শিক্ষা জীবনে বহু স্মৃতি আজো আমায় নাড়া দেয়। সে সব স্মৃতি কখনো হাসায় কখনো কাঁদায়। স্কুল জীবনের কিছু শিক্ষকের কথা যখন মনে পড়ে, শ্রদ্ধায় মাথা হেট হয়ে যায়। তাদের আদর্শ সামনে জ্বল জ্বল করে। আজো তাদের কাউকে কাউকে পা ছুয়ে সালাম করি। জীবনের পরিক্রমায় যখন নিজের সন্তান শিক্ষার্থী এবং নিজে অভিবাবক তখন তার শিক্ষকদের কার্যকলাপ দেখলে শিক্ষা পেশাটার প্রতি অশ্রদ্ধা জন্মায়। সন্তানকে মুখ ফুটে কিছু বলি না, পাছে শিক্ষক সম্পর্কে নেতিবাচক ধারনা সৃষ্টি হয়। কিন্তু ডিজিটাল যুগের বাচ্চা কাচ্চা বলতে হয় না নিজেরাই বুঝে। এখন একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের স্কুল এন্ড কলেজ সম্পর্কে বলব।
স্কুলটির শিক্ষকগন প্রাইভেট পড়ানোর জন্য শিক্ষার্থীদের উপর সরাসরি চাপ সৃষ্টি করে। না পড়লে খাতায় সঠিক উত্তর লিখলেও নাম্বার দেয় না, প্রতিবাদ করলে আরো বেশী আন্ডার মার্কিং করার ভয় দেখায়। বাচ্চাদের মানসিক ভাবে চাপ সৃষ্টি করে। যদি তারা ভাল পড়াতো তাহলে তাদের কাছে পড়াতে সমস্যা হত না। কিন্তু ঠিকমত ক্লাশ নেয় না, মামুর জোরে চাকুরী, মান সম্পন্ন লেকচার দেয় না। তবে একটি জিনিস আছে, তা হচ্ছে বাচ্চাদের জিম্মি করে নানা অজুহাতে টাকা আদায় করা। যেমন দরুন সামনে গ্রীষ্মকালীন ছুটি। কিন্তু তারা ২/৩ জন ছাত্রকে দিয়ে দরখাস্ত করালো আমরা ছুটি চাই না ক্লাশ করব। ভাল কথা। পরেই জানা গেল ১৯দিন ছুটিতে পড়ানোর নাম করে জনপ্রতি ১২০০টাকা করে ধার্য করেছে। পড়লেও দিতে হবে না পড়লেও দিতে হবে। আমার কথা দিতে আমি প্রস্তুত তবে তোমরা বিশেষ ক্লাশ গুলো ফাইনাল পরীক্ষা পর্যন্ত নাও। কিন্তু তারা তা নিবে না। বিশেষ ক্লাশের নমুনা হচ্ছে ৮টার ক্লাশ ৯টায় নেয়া, ক্লাশে গল্প করা, আর সপ্তাহে তিন দিন ক্লাশ থাকলে একদিন ক্লাশ নেয়া, অন্য দিন বসে থাকা। আর যারা তাদের কাছে প্রাইভেট পড়ে তারা কি করছে দেখুন। সেই একই অবস্থা অনিয়মিত ক্লাশ নেয়া। মানহীন লেকচার দেয়া। অনেক ক্ষেত্রে মাসে একদিন পড়িয়ে বা না পড়িয়েই টাকা নেয়া। প্রাইভেটের খাতায় নাম থাকলেই হল। পরীক্ষার আগে প্রায় পুরো প্রশ্ন পত্র হাতে ধরিয়ে দেয়া। মানে টাকা দিয়ে পরোক্ষভাবে প্রশ্নপত্রই কিনতে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বাচ্চারা কি শিখছে? আর যদি বাচ্চারা অন্য কোন শিক্ষকের কাছে পড়ে এবং তা স্কুল জানতে পারে তা হলেতো কথাই নেই অনবরত বাচ্চাদের অপমান অপদস্থ করা চলেই। আর বাচ্চারা যদি অন্যত্র প্রাইভেট পড়ে, বাসায় পরিশ্রম করে ভাল রেজাল্ট করে তার ক্রেডিটের ভাগিদার স্কুল। বাহ ভালই তো। সন্তানরা কি শিক্ষক হিসাবে এদের মান্য করবে না ব্যবসায়ী হিসাবে গন্য করবে। সার্টিফিকেট পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করে, খাতা দেখার সময় শিক্ষকদের বেশী নম্বর দেয়ার জন্য চাপ দিয়ে, পাশের হার বেশী দেখিয়ে কি মান সম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন সম্ভব?
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৩:১৭