বাংলা ব্লগ এখন আর শিশু অবস্থায় নেই। শৈশব,কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা রাখছি রাখছি করছে অবস্থায় আছে।গত ৫ বছরে জন্ম নিয়েছে অজস্র ব্লগ।সবচেয়ে বড় কথা হল ব্লগ তৈরি করেছে অনেক মেধাবী লেখক।মূলধারার মিডিয়া থেকেও অনেক মেধাবী লেখকরা ব্লগে এসে আরেকবার তাদের জাত চিনিয়েছে।ডয়েচে ভ্যালে নামক একটি প্রতিষ্ঠান সেরা ব্লগ নির্বাচন করে আসছে যা আমাদের জন্য খুবই আনন্দের সংবাদ।এর ফলে ব্লগাররা ব্লগের প্রতি আরো উৎসাহী হবে,সৃজনশীলতার আরো ভাল প্রকাশ ঘটবে।কিন্তু এই ডয়েচ ভ্যালে কিভাবে ব্লগ নির্বাচন করে? প্রক্রিয়াটি আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না।জনপ্রিয়তা ও আলোচনায় যারা আছে তাদের কে নাকি মেধাবীদেরকে? ব্লগে কিভাবে জনপ্রিয় হতে হয়? ব্যাপারটা কি খুব কঠিন?
আমি মাল্টিনিক ব্যবহার করি তা অনেকেই জানেন তবে যা অনেকেই জানে না তা হল একাধিক জনপ্রিয় নিক একসময় আমি নিজেই চালিয়েছি।তারপর ছেড়ে দিয়েছি। যার দখলে এখন আছে সে চালাচ্ছে কোনটা একেবারে বন্ধও হয়ে গেছে। এমন কোনো ধারার নিক নেই যা আমি চালিয়ে দেখিনি। আমার সমস্যা হল কোনো নিকেই আমি বেশীদিন ব্লগিং করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না। তাই একের পর এক নিক গত ৪ বছর ধরেই বদলিয়ে এসেছি।জনপ্রিয়তা আসলে কিভাবে ব্লগে আসে তা আমি যেভাবে দেখেছি-
১-সারাদিন অনলাইনে থেকে সমানে কমেন্ট করে যাওয়া পড়ে বা না পড়েই
২-ব্লগে এবং ব্লগের বাইরে আড্ডাবাজি ও ব্যক্তিগত যোগাযোগ রাখা
৩-নির্দিষ্ট কয়েকটি গ্রুপ আছে যার যেকোনো একটিতে মিশে যাওয়া
৪-নিজেকে বিতর্কিত করে তোলা
৫-মেয়ে নিক খোলা(এই ব্যাপারটি আমার কাছে খুব খারাপ লাগে)
৬-গড গিফটেড প্রতিভা নিয়ে ব্লগে আসা
৬ নং তো আর সবাই পায় না হাজারে এক বা দুজন আসে তারবাদে অন্যরা এই প্রক্রিয়ায় জনপ্রিয় হয় বা হচ্ছে। এখন কথা হল একজন সাধারণ ব্লগার যখন কমেন্ট করে বা ব্লগ পড়ে বা কোথাও ব্লগারকে নিয়ে আলোচনা করে তখন সে জনপ্রিয় ব্লগারদের নিয়েই আলোচনা করবে বা তার লেখাই মনোযোগ দিয়ে পড়ে। এটা একদম স্বাভাবিক যে কারনে বইমেলায় হুমায়ুন এর সাহিত্যমূল্যহীন লেখা মেধাবী লেখকদের অনেক পরিশ্রমী লেখার চেয়ে ১০০ গুন বেশী চলে। কিন্তু একজন বিচারক যিনি লেখার মান দেখতে বসবেন তার কাছে তো জনপ্রিয় বা আলোচিত লেখক আর একজন অজনপ্রিয় বা অন্তর্মুখী লেখক সমান প্রাধান্য পাওয়ারই কথা।কিন্তু ডয়েচ ভ্যালে কি তা করেছে? এখানে যারা মনোনয়ন পেয়েছেন তাদের মাঝে ইমন জুবায়ের ভাই ছাড়া আর কাউকে একজন ভাল ব্লগার বলতে আমার যথেষ্ট আপত্তি আছে।
আমি খুব অবাক হয় যখন ইমন ভাইকে প্রতিদ্বন্ধীতা করতে হয় আইরিন এর মত একজন ব্লগারের সাথে!
এখানে বাকি যারা আছে তারাই বা কেমন ব্লগার? একজন স্বঘোষিত পর্নস্টার এর ব্লগ আসে মনোনয়নে! জানি পিয়াল একজন মেধাবী ব্লগার কিন্তু একথাও জানি ত্রিভুজ ও একজন মেধাবী ব্লগার। একজন ত্রিভুজ যেমন নিজের বিতর্কিত ভূমিকার জন্য আমাদের ভোট পেতে পারে না তেমন একজন পিয়েল ও পারে না। আরিফ সাহেব কেমন ব্লগার তা আমার ঠিক জানা নেই। এর প্রধান কারন আমি আমার ব্লগে যাই না। আর সচলায়তন এ তো প্রশ্নই আসে না। নিজে একসময় সাহিত্য নিয়ে ভাবতাম। হালকা মনে পড়ে অনেক আগে গল্প লিখতাম। দেশের বেশ কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় আমার গল্প ছাপাও হয়েছিল। একটি সাহিত্য পত্রিকায় টানা দেড় বছর লেখেছিলাম। সেগুলো এখন স্বপ্নের মত কারন এখন আমি গল্প লেখতে পারি না। তাই সাহিত্য নিয়ে আর মাথাও ঘামায় না। অতএব সচলায়তনের যোগ্যও আমি না। আরিফ সাহেবকে এমনিতে আমি চিনি। কালের কন্ঠে উনার লেখাও পড়েছি। ভাল বললে ভুল হবে বেশ ভাল। কিন্তু এই লেখা লেখার আগে আমি উনার ব্লগ দেখলাম। না আমার কাছে মনে হয় না শ্রেষ্ঠ ব্লগার হওয়ার মত ব্লগিং উনি করছেন।হয়ত মূলধারার মিডিয়ার জন্যই মেধা দিচ্ছেন তাই ব্লগে এভাবে নয়।
এই প্রক্রিয়ায় যারা মনোনয়ন পেয়েছে তাদের মাঝে সবচেয়ে বড় চমক নিশ্চয় আইরিন সুলতানা। আমি তো দেখে অবাক তার চেয়ে অবাক উনার ভোট পাওয়ার হার দেখে। উনি কি লেখে? আমাকে কেউ কি উনার ৫টি ভাল পোস্ট এর সন্ধান দিতে পারেন? আমার খুব পড়ার ইচ্ছে।অথচ এই আইরিন এর চেয়ে অনেক মেধাবী ব্লগার পড়ে আছে সামুতে। একজন নাফিস ইফতেখার একজন হাসান মাহবুব বা একজন দিনমজুর কেন মনোনয়ন না পেয়ে একজন আইরিন পায় তা আমার বোঝা হয় না।মেয়ে ব্লগার কি আর ছিল না? অপসরা বা রেজোওয়ানা কি আইরিন এর চেয়ে কম ভাল ব্লগার? বিচারকরা কি জুন এর ব্লগ দেখেছে?
জানি না আমি কে এসবের পিছনে? কে এসব মনোনয়ন মনোনয়ন খেলা খেলছে। ভিতরে কতটা স্বজনপ্রীতি চলছে। আমাকে এখন অলসতায় পেয়ে বসেছে তাই ব্লগ নিয়ে ভাবি না ব্লগের পরিবেশ নিয়েও না।এই লেখাটিও তৈরি হত না যদি ইমন জুবায়ের ভোট যুদ্ধে এইহালে না পড়তেন।
শেম!