হাসি-খুশি,ফর্সা, গোলাগাল চেহারার ছেলেটির নাম ছিল রুমি। একটি পরিবারে একটি সন্তান জন্ম নেয়ার সাথে সাথে তাকে ঘিরে জন্ম নেয় একরাশ স্বপ্ন। প্রতিটি ছেলেমেয়েকেই বাবা মার দেখা সেই স্বপ্নকে কাঁধে নিয়ে বেঁচে থাকতে হয়।
১৯ বছর জীবনের খুব একটা কম সময় নয়,এই ১৯ থেকেই অনেক কিছুর শুরু আবার ১৯ এই অনেক কিছুর শেষ।
এইচ এসসি পাশ করার পর কোন পাবলিক ভার্সিটিতে রুমি নিজের অবস্থান করে নিতে পারে নি। এই সমাজ, এই দেশ ব্যর্থদের অপমান অবহেলা ব্যতীত অন্য কিছু দিতে শিখেনি। ব্যর্থ মানুষগুলোও বুঝতে পারে অন্তত এই দেশে ব্যর্থদের কোন স্থান নেই। আত্নীয়স্বজন বাবা মা,প্রিয়তা কেমন জানি অচেনা অজানা হয়ে যায়;রুমির ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়।
চারদেয়াল বোবা অনুভূতি গুলো বুঝতে পারেনা, বুঝতে পারে না খুব কাছের মানুষগুলোও।
চারদেয়াল,বারান্দা,খোলা আকাশকে খুব আপন করে নিয়ে রুমি সেকেন্ড টাইমের প্রিপারেশনে ব্যস্ত।
আবেগ,চোখের জল থেমে থাকলেও থেমে থাকে না সময়। দেখতে দেখতে রুমির ভর্তিযুদ্ব শুরু হয়ে গেল। ৭১ এর রুমিরা যুদ্ব করেছিল দেশের জন্য কিন্তু ২১ শতকেরা রুমিরা যুদ্ব করে সেই দেশে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার জন্য।
মন খারাপের প্রতিটি বিকালে রুমি আকাশ দেখে, দেখে শুভ্র নীল আকাশের উড়ে যাওয়া মেঘগুলো।
আকাশটা দেখতে অনেক সুন্দর কিন্তু নীল আকাশের নিচে থাকা মানুষগুলোর মন এত কালো কেন! কেউ জানেনা;কেউ না।
পরীক্ষা শেষ করে বিশাল আকাশের নিচে চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে রুমির,কিন্তু সেই কান্না কেউ দেখবে না।
২২ শে ডিসেম্বর রেজাল্ট আউট হলো! দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এক পাবলিক ভার্সিটিতে রুমি জায়গা করে নিল,কিন্তু এই সংবাদ রুমির কাছে অজানা;চির অজানা।
রুমির বডি সিলিং এ ঝুলছে,অভিমানে শীতেও আকাশ কাঁদছে। মা বাবার স্বপ্ন সিলিং এ ঝুলে আছে! কি নির্মম!!
আজ রুমির জন্মদিন ছিলো!
জীবনের ১৯ তম বছর হয়তো রুমির জীবন বদলে দিতে পারতো,কিন্তু এই ১৯ রুমিকেই থামিয়ে দিল।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:১৬