দ্বিতীয় পর্বের লিংকঃশ্যামদেশে কয়দিনঃ পর্ব দুইঃ ফুকেটের পকেটে... পকেটে.....
‘রিচার্ড’ মধ্য বিশের একজন ভ্রমণ ও অভিযান পিপাসু ব্যাকপ্যাকার পর্যটক, ঘুরতে ঘুরতে থাইল্যান্ড আসে। ব্যাংককের এক অতিথিশালায় তার সংঙ্গে মাথা আউলা আরেক ব্যাকপ্যাকার ‘ডেফি’র সঙ্গে পরিচয় হয়। সে রিচার্ডকে হাতে আঁকা একটি মানচিত্রে থাই উপসাগরে কিংবদন্তীর এক দ্বীপের অবস্থান দেখায়, যে দ্বীপ এবং দ্বীপের সৈকত এখনও নিষিদ্ধ, সভ্যতা বিবর্জিত, আদিম সৌন্দর্যমণ্ডিত রয়েছে। দুর্ভাগ্যবশতঃ ডেফি আত্মহত্যা করে মারা যায়। প্রচলিত মিথ আর নিষিদ্ধ বিষয় গুলির কারণে রিচার্ডের সেই দ্বীপ আর সৈকতের প্রতি ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়, ইতিমধ্যে রিচার্ডের সাথে এক ফরাসী ললনা ‘ফ্রান্সি’ ও তার ছেলে বন্ধু ‘ইথন’ এর পরিচয় হয় এরা একসাথে ঐ সৈকতে যাওয়ার উদ্দেশ্য থাই উপসাগরের পর্যটন দ্বীপ “কো সামুই” এ আসে। এখানে এসে রিচার্ড ঐ দ্বীপ সম্পর্কে আরও তথ্য পায় যে ঐ দ্বীপে প্রাকৃতিক ভাবে ‘মারিজুয়ানা’ বা ‘গাঁজা’ জন্মে এতে রিচার্ডের ঐ দ্বীপে যাওয়ার প্রতি আরও আগ্রহ বেড়ে যায়। একদিন রিচার্ড, ফ্রান্সি আর ইথন কো-সামুই থেকে সাঁতারিয়ে সেই স্বপ্নের দ্বীপে এসে উঠে। মোটামুটি এই হল ২০০০ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ড্যানি ব্যায়েল’ পরিচালিত ‘এল্যেক্স গ্যাল্যান্ড’ এর উপন্যাস অবলম্বনে বিখ্যাত ‘দি বিচ (The Beach) ’ সিনেমার শুরুর গল্প। রিচার্ডের নাম ভুমিকায় অভিনয় করেছে বিখ্যাত অভিনেতা ‘লিওনার্দো দ্য ক্যাপ্রিও’। ২০০১/২০০২ সালের দিকে আমার দেখা এই সিনেমা মনে যথেষ্ট দাগ কেটেছে প্রদর্শিত নয়ন জুড়ানো সৈকত, ল্যাগুন, সাগর আর ভিন্নধর্মী কাহিনীর কারনে।
প্রিয় পাঠক, আপনারা হয়তো বিরক্ত হচ্ছেন যে এই ব্যাটা ‘আন্দামান সাগরের দ্বীপ যাত্রার’ বিষয়ে লিখতে গিয়ে সিনেমা নিয়ে ‘খুচরা প্যাচাল’ কেন শুরু করেছে?আসলে ফুকেটের দ্বীপগুলো সম্পর্কে জানতে গিয়ে মজার তথ্য পেলাম (যদিও অনেক দেরীতে ) এই সিনেমাটি ১৯৯৯ সালে ফুকেটের ‘ফি ফি লেহ’ দ্বীপের ‘মায়া বে ’ তে শুটিং হয়েছে। সাথে সাথেই এই অপরূপ সৈকত দেখার বাসনা মনের কোনে সুপ্ত হয়ে রয়ে গেছে।
ফুকেট দ্বীপে গত দুই দিন অবস্থান কালে আমরা বাঘের খাঁচায় ঢুকে আর হাতির পিঠে চড়ে কিছুটা আমোদিত হলেও আমি কিছুটা ত্যক্তবিরক্ত তাই নীলাভ আন্দামান সাগরে ভেসে এর অপরূপ দ্বীপগুলো দর্শনের উদ্দেশ্যে আগামীকালের জন্য দিনমান প্যাকেজ সংগ্রহের উদ্দেশ্য আমাদের সদ্য পরিচিত ভ্রমণ ব্যবস্থাপনাকারীনি ‘শ্রীমতী কিয়া’র শরণাপন্ন হই। সে আমাদেরকে বেশ কতগুলো প্যাকেজ প্রস্তাব করে। প্রস্তাবকৃত প্যাকেজ গুলো একটা থেকে আরেকটা এতো লোভনীয় যে আমরা কোনটা ছেড়ে কোনটা নেব তা নিয়ে আবারও ধান্ধায় পরে যাই। পরিশেষে বিষয়টা ‘কিয়া’র হাতে ছেড়ে দিলে সে শিশু পুত্রের কথা মাথায় রেখে আমাদের কে ‘খাই দ্বীপ-মায়া বে-ভাইকিং কেভ-ফি ফি দ্বীপ’ এই প্যাকেজটি আমাদের জন্য যথার্থ হবে বলে প্রস্তাব করে, খাই দ্বীপের স্বল্প গভীর, স্ফটিক স্বচ্ছ পানিতে বাচ্চারা স্নোরকেলিং করতে পারবে আর মায়া-বে’র কথা শুনে আমি যথেষ্ঠ রোমাঞ্চিত, মানস চোখে ‘দি বিচ’ এ দেখা সেই সাগর, সৈকত ভেসে উঠে তাই আমরা আগ্রহ সহকারে প্রস্তাবকৃত এই প্যাকেজটি গ্রহন করি।
আন্দামান সাগরে আমাদের ভ্রমণ রুট
পরদিন সকালে প্রাতরাশঃ সারতে না সারতেই আমাদের নিয়ে যেতে ভ্রমণ সংস্থার গাড়ী হোটেলে এসে হাজির। গাড়ী আমাদের সহ পাতং শহরের আরও কিছু হোটেল থেকে ৭/৮ জনের মত পর্যটককে তুলে জাহাজে আরোহণ উদ্দেশ্যে ফুকেট শহরের পাশে রাস্সাদা বন্দরে উপস্থিত হয়।
জাহাজে আরোহণ
রাস্সাদা বন্দরের জেটিতে মনে হচ্ছে পর্যটকদের মেলা বসেছে, একেক জনের সাজসরঞ্জাম ও বেশভূষা দেখে মনে হচ্ছে এরা জাহাজে করে দ্বীপে যাবে না, এখান থেকেই সাঁতারিয়ে দ্বীপে যাবে।
গাইডদের স্বাগত ভাষণ
গাইড যথারীতি প্যাকেজের ধরণের উপরে ভিত্তি করে গায়ে স্টিকার লাগিয়ে দেয়, আমরা ধীরে ধীরে জাহাজে আরোহণ করি। আশেপাশের স্পিডবোট আর জাহাজগুলি থেকে আমাদের আরোহণ করা জাহাজটিকে তুলনামূলক ভাবে বেশ বড়ই মনে হল, শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে প্রায় ১৫০ জনের মত বসার ব্যবস্থা এছাড়া উপর স্তরে রৌদ্রস্নানের ব্যবস্থাও রয়েছে। চা-নাস্তার ব্যবস্থাও খারাপ না । যাত্রীগণ কে এলোমেলো ঘোরা-ফেরা না করে আসন গ্রহণ করার ঘোষনা আসে। প্রথমেই দুই গাইড সবার সঙ্গে পরিচিত হয়, তাদের নাম নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মজা করে সবাইকে একধরনের আমোদীয় পরিবেশে মাতিয়ে তোলে কিন্তু এর পর উনারা নিরাপত্তার বিষয়ে(পড়ুনঃ ......জাহাজ ডুবলে বাঁচার জন্য কি কি করতে হবে!) নাতিদীর্ঘ বৃক্তিতা শুরু করলে আশেপাশের লোকজন কিছুটা উসখুস করতে থাকে। মরুদেশ থেকে আগত কয়েকজন পর্যটক তাদের মাথাগুনতি লাইফজ্যাকেট ঠিকঠাক আছে কি না তা রীতিমত পরীক্ষা করে নেয় । এর পর তারা স্নোরকেলিং এর সরঞ্জাম গুলো সম্পর্কে ধারনা দেয় আর কি ভাবে স্নোরকেলিং করতে হবে তার তত্বীয় ব্যাখ্যা প্রদান করে।
অনিন্দ্য সুন্দর আন্দামান সাগর
ইতিমধ্যে জাহাজ নোঙ্গর তুলে আমাদের প্রথম গন্তব্য ‘খাই দ্বীপের’ দিকে চলমান হয়েছে। অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই আমরা বন্দর সংলগ্ন সাগর ছেড়ে খোলা সাগরে উপনীত হই। কেবিনের জানালা দিয়ে বাইরের চমৎকার সাগর দেখে আমার এই শীতাতাপ নিয়ন্ত্রীত কক্ষে বসে থাকাটা অর্থহীন বলে মনে হয়। আমি উপরের ডেকে উঠে আসি।
রৌদ্র স্নানে ব্যস্ত পর্যটকেরা
দ্রুতগামী স্পিডবোটে সাগরের বুকে পর্যটকদের ভ্রমণ
চমৎকার রৌদ্রজ্জল, ঝকমকে দিন উপড়ে নীল আকাশ আর নীচে সবুজাভ নীল সাগর জল, নোনা গন্ধময় ফুরফুরে বাতাস চক্রবাকে পাহাড়ের রেখা, অপূর্ব দৃশ্যপট...... ঢেউ বিহীন নিরন্তর সাগরে তর তর করে পানি কেটে এগিয়ে চলছে আমাদের জাহাজ, ছোট ছোট উরুক্ক মাছ গুলো জাহাজের আশে-পাশে লাফাচ্ছে...... আমি যথেষ্ট বিমহিত হই। ইতিমধ্যে রৌদ্রপ্রেমিরা বিপুল বিক্রমে সান-ডেকে রৌদ্রস্নান শুরু করে দিয়েছে। তাদের রৌদ্র স্নানের বাহার দেখলে মনে হয় এক মিনিটের জন্যেও গায়ে রোদ লাগানো থেকে বঞ্চিত হওয়া যাবে না ।
দূর থেকে খাই দ্বীপ
৪০/৪৫ মিনিটের মধ্যেই আমরা খাই দ্বীপে পৌঁছে যাই, এই দ্বীপ দেখে তো আমার ভিমড়ি খাওয়ার যোগার। নিরন্তর সাগরের মধ্যে পাথুরে খাড়া একটা বড় ও পাশে দুইটা
ছোট ছোট পাহাড় এবং সঙ্গে ২০০/৩০০ মিটারের সাদা বালুকায় ঢেকে থাকা ছোট একটুকরা সৈকত । জাহাজ দ্বীপ থেকে বেশ দূরে নোঙ্গর করে আমরা তিনটা ছোট নৌকায় ভাগ হয়ে দ্বীপে আসি। আমাদেরকে বইয়ে পড়া কল্পনায় দেখা সেই ‘বাউন্টি বিদ্রোহ’ আর ‘ম্যান এগেইস্ট দ্য সী’ এর নাবিকদের মত মনে হয়, যেন অনেক দিন সাগরে ভাসতে ভাসতে ভাগ্যক্রমে এক দ্বীপের দেখা পাওয়া গেছে, যদি কিছু রসদ পাওয়া যায় এই জন্য ব্যাপক আসা নিয়ে দ্বীপের দিকে যাওয়া হচ্ছে ।
খাই দ্বীপের মিহি সাদা বালুকাবেলা
ব্যস্ত পর্যটকেরা
স্ফটিক স্বচ্ছ পানিরে রঙ্গিন মাছের বিচরণ
সৈকতে পা দিয়েই এই সৈকতের বৈশিষ্ট্য টের পাই, মিহি সাদা বালি পায়ে বেশ আরামদায়ক এক মোলায়েম অনুভূতি দেয়। একদম স্ফটিক স্বচ্ছ পানিতে প্রচুর রঙ্গিন মাছ বিচরণ করছে। হাটু পানিতে দাঁড়ালে মনে হয় রঙবে রঙিন মাছের মাধ্যে দাঁড়িয়ে আছি। আমাদের পুত্র তার চারদিকে মাছ দেখে রীতিমত উত্তেজিত হয়ে যায়, বার বার হাত দিয়ে মাছ ধরার চেস্টা করে করে ব্যর্থ হয় । ইতিমধ্যে আমাদের গাইড সবাই কে স্নোরক্লিং এর সরঞ্জাম আর লাইফ জ্যাকেট প্রদান করে। আমরা দেরী না করে সরঞ্জামে সজ্জিত হয়ে পানিতে নেমে যাই। প্রথমে দুই একবার মুখে পানি ঢুকলেও খুব তারাতারিই এই কৌশল আয়ত্ত করে ফেলি। আমাদের শিশুপুত্রও এই ক্ষেত্রে কম যায় না, সেও আমাদের সমান তালে স্নোরক্লিং করতে থাকে সেই সঙ্গে হাত দিয়ে মাছ ধরার প্রচেস্টা ।
ঘণ্টা খানেক সাঁতরানোর পরে গাইড আমাদের কে উঠতে তাগাদা দেয়, আমরা আবার আগের মত করে জাহাজে এসে উঠি। জাহাজে আসলে আমাদের কে দুপুরের খাবার দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে জাহাজ ‘মায়া-বে’র উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। প্রায় দেড় ঘণ্টা ভেসে ভেসে আমরা মায়া-বে তে উপনীত হই। ‘ফি ফি লেহ’ আর ‘ফি ফি ডন’ পাশাপাশি দুইটি দ্বীপ মূল ফি ফি দ্বীপ বলতে ফি ফি ডন দ্বীপকে বুঝাই ঐখানেই বিখ্যাত ফি ফি দ্বীপের সৈকত আর মন কাড়া বিভিন্ন অবকাশ যাপন কেন্দ্র।
অপরূপ মায়া বে
আর মায়া-বে মূলতঃ ফি ফি লেহ দ্বীপে তিন দিকে উঁচু পাথুরে পাহাড় কিছু ছোট ছোট সবুজাভ গাছ-পালা আর মাঝে ল্যাগুন সাথে ছোট একটুকরো সাদা বালির সৈকত, এই ল্যাগুনটিই বিখ্যাত মায়া-বে নামে পরিচিত। আমাদের জাহাজ মায়া-বে তে ঢোকার সাথে সাথে আমার শরীরে এক ধরণের শিহরন বয়ে যায়, এই সেই ‘দি বিচ’ খ্যাত মায়া-বে, এই ল্যাগুনেই রিচার্ড আর তার সঙ্গীরা মাছ ধরত, চাঁদনী রাতে রিচার্ড আর ফ্রান্সিস প্রেম করত । কল্পনায় নিজেকে রিচার্ডদের সাথের কোন দ্বীপবাসী বলে মনে হচ্ছিল, সম্বিৎ ফিরে আসে গাইড ‘সোউম’ এর ডাকে... ‘জ্যান্তলম্যান টেক ইউর লাইফ জ্যাকেট...... ওয়ার ইউর ম্যাস্ক কেয়্যারফুলি...... ডু ইউ নিদ ফিন......’ আমি মনে মনে বলি দূর মিয়া তুমি আর ডাকনের সময় পাইলা না, আমি এখন আছি সেই বিচ কমিউনিটির সাথে ।
জাহাজের পাশে মাছদের ভীড়
মায়া-বে র ল্যাগুনে স্নোরক্লিং
জাহাজের চারদিকে দেখি রঙিন মাছ গুলো জটলা করছে, দুই চারজন উৎসাহী পর্যটক তাদের দিকে পাঊরুটি ছুড়ছে আর মাছগুলো খলবল করে খাচ্ছে। আমি সরঞ্জামাদি পরে প্রস্তুত হতে থাকি, এদিকে পুত্র বায়না ধরে সেও আমার সাথে নামবে কিন্তু গাইডরা ছোট বাচ্চা দের নামাতে কিছুতেই রাজি হয় না, সে যথেষ্ঠ মন খারাপ করে। পুত্রের দেখাশোনার জন্য আমি ও স্ত্রী পালা করে নামতে সীদ্ধান্ত নেই। পানির রঙের দিক থেকে বিখ্যাত কোন সুইমিং পুলকেও হার মানাবে এই রকম নীলাভ সবুজ রঙের পানি আমি কখনো দেখিনি। আমি ড্রাইভিং ব্রীজ থেকে পানিতে নেমে যাই। যথারীতি স্ফটিক স্বচ্ছ পানি, আর নিচে অনেক দূর পর্যন্ত পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে...... গাছ পালার ফাঁকে ফাঁকে রঙিন মাছ, প্রায় বিশ-পচিশ মিনিট সাঁতারিয়ে আমি ঊঠলে আবার স্ত্রী নামে। ছেলের মন যথারীতি খারাপ তাকে উল্লাসিত করতে আমরা জাহাজের পাশে জটলারত মাছের দিকে পাউরুটি ছিটাতে থাকি।
মায়া-তে জল-ক্রীড়ার সময় উত্তীর্ণ হলে আমরা মূল ‘ফি ফি দ্বীপে’র দিকে আগাতে থাকি একটু পরেই আমরা ভাইকিং কেভের পাশে চলে আসি, বড় জাহাজের কারণে কেভের কাছে ভিড়তে পারে না তাই আমাদের কেভে নামা হয় না একটু দূর থেকেই দেখতে হয়। অল্পকিছু সময় পড়েই আমরা ফি ফি দ্বীপের জেটিতে আমাদের জাহাজ নোঙ্গর করে। আমাদের কে ২ ঘণ্টা সময় দেয়া হয় ইচ্ছামত ঘুরতে।
ভাইকিং কেভ
ফি ফি দ্বীপের জেটি দেখা যায়
ফি ফি দ্বীপেও তিন দিকে পাহাড় ঘেরা বেশ বড় একটা ল্যাগুন সাথে অর্ধ চন্দ্রাকৃতি প্রায় এক দেড় কিলোমিটার লম্বা সৈকত, যথারীতি মিহি সাদা বালির সৈকত, খালি পায়ে এই সৈকতে হাটতে খুবই ভালো লাগে।
ফি ফি দ্বীপের অনিন্দ্যসুন্দর সৈকত
সাগরে ভাটা থাকায় আমরা এই ল্যাগুলের মধ্যে স্বল্প গভীরতার পানিতে হাটতে হাটতে অনেক দূর পর্যন্ত যাই। সৈকতের পারে নারিকেল বিথি তার ছায়াতে সারি বাঁধা আরামদায়ক চেয়ার তাতে আধ সোয়া ভঙ্গিতে পর্যটকরা অলস সময় কাটাচ্ছে। লেগুনে ঝাপাঝাপি করে আমরাও নারকেলের ছায়াতলে আশ্রয় নেই, আমাদের কাছে মনে হয় ২/৪ ঘণ্টা আসলে খুবই অল্প সময় এইখানে আসার জন্য...... ফি ফি দ্বীপের নিরব ও অবারিত সৌন্দর্য উপভোগ করতে কয়েক ঘণ্টা নয় প্রয়োজন কয়েক দিনের ।
এতশত ভাবনার সময়ে যথারীতি বেরসিক গাইডের আগমন, গায়ে লাগানো স্টিকার দেখে দেখে তাদের সঙ্গে আসা পর্যটকদের জাহাজে ফেরার জন্য তাগাদা দিচ্ছে। তাই জাহাজ ফেল করার কোন রকম ঝুঁকি না নিয়ে ফি ফি দ্বীপের অনিন্দ্য সুন্দর এই সৈকত আর ল্যাগুন পেছনে ফেলে জাহাজের দিকে হাটতে থাকি।
====================================
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৮:২৮