somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বব্যাপী সাড়া জাগানো "ওয়াটার গেইট কেলেঙ্কারি" ফাঁসের রোমাঞ্চকর জার্নি এবং "অল দ্যা প্রেসিডেন্টস ম্যান"

১০ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ওয়াশিংটন পোস্ট এর দুজন সাংবাদিক বব উডওয়ার্ড ও কার্ল বার্নস্টাইন। যারা ১৯৭২ সালে "ওয়াটারগেইট কেলেঙ্কারী" ফাঁস করে গোটা বিশ্বব্যাপী ঝড় তুলে দিয়েছিলেন। যার ফলে তখন পদত্যাগ করতে হয়েছিল আমেরিকার তৎকালীন ক্ষমতাধর রাস্ট্রপতি রিচার্ড নিক্সনকে। ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত তাদের দুজনের লেখা "অল দ্যা প্রেসিডেন্টস ম্যান" বইটিতে ওয়াটারগেইট কেলেঙ্কারি ফাঁসের পেছনের গল্পই বলা হয়েছে।বইটি টাইম ম্যাগাজিনের সর্বকালের সেরা বিশটি নন ফিকশন বইয়ের একটি।

বইটিতে দেখানো হয়েছে দুজন সাধারণ সাংবাদিকের এক শিহরণ জাগানো জার্নি যারা তদন্ত করেন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান সরকারের বিরুদ্ধে। এ বইতে তারা তখন ওয়াশিংটন পোস্টের জন্য করা তাদের দুজনের গুরুত্বপূর্ণ রিপোর্টগুলোকে ঘটনাবলীর সাথে সম্পর্কিত করে সাজিয়েছেন, এছাড়াও ধারাবাহিকভাবে সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন সেসময় ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের পদত্যাগ, প্রেসিডেন্ট নিক্সনের রেকর্ডিং টেপ ফাঁস হওয়ার মত ঘটনাগুলো। বইটিতে উডওয়ার্ডের বিখ্যাত গোপন সোর্স Deep Throat (ছদ্মনাম) এর সাথে মিটিং এর বর্ণনাও দেয়া হয়েছে।

ঘটনাটি শুরু হয়েছিল ১৭ জুন ১৯৭২ এ যখন ওয়াটার গেইট হোটেলে ডেমোক্রেটিক দলের জাতীয় কমিটির হেড কোয়ার্টারে এ একটি চুরি হয়েছিল। উডওয়ার্ড ওয়াশিংটন পোস্ট এর জন্য এ ঘটনার তদন্ত করার নির্দেশ পান। একই এসাইনমেন্ট ছিল বার্নস্টাইনেরও। এর তদন্ত করতে গিয়ে তার সন্দেহ হয় যে এটি সাধারণ কোন চুরি নয় এর পেছনে রয়েছে আরো কোন গল্প।
এর কিছুদিন পর ২২শে জুন ১৯৭২ এ তৎকালীন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন বিবৃতি দেন যে "ওয়াটার গেইটের এই বিচ্ছিন্ন ঘটনাটির সাথে হোয়াইট হাউস কোনভাবেই জড়িত নয় "।
তারা দুজনেই "বিচ্ছিন্ন ঘটনা" শব্দদুটি লক্ষ্য করেন। তাদের মনে প্রশ্ন জাগে তবে কি এটি কোন বড় ষঢ়যন্ত্রের অংশও হতে পারে?
একসময় তাদের তদন্তে তারা জানতে পারেন রিপাবলিকানদের একটি গোপন ফান্ডের কথা যা তারা ব্যয় করতো বিভিন্ন অবৈধ উপায়ে ডেমোক্রেটদের নির্বাচনী প্রচারণা বাঁধাগ্রস্ত করার কাজে। যেমনঃ হুমকি দেয়া, ফোনে আড়ি পাতা, গোয়েন্দাগিরি করা ইত্যাদি। কিন্তু তারা এসব বিস্ফোরক তথ্যগুলো প্রকাশ করার মতো উপযুক্ত প্রমান হাতে পাচ্ছিলেন না। এসময় উডওয়ার্ড ভেতরের একজন ব্যক্তিকে পান ইনফরমার হিসেবে। যার ছদ্মনাম ছিল Deep Throat।

তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার ফলে কিছুদিন পরে তারা অনেক ব্যক্তির বিস্তারিত জানতে পারেন যাদেরকে রিপাবলিকানদের পক্ষ থেকে টাকা দেয়া হত ডেমোক্রেটদের প্রচারণা বাধাগ্রস্ত করার জন্য। তারা জানতে পারেন আড়ি পাতা হয়েছিল ওয়াটার গেইটে ডেমোক্রেটদের হেড কোয়ার্টারেও। এসব নিয়ে রিপোর্টগুলো লাগাতার প্রকাশিত হতে থাকলো ওয়াশিংটন পোস্টে। এবং হোয়াইট হাউস নিয়মিতই এসবকে বানোয়াট আখ্যা দিতে লাগলো। কিন্তু কখনোই কোন তথ্যের ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে বলতে পারতোনা যে এটি মিথ্যা। একবার এক ভুল বোঝাবুঝির ফলে তারা কিছু ভুল তথ্য প্রকাশ করে ফেলেন এবং হোয়াইট হাউস এর সুযোগ নিয়েই ঝাঁপিয়ে পড়ে ওয়াশিংটন পোস্টের ওপর। রিপাবলিকানরা এটি প্রমান করতে উঠে পড়ে লাগে যে "ওয়াশিংটন পোস্ট" হলুদ সাংবাদিকতা করছে। এরফলে তাদের তদন্ত প্রায় একমাস পিছিয়ে যায়।
এ সুযোগে অন্য পত্রিকাগুলোও এ ঘটনার পেছনে লেগে যায় এবং উদঘাটিত করতে থাকে একের পর এক গোপন তথ্য। "পোস্ট" এর সংবাদের সততাও স্বীকৃতি পায়। আর অনেক ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হয়ে গ্রেফতার হতে থাকেন। এবং তদন্তের এক পর্যায়ে দেখা যায় এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত স্বয়ং প্রেসিডেন্টই।

সত্য উন্মোচনেরএ অসাধারণ রোমান্সকর কাহিনী নিয়েই উডওয়ার্ড এবং বার্নস্টাইনের বই "অল দ্যা প্রেসিডেন্টস ম্যান"। বইটি পড়ার সময় আপনার মনে হবে অসাধারণ টান টান উত্তেজনার কোন থ্রিলার পড়ছেন। অথচ এ ঘটনাগুলো ঘটেছিল বাস্তবেই ।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:০১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩২



বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×