তুমি বলো শব্দরা কোথায় থাকে? আমার
কবিতার শব্দরা কোথা হতে ধরা দ্যায়।
আমি বলি শব্দরা আসে তোমার উষ্ণ নিঃশ্বাস
হতে, তোমার ছায়া হতে, তোমার হাসি হতে,
তোমার বিষণ্ণতা হতে, তোমার এলোচুলে
চুম্বনরত প্রজাপতি হতে, দূর পাহাড়ের চূড়া হতে
স্বর্গ হতে, কখনো বা নরক হতে, শব্দ আসে
নদীর মতো প্রশান্ত ভঙ্গীতে, শব্দ আসে
নিরিবিলি চাঁদ সুর্যের ঔরষ- জোছনা হতে,
শব্দ আসে, আসতে থাকে...
আমাদের যৌথ প্রযোজনার খামার ভালোবাসা
হতে, আলোছায়ার অদ্ভুতুরে সোহাগে
সকালের নাতিশীতোষ্ণ রোদ হতে, শব্দ আসে
শব্দ আসে, শব্দ আসতে থাকে...
আসলেই কী শব্দ আসে, শব্দরা ধরা দ্যায়?
এই যে তোমার সাথে কথোপকথন, গভীর রাতে
ফিসফাস, বেহালার সুরের বিকেল
এ্যাসট্রেতে জমতে থাকে সিগারের স্ট্যাব
তবুও তো ভেবে চলে শব্দের জালের বুননে
যুতসই উপমা কতোটা কী...
আসলে শব্দ নয়, কোন উপসংহারও নয়
নঞর্থক কিছু ভাবনা আসে।
কিন্তু কিছুই কিছু না। সব কর্পুরের মতো
উবে যায়, হারিয়ে যায়।
অথচ আমাদের কোমল আলাপ চারিতায়
কতোই না শব্দের ব্যবহার! কখনো বা গোলাপ জলে
ভিজিয়ে রাখা উচ্ছ্বাসে আলোকিত বিছানায়
বাসরের উৎসব, ঘামফুল আরো কতো কী!
এইসব কোমল শব্দে, বাবার কাঁধে চড়ে
আরামদায়ক কাশফুলের নরম ছোঁয়া হবে
কবিতার মসৃণ পঙক্তি, ডাহুকের আবেশি
সুর হবে কবিতার অন্ত্যমিল, এভাবে ভাবি
কবিতার দীর্ঘতম সমাবেশ।
প্রতিদিন মানুষ মরছে, পঙ্গু হচ্ছে কতশত।
কয়টা গাড়ী ভাঙলে বা পোড়ালে একটা আন্দলনে
জনসম্পৃক্ততা প্রকাশ পায় এসব প্রতিদিনের
নিউজ হয়,টিভি চ্যানেলের টিআরপি বাড়ায়।
আমি তাই নিউজমুখী নই। দূরে থাকি
একা একা রাস্তায় হাঁটি, নিজের সাথে কথা বলি
প্রিয়তমার প্রতি সর্বশেষ কী লিখেছি বা
কী লিখবো তা আওড়ে যাই আনমনে।
''স্বপ্ন শুভ হোক, শুভরাত্রি।''
---এই ছিলো প্রিয়তমার প্রতি সর্বশেষ কথা।
ফিনফিনে রোদের আভা ছড়িয়ে আলোর দেবতা
জেগে উঠেছে, নিয়ে ধোঁয়ার কুন্ডুলী।
যেন ফুজিয়ামা নূতনভাবে জেগে উঠেছে
জানন দিয়েছে তার অস্তিত্বের কথা
জ্বলে জ্বালিয়ে চারদিক অঙ্গার করে দিবে...
আমাদের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে
আছড়ে পড়ছে আমাদের গায়ে, তাই
পাড়ি জমাতে হয় দূরের পথে, নদীর এপাড়
ছেড়ে ওপাড়ে অথবা কাঁটাতার ডিঙাতে হয়।
প্রিয়তমা, তোমার শরীরে কতটা ক্ষত হয়েছে
সেরে উঠবে কী দ্রুত, আমাদের শল্যচিকিৎসা কী পারবে
তোমাকে সারিয়ে তোলতে, না দ্রুত ফুরিয়ে
যাবে তোমার আয়ু, জান্তব অসুরের সাথে
না পেরে বুঝি আমার কবিতা থেকে ধীরে
ধীরে হারিয়ে যাবে, হয়ে উঠবে শূন্যতা!
আমাদের ঘাসফুল সংসারে অথবা ফড়িঙ
জীবনে চলে আসে ত্বত্তকথার সরবারাহ
আর মুছে যায় একাদশী চাঁদের আলোয়
আমাদের কবিতায় ধ্বনিত সব পঙক্তিরা
বিভেদের চূড়া হা করে থাকে, আমাদের
প্রোথিত থাকতে হয় দুটি শব্দে সংখ্যালঘু
আর সংখ্যাগুরু। আমাদের শরৎ এবঙ
অন্যান্য ঋতুগুলো দু'টোশব্দে করায়ত্ব হয়ে যায়।
অথচ প্রিয়তমা, তোমার ঘরে আগুন দিয়ে
যারা তোমার ঘুমকাতুরে সন্তানের শরীর
ঝলসে দিয়েছে, তোমার নাভীমূল থেকে
কেড়ে নিয়েছে সতীত্বের তিলক, তারা
হয়ে যাচ্ছে সমাজাধিপতি, সংখ্যাগুরু!
ভেড়ার পালের গোদা, তোমাকে ভুলে যাই
এবং কবিতায় সংযোজন করি দুটি শব্দ
সংখ্যাগুরু এবঙ সংখ্যালঘু!
উৎসর্গঃ প্রিয় আরমান ভাই (ব্লগ নিক ডট কম ০০৯) উৎসর্গ দেখে ভরকে যাবার কিছু নেই। আমি লাস্ট কবিতা লিখছিলাম মাস দুই আগে। এর মধ্যে লিখতে না পারা নিয়ে আরমানের ভাইয়ের সাথে অনেকবার কথা হয়, এবং তখনি ওনাকে বলি যদি কোন কবিতা লিখতে পারি তবে তা ওনাকে উৎসর্গ করবো এবং তাই করলাম।