এটা কাউকে শেখানোর জন্য লিখিনি। শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ধারণা শেয়ার করেছি মাত্র।
বই রিভিউ লেখার জন্য প্রকৃতপক্ষে কোনো ব্যাকরণ নেই। তবে কিছু নিয়ম মেনে লিখলে রিভিউটা সকলের জন্য পড়া ও বোঝা সহজ হয় এবং সাজানো-গোছানো হয়।
রিভিউয়ের শুরুতে বইয়ের একটা ছবি দিতে পারেন। এরপর শুরু করতে পারেন আপনার পছন্দমতো উক্তি বা বই সম্পর্কে কোনো তথ্য দিয়ে। এটা ঠিক কোনো অনুষ্ঠান শুরু করার আগে সম্ভাষণ বা বইয়ের ভূমিকার সাথে তুলনা করা যেতে পারে। তারপর প্রথমে বইয়ের ও লেখকের নাম দিতে হবে।
• বইয়ের নাম :
• লেখকের নাম :
এরপর সেটি কোন ঘরানা (Genre) তা উল্লেখ করা জরুরি। কারণ এর মাধ্যমে পাঠকরা বুঝতে পারে তারা যেই লেখকের বই সম্পর্কে রিভিউ পড়তে যাচ্ছেন সেটি রহস্য, নাকি রোম্যান্টিক নাকি ফ্যান্টাসি নাকি শিশুতোষ নাকি কথাসাহিত্য। তার মানে বইয়ের ও লেখকের নামের পর আসবে,
• ঘরানা/জনরা :
এরপর যেটা দেওয়া যায় সেটি হলো রেটিং। রেটিং এর নাম্বার দেখে পাঠকরা সহজেই বুঝতে পারবেন বইটা কতটা জনপ্রিয়। এর মাধ্যমে পাঠকদের মনে বই সম্পর্কে সুন্দরভাবে আগ্রহ তৈরি করা সম্ভব। বাংলা বইয়ের ক্ষেত্রে বই রেটিং এর নিজস্ব কোনো ওয়েবসাইট নেই। তবে বইয়ের জন্য Goodreads নামে একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট রয়েছে।
তাই ইংরেজি বইয়ের ক্ষেত্রে সেখান থেকে লিঙ্কসহ রেটিং দেওয়া যেতে পারে। এখন অন্যান্য বইয়েরও রেটিং পাওয়া যায়। বাংলা বইয়ের ক্ষেত্রে যদি খুঁজে পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে সেখানের অথবা নিজস্ব রেটিং ব্যবহার করা ছাড়া উপায় নাই। ইংরেজি বইয়ের ক্ষেত্রেও নিজস্ব রেটিং দেওয়া যায়। সেক্ষেত্রে ব্যক্তিগত রেটিং এই কথাটা উল্লেখ করা উচিত।
তবে অবশ্যই মাথায় রাখবেন, রেটিং বইয়ের জন্য কোনো মানদণ্ড নয়। যেমন, একজন পাঁচের মধ্যে চার, আরেকজন দুই দিলো। গড়ে হলো তিন। অথচ দুজনার কেউই বইটা তিন রেটিং করেননি।
আবার বই পুরোটাই রুচিবোধের উপর নির্ভরশীল। থৃলারপ্রেমি কোনো পাঠকের কাছে জীবনধর্মী ভালো লাগবে না, আবার যার জীবনধর্মী ভালো লাগে তার হরর ভালো লাগবে না। তাই, প্রথমজনের কাছে জীবনধর্মীতে ভালো রেটিং পাবেন না, দ্বিতীয়জনের কাছে হররে।
চেষ্টা করবেন রেটিং থেকে নয়, বরং আপনার রুচি অনুযায়ী বই সংগ্রহ করতে এবং পড়তে।
তাহলে আমরা পরবর্তী পয়েন্ট পেলাম,
• রেটিং/ব্যক্তিগত রেটিং :
এরপর আমরা দিবো রিভিউ। রিভিউতে যদি পুরোপুরি ফ্ল্যাপের লেখা হুবহু তুলে দেই তবে সেটাকে বলা হবে প্রিভিউ। তাই রিভিউ না প্রিভিউ তা এখানে শুরুতেই বলে দেওয়া ভালো। রিভিউ লেখার সময় সম্পূর্ণ কাহিনি লিখে দেওয়া ঠিক না। এতে পাঠকের ঐ বই সম্পর্কে আগ্রহ কমে যাবে। যদি দিতেই হয় তবে সবার উপরে তা লিখে দেবেন ***spoiler alert***
• রিভিউ/প্রিভিউ :
এটাই মূল অংশ, তাই পয়েন্ট আকারে বিস্তারিত লিখছি,
১. রিভিউ লেখার সময় মাথায় রাখবেন যে আপনি পুরো কাহিনি লিখছেন না, লিখছেন কাহিনির চুম্বক অংশের সারমর্ম। তাই তা যত ছোটো আর তথ্যসমৃদ্ধ হয় তা ততই পাঠকের কাছে ভালো লাগবে।
২. লিখতে হবে যথেষ্ট রহস্যময়টা নিয়ে, যাতে পাঠকদের মনে বইটা সম্পর্কে আগ্রহ সৃষ্টি হয়। যদি রিভিউ পড়ে পাঠকের মনে আগ্রহই তৈরি না হয় তবে বুঝতে হবে সেই রিভিউ আসলে রিভিউই হয়নি।
৩. রিভিউ হচ্ছে মূলত একটা বই পাঠের পর ভালো/খারাপ লাগা অংশটুকু। সবসময় খেয়াল রাখবেন, একজনের যা ভালো লাগে তা অন্যজনের কাছেও যে ভালো লাগবে তা কিন্তু নয়।
৪. রিভিউয়ে কখনই লিখবেন না, বইটা এভাবে কেন লিখল, ওভাবে কেন লিখল না? কারণ, বইটা লেখক তাঁর মতাদর্শেই লিখেছেন, তাঁর যেভাবে ভালো লেগেছে, যেভাবে ঠিক মনে হয়েছে সেভাবে লিখেছেন। আর তিনি অবশ্যই আপনার মত অনুযায়ী বইটা সংশোধন করবেন না। তবে, কোনো যুক্তি বা তথ্য ভুল দিলে তা অবশ্যই জানাবেন। অথবা কিছু পরামর্শ দিতে পারেন, যাতে পরবর্তীতে একই ভুলের পুনরাবৃত্তি না হয়।
৫. খেয়াল রাখবেন, আপনি বইটা সম্পর্কে কেবল আপনার মত প্রকাশ করছেন। আপনার যেমন মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে, তেমনি তা অন্যজন গ্রহণ করবে কী করতে সেটাও অন্যজনের অধিকারের মধ্যে পড়ে। তাই ব্যক্তিগত অনুভূতি শেয়ার করুন, ব্যক্তিগত আদর্শ চাপিয়ে দেবেন না।
৬. রিভিউ লেখার সময় মাথায় রাখবেন, সেটি যাতে গরুর রচনার মতো দীর্ঘ আর বিরক্তিকর না হয়। আবার সারাংশের মতো অতিসংক্ষেপ না হয়।
৭. রিভিউ একপ্রকার বিজ্ঞাপন। কারণ, আপনি অন্য পাঠকদের বইটা সম্বন্ধে খুঁটিনাটি জানাচ্ছেন। বিজ্ঞাপনচিত্র যেমন স্বল্পদৈর্ঘ্য, পণ্য সম্পর্কে তথ্যসমৃদ্ধ এবং যথেষ্ট কৌতূহলীদ্দিপক হয়, ঠিক তেমনি আপনার রিভিউটাও তেমনি হতে হবে।
রিভিউয়ের পরে বই সম্পর্কে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত উদ্ধৃতি দেওয়া যেতে পারে। দিতে পারলে সেটা প্লাস পয়েন্ট কিন্তু না দিতে পারলেও বিশেষ কোন ক্ষতি নেই।
• পত্রিকার উদ্ধৃতি :
এরপর দিতে হবে লেখক পরিচিতি। লেখকের জন্ম-মৃত্যু, পড়াশুনা, পেশা, আর কী কী বই লিখেছেন, কতটা জনপ্রিয়, এখন কী করছেন, সামনে আর কী লেখা আসবে ইত্যাদি তথ্য দেওয়া যেতে পারে।
• লেখক পরিচিতি :
বইটি যদি অনূদিত হয় তবে লেখকের পরিচিতির পর অনুবাদকের পরিচিতি দেওয়া যেতে পারে।
• অনুবাদকের পরিচিতি :
এরপর বইটি সম্পর্কে একনজরে কিছু তথ্য দিতে হবে।
• ক্যাটাগরি : বইটি অনুবাদকৃত নাকি মূল তা লিখতে হবে।
• বইয়ের নাম :
• লেখকের নাম :
• অনুবাদকের নাম : (অনুবাদিত হলে)
• প্রথম প্রকাশ : বইটা কবে প্রথম প্রকাশ হয়েছিল তা পাঠকদের জানালে পাঠকরা লেখার সময় সম্পর্কে ধারণা পাবে।
• প্রচ্ছদ : প্রচ্ছদ শিল্পীর নাম দেওয়া যেতে পারে।
• ফন্ট : জরুরী না। ফন্ট সাইজ সম্পর্কে ধারণা থাকলে দিতে পারেন।
• পৃষ্ঠা সংখ্যা : পৃষ্ঠা সংখ্যা উল্লেখ করলে পাঠক বইয়ের আকার আর ব্যাপ্তি সম্পর্কে ধারণা পাবে।
• ISBN নাম্বার : বাহিরের দেশে এটি বেশ কাজের জিনিস হলেও আমাদের দেশে পাঠক পর্যায়ে এটার গুরুত্ব নেই।
• বাঁধাই : এটা জরুরী। বইটা পেপারব্যাক নাকি হার্ড কভারের তা পাঠকদের জানাতে হবে।
• প্রকাশনী : কোন প্রকাশনী থেকে বের হয়েছে তা উল্লেখ করতে হবে। সাথে সম্ভব হলে প্রকাশনীর ঠিকানা।
• মূল্য : এটা উল্লেখ করা জরুরি। কেননা এর মাধ্যমে পাঠক বুঝতে পারবেন বইটি তার বাজেটের মধ্যে কিনা বা কত টাকা লাগবে তা জানলে কিনতে যাওয়ার আগে প্রস্তুতি নিয়ে যেতে পারবেন।
• প্রাপ্তিস্থান : অনলাইন প্রাপ্তিস্থানের লিঙ্ক দেওয়া যেতে পারে আর সম্ভাব্য প্রাপ্তিস্থানের ঠিকানা দিলে পাঠকদের ভোগান্তি কম হয়।
• উইকিপিডিয়া লিঙ্ক : এরপর বই সম্পর্কে উইকিপিডিয়ায় কোন নিবন্ধ থাকলে সেটার লিঙ্ক দিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
• মূল বইয়ের ওয়েবসাইট : মূল বইয়ের কোন ওয়েবসাইট থাকলে সেটার লিঙ্ক উল্লেখ করা যেতে পারে।
• লেখকের ওয়েবসাইট : লেখকের ওয়েবসাইট আর সোশ্যাল সাইটের লিঙ্ক দেওয়া যেতে পারে।
• সফটকপির লিঙ্ক : বইয়ের কোনো সফট কপির লিঙ্ক পাওয়া গেলে দিতে পারেন। যেমন, কিন্ডল।
• ব্যক্তিগত মতামত : সবশেষে বই সম্পর্কে আপনার দিয়ে শেষ করতে পারেন।
• একনজরে রিভিউ লেখার ফর্মটি :
বইয়ের নাম :
লেখকের নাম :
ঘরানা :
রেটিং/ ব্যক্তিগত রেটিং :
রিভিউ/প্রিভিউ :
পত্রিকার উদ্ধৃতি : (Optional)
লেখক পরিচিতি :
অনুবাদকের পরিচিতি : (যদি অনুবাদিত হয় সেক্ষেত্রে)(Optional)
ক্যাটাগরি :
লেখক :
অনুবাদক : (যদি অনুবাদিত হয় সেক্ষেত্রে)
প্রথম প্রকাশ :
প্রচ্ছদ :
ফন্ট :
ISBN :
বাঁধাই :
পৃষ্ঠা সংখ্যা :
অধ্যায় : (যদি থাকে)
প্রকাশনী :
মূল্য :
অনলাইন প্রাপ্তিস্থান : (যদি থাকে)
প্রাপ্তিস্থান :
উইকিপিডিয়া লিঙ্ক : যদি থাকে (Optional)
বইয়ের ওয়েবসাইট : যদি থাকে (Optional)
লেখকের ওয়েবসাইট : যদি থাকে (Optional)
সোশ্যাল সাইট : যদি থাকে (Optional)
সফটকপির লিঙ্ক : যদি পাওয়া যায়(Optional)
ব্যক্তিগত মতামত :
সবশেষে একটি কথা, শুরুতেই বলেছি বই রিভিউয়ের কোন ব্যাকরণ নেই। আমি যা দিয়েছি তা একান্তই আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দিয়েছি। যেভাবেই লিখুন না কেন তাতে যেন প্রাণ থাকে, পাঠকরা যেন রিভিউটা পড়ে বইটা পড়তে আগ্রহ বোধ করে।
বই পড়ুন, অন্যকেও পড়তে উৎসাহিত করুন।
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
• একটি মডেল রিভিউ :
“সাহিত্য জগতে ম্যাথিউ পার্ল এক নতুন উজ্জ্বল তারকা-বুদ্ধিবৃত্তিক, উদ্ভাবনী এবং অসম্ভব প্রতিভাবান একজন লেখক। কৌতূহলোদ্দীপক প্লট, ক্লাসিক্যাল থিম আর পাণ্ডিত্যপূর্ণ সব চরিত্র... পছন্দ না ক’রে উপায় আছে?”
-ড্যান ব্রাউন, সাড়া জাগানো দ্য দা ভিঞ্চি কোড, ডিজিটাল ফরট্রে স, আঞ্জেল’স এন্ড ডেমনস, দ্য লস্ট সিম্বল, ডিসেপশন’স পয়েন্ট, ইনফার্নো-এর লেখক।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন বইটা কেমন হবে।
বইয়ের নাম : দান্তে ক্লাব
লেখক : ম্যাথিউ পার্ল
ঘরানা : কথাসাহিত্য, সাসপেন্স, রহস্য
মূল বইয়ের রেটিং goodreads 3.38 · Rating Details · 33,273 Ratings · 2,165 Reviews
ঘটনা শুরু হয় শান্তশিষ্ট বোস্টন শহর থেকে। সেখানে বছরে ২-১ খুন সাধারণ ঘটনা। কোনো কোনো সময় সারাবছরই রক্তপাতহীনভাবে কেটে যায়। খুন হলে নিতান্তই নিম্নশ্রেণির মানুষদের হয়। সুতরাং সেগুলো ধাতে না ধরলেও হয়। কিন্তু বলা নেই কওয়া নেই খুন হয়ে গেল ম্যাসাচুসেটস্ আদালতের সর্বোচ্চ পদস্থ ব্যক্তি! খুন হওয়ার ৪দিন পর উদ্ধার হয় তার পোকায় খাওয়া বীভৎস লাশ। নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হল শান্ত শহরটি। গৃহযুদ্ধের বিভীষিকায় হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর পর শোক শেষ হতে না হতেই বোস্টন শহরে এ কী ধরনের ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ড শুরু হলো? হত্যাগুলো যেমন অভিনব তেমনি বীভৎস। আর লক্ষ্যবস্তুগুলো সব শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। ক্রমশ স্পষ্ট হতে থাকে সবগুলো হত্যাকাণ্ডই মহাকবি দান্তের ইনফার্নো’র অনুপ্রেরণায় করা হয়েছে। মারাত্মক এক ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায় দান্তের সাহিত্যকর্ম। অদৃশ্য সেই সিরিয়াল খুনিটা কে আর কেনই বা সে এসব করছে সেই রহস্যের সমাধান করতে এগিয়ে এলেন হার্ভাড কেন্দ্রিক দান্তে ক্লাবের কয়েকজন পণ্ডিত ব্যক্তি এবং বিখ্যাত কবি লংফেলো। এই রহস্যের জট খুলতে নেমে তারা নেমে পড়েন এক অভিযানে। কে খুন করছে, আর কেনই বা করছে, সেই প্রশ্নের জবাব পাবার জন্যে মরিয়া হয়ে ওঠেন তারা। কারণ খুনি ধরা না পড়লে চিরকালের জন্য ধ্বংস হয়ে যেতে পারে মহাকবি দান্তের সাহিত্যকর্ম। সেই সাথে তাজা কয়েকটি প্রাণ। তাই খুনিকে যে ধরতেই হবে।
পাতায় পাতায় বাঁক আর রহস্যে ভরা ৩৯৮ পৃষ্ঠা আর ২১ অধ্যায়ের ৪০টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত এই বইটি হতে পারে আপনার নতুন এক রহস্যময় অভিজ্ঞতা।
পত্রিকার উদ্ধৃতি :
“সম্পূর্ণ নতুন ধরনের এক থৃলার সাহিত্য... সেই সাথে রয়েছে বুদ্ধিবৃত্তিক স্ফুলিঙ্গ”
-দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস
“এটা লেখকের প্রথম উপন্যাস!... বিশ্বাসই করা যায় না।”
-সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিক্যাল্স
“একটি স্বর্গীয় রহস্য।”
-পিপল ম্যাগাজিন
লেখক পরিচিতি : ১৯৭৫ সালে জন্ম নেওয়া ম্যাথিউ পার্ল হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৯৭ সালে ইংরেজি ও আমেরিকান সাহিত্যে সম্মানজনক “সুমা কাম লদ” ডিগ্রি লাভ করেন। পরে ২০০০ সালে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের উপর উচ্চতর ডিগ্রি নেন। তিনি আমেরিকার “দান্তে সোসাইটি” থেকে ১৯৯৮ সালে লেখালেখি ও গবেষণা কর্মের জন্য সম্মানজনক “দান্তে প্রাইজ” লাভ করেছেন। তার প্রথম উপন্যাস “দান্তে ক্লাব” তাকে জনপ্রিয়তার সাথে সাথে উল্লেখযোগ্য লেখক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এগডার এ্যালান পো’র মৃত্যু রহস্য নিয়ে তার দ্বিতীয় লেখা “দ্য পো শ্যাডো” তাকে দ্বিতীয়বারের মত আলোচনায় নিয়ে আসে। এ পর্যন্ত তার পাঁচটি বই বের হয়েছে... The Dante Club (2003), The Poe Shadow (2006), The Last Dickens (2009), The Professor's Assassin (2011) The Technologists (2012).
২০০৭ সালে তার ক্যান্সার ধরা পড়লে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়। বর্তমানে তিনি সুস্থ।
অতিসম্প্রতি বোস্টন ম্যাগাজিন তাকে ২০১৩ সালের সেরা লেখক হিসেবে ঘোষণা করেছে। এছাড়া তার সর্বশেষ বই The Technologists (2012) ম্যাসাচুসেটস্ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে।
The Independent (UK) পত্রিকা The Technologists সম্পর্কে বলেছে, "This historical thriller makes us feel the romance of vast and powerful machines."
অনুবাদক পরিচিতি : মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন-এর জন্ম ঢাকায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারুকলা ইন্সটিটিউটে এক বছর পড়াশুনা করলেও পরে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে মাস্টার্স করেন। সাড়া জাগানো বেশ কিছু বইয়ের অনুবাদের সাথে সাথে বেশ কয়েকটি সাড়া জাগানো মৌলিক থৃলারও লিখেছেন। নেমেসিস, কন্ট্রাক্ট, নেক্সাস, কনফেশন, জাল, ১৯৫২, করাচী তার কয়েকটি জনপ্রিয় বই।
ক্যাটাগরি : অনুবাদ
লেখক : ম্যাথিউ পার্ল
অনুবাদক : মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন
প্রকাশনী : বাতিঘর প্রকাশনী
বাঁধাই : হার্ড কভার
ফন্ট : ১২ পয়েন্ট
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৩৯৮
অধ্যায় : ২১
মূল্য : ৩০০ টাকা
রকমারি থেকে কিনতে পারেন > Click Here
তবে আমি বলব নিতান্ত অপারাগ না হলেই কেবল রকমারি থেকে কিনিয়েন। কেননা বাহিরে এর চেয়ে কম দামে কিনতে পারবেন।
উইকিপিডিয়া থেকে রিভিউ পড়ে নিতে পারেন উইকি লিংক
পাঠকদের দেওয়া মূল বইয়ের (ইংরেজি) রিভিউ পাবেন Click Here
ম্যাথিউ পার্লের অফিসিয়াল সাইট : MATTHEW PEARL
ফেসবুক পেজ: Matthew Pearl, author
মূল বইয়ের পিডিএফ লিঙ্ক: Dropbox
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
• বাংলা বইয়ের জন্য এত তথ্য পাওয়া সম্ভব নয়। একটি বাংলা বইয়ের রিভিউ-
বইয়ের নাম : আমি তপু
লেখক : মুহাম্মদ জাফর ইকবাল
ঘরানা : কথাসাহিত্য, কিশোর উপন্যাস
রেটিং : 4.36 · Rating Details · 1,139 Ratings · 38 Reviews goodreads
ব্যক্তিগত রেটিং : ৪/৫
একজন মানুষ কিংবা যেকোন প্রাণীর সবচেয়ে কাছের জন কে? কে সেই জন যে তাকে আগলে রাখে মায়া মমতায়? অবশ্যই মা। কিন্তু এই মা-ই যখন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শত্রু হয়ে যায় তখন তার চেয়ে কষ্টের আর কি হতে পারে?
“আমি তপু” মুহাম্মদ জাফর ইকবালের এক অনন্য কিশোর উপন্যাস। এই উপন্যাসে লেখক মানুষের এমন বয়সের এমন এক পরিস্থিতির করেছেন যেই বয়সে যেই পরিস্থিতিতে আমরা কেউ পড়লে কী ঘটবে আমাদের জীবনে তা এই বই পড়লে সহজেই উপলব্ধি করা যায়।
খুব কাঠখোট্টা শব্দ বা বাক্য বা ঘটনা নেই, খুবই সাদাসিধে কাহিনী,নেই সেই রকম নীতিবাক্য, নেই মাথা এলোমেলো করে দেওয়া বাক্যরীতি, তাই পড়তে গিয়ে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না।
১৩ বছর বয়সের এক কিশোর তপু। পুরো নাম আরিফুল ইসলাম তপু। বি.কে. সরকারি হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। তিন বছর আগে যখন তপু এক রোড এক্সিডেন্টে তার বাবাকে হারায় ঠিক তখন থেকে দুই ভাই এক বোনের সুখী সংসারটা তছনছ হয়ে। তাকে নিয়ে তার জন্য ব্যাট কিনতে যেয়ে মারা যাওয়ায় তপুর মার একটা বদ্ধমূল ধারণা হয় যে তপুর জন্যই তপুর বাবা মারা গিয়েছেন। মায়ের দুর্ব্যবহার আর ভাইবোনের অসহযোগিতার কারণে তার জীবন অসহ্য হয়ে উঠে। সবচেয়ে আদরের ছোট ছেলেটির স্থান হয় স্টোর রুমে। যার সাথী একটি ইঁদুর, যার নাম সে দেয় মিচকি। তাকে খেতে হয় কাজের বুয়া দুলির সাথে মোটা ভাত, ভর্তা। একমাত্র দুলি খালার ভালোবাসা ছাড়া বাকি সবার ভালোবাসা থেকে সে বঞ্চিত হয়ে পড়ে।
লেখকের ভাষায়, “যার চোখের পানির কোন মূল্য নেই এই পৃথিবীতে তার থেকে হতভাগা আর কেউ নেই।”
এতসব দুঃখ কষ্ট সইতে না পেরে সবচেয়ে ভালো ছাত্রটি আস্তে আস্তে খারাপ হয়ে সবার চক্ষুশূল হয়ে গেল। তার কোনো বন্ধু নেই, কোনো শুভাকাঙ্ক্ষী নেই, কী করে কী নিয়ে বাঁচবে এই পৃথিবীতে?
এমনি সময় যখন সে বাড়ি থেকে চিরকালের জন্য চলে যাবার জন্য যখন মনস্থির করে ফেলল ঠিক তখন তার ক্লাসে আসা নতুন এক মেয়ে যার নাম প্রিয়াংকা, তার সাথে ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব হয়ে গেল। প্রিয়াংকা মেয়েটা স্পষ্টভাষী, খুব সুন্দর গুছিয়ে কথা বলতে পারে, খুবই মিশুক আর পরোপকারী। ওদিকে পালিয়ে যাবার জন্য ধীরে ধীরে জমানো টাকাসহ মায়ের কাছে ধরা পড়ে। সবার চোখে ভুলভাবে হয়ে যায় চোর।
এদিকে সে হঠাৎ বুঝতে পারে গণিতের প্রতি তার একটা আলাদা ভালোবাসা আছে। খুব সহজেই সে জটিল জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারে। প্রিয়াংকার উৎসাহে সে এই ভালোবাসাকে বাড়াতে থাকে। সময় গড়িয়ে যায়। প্রিয়াংকা একসময় জানতে পারে তপুর জমানো কষ্টগুলোকে। চেষ্টা করে এগিয়ে নিয়ে যেতে। প্রিয়াংকা কি পারবে তপুকে বেঁচে থাকার সাহস জোগাতে, তপু কি পারবে এমনি এক বিরূপ পরিবেশে বেঁচে থাকতে? কি আছে তার সামনে? তার মা কি আর কখনো তাকে সহজভাবে নেবে না? এমনি হাজার প্রশ্নে গড়া এই সুন্দর কিশোর উপন্যাসটি।
“আমার বন্ধু রাশেদ” উপন্যাসটি যাদের পড়ার অভিজ্ঞতা আছে তারা বুঝতে পারবেন এর সৌন্দর্যটি। শেষ লাইন পর্যন্ত কোনো না কোনো লাইনে নিজের অজান্তেই চোখের কোণা গড়িয়ে জল পড়বেই। এক গভীর মমতা জন্মাবে নিঃসঙ্গ তপুর উপর।
জাফর ইকবালের সেরা কিশোর উপন্যাসের মধ্যে এই উপন্যাস নিঃসন্দেহে অন্যতম। একজন মানুষ সে বড় হোক কিংবা ছোট, তার জন্য একটা পরিবার যে কত গুরুত্বপূর্ণ তা এই গল্প পড়লে অনুধাবন করা যায়। সেই সাথে বোঝা যায়, প্রতিভার বীজ লুকিয়ে থাকে সবার মাঝে, প্রয়োজন অঙ্কুরোদ্গমের পরিবেশ। আর প্রত্যেক খারাপ মানুষের জীবনে থাকে এক ভয়ংকর খারাপ ইতিহাস। কেউ খারাপ হয়ে জন্মায় না।
পড়া না থাকলে পড়ার নিমন্ত্রণ রইল।
লেখক পরিচিতি : উইকিপিডিয়া লিঙ্ক
প্রথম প্রকাশ : একুশে বইমেলা ২০০৫
প্রচ্ছদ : ধ্রুব এষ
পৃষ্ঠা : ১২৩
ফ্রন্ট : ১২
ISBN 984 495139 9
প্রকাশনি : পার্ল পাবলিকেশন্স
৩৮/২ বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০।
কভার মূল্য: ১৫০ টাকা
প্রাপ্তিস্থান : যেকোনো লাইব্রেরীতে পেয়ে যাবেন।
অথবা রকমারি থেকে কিনতে পারেন : রকমারি লিঙ্ক
শুরুতেই বলেছিলাম, রিভিউ লেখার কোনো ব্যাকরণ নেই। আমিও কোনো নিয়ম শেখাচ্ছি না। যেভাবেই লিখুন না কেন তাতে যেন প্রাণ থাকে। পাঠক আগ্রহ বোধ করে।
আর যদি পড়ে একটুকুও ভালো লাগে আর উপকার হয় তবে তবেই আমার কষ্টটা সার্থক মনে করব।
( বি. দ্র. এই লেখাটি পূর্বের লেখার পরিমার্জিত সংস্করণ)