ফেসবুক, ব্লগ, টুইটার সবখানেই শুধু ধর্ষণ ধর্ষণ অার ধর্ষণ।গত এক সপ্তাহে এ ধর্ষণ শব্দটা যতবার পড়েছি তা পুরো জীবনে পড়েছি কি না সন্দেহ।ধর্ষণে শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ২২ মিনিটে ১ জন নারী ধর্ষিত হয়।ধর্ষণের মত বর্বর ঘটনায় সোচ্চার এ দেশে ৯১ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হয়। ইংল্যান্ডে প্রতিনিয়ত প্রতি পাঁচজন নারীর মধ্যে একজন ধর্ষিত হচ্ছে, ফ্রান্সে তো ধর্ষণকে কোনো অপরাধ হিসেবে গন্যই করা হয় না প্রায়।অথচ মানবতার ধ্বজাদারী, নারী প্রগতিবাদী ঐ তিনটি রাষ্ট্রের প্রভাবশালী মিডিয়াগুলো ঘাটাঘাটি করে দেখুন তো কোথাও ধর্ষণের কোনো খবর পান কি না। বেশ নিশ্চিত ভাবেই বলতে পারি পত্রিকার হেডলাইন তো দূরের কথা ভেতরের পাতায়ও খুব একটা পাওয়া যাবে না।
এই ফেসবুক, ব্লগ, টুইটার অাজ ভরপুর "নারী জাগরণ কমিটির" সভাপতিদের পুরুষ বিদ্বেষী হিংস্বাত্বক বক্তব্যে ।পুরুষ জাতিকে যে যত গালি দিতে পারছে সেই যেন অাজ ততই প্রগতিবাদী সভ্যতার ধ্বজাধারী।চারদিকে চলছে পুরুষ সমাজকে গালি দেয়ার মহোৎসব। কিছু হাফ লেডিস মার্কা নিজের সত্তা ভুলে যাওয়া পুরুষ কিছু সংখ্যাক নারী সমাজের সংস্পর্শ কিংবা বাহবা কোড়াবার নিমিত্তে পুরুষ সমাজকে পশুর সাথে তুলনা করতে দ্বিধাবোধ করছে না।নারীর দেহ কিংবা অাত্বায় সে নিজেকে স্বপে দিতে গিয়ে নিজের পুরুষ সত্তাকে অাজ ভুলে গেছে।
বাংলাদেশে একটি ধর্ষণের ঘটনাকে পত্রিকার হেডলাইনে অার টিবির বিশেষ নিউজে প্রচার করে অামরা নিজেদের মানসম্মানকে উন্নীত করছি কি না তা ভেবে দেখার সময় এসেছে।মাসখানেক অাগে ধর্ষিত হওয়া একটি মেয়ের বাবা মা বিচার না পেয়ে মেয়েকে নিয়ে তিনজনই ট্রেনের নিচে পড়ে জীবনটাকে শেষ করে দিয়েছিল।তা নিয়ে এই সমাজকে তো জাগতে দেখিনী।কোনো মিডিয়ায় তা নিয়ে জোরালো অালোচনাও শোনা যায়নী।পুরুষ বিদ্বেষী এই নারী জাগরণ কমিটির সভাতিরা তখন কোথায় ছিলেন তা অাজ জাতির প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই হাফ লেডিস মার্কা পুরুষবিদ্বেষী খলনায়কদের বক্তব্যে কিছু সংখ্যক বালিকা সমাজ বেশ খুশি হয়ে বাহবা দিয়ে ভরসা রাখতে শুরু করেছেন।অথচ তারা জানে না,মার্কিনীদের মত নারী জাগরণের সভাপতিরাই সবচেয়ে বেশি ধর্ষণ করে নারীদের।একটা ফাকা রুমে অর্ধনগ্ন হয়ে বাতিটা অফ করে দেখুন না সেই রাজপথ কাঁপানো নারী জাগরণ বক্তা কতটা হিংস্র হয়ে ওঠে অাপনার ওপর।
ভারত ধর্ষণে চার নাম্বার রাষ্ট্র।শীর্ষে থাকা এক-দুই-তিনকে পর্দার অাড়ালে রেখে ভারতে ঘটা ধর্ষণের ঘটনায় সোচ্চার হয়ে ফলাও করে প্রচার করার মানেটাই বা কি তা বোধগম্য হয় না।সারা বিশ্বের কাছে ভারতকে একটি ধর্ষণ রাষ্ট্রের তকমা লাগিয়ে ধর্ষণে শীর্ষে থাকা রাষ্ট্রগুলোকে চোখের অাড়ালে রাখার পেছনে নিশ্চই কোনো কারণ রয়েছে?
নারীর প্রতি পুরুষের, পুরুষের প্রতি নারীর স্রষ্টা প্রদত্ত যে অাকর্ষণ বা জৈবিক চাহিদা তা পুরুষ বিদ্বেষী রাজপথ, ফেসবুক অার ব্লগ কাঁপানো বক্তব্য দিয়ে নিবারণ করা কারো পক্ষে সম্ভব না।একজন অর্ধনগ্ন নারীর স্পর্শ পাওয়ার পর যদি কোনো পুরুষের জৈবিক উত্তেজনা তৈরি না হয় তবে অামি বলতে পারি তার শারিরীক সমস্যা অাছে। তার জন্যে হারবালের টিকেট কেনা অতি জরুরী।অতএব এদেশীয় নারী সমাজকে মনে রাখতে হবে, অামেরিকান স্টাইলে পোশাক পরে ধর্ষণের পর সৌদিঅারবী স্টাইলে বিচার চাইলে চলবে না।সৌদিঅারবী স্টাইলে বিচার পেতে হলে পোশাক,চাল-চলনেও সৌদি অারবী স্টাইলটা ধরে রাখতে হবে।
"ধর্ষণের স্বীকার হওয়া দুই তরুণী এত রাতে হোটেলে কেন গেল? " এরকম প্রশ্ন নাকি করা যাবে না। যারা এরকম প্রশ্ন করছে তাদের বেশ অশ্লীল ভাষায় গালি দেয়া হচ্ছে ঐ পুরুষ বিদ্বেষী সমাজ হতে।প্রশ্নটা যেই করোক তা কিন্তু অবান্তর কিছু না।দুটা ভদ্রঘরের কিশোরী মেয়ে রাত বারটায় দুজন যুবকের সাথে হোটেলে যাওয়ার প্রশ্নই অাসতে পারে না।অার তাঁরা যদি ধর্ষণের স্বীকার সত্যিকার অর্থেই হয়ে থাকে তবে একমাস পর কেন থানায় অভিযোগ করে? নিশ্চই তারাও একই পথের পথিক ছিল বলেই এমনটা ঘটেছে এ অনুমান করা যায়। শুধু দু'জন ধর্ষক যুবকের নয় ঐ দুই কিশোরীরও বিচার হওয়া উচিত কি না তা ভেবে দেখার বিষয়।
রেইন ট্রি হোটেলে ঘটা এই অপরাধ কর্মের কঠোর হস্তে বিচার হোক তা সকলেরই কাম্য।তবে কিছু অপরাধীকে ছাড় দিয়ে কিছু অপরাধীকে একতরফা শাস্তি প্রদান করা সত্যিকার অর্থে কতটা ন্যায় বিচার হবে তা প্রশ্নাতীত রয়ে যায়।
এই পুরুষ বিদ্বেসী মনোভাব অার দুটো ধর্ষককে শাস্তি দেয়ার ফলেই জাতিকে ধর্ষণের মত কালো ব্যাধি মুক্ত করা সম্ভব নয়। এর জন্যে প্রয়োজন প্রত্যেকে নিজ অবস্থান হতে এ সমাজকে ভিনদেশি অপসংস্কৃতি চর্চায় অনুৎসাহীত করে নৈতিকতার অালোকে সচেতনতা গড়ে তোলা। তবেই জাতি উপহার পেতে পারে একটি ধর্ষণমুক্ত,শান্ত ও সুখকর সমাজ।