উগান্ডার ভূতপূর্ব শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীকে জনৈক মহিলার সোনা ও ভ্যানিটিব্যাগ চুরিসহ ডিম চুরি ও মোবাইল চুরির মতো হাস্যকর, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগে জেলের ঘানি টানতে হয়েছিল।সেই দেশের শিক্ষামন্ত্রী পরামর্শ দিতেই পারেন, “আপনারা ঘুষ খাবেন, তবে সহনশীল হইয়া খাবেন।খালি যে অফিসাররা চোর তা না, মন্ত্রীরাও চোর।আমিও চোর”।সুতরাং, শিক্ষামন্ত্রী যথার্থই বলেছেন।এ নিয়ে অামজনতা রাজনীতি করতে পারেন না।
সানেমের (SANEM- South Asian Network on Economic Modeling) পর্যালোচনা (২৩ ডিসেম্বর'১৭ -এ প্রকাশিত) বলছে, সেই উগান্ডায়ই গত কয়েকমাসে শুধু চালের দাম গড়ে ৩০ শতাংশ বৃদ্ধির কারণেই ৫ লাখ ২০ হাজার মানুষ গরিব হয়ে গেছে।যার ফলে দারিদ্র্য বেড়েছে দশমিক ৩২ শতাংশ।গত ২৬ অক্টোবর'১৭ ঐ দেশেরই শেরপুর নামক একটি জেলায় ভাতের অভাবে কণিকা নামে এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছে।এতদসত্ত্বেও কী এমন ক্ষতি হয়েছে ? উগান্ডা তো অার এখনও সোমালিয়া হয়ে যায়নি।চেতনা নামক ট্যাবলেট খেয়েও তো দিব্যি বেঁচে থাকা যায়।কারণ এই উগান্ডারই বাণিজ্যমন্ত্রী পরামর্শ দিয়েছিলেন, “কম খান, ভাতের উপর চাপ কমান”।অার অর্থমন্ত্রী তো এক ধাপ এগিয়ে বলেছিলেন, “একদিন বাজারে না গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে”।
দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইউনিভার্সিটি অব সাউথ আফ্রিকা’, যার সিংহদ্বারে লেখা রয়েছে- “কোনো জাতিকে ধ্বংস করার জন্য পারমাণবিক হামলা কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের দরকার নেই।বরং সেই জাতির শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় প্রতারণার সুযোগ দিলেই হবে।কারণ এভাবে পরীক্ষা দিয়ে তৈরি হওয়া ডাক্তারদের হাতে রোগীর মৃত্যু হবে।ইঞ্জিনিয়ারদের দ্বারা দালান-কোঠা, ইমারত ধ্বংস হবে এবং অর্থনীতিবিদদের দ্বারা দেশের আর্থিক খাত দেউলিয়া হবে।এ ছাড়া বিচারকদের হাতে বিচারব্যবস্থার কবর রচনা হবে।সুতরাং শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ার মানে হলো একটি জাতির অবলু্প্তি।”
সেই উগান্ডারই শিক্ষাব্যবস্থা ভঙ্গুর প্রায় অবস্থায়, মেরুদণ্ডহীন হয়ে পড়ছে তদসংশ্লিষ্ট বড় কর্তাগণ।প্রশ্নফাঁসের মহোৎসব চলছেই।অার চলবেই তো, কারণ এই উগান্ডারই শিক্ষামন্ত্রী প্রশ্নফাঁস রোধে “ফেসবুক” বন্ধের পরামর্শ দিয়েছিলেন কিন্তু উনার এই মহামূল্যবান পরামর্শকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে।তাই তো তিনি বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজের অসহায়ত্বকে তুলে ধরে বলেছেন, “প্রশ্নফাঁস রোধে এমন কোনো চাবি নেই যা দিয়ে প্রশ্নফাঁস বন্ধ হয়ে যাবে।চাবি দিলেই প্রশ্নফাঁস বন্ধ হবে না”।সুতরাং, সেই দেশ তো সাম্প্রতিককালের পেয়াজের মূল্যবৃদ্ধিসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বেকারত্ব বৃদ্ধি, দুর্নীতির বিস্তার কিংবা বিচারব্যবস্থায় অসঙ্গতির মতো নানান ব্যাধিতে ভোগবেই।এ নিয়ে সাধারণ জনগণ ফেসবুকে জ্বালাময়ী পোস্ট দিয়ে গা চুলকাতে পারেন না।
তাই তো কবি বলে গিয়েছেন, “রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি” ?
[২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭ খ্রিস্টাব্দ]