আমরা একটা স্বাধীন দেশে বাস করি। একটি সরকার আছে, একটা প্রশাসন আছে, বিভিন্ন বাহিনী আছে। দেশে পর পর লাশের পর লাশ পড়ছে। কখনো সাধারন জনগন, কখনো রাজনৈতিক কর্মী। কখনো সরকার দলীয় কখনো বিরোধী দলীয়।
আচ্ছা সরকারের কাজ কি? অনেক কাজের মধ্যে- জনগনের নিরাপত্তা বিধান একটা। তা কি সরকার দিতে পারছে? সরকার কখনো বলছে জঙ্গী আছে কখনো বলছে জঙ্গী নাই। যখন বিরোধীদলকে আন্ডা থেরাপী দিতে মন চায় তখন বলে জঙ্গী নাই। বিরোধীদলগুলোই এই সব করছে। আবার বিশ্বকে প্রায় বলে জঙ্গীবাদ ঠেকাতে হবে।
ধরে নিলাম জঙ্গী আছে। তা হলে তারা কি বাংলাদেশের বাহিরে বসবাস করে না ভিতরে বাস করে? ভিতরে বাস করলে তাদের খুজে পায় না কেন? যাদের পায় আমার মতে তাদের কিঞ্চিত পরিমান হয়তো জঙ্গী বাকী আইওয়াশ। আসামী খুজে না ধরতে পারলে, একটাকে ধরে এনে বিনা পারমিশনের রিমান্ডে নিয়ে বিড়ালকে বাঘ বানায়। যদি সত্যি সত্যি জঙ্গী ধরা পড়তো তা হলে তারা একের পর এক তাদের হামলা গুলো পরিকল্পনা মাফিক করতে পারতো না। বাধাগ্রস্থ হতো। তাদের চেইনে সরকার হাত দিচ্ছেনা বা দিতে পারছে না। সরকারের প্রয়োজন মাফিক সময়েই ঘটনাগুলো ঘটছে।
এখন আসি আশ্রয় প্রশ্রয়ের ব্যাপারে। তারা এই ডিজিটাল যুগে কোন শক্তিশালী আশ্রয় না ফেলে এত নিখুঁত ভাবে হামলাগুলো করে সটকে যেতে পারতো না। কোন শক্তি তাদের আশ্রয় দিচ্ছে? বিরোধীদল? কিভাবে? আমার হিসাবে মিলেনা। যেখানে ব্যাপক জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও সরকারী দমন পীড়ন হামলা মামলায় প্রধান দুটি দল পুরো দৌড়ের উপর আছে তারা নিজেদের আশ্রয় নিয়েই সদা ব্যাতিব্যস্ত। তারা এই ধরনের ঘুছানো পরিকল্পিত একটি দল/গুষ্টিকে আশ্রয় দেবার ক্ষমতা রাখে না। তা হলে কারা? যেই হোক সে ক্ষমতার মূল স্রোতে অবশ্যই আছে। নতুবা এরা টিকতে পারতো না।
অর্থায়ন কারা করছে? বিরোধীদলের বেশীর ভাগ নেতা নিজেদের মামলাই চালায় বহু কষ্টে। তারা অর্থায়নের ক্ষমতা রাখে না। এখানে অবশ্যই বড় অঙ্কের ডিল আছে। একটি গোষ্টিকে গুপ্ত ভাবে সংগঠিত করে, প্রশিক্ষন দিয়ে, তথ্য এবং লজিষ্টিক সাপোর্ট দেয়া অল্প অর্থের ব্যাপার নয়।
প্রতিবাদ- আমরা প্রতিবাদ করতে ভুলে যাই। যখন একজন কৃষক খুন হয় আমরা প্রতিবাদ করি না। যখন হিন্দু প্রতিমা ভাঙচুর হয় আমরা প্রতিবাদ করি না। যখন একজন মুসলমানের দাড়ি ধরে টানাটানি করে আমরা প্রতিবাদ করি না। যখন হুজুর হত্যা করা হয় আমরা প্রতিবাদ করি না। যখন একজন হিন্দু নারীকে লাথি দিয়ে গর্ভপাত করানো হয় তখন আমরা চুপ। যখন বিএনপি কর্মি গুম খুন হয় তখন আমরা কিছুই দেখিনা। যখন লীগের সাধারন কোন সমর্থক খুন হয় আমরা চুপ। যখন একজন ব্লাগার খুন হয় তখন আমরা চুপ। আমরা সরব হবো কবে? যে দিন নিজের সন্তান বা পিতার রক্তাক্ত লাশ বুকে নিবো সে দিন?
আজ দেশে নড়বড়ে একটি সরকার জগদ্দল পাথরের মত বসে আছে। দমন পীড়ন কন্ঠরোধ করে রেখেছে। একমাত্র ক্ষমতার প্রভাব বলয়ে যারা আছে তারা ছাড়া সবাই আজ নির্যাতিত। আমি বহু আগে বলেছিলাম। বলতে দাও বলায় বাধা দিওনা। তাতে কিছু প্রেসার কমে যাবে। যখন প্রতিবাদের সব পথ বন্ধ হয়ে যাবে তখন খুন প্রতিখুন বাড়তে বাধ্য। কারন প্রেসারের একটা ধর্ম আছে, সে কোন না কোন ভাবে রিলিজ হয়।
আজ সঠিক গনতন্ত্র ফিরে আসুক। দেশে আইন কানুন নিরপেক্ষ ভাবে প্রয়োগ হোক। আইন আদালত প্রভাবমুক্ত এবং দুর্নীতি মুক্ত হয়ে যাক। সঠিক তদন্ত করে সঠিক দোষীকে বের করুক, সঠিক শাস্তি হোক। দেশে অশান্তি ধীরে ধীরে কমে আসবে। আর যদি আমরা উগ্রভাবে দলীয় সমর্থনের কানাগলিতে ঘুরপাক খেতে থাকি তবে এই রক্তা রক্তি ক্রমশ আরো বাড়তে থাকবে। আজ আমরা বড় অসহায়, তা আমরা কেউ বুঝি, কেউ না বুঝার ভান করি ।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩২