চিতাবাঘ (Leopard)
গত বছর শাহরিয়ার কেসার রহমান ও তার দল ক্রিয়েটিভ কনসারভেসন এলিয়েন্স ক্যামেরা ট্র্যাপ করে অনেক বিপন্ন প্রাণীর ছবি তুলেছেন। বেশকিছু ম্রো, মারমা ও ত্রিপুরা গোত্রের স্থানীয় অধিবাসীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে ক্যামেরা ট্র্যাপ পাতা হলো অন্তত ১৪-১৫টি জায়গায়। এ কাজে সাহায্য করার জন্য সিজার ধন্যবাদ দিলেন বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ হাসান আরিফ রহমান, ড. এসএমএ রশিদ, আবু দায়ান ও সুপ্রিয় চাকমাকে।
দারুণ সব প্রাপ্তি
বাংলাদেশ থেকে গাউর বা ইন্ডিয়ান বাইসন বিলুপ্ত হয়েছে ধরে নিয়েছিল অনেকেই। কিন্তু ক্যামেরা ট্র্যাপে ধরা পড়ল গাউরের ছবি। আরো কী কী ধরা পড়ল শুনি সিজার ভাইয়ের মুখ থেকেই, ‘চিতা বাঘ, এশীয় কালো ভল্লুক, সবচেয়ে ছোট প্রজাতির ভল্লুক সান বিয়ার, মেঘলা চিতা, মর্মর বিড়াল বা মারবলড ক্যাট, সম্বর, সোনাবাঘ বা সোনালি বিড়ালের মতো বিপন্ন প্রাণী। আমাদের তখন পাগল হওয়ার দশা! তবে ঘটনা হলো এসব প্রাণী খুব সতর্ক। এমনকি পরিবেশের একটু এদিক-সেদিকও এরা বেশ ভালো বুঝতে পারে। যেমন চিতাবাঘের ছবি ক্যামেরা ট্র্যাপে ধরা পড়ার পর পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল, এটা হঠাৎ দিক পরিবর্তন করেছে কিছু একটা সন্দেহ করে। ঢোল, সেরাও (অ্যান্টিলোপ জাতের প্রাণী, বন ছাগলও বলেন কেউ কেউ), চিতা বিড়ালের ছবিও পেলাম। সান বিয়ারদের বেশকিছু ছবি তুলতে পারায় নিশ্চিত হওয়া গেল এরা বেশ ভালো সংখ্যায়ই আছে।’
কালো ভল্লুক
বাঘের পা!
বান্দরবান বা রাঙামাটির বনগুলোতে গত কয়েক দশকে নিশ্চিত করে বাঘের খবর মিলছিল না। যদিও একসময় ওখানে বাঘের রাজত্ব ছিল। এনায়েত মাওলা, ইউসুফ এস. আহমদসহ অনেকের লেখাতেই পাওয়া গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্ত এলাকার লোকজনের কাছে বাঘ দেখা এমনকি শিকারের খবর পাওয়া গেলেও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল খান শিকার করা বাঘের চর্বি সংগ্রহ করেছিলেন। ২০১১ সালেই নাকি মারা পড়ে বাঘটা! যা-ই হোক, গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে শাহরিয়ার সিজার ও তাঁর সহযোগীরা আবিষ্কার করে ফেললেন বাঘের পায়ের ছাপ! ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে—এমন একজন আরেকজনের কাছ থেকে খবর পান তাঁর জুমের ধারে আছে বাঘের পায়ের ছাপ। ম্রো মানুষটি দৌড়ে গিয়ে ছবি তোলেন। সিজার বললেন, ছড়ার নরম মাটিতে পা পড়ায় ছবিটা শনাক্ত করতে সহজ হয়। ১৩ সেমি দৈর্ঘ্যের ছাপটির ছবি পাঠানো হয় ওয়াইল্ড ক্যাট নিয়ে বিশ্বব্যাপী কাজ করা প্রতিষ্ঠান প্যানথারা’র জ্যেষ্ঠ টাইগার প্রোগাম ডিরেক্টর জন গুডরিচের কাছে। ‘ছবি আর মাপ দেখে এটা বাঘের পায়ের ছাপই মনে করছি আমি।’—মত প্রকাশ করেছেন গুডরিচ। এদিকে মনিরুল খানও বললেন, ‘ছবি দেখে মনে হয় এটা বাঘেরই পায়ের।’ বাঘের পায়ের ছাপ যেখানে পাওয়া গেছে সেখানে নতুন করে ক্যামেরা ট্র্যাপ পাতা হয়েছে। ক্যামেরায় বাঘ বন্দি করা গেলেই বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে যাবে।
বনগরূর পাল
**** ছবি সংগ্রহ - ক্রিয়েটিভ কনজারভেসন এলিয়েন্স ****
**** তথ্য সংগ্রহ - কালের কণ্ঠ - ইশতিয়াক হাসান - দি গার্ডিয়ান নিউজ পেপার - ইংল্যান্ড ****
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:৩৬