somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বখতিয়ার খিলজীর বংশধর (রেটিং: পিজি)

০৯ ই নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

::"লক্ষণ সেণ এতো সৈন্য থাকতে ক্যান বখতিয়ার খিলজীর মাত্র চোদ্দজনের সৈন্যের ভয়ে পালাইছিলো, জানিস?"

:: ক্যান পালাইছিলো?

:: বখতিয়ার খিলজীর ভয়ে। কিন্তু বখতিয়ার খিলজীর কিসের ভয়ে?

:: কিসের ভয়ে?

:: আরে বাল এইডা জানিস না? বখতিয়ার খিলজীর হাত বড় আছিলো এইডা তো জানিস, নাকি?

:: হ্য ; এইডা তো জানি।

:: ভুল জানোস। ইতিহাস বিকৃতি হইছে। আসলে ঠ্্যাং বিশাল বড় আছিলো। কোন ঠ্্যাং, বুঝছোস তো? আর লক্ষণ সেণ এর চেহারা আছিলো এক্কেবারে দুধে আলতা। ক্যান পালাইছিলো, এইবার বুঝছোস তো? পুরাই রেপ কেস।

::ধুরবেটা, ফাইজলামি করিস ক্যান?

:: আমাগো বখতিয়ার হইলো সেই বখতিয়ার খিলজীর বংশধর।

:: আসলেই??




আমার ভার্সিটি বা কলেজ জীবনের সবচেয়ে ঘনিষ্ট বন্ধুগুলা জাতে বিশিষ্ট সাইকো, নয়তো ফিলোসোফার। আমি মনে হয় এর জন্য দায়ী। কারণ নেহা্য়েত ভালো মানুষগুলা আমার সাথে মিশে মিেশ এইরকম সাইকো হয়ে গেছে। রতনে রতন চেনে একটা কথা আছেনা?

আমার কলেজ জীবনের রুমমেট ছমরুল। একজন জাত ফিলোসোফার। আর ভার্সিটি জীবনের রুমমেট ছিলো বখতিয়ার।

বখতিয়ার একজন জাত সাইকো। খুবই গম্ভীর হয়ে থাকতো; বিশেষ করে পরিচিত মহলের বাইরে। মানুষজনকে ভয় দেখানো আর নির্দয় ভাবে ঝাড়ি দেয়া ছিলো তার প্রিয় অভ্যাস।

বিশাল বিশাল চাট্টিক সাহিত্য বানায় বানায় বলতো; গল্পের না্য়ক থাকতো সে নিজে; আর নায়িকা তার পাশের বাড়ির কোনো সেক্সী মাই্য়্যা। আর সেই গল্পগুলাতে হাসলে বা ডাউট দিলে খুব গম্ভীর হয়ে চশমার ফাক দিয়ে কড়া দৃষ্টিতে তাকায় থাকতো। আমরা সেগুলার নাম দিছিলাম বাস্তব জীবনের কাল্পনিক কাহিনী।

ছমরুল এখন একজন আর্মি অফিসার; বখতিয়ার এখন ব্যাংকার। এ দুজন মান্ুষ ই আমাকে শর্তহীন ভাবে ভালোবাসে।

যাই হোক সিরিয়াস কথা না বলে মূল কাহিনীতে ফিরে আসি। বখতিয়ার আমাকে আর হাসানকে কখনো ঝাড়ি দিতোনা। আব্দুল আর সারওয়ারকে রুটিন করে ঝাড়ি দিতো। আব্দুলকে ভালোবেসে "খানকি হালা" আর সারওয়ারকে কখোনো "মাতারি" বা "চোদনা" বলে ডাকতো। বখতিয়ারের কয়েকজন শিষ্য ছিলো যাদেরকে সে রুটিন কইরা মামু বানইতো। এর মধ্য মুকুল, টিটো আর ফয়েজ ছিলো অন্যতম।

এরা আমাদের রুমে ঢুকেই বায়না ধরতো, "মামা, একটা বাস্তব জীবনের কাল্পনিক কাহিনী শোনাও না।" মুড ভালো থাকলে এদেরকে গল্প শোনাইতে বইসা যাইতো, মুড খারাপ থাকলে কইসা ঝাড়ি দিয়া রুম থাইকা তারায় দিতো; এরা অবশ্য মাইন্ড টাইন্ড করতো না। ক্লাসে বা ভার্সিটিতে এদেরকে দূর থাইকা দৃষ্টি আকর্ষন করতে প্রায়সই সে দু আংগুল এবং জিহবার সাহায্যে কিছু একটা ভংগিমা বা ইশারা করতো। শিষ্যদের সাথে খামাখা ইতরামি করা ছিলো তার দৈনিক বিনোদোনের একটা অংশবিশেষ।

ল্যানে এজ অফ এম্পায়ার খেলার সময় ক্যাসেল দিয়া বেড়া(ওয়াল) দেওয়া বা টাইনি ম্যাপের ১২টা ইনিমি নিয়া খেলা তার প্রিয় অভ্যাস ছিলো। তারে আব্দুল জ্ঞান দিতে গেলেই তারস্বরে চেচায় উঠতো। ফিফা খেলার সময় গুলিকে(গোলকিপার) নিয়া গোল দেয়ার চেষ্টা করাটা তার প্রিয় বিষয়।
আমরা সবাই গোল হয়ে তার এই সমস্ত কাহিনী দেখতাম।

একবার আমরা দলবল বেধে চা বাগানের জংগলে ক্যাম্পফায়ার করার জন্য গেলাম। সবাই মাটিতে বসলো, কিন্তু সে আর মাটিতে বসেনা। আমরা জিগ্যাসা করলাম কি সমস্যা। বলে, নতুন আন্ডারও্য়্যার। কোনো ভাবেই ভিজানো বা ময়লা করা যাবে না। পরে কোথা থেকে এক চলটা সাবানের পিছ জোগাড় কইরা ঝর্ণার পানিতে ধুইলো; ক্যম্প ফায়ারের আগুনে শুকাইলো। এই বার চাড্ডি মাথায় টুপি বানায়ে আব্দুলের সাথে রান্নায় লাইগা গেলো।

জংগলে ভোর হোলো। বখতিয়ার ঘুম থাইকা উঠে দেখে তার স্যান্ডেল নাই। তার চিৎকার চেচামেচিতে ঘুম ভাংলো সবার। যে তার স্যান্ডেল নিছে তাকে সে বিষম শায়েস্তা করবে বলে ডিক্লেয়ার করলো। আমরা সবাই ঝোপগুলোতে খোজা শুরু করলাম। হুট করে দেখি সারওয়ার খালিগায়ে গামছা পই্ড়া ঝর্ণা থাইকা গোসল দিয়া আসতেছে। আর বখতিয়ার তার দিকে অাগুন চোখে তাকায়ে আছে। কাছে আসতেই বখতিয়ার হুন্কার দিয়া উঠলো, "মাতারি। আমার স্যান্ডেল ভিজাইছোস ক্যানো?"
:: ও; এইডা তোর স্যান্ডেল? আমি পুরান স্যান্ডেল দেইখা আরো নিলাম এইডা। অসুবিধা নাই একটু পরেই শুকায় যাইবো।
::"মাতারি, তোর স্যান্ডেল দে।"

স্যান্ডেল নিয়া মারামারি হাতাহাতি শুরু হয়ে গেলো। এক পর্যায়ে দুইজনেই দুইজনের এক পা এর করে স্যান্ডেল দখল কইরা ফেললো। বখতিয়ারের হাতে সারওয়ারের একটা স্যান্ডেল, সারওয়ারের হাতে বখতিয়ারের একটা স্যান্ডেল। আর একটা করে স্যান্ডেল নিজেদের পায়ে।

বখতিয়ার এক পর্যায়ে সারওয়ারের স্যান্ডেল নিয়া ঘন ঝোপগুলার মধ্যে ছুইড়া মারলো। সারওয়ার ও কম যায় না। গায়ের জোরে বখতিয়ার স্যান্ডেলটা ফেললো ঝোপে।

কাহিনী এই খানেই শেষ না। এরা দুইজন আমাদেরকে বলে তাদের স্যান্ডেল খুইজা দিতে, নইলে তারা কোনো মাল বহন করবেনা ফেরার পথে। আর তারা খুজতে পারবে না কারণ সারওয়ার কেবল গোছল করছে এবং বখতিয়ারের আন্ডি সে ময়লা করবে না।

উপায় না দেইখা আমরা সবাই বটি শাবল নিয়া ঝোপ জংগল কাইটা স্যান্ডেল খুজতে লাগলাম।

আর এরা দুইটা এক পােয় কইরা স্যান্ডেল আর এক পা ককফাইট স্টাইলে মাটির উপরে রাইখা একজন আরেক জনের কান্ধে ভর দিয়া বিড়ি টানতে লাগলো।

(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:০৬
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×