়ী কারন যে সাপকে তারা দুধ কলা খাই পুষতেছে একদিন ছোবল তো দিবেই। শত কোটি টাকা আর বিশাল রেলের জমি দিয়ে সরকার যেভাবে তাদের বিচার না করে পুনঃবাসিত করেছে তার ফল ভবিষ্যতেউ শুভ হবে না গোটা দেশবাসীর জন্য এটা লিখে রাখতে পারেন।
এবার আসুন কথিত সুষিল সমাজের দিকে। নিরীহ হিন্দুদের উপর হামলা তাদের চোখে পড়লেও পবিত্র কাবার অবমাননা দেখেও না দেখার ভান ইনাদের চোখে। মন্দির যারা ভেঙ্গেছে সেসব অমানুষদের বিচার অবশ্যই করতে হবে এটা আমারও দাবী। কিন্তু তাই বলে পবিত্র কাবা শরিফের অবমাননার জন্য কতবার রাস্তায় নেমেছেন আপনারা? কতবার স্টাটাস দিয়েছেন এর বিচারের? না করেন নি এখন বলেন নিরপেক্ষতার চাদরে ঢাকা আপনাদের এই একমুখি নীতির কারনে হিন্দু-মুসলিম বিদেষ বাড়বে না কমবে?অবশ্যই বাড়ছেই বাড়ছে যেটার জন্য আপনারা সুশিল সমাজরাই দায়ী। যদি হাতে মন্দির ভাঙ্গার বিচারের দাবীতে ফেস্টুন নিয়ে দাড়তে পারেন তাহলে প্রতিনিয়ত যেভাবে ইসলাম,নবী নিয়ে যে বিদেষ ছড়ানো হচ্ছে, অবমাননা করা হচ্ছে তাহলে এর বিচারে দাবীতে ফেস্টুন নিয়ে দাড়াতে এতো কার্পন্য কেন কথিত সুশিলদের??
একটি সুষিল সমাজ পক্ষগন ৭১ টিভি,ইমরান ভাই,প্রথম আলো সহ আরো কয়েকজন কথিত সুশিল সমাজ রসরাজ নামক কুলাঙ্গারকে বাচাতেও নেমে পড়লেন এই বলে যে, তিনি জেলে এবং জেলের পক্ষে ফেইসবুক ঘাটা ঘাটি সন্ধেহ আছে। আচ্ছা আপনাদের খন্ড করে দেই আগে। সে ফেইসবুক চালাতে পারেনা বলে সন্ধেহ হয় কিন্তু অবমাননার পর বুদ্ধিজীবীর মত দীর্ঘ মাফিনামামূলক স্ট্যাস কিভাবে একজন জেলে লিখতে পারে তখন কি সন্ধেহ হয়। একজন জেলে কোর্ট টাই পড়ে জেলে সমিতির সভাপতি হতে পারে আর ফেইসবুকে অবমাননার প্রতি আপনাদের সন্ধেহ? আসলে আপনাদের ভোতা যুক্তি সম্পুর্ন যে যুক্তিহীন এবং রসরাজকে বাচানেরা অপচেষ্টা তাতে কোন সন্ধেহ নেই। আজব নিরপেক্ষ চেহরা আপনাদের।
এমন কথিত নিরপেক্ষাতা চেহরা কোন কাজের যা দিয়ে হিন্দু-মুসলিম হিংসা না কমিয়ে আরো বাড়িয়ে দেই।
মন্দির ভাঙ্গার বিরুদ্ধে টকশো করতে পারেন,কলাম লিখতে পারেন তাহলে ইসলাম অবমানার বিরুদ্ধে টকশো হয় না কেন? কলাম লেখা হয় না কেন?
*
এখন প্রশ্ন স্থিতিশিল দেশকে কারা পরিকল্পিত ভাবে অস্থিতিশিল করতে চাচ্ছে? কারা পরিকল্পিত ভাবে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা বাধাতে চাচ্ছে? তাদের অবশ্যই ধরতে হবে। আইনের মাধ্যমে তাদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। যারা মন্দির ভেঙ্গেছে তাদের যেমন শাস্তি চাই ঠিক তেমনি তাদেরই শাস্তি অবশ্যই হতে হবে যারা প্রতিনিয়ত সোস্যাল মিডিয়াই পবিত্র ইসলামের অবমাননা করে যাচ্ছে। যদি হিন্দু রক্ষায় আইন করতে হয় তাহলে ইসলাম অবমাননার এবং এর বিচারের জন্য অবশ্যই অবশ্যই ব্লাসফেমী আ্ইন করতে হবে।