somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলা একাডেমির একটি প্রকল্পের অপ্রকাশিত কথা-০২

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলা একাডেমির একটি প্রকল্পে কাজ করতাম আমি, সে তো আগেই বলেছি। প্রকল্পের সেই ঘরটি ছিল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত-সুসজ্জিত। লম্বা ঘরের দুই পাশে খোপ খোপ করে সারিবদ্ধ ছিল বাসার ব্যবস্থা। প্রত্যেকের সামনে এক সারি ইন্টারনেট বিহীন কম্পিউটার। ইন্টারনেট ছিল কেবল দুটি পিসিতে। এদের মধ্যে একজন ছিলেন সাইফুল ইসলাম (সহযোগী পরিচালক)। প্রকল্পে এই মানুষটির কাছ ছিল কেবল প্রকল্পে কর্মরত কর্মকর্তারা কে কতবার বাথরুমে গেল, কার কতবার মোবাইল ফোন এলো, কে কার দিকে তাকালো, কতবার তাকালো, কে হাসলো তা নোট রাখা এবং স্কাইপে লন্ডনে অবস্থানরত প্রকল্প-প্রধান গোলাম মুরশিদ স্যার ও মোবাইল ফোনে প্রকল্পের সহকারী সম্পাদক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্বরোচিষ সরকারকে জানানো।

ঘরের উপরের দিকের এক কোণে ছিল ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। ওটা মনিটর করতেন গোলাম মুরশিদ, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, প্রকল্প পরিচালক শাহিদা খাতুন ও স্বরোচিষ সরকার।

ওই প্রকল্পে কাজ করতাম দশ জন। এর মধ্যে ছিল একজন নারী। বয়সে আমাদের প্রায় সকলেরই সিনিয়র ছিলেন তিনি। স্নেহময়ী, মমতাময়ী ওই মানুষটিকে আমরা আপু করে ডাকতাম। উনি ছিলেন আমাদের সকলের কাছে শ্রদ্ধেয়। আপুর একটি দুষ্টু-সুন্দর অথচ মেধাবী ছেলে আছে যাকে আমরা সবাই খুব স্নেহ ও ভালোবাসতাম। এখনও বাসি।

তো কোনো একদিন, কোনো একটি শব্দ নিয়ে বিপাকে পড়ে যাই আমি। আমার ডানে-বায়ে বসা সহকর্মীদের জিজ্ঞেস করে এর কোনো সুরাহা করতে পারিনি। তাই বিপরীত দিকে বসা আপুর সাহায্য নিতে যাই। আমাকে নিজের সিট থেকে উঠে বিপরীত দিকে বসা আপুর কাছে যাওয়াটি সিসি ক্যামেরায় দেখে রাজশাহীতে বসা অধ্যাপক স্বরোচিষ সরকার। সঙ্গে সঙ্গে আমার মোবাইলটি বেজে ওঠে- অপর পাশ থেকে স্বরোচিষ সরকারের কণ্ঠ- "এই ছেলে এই, তোমার সাথে মাহফুজার কী? তোমার সমস্যা কী?"
এ ধরনের কথা শোনার জন্য মোটেই আমি প্রস্তুত ছিলাম। আমি বিনীত স্বরে বললাম- "স্যার, একটা শব্দের অর্থ জানার জন্য আমি আপুর কাছে গিয়েছিলাম।"
স্বরোচিষের উত্তর- "কী শব্দ? ওওওও এই শব্দের অর্থ জানো তো কাজ করো কেন? তোমার কাছে ডিকশনারি নাই?"

আমি নির্বাক হয়ে মোবাইলে স্বরোচিষ সরকারের চিৎকার শুনতে থাকি। যাই হোক, আপুর কাছে জানতে চাওয়া শব্দের অর্থ হয়ত আমার জানা ছিল না সেসময়। তবে ভৎর্সনার নামে ওই চিৎকারের মধ্য দিয়ে স্বরোচিষ কী বোঝাতে চাইছিল তা বোঝার মতো মেধা আমার ছিল, এখনো আছে।

সরি মাহফুজা আপু, সেদিন আমার পাশাপাশি আপনাকেও আপমানের মুখে ফেলেছিলাম আমি।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সত্যি বলছি, চাইবো না

লিখেছেন নওরিন হোসেন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:০৮



সত্যি বলছি, এভাবে আর চাইবো না।
ধূসর মরুর বুকের তপ্ত বালির শপথ ,
বালির গভীরে অবহেলায় লুকানো মৃত পথিকের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কি 'কিংস পার্টি' গঠনের চেষ্টা করছেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১০


শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামক সংগঠন টি রাজনৈতিক দল গঠন করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছেই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্থান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্থান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×