নাস্তিকদের মতে কোন
ধর্মই সঠিক নয়,
বিজ্ঞানের থিওরিও
পরিবর্তনশীল,
বিবর্তনবাদ প্রমাণিত নয়,
নাস্তিকতাবাদ সম্পূর্ণ
অযৌক্তিক। তাহলে সঠিক
কি?
বিজ্ঞান বলছে শূন্য থেকে
সবকিছু সৃষ্টি হওয়া সম্ভব।
বিজ্ঞান কিন্তু শূন্য থেকে
কিছুই সৃষ্টি করতে
পারেনি। চুম্বক, লোহা,
তেল ইত্যাদি প্রাকৃতিক
সম্পদ যদি পৃথিবীতে না
থাকত তাহলে বিজ্ঞান
কিছুই তৈরি করতে
পারতোনা। যেসব সূত্র
বিজ্ঞানীগন আবিষ্কার
করেছেন তা কিন্তু
প্রকৃতিতে পূর্ব থেকেই
বিদ্যমান ছিল; তাঁরা শুধু
খুঁজে বের করেছেন।
বিবর্তনবাদ অনুসারে লক্ষ
লক্ষ বছর আগের মানুষের
ফসিল কোথায়? ১৯০৩
সালে ইংল্যান্ডের একটি
গ্রামে মানুষের একটি
কংকাল পাওয়া যায়,
যারা ছিল বর্তমান
মানুষের প্রজাতির।
প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায়
জানা যায় তারা
পৃথিবীতে বাস করত ৭৫
হাজার বছর পূর্বে। ১৯৪০
সালে দেখা গেল এটা
ছিল বিজ্ঞানের
ইতিহাসে সবচেয়ে বড়
জালিয়াতি। সবগুলি নকল
হাড়! প্রত্নতাত্ত্বিক
গবেষণায় জানা যায়,
পৃথিবীতে
সামাজিকভাবে মানুষের
বসবাস আজ থেকে দশ
হাজার বছরের মধ্যে
সীমিত। এর পূর্বে
পৃথিবীতে মানুষ বসবাসের
বিছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া
সঠিক কোন প্রমাণ পাওয়া
যায় না। (অমল দাসগুপ্তের
"মানুষের ঠিকানা" বই
দ্রষ্টব্য)।
নাস্তিকদের বিশ্বাস
মহাবিশ্বসহ পৃথিবীর
সবকিছু নিজে নিজে সৃষ্টি
হয়েছে, যা সম্পূর্ণ
অযৌক্তিক। পৃথিবীর
কৃত্তিম কোনকিছুই নিজে
নিজে হয়নি, মানুষ তৈরি
করেছে। তাহলে প্রাকৃতিক
জিনিসগুলি নিজে নিজে
কিভাবে হল? যা
প্রমাণিত তা 'ই সত্য।
মানুষ, জীব -জন্তুসহ
গাছপালা ইত্যাদি যদি
আমরা নিজে নিজে হতে
দেখতে পেতাম তাহলে
প্রমাণ হতো যে স্রষ্টার
কোন প্রয়োজন নেই। আজ
পর্যন্ত নিজে নিজে কিছু
হতে পারে বা শূন্য থেকে
কিছু সৃষ্টি হতে পারে তা
প্রমাণিত হয়নি কারণ
বিজ্ঞান শূন্য থেকে কিছুই
সৃষ্টি করতে পারেনি। তাই
মহাবিশ্বসহ পৃথিবীর
সবকিছু নিজে নিজে হয়নি
বরং এগুলির সৃষ্টিকর্তা
রয়েছেন এটাই প্রমাণিত।
নিজে নিজে কিছুই হতে
পারেনা, তাহলে স্রষ্টা
কোথা থেকে আসলেন?
পিতা-মাতা ছাড়া মানুষ
হতে পারেনা, তাহলে
পৃথিবীর প্রথম পিতা-
মাতা কোথা থেকে
আসলেন? বীজ ছাড়া
আমগাছ হতে পারেনা,
তাহলে পৃথিবীর প্রথম
আমগাছ কোথা থেকে
আসল? এটাই পৃথিবীর
সবচেয়ে বড় রহস্য যা
জানার জন্য মানুষকে মৃত্যু
পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।
একমাত্র খাঁটি মুসলিমই
তা মৃত্যুর পূর্বে জানতে
পারে কোরআনের
মাধ্যমে। কোরআন মানব
রচিত কোন গ্রন্থ নয়,
স্রষ্টার তরফ থেকে আগত
তাঁর উপস্থিতির উজ্জ্বল
প্রমাণ, যদিও সমগ্র
সৃষ্টিজগতই স্রষ্টার
অস্তিত্বের প্রমাণ বহন
করে।
চন্দ্র -সূর্যের আবর্তনের
ফলে দিন, মাস, বছর
অতিবাহিত হয়। চন্দ্র -সূর্য
সহ সকল গ্রহ-নক্ষত্র স্থির
থাকলে দিন, মাস, বছর
অর্থাৎ সময় বলে কিছু
থাকত না। চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-
নক্ষত্র এসব স্রষ্টা সৃষ্টি
করেছেন, তিনি এসবের
উপর নির্ভরশীল নন। স্রষ্টা
এমন স্থানে অবস্থান করেন
যেখানে চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-
নক্ষত্র কিছুই নেই। সুতরাং
তার কোন বয়স নেই, শুরু
নেই, শেষও নেই, তিনি
অনাদি-অনন্ত। তিনি
সর্বশক্তিমান, কোনকিছু
হওয়ার জন্য তিনি শুধু
একথাই বলেন "হও", সাথে
সাথে তা হয়ে যায়।
কুরআনে মুত্তাকী
মুসলিমদেরকে দুনিয়া ও
পরকালে পুরষ্কারের
ওয়াদা দেয়া হয়েছে।
মুত্তাকীরা তাদের
দুনিয়াবী পুরষ্কার ওয়াদা
মোতাবেক পেয়ে থাকে,
তাহলে পরকালে কেন
পাবে না?
। পরকালে যদি
কিছু নাও পাই তাহলে
আমার কি'বা হারাবার
আছে? "তারা আল্লাহ ও
বিচার দিবসে বিশ্বাস
করলে তাদের কি ক্ষতি
হত?" (নিসাঃ ৩৯)।
নাস্তিকদের ধারণা
অনুযায়ী পরকাল যদি না
থেকে থাকে তাহলে
নাস্তিক এবং মুসলিম
কারো কোন ক্ষতি নেই,
সমান সমান। আর ইসলাম
সত্য হলে পরকালে মুসলিম
হবে চিরসুখী আর নাস্তিক
হবে চিরদুখী। পক্ষান্তরে
দুনিয়াতে একজন খাঁটি
মুসলিম নাস্তিকের তুলনায়
অনেক বেশি সূখী।
আগুন ছাড়া মানব সভ্যতা
কল্পনাও করা যায় না।
আগুনকে নিয়ন্ত্রণ করতে
না পারলে সবকিছু
জ্বালিয়ে পুরিয়ে ধংস
করে দেয়। তাই কেউ যদি
বলে আগুন ক্ষতিকর,
আগুনকে পৃথিবী থেকে দূর
করা প্রয়োজন তাহলে
তাকে "নিরেট মূর্খ" ছাড়া
কিছুই বলা যায় না।
মূর্খদের দাবি ধর্মের
কারনে পৃথিবীতে যত যুদ্ধ
হয়েছে অন্য কোন কারনে
হয়নি, তাই ধর্মকে পৃথিবী
থেকে উচ্ছেদ করা
প্রয়োজন। তাদেরকে
প্রশ্ন, ধর্ম কি পৃথিবীতে
শান্তি প্রতিষ্ঠিত
করেনি? ধর্মকে উচ্ছেদ
করলেই যে পৃথিবীতে
শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে
বা আর কোন যুদ্ধ-বিগ্রহ
হবে না তার নিশ্চয়তা কে
দেবে? রাজনৈতিক
কারনেও পৃথিবীতে অনেক
যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে,
তাহলে রাজনীতিকে
পৃথিবী থেকে দূর করার
জন্য কোন আন্দোলন কেন
হয় না? মানবজাতির শুরু
থেকেই পৃথিবীতে ধর্ম
ছিল, শেষ পর্যন্তও
থাকবে। লক্ষ-কোটি
মুসলিম আছে যারা মৃত্যুর
বিনিময়েও ইসলাম ত্যাগ
করতে চাইবেনা।
মোটকথা, পৃথিবী থেকে
ধর্মকে উচ্ছেদ করা অসম্ভব
ব্যাপার। অসম্ভবের
পিছনে ছুটা মূর্খতা।
নাস্তিকরা মূর্খ। পার্থিব
জীবন ক্ষণস্থায়ী, পরকাল
চিরস্থায়ী। উভয় জীবনে
সূখী হওয়ার জন্য ইসলামের
কোন বিকল্প নেই।
"তাদেরকে তাদের সবরের
কারনে জান্নাতে কক্ষ
দেয়া হবে এবং তাদেরকে
তথায় দোয়া ও সালাম
সহকারে অভ্যর্থনা করা
হবে। তথায় তারা চিরকাল
বসবাস করবে। বাসস্থান
হিসাবে তা কত উত্তম।
বলুন, আল্লাহ পরওয়া করেন
না যদি তোমরা তাঁকে না
ডাক।" (ফুরকান: ৭৫-৭৭)।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫০