ধারাবাহিক ব্লগার হত্যার পেছনে কারণ খুঁজতে গিয়ে রিজাল্টটা একমাত্র মৌলবাদের বিরোধীতাই পেলাম।দেশে এ পর্যন্ত যত ব্লগার হত্যা হয়েছে তার সবই নাকি মৌলবাদের ঘোর বিরোধীতার জন্যে।
.
আজ মৌলবাদ নিয়ে কিছুটা লিখবার প্রয়াস পাচ্ছি। এ শব্দটা নিয়েই যত্তসব কাণ্ড। কারো কাছে শব্দটা নর্দমার কীটের চেয়েও ঘৃণার আবার কারো কাছে জ্বলে ওঠবার এক অনন্য এলিমেন্ট।আসলেই শব্দটা কতটা নেতিবাচক বা ইতিবাচক তা দেখবার বিষয়।
.
মৌলবাদ শব্দটা মুক্তমনাদের একটু বেশিই ইউজ করতে দেখা যায়। বিশেষ করে তসলিমা আপুর লেখায় একটু বেশিই পাওয়া যায়।কথায় কথায় মৌলবাদীদের গালি দিয়ে শব্দটিকে এতটা নেগেটিভ করবার চেষ্টা তার মত খুব কম লোকই করেছে।
.
লম্ভা ভূমিকা না টেনে সরাসরি মূল টপিকসে চলে যাবার চেষ্টা করি।মৌলবাদ শব্দটিকে ভাঙ্গলে মূল + মতবাদ = মৌলবাদ। এ মূল বলতে আপনি যে আদর্শ নিয়ে লালিত হবেন, যে কোন কাজের পূর্বে যে বিষয়টিকে আপনী প্রথমেই বিবেচনা করবেন সেটিই।
.
উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টা অারেকটু ক্লিয়ার করা যাক। ধরুন আপনি বিয়ে করতে চান। একজন পাত্রী /পাত্র খুঁজছেন এবং কোনো এক জায়গায় অপিরিচিত কাউকে চস হয়ে গেল। প্রথমেই কি বিবেচনা করবেন ? পাত্র/পাত্রীর ধর্ম ? নাকি তার চরিত্র,সৌন্দর্য এবং সোসাল স্টেটাস? এখন আপনী খোঁজ নিয়ে দেখলেন তার ধর্ম আপনার ধর্মের সেম। বিষয়টি কনফার্ম হয়ে দেন দেখলেন তার চরিত্র এবং সোস্যাল স্টেটাস যথেষ্ট ভালো। তাই তাকে বিয়ে করতে আর লেট করলেন না। এখন অামি বলব আপনী মৌলবাদী।
.
আবার দেখলেন সে যতেষ্ট চরিত্রবান, সোস্যাল স্টেটাস ভালো কিন্তু সে আপনার ধর্মের নয়। ধর্মকে অগ্রাহ্য করে তাকে বিয়ে করে নিলেন। বুঝতে হবে আপনীই মুক্তমনা নামধারী মূত্রমনাদের দলে ।
.
এভাবেই যে কোন কাজে ধর্মকে যারা প্রথমেই বিবেচনা করে এরাই মৌলবাদী।আবার যারা ধর্মকে অগ্রাহ্য করে যুক্তির আলোকে নিজেকে পরিচালিত করবার চেষ্টা করে এরাই নাস্তিক্যবাদী। সেটি হোক না যে কোনো কাজের ক্ষেত্রে।
.
মৌলবাদি যে কোন ধর্মের হতে পারে। বাংলাদেশে অনেকটা ইনডিকেট করা ইসলামী শরিয়াহের অনুসারীরাই মৌলবাদি। অথচ মৌলবাদি, সে হতে পারে খৃষ্টীয় মৌলবাদি, হিন্দু মৌলবাদি, বৌদ্ধ মৌলবাদি, ইসলামী মৌলবাদি তথা যে কোনো আদর্শীয় মৌলবাদি।
.
এখানে এসে আমার একটি নিদ্রিষ্ট অবস্থানে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করছি।তাই ইসলামি মৌলবাদের পক্ষে স্টিল হয়ে দাঁড়াচ্ছি।কারণ ইসলামি মৌলবাদকে অস্বিকার করা মানেই নিজেকে অমুসলিম ও ঈমানহীন ভাবার নামান্তর কি না তা শরিয়াহ বিশেষজ্ঞদের গবেষণার বিষয়।
.
এখন আপনী বেছে নিন মৌলবাদ নাকি নাস্তিক্যবাধী হবেন। মৌলবাদি হলে এ দেশের কাছে নিরাপদ । রাতে বিরাতে আমাদের মত নির্দ্বিধায় একাকী যেকোনো রাস্তায় চলাফেরা আপনার জন্যে উন্মোক্ত।
.
অন্যতায় রাস্তায় বের হওয়াতো দূরের কথা বাসায় বসে থেকেও নিরাপদ নন।আর তারাতো আরো অনিরাপদ যারা নাস্তিক্যবাধী আদর্শে শুধু বিশ্বাসীই নহে বিভিন্ন ব্লগ ও সোস্যাল মিডিয়ায় মৌলবাদের বিরোধীতা করে যাচ্ছেন।
.
আপনী ধর্মকে যেনতেনভাবে গালি দেবেন, অন্যের ধর্মানুভূতিতে আঘাত হানবেন,মৌলবাদীদের তিরস্কৃত করবেন আবার থানায় এসে নিরাপত্তা চাইবেন এ কেমন কথা।থানা কি অপরাধীদের আশ্রয় কেন্দ্র ?
.
আর এখন তো ধর্ম বলতে একমাত্র ইসলামকেই গালি দেয়া। ইসলামী সংস্কৃতি তথা গোঠা ইসলামী শরিয়াহের রুলস নিয়ে ব্লগে কটাক্ষ করবার একটি সহজবোধ্য সংস্কৃতির চর্চা চলছে।
.
তবে এরকম একজন মানুষকে বাসায় ঢুকে নির্মমভাবে হত্যা করা ইসলামী শরিয়াহে কতটা বৈধ তাও ভেবে দেখবার বিষয় ।যদিও বিষয়টি নিশ্চই এ দেশের মুফতি, মুহাদ্দিস তথা ইসলামী শরিয়াহ বিশেষজ্ঞদের গবেষণার বিষয়। স্বল্প জ্ঞানে এ বিষয়ে আলোকপাত করে নিজেকে সমালোচিত করবার চেষ্টা করে লাভ আছে বলে মনে হয় না।
.
আসলে কথায় কথায় মৌলবাদীদের গালি দিলে কিছু নিদ্রিষ্ট সোসাইটি থেকে বাহবা পাওয়া যায় ঠীকই কিন্তু বাংলাদেশের মত মুসলিম অধ্যুষিত একটি দেশে নিরাপদ থাকা যায় না।
.
খুব ইচ্ছে করে একজন খাঁটি ইসলামী মৌলবাদি হতে।যদিও এখনো পুরোপুরি হয়ে ওঠতে পারিনী।মৃত্যুর আগে আগেই যেন হয়ে ওঠতে পারি এ প্রত্যাশা রইল আল্লাহর কাছে।
.
আশা করি এতক্ষণে কিছুটা হলেও মৌলবাদের মিনিংসটা অনুধাবিত হয়েছে