★গ্রাম্য ছেলেঃ
১) মোরগ ডাকার আগেই ঘুম
থেকে উঠে পড়বে।আবছা
অন্ধকারে হাতড়ে খুঁজে
টর্চলাইট টা নিয়ে বেরিয়ে
পড়বে আম,জাম,বড়ই ইত্যাদি
ফল কুড়াতে।কুড়িয়ে এনে ছোট
বোনটির জন্য সযতনে প্রতিদিন
নির্দিষ্ট একটি জায়গায় রেখে
দিবে।ফলগুলো পেলে তার
মিষ্টি ছোট্ট বোনটা যে কত্ত
খুশি হবে তা ভেবে এক চিলতে
হাসি অনেকক্ষণ লেগে থাকবে
তার মুখে।
২) নিম অথবা ভাটি গাছের
একটা ডাল ভেঙে নিয়ে
মেসওয়াক করতে করতে কেউ
পুকুরে ভাসমান মাছ গুলো
দেখবে নতুবা আগের দিন
রাতে করে রাখা বাজারের
লিস্টটা নিয়ে ছুটবে গ্রাম্য
বাজারের পানে আবার কেউবা
হাঁস মুরগীর খোপের মধ্যে উঁকি
মেরে দেখবে যে ডিম পেড়েছে
কিনা এবং পাড়লেও কয়টা
পেড়েছে।
3) হাতমুখ ধুয়েই রান্নাঘরে
গিয়ে খাবার জন্য ঘ্যানড়
ঘ্যানড় শুরু করে দিবে।আর
মায়ের সেই চিরচেনা বকাটা
নিরবে হজম করবে "রাধা
সয়,তো বাড়া সয় না"॥
4) পেট বাবাজীকে ঠান্ডা
করে একটু পড়তে বসবে।যেই
স্যার খুব বেশী রাগী তার
পড়াটা ভালো করে বেশ ক'বার
পড়বে।
5) এরপর গামছা নিয়ে
দৌড়াবে পুকুরের দিকে।কখনো
পুকুর পাড় থেকে অথবা কখনো
পুকুড়ের সন্নিকটে অবস্হিত গাছ
থেকে ঝাপিয়ে পড়বে পুকুরের
পানিতে।পুকুরের পানিকে
ঘোলা আর চোখদুটো করমচা
ফলের ন্যায় লাল করে তবেই
গোসলে সাঙ্গ দিবে।
6) স্কুল ড্রেস পড়েই ছুট
লাগাবে স্কুলের পানে।আর
যারা পড়ালেখা করেনা তার
লাঙল জোয়াল কাধে নিয়ে গরু
নিয়ে ছুটবে জমি চাষ করতে
নতুবা জমিতে মই দিতে।
7) স্কুল থেকে ফেরার পথে তার
প্রিয় মানুষটিকে দেখার জন্য
রাস্তার পাশে দাড়িয়ে
থাকবে আর নিরবে বন্ধুদের
টিটকারী/ঠাট্টা/মশকরা গুলা
সহ্য করবে।প্রিয় মানুষটির মুখ
দর্শন করতে পারলে খুশিতে
উড়তে উড়তে বাসায় এসে পড়বে
আর দর্শন যদি না হয়
সেক্ষেত্রে মুখটা গোমড়া করে
ফেলবে।ঠিক হাড়ির মতন॥
8) খেয়ে দেয়ে পাড়ার
ছেলেদের সাথে দলবেধে
খেলতে যাবে।খেলা শেষে
ঘর্মাক্ত দেহে আরো একবার
পুকুরের পানিকে ঘোলা
বানিয়ে তবেই নীড়ে ফিরবে।
9) সন্ধ্যায় গরু গোয়ালে
উঠাবে।
ধূপের আগুনে গোয়ালের
মশাগুলো তাড়িয়ে মশারী
টাঙিয়ে দিবে।
তারপর অযু করে মাগরিবের
নামাজ পড়তে ছুটবে।যারা
একেবারেই নামাজ পড়েনা
তারাও কেন জানি এই
মাগরিবের নামাজটা বাদ
দেয়না।
10) নামাজ শেষে বাড়ীতে
ফিরে চেরাগ (কূপি) অথবা
হ্যারিকেনের মৃদ্যু আলোয়
পড়তে বসবে।অল্প কিছুক্ষণের
মধ্যে পড়া বাদ দিয়ে তার
প্রেয়সীর ভাবনায় ডুবে যাবে
স্বপ্নের এক জগতে।
11) মায়ের ডাকে বাস্তবে
ফিরে খেতে বসবে সবার
সাথে।এই একটা সময় ই
পরিবারের সবাইকে সে তার
পাশে পায়।মাছের মুড়োটা
ছেলে বলে মা যদি তার পাতে
তুলে দেয় তবে সে মাছের
মাথাটা বাবা অথবা ছোট
বোনের সাথে অর্ধেক করে ভাগ
করে খায়।খাবার সময় বাবা
যদি তার মাথায় হাত বুলিয়ে
দেয় তবে তার চোখ থেকে
ফোঁটায় ফোঁটায় অশ্রু ঝরে পড়ে
খাবারের মাঝে।মাঝে মাঝে
যে আনন্দেও অশ্রু ঝরে।
12) ছোট বোনকে
ঠাকুরমারঝুলির গল্প শুনিয়ে ঘুম
পাড়িয়ে নিজের রুমে এসে
হ্যারিকেনের আলোটা কমিয়ে
দিয়ে শুয়ে পড়ে সে।টিনের
ছিদ্র দিয়ে জোত্স্না এসে
ভরে যায় তার ছোট্ট রুমটা।সে
আলোয় ঘুম আসি আসি করেও
আসেনা।কার বিরহে যেন
থেকে থেকে কেঁদে ওঠে তার
বুকটা।কোথা থেকে যেন নাম
না জানা ফুলের গন্ধ পেয়ে বুক
ভরে শ্বাস নিবে।তারপর
নিরবে ঘুমিয়ে পড়বে।
★শহুরে পোলাঃ
১) সকাল নয়টা বাজে তার
দরজা খোলার কোন লক্ষণ নাই।
দরজায় বেশ ক'বার বুয়ার
ধাক্কা খেয়ে বাবাজীর ঘুম
ভাঙবে।
ঘুম ভাঙলে দেখবে কানের মধ্য
হেডফোন ঢোকানোই ছিলো।
টিভিতে হলিউডের সিনেমা
চলছেই।
2) এরপর ওয়াশরুমে গিয়ে দাঁত
ব্রাশের ফাঁকে ফাঁকে
ফেসবুকের নোটিফিকেশন চেক
করবে।কয়টা মেয়ের রিকোয়েস্ট
আসলো এবং মেয়েরা কয়টা
লুতুপুতু ছবি আপলোড করছে
সেগুলো দেখবে+লাইক দিবে।
3) এরপর সোজা ডাইনিং
টেবিলে বসে চুপচাপ খেয়ে
নিয়ে কানে ব্লুটুথ আর কাধে
ব্যাগটা ঝুলিয়ে বেড়িয়ে
পড়বে।বাদর ঝোলা হয়ে
কলেজে অথবা ভার্সিটিতে
যাবে।ইচ্ছা হলে ক্লাস করবে
আর ইচ্ছা না হলে
গার্লফ্রেন্ডরে লইয়া পাকে
যাইবে।আর নয়তো কোথায়
ডিজে পার্টি হচ্ছে তার খোঁজ
করবে।এরা পরীক্ষার আগের
রাইতে বই ছেড়া পার্টি আর
তাই পড়ালেখা 364 দিন না
করলেও চলে॥
4) বন্ধুদের লইয়া আড্ডা দিবে।
দিনের প্রধান আহারটা এরা
গার্লফ্রেন্ড নয়তে বন্ধুদের
নিয়ে হোটেলেই সেরে নিবে।
5) মাতাল হয়ে রাত দশটায়
বাসায় ফিরবে।তখন এদের গাল
দিয়ে বেরোবে তীব্র
নিকোটিনের গন্ধ।আর মদের
গন্ধ তো আছেই।তখন বাপকে
দেইখাও বলবে মোখলেস আমার
বেডের মশারিটা একটু টাঙিয়ে
দেতো।
6) আর যারা মাতাল হয়ে
বাসায় ফিরবেনা তারা
ল্যাপটপের ওয়েবক্যাম দিয়ে
জানটুশের লগে কথা কইবে
নয়তো ফেসবুকে চ্যাট করবে।
চ্যাট করার ফাঁকে ফাঁকে
রাতের ডিনারটা সেরে
ফেলবে।চ্যাট চলবে রাত ২টা
পর্যন্ত।চ্যাটের পাশাপাশি
টিভিতে মুভিতো আছেই॥
7) আর যাদের জানটুশ নাই
তারা ফিমেল লেখা যুক্ত
ফেসবুক আইডি খুঁজিয়া বাইর
করবে।জাস্ট GENDER INFO তে
FEMALE লেখা পাইলেই কেল্লা
ফতে।
8) টিভি চলতেই থাকবে আর
ল্যাপটপে ফেসবুক ব্রাউজিং
হতেই থাকবে কিন্তু বাবাজী
যাবে ঘুমের সমুদ্রে ডুবে।
ল্যাপটপটা একটু পর পর
গার্লফ্রেন্ডের মেসেজের
কল্যাণে কেঁদে কেঁদে উঠবে।
9) ঘুম থেকে উঠেই
গার্লফ্রেন্ডের ব্রেকআপ
মেসেজ দেখতে পাবে।
তাদের মধ্যে কোন ভাবান্তর
দেখা যাবেনা।একটু জোরে
শোরেই বলে উঠবে তোর মতো
গার্লফ্রেন্ডের মায়রে বাপ।
চেহারা তো নয় যেন বাংলার
৫ ॥পৃথিবীতে কত মেয়ে আছে
তোর চাইতে॥
10) পরদিন বাসে কোন এক
কিশোরীর জন্য নিজের সিট
টা ছেড়ে দিবে শুধুমাত্র নতুন
করে একটা গার্লফ্রেন্ড
জোটানোর নিমিত্তে,,,