চট্টগ্রামে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের নিরাপত্তা রক্ষীকে গলাকেটে হত্যার পর ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টায় নেতৃত্ব গিয়াস নামে ক্ষমতাসীন দলের এক নেতা। তিনি যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।
এছাড়া এ কাজে জড়িত রয়েছেন আরিফ নামে চট্টগ্রামের এক সাবেক মন্ত্রীর এপিএসের দেহরক্ষী।
ঘটনার পর ব্যাংকের গোপন ক্যামরায় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ দেখে ঘটনার হোতাদের শনাক্ত করে পুলিশ। পরে বিভিন্ন স্থান থেকে এদের মধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গিয়াস ও আরিফ ছাড়া গ্রেফতারকৃতের শিকার অন্য দু'জন হলেন, মাহবুব ও সাগর। গ্রেফতারের পর চারজনকেই ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে আল আরাফাহ ব্যাংকে ডাকাতি চেষ্টার পূর্বাপর সব ঘটনা ও ব্যাংকের নিরাপত্তা রক্ষী মো.ইব্রাহিমকে (৩৪) হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেয় খুনির দল।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় ওই ঘটনায় তাদের সঙ্গে মাসুদ নামে আরও একজন জড়িত ছিল। তবে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। অন্য সহযোগিদের গ্রেফতারের খবরে সে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে।
তবে এ চারজনই যুবলীগ নেতা গিয়াসের অনুসারী। জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশকে জানিয়েছে, মাহবুব ও সাগর সরাসরি খুনের সঙ্গে জড়িত। গিয়াস পুরো ঘটনার নেতৃত্ব দেয়। আরিফের বাসায় ব্যাংক ডাকাতির পরিকল্পনা হয়েছিল এবং ঘটনার পর খুনীদের নিজ বাসায় সে আশ্রয় দিয়েছিল।
ব্যাংকের ভিডিও ফুটেজ এবং আরিফ ও গিয়াসকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের পূর্ণ বিবরণ পেয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার (৭ মে) রাত ২টা ২৪ মিনিটের দিকে ব্যাংকের পেছনের দিকের জানালার গ্রিল কেটে তিনজন ভেতরে প্রবেশ করে। তিনজন হল, মাহবুব, মাসুদ ও সাগর। আর গিয়াস ছিল বাইরে তদারকির দায়িত্বে। পুরো ঘটনার নেতৃত্বদাতা গিয়াস।
তিনজন যখন ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করে তখন ক্যাশ শাখার সামনে মেঝেতে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন নিরাপত্তারক্ষী মো.ইব্রাহিম। ঢুকেই ঘুমন্ত ইব্রাহিমের মাথায় আঘাত করে মাসুদ। আঘাতের পর ইব্রাহিম ধড়মড়িয়ে উঠলে মাসুদ তার মাথা ও মুখ চেপে ধরে। মাহবুব তার দুই পা চেপে ধরে। আর সাগর গলা কেটে তাকে খুন করে।
এরপর সাগর নিরাপত্তারক্ষীর মোবাইল সেটটি নিজের হেফাজতে নেয়। পরে তারা ব্যাংকের ভল্ট ভাঙার চেষ্টা করে। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে তারা আবারও গ্রিল কাটা জানালা দিয়ে বেরিয়ে যায়। ব্যাংকের ভেতরে তারা ছিল ২৩ মিনিট। সব মিলিয়ে তাদের সময় লাগে ৪০ মিনিটের মত।
খুন হওয়া নিরাপত্তারক্ষী মো.ইব্রাহিম (৩৪) চট্টগ্রামের চন্দনাইশ পৌরসভার আলী আহমদের ছেলে। এ ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2015/05/16/284437#.VzxFwxKtLDf
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৯