র্যাগিং নিয়ে ইদানীং বেশ তুলকালাম
চলছে কিছু সোসাল মিডিয়া ও নিউজ
পোর্টালে।আমাদের সোসাইটিতে বৈধ
অপরাধের অন্যতম একটি র্যাগিং।
.
.
র্যাগিং সিনিয়র-জুনিয়রদের পরিচিত
হবার একটি মাধ্যম। এটিকে অনেকেই
অপরাধ মনে করা তো দূরের কথা একটি
অন্যতম বৈধ ও কল্যাণকর সিস্টেম হিসেবেই
ধরে নেয়। যার ধরুন বিশ্ববিদ্যালয়ের
জুনিয়ররা সিনিয়রদের খুব সহজেই চিনতে,
জানতে এবং শ্রদ্ধা করতে শেখে।
.
.
কিন্তু আজকাল বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে
র্যাগিং হয়ে দাঁড়িয়েছে অনেক
অপ্রীতিকর ঘঠনার একটি জ্বলন্ত কারণ।কিছু
অসাধু, বিবেকহীন অপরাধী
সন্ত্রাসীগোষ্ঠী র্য্যগিংকে
বিভিন্নভাবে অপরাধে কাজে লাগাচ্ছে।
জুনিয়রদের নির্যাতনের পর সেটিকে
র্য্যাগিং হিসেবে চালিয়ে দিয়ে পার
পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ।
.
.
গত বৃহস্পতিবার এরকমই একটি ন্যাক্কারজনক
ঘঠনা দেখা গেল শাহজালাল বিজ্ঞান ও
প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
সিনিয়র পাঁচ ছেলে
জুনিয়র এক মেয়ে শিক্ষার্থীর ওপর
র্যাগিংয়ের নামে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠেছে ।শুধু
তাই নয় এঘটনায়
বাধা দেয়ায় সিনিয়র শিক্ষার্থীদের ওপর তারা
হামলা করে।যৌন নিপীড়নের স্বীকার
মেয়েটা এক সময়ে ক্যাফেটেরিয়ায়
অজ্ঞান হয়ে পড়লে
বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে
প্রাথমিক চিকিৎসার পর বাসায় পৌছে
দেয় কিছু শিক্ষার্থীরা।লজ্জায় মুখ
দেখাতে না পেরে এখন ক্যাম্পাসে আসা
বন্ধ করে দিয়েছে সে।শুধু ঐ মেয়েকে নয়
তার সহপাঠী কয়েকটি ছেলেকেও কচ্ছপের
মত মাটিতে বসিয়ে নির্যাতিত হতে দেখা গেল।
.
.
ওভাবে র্য্যগিংয়ের নামে প্রতিনিয়ত
ঘঠে যাচ্ছে
জুনিয়রদের নির্যাতন।এমনকি শারীরিক,
মানষিক ও যৌন নির্যাতন সহ্য করতে না
পেরে অনেকেই পড়াশোনা পর্যন্ত ছাড়তে
বাধ্য হয়।
.
.
বছর দুয়েক আগে চবিতে ভর্তি পরীক্ষার
সময়ে দেখলাম র্য্যগিংয়ের স্বীকার একজন
পরীক্ষার্থী ছেলেকে জাঙ্গিয়া পরে পুরো
শীতের রাতে দাঁড়িয়ে থাকতে ।জাবিতে
ভর্তি পরীক্ষায় সিনিয়র এক আপু পাবলিক
প্লেসে একজন পরীক্ষার্থীকে কান ধরে
উঠবস করাচ্ছে ।
.
.
বিশ্ববিদ্যালয়
ক্যাম্পাস মুক্তবুদ্ধি চর্চার অবারিত
ক্ষেত্র। জীবন এখানে এসে পাখা মেলতে
শুরু করে। ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ
সম্পর্ক, আড্ডা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের
মধ্য দিয়ে মানসিকতার প্রসার ঘটে।
বিকাশ ঘটে নেতৃত্বের। প্রগতিশীল
চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের
হাজারো স্বপ্ন সারথি।শিখতে শুরু করি
সভ্যতা, অন্যায়ের বিরুদ্ধাচরণ, ন্যায়ের
পক্ষপাতগ্রহণ।
.
অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হওয়া
সত্তেও আমরা একটি অসভ্যতা ও বর্বরতাকে
বৈধতা দিচ্ছি। নির্যাতনকে র্যাগিং
হিসেবে চালিয়ে দিচ্ছি।
.
পরিচয় পর্বের জন্যে আছে ওরিয়েন্টেশন।
একজন ছাত্রীর মোবাইল
কেড়ে নেয়া। এসএমএস চেক করা।
আপত্তিকর কথা বলা। বিশেষ একটি গোপন
বিষয় চেক করার ইচ্ছা পোষণ করা। ডেকে
নিয়ে বারবার হয়রানি করা, এটি কোনো
সভ্যতা হতে পারে না।
.
.
অতএব এখনই প্রয়োজন ওদের বিষধাত ভেঙ্গে
দেয়া। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থীদের মানবতাবাধে ও সভ্যতার
লালনে র্য্যাগিং এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে
হবে।এক একটি ডিপার্টমেন্ট করে প্রতিটি
বিশ্ববিদ্যালয়কে র্য্যাগিং মুক্ত
বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণায় এগিয়ে আসতে
হবে। তবেই হয়ত তার মত আর
কোনো বোনকে যৌন নির্যাতনের স্বীকার
হতে হবে না।ছাড়তে হবে না হাজারো
স্বৃতি বিজড়িত প্রীয় ক্যাম্পাস।