সমাজসেবা করতে কাউকে ভালোবাসবেন না, এই মোহ কেটে যায়।
আহারে মানুষটা কতো দুখী কতো একা, মানুষটার পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই - এই ভাবনাটা আসতেই পারে আপনার মাঝে, আসাটা দোষেরও কিছু নয়। তার এই একার বেহাল দশা দেখে তার কাছে আপনি গেলেন, কিছুসময় পারও করলেন। তারপর আপনার মাঝে সমাজসেবামূলক মনোভাব চলে আসলো। আপনি তাকে ভালোবাসি বলে এই জংধরা দুনিয়া থেকে তাকে উদ্ধার অভিযানে নেমে গেলেন। আর সাথে সাথে আপনাকে নিয়ে বাহবা পরে গেলো চারিদিকে। বন্ধুমহলে আপনি বিশাল সম্মানের জায়গা পেয়ে গেলেন। চারিদিকে সবাই বলা শুরু করলো আপনি তো বিশাল মনের মানুষ। কতো বড় মনের মানুষ হলে আস্তাকুড়ে চলে যাওয়া একটা মানুষকে ভালোবাসার ক্ষমতা থাকতে পারে আপনার। বিশাল ব্যাপার সব।
তখনো কিন্তু আপনার এই সমাজসেবামূলক সংবাদ আপনার পরিবারের কাছে পৌঁছায়নি, ওনারা যখন আপনার এই সমাজসেবার সংবাদ পেলেন তখন উলটো আপনাকে উদ্ধার কর্মসূচী শুরু করলেন। বোঝানোর চেষ্টা করলেন সমাজে বসবাস করতে হলে এমন "damaged goods" নিয়ে চলা যায় না, সম্মান বলতে কিছু একটা আছে।
ওনাদের অনেকদিনের বিশাল বিশাল লেকচারে আপনার একসময়ের আহারে মায়া নিয়ে তাকানোর মানুষটার প্রতি আগের মতোন সেই আহারে মুড আর অন হবে না। তখন ভীষণ বিরক্ত মনে হবে সেই মানুষটিকে। আপনার সমাজসেবামূলক কাজের পরিসমাপ্তি সেখানেই হবে। তার কিছুদিন পর আর আপনার এই
"damaged goods " - এর কথা মনেও থাকবে না।
আর সেই "damaged goods"- আপনার এতো বড় মহান দয়া পেয়ে হয়তো আরো খারাপ অবস্থায় গিয়ে থাকবে নয়তো মেনেই নেবে যে মানুষ এমনই হয়। যতোটুকু বিশ্বাস তার বাকী ছিলো মানুষ প্রজাতির উপর ছিলো সেটাও নিমিষে উবে যাবে।
তাই সমাজসেবা ততোটুকুন করুন, যতোটুকুন ধরে রাখার ক্ষমতা আপনার আছে। সমাজসেবা করতে গিয়ে ভালোবাসার আহারে মায়ায় পরে যাবেন না।
ভালোবাসার ইচ্ছে নিয়ে ভালোবাসুন, আজীবন পাশে থাকার সাহস নিয়ে ভালোবাসুন। এমন করে ভালোবাসুন যাতে কারো চোখ রাঙানীতে তা উবে না যায়।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:০২