সাভার জনাবাড়ীতে একই পরিবারের ৪ জন মারা গেল। কেউ বলছে হত্যা, কেউ বলছে আত্মহত্যা। যে যা বলুক, নিজেকে সামাজিক জীব হিসাবে অপরাধী মনে হচ্ছে। নিহতের পরিবারের প্রতিবেশীদের মারফত জানতে পারলাম। পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৬/৭জন। পরিবারের বাচ্চাগুলোর মা গার্মেন্স ফ্যাক্টরীতে কাজ করে। বাচ্চাদের বাবার নির্দিষ্ট কোন ইনকাম ছিলনা। কাজ পেলে করত না হলে বসে থাকতে হতো। স্বাভাবিকভাবেই অভাব অনটনে অশান্তি বিরাজ করত সংসারে। বাচ্চারা কোন বেলা খেত কোন বেলা খেত না। স্বামী স্ত্রীর ঝড়গা তাই নিত্য সঙ্গী ছিল। ঘটনার দিন বাচ্চাদের মা চাকুরীতে যায়। বাবা আম, দুধ, দই এনে বাচ্চাদের ভরপেট খাওয়ায়। তারপর তিন বাচ্চা একে একে মৃত্যুর দুয়ারে ঢলে পড়ে, বাচ্চাদের বাবাও মৃত্যুকে কবুল করে। অনেকে বলে দইয়ের সাথে বাবাই বিষ মিশিয়ে বাচ্চাদের এবং নিজে খেয়েছে। চির তরে জঠর জ্বালা জুড়িয়েছে।
ঠিক সেই সময় প্রতিবেশী কারো কারো খাবার টেবিলে নানা পদের তরকারী সহযোগে খাবারের ঘ্রান মৌ মৌ করছে। ভাবতে নিজের কাছে কেমন লাগে? আমার তো শরীর হিম হয়ে আসছে। আমরা রোজা উপলক্ষে অনেকে হয়তো প্রতিদিন ৫-৫০ পদ দিয়ে ইফতার করব। ঈদে এক সেটের জায়গায় দশ সেট কিনব। দুই হাজার থেকে লক্ষ টাকার জামা পরব, নিজ সন্তানকে হাজার থেকে লক্ষ টাকার পোষাক দিব। লক্ষ টাকার পোষাক পরে ওদের লাশ দেখতে যাবো? ঊফ, ক্ষুধার্ত মৃত শিশু গুলো ঠিক যেন আমার দিকেই চেয়ে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসছে...
আমরা কি আসলে মানুষ না মানবিকতার দাবিদার কোন জন্তু! নিজেকে ধিক, ধিক তোমাদের প্রাচুর্যে। ধিক তোমাদের কথিত মানবতায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:০৯