-----
ফোন দিচ্ছি ধরছেনা,রাগ হচ্ছে ভীষণ।এতো অভিমানের কি আছে?
আমিতো বলেই ছিলাম নিহালের সাথে আছি,এখন ফোন ধরতে পারবোনা নিহাল রাগ করে ওর সামনে অন্য মেয়ের ফোন ধরলে নিহাল রেগে যায়,তখন কয়েক সপ্তাহ লাগে নিহালের রাগ ভাঙ্গাতে,আপনমনে কথাগুলো বলে রাগে গজরাতে থাকে প্রীতম।
বার বার এতো অভিমান করে বলেই ওর নাম প্রীতম অভিমানি দিয়েছে।পাগল একটা মেয়ে,এখনো নাকি পুতুল খেলে !মহারাণীর মেজাজমর্জি সিলেটের আবওহাওয়ার চেয়েও পরিবর্তনশীল।এই রাগ করে তো,এই হাসে।অসম্ভব রকমের এই পাগলীর সাথে প্রীতমের
ফেসবুকে পরিচয়।ওর এক ফেসবুকে পাতানো বোনের বান্ধবী,রিকুয়েস্ট ওই দিয়েছিলো,অ্যাকসেপ্টও হয়েছিল।ফেক আইডি ভেবেছিলো,নাম ছিলো মায়াবতী শিখরিণী।অদ্ভূত লেগেছিল ওর নামটা কখনো শোনেনি।
ভাবতে থাকে প্রীতম-"আমি তখন ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি,অভিমআনির সাথে কথা বলার চেষ্টা করতাম।মেয়েটা আমাকে প্রায় এড়িয়ে যেত।মেসেজের উত্তর ঠিকমত দিতোনা।আমিও একসময় বিরক্ত হয়ে যেতাম।
ও হ্যাঁ,পাগলের নামটাই বলা হয়নি রোদেলা ছিলো ওর নাম।ভীষণ পুড়িয়ে দেওয়া চৈত্রের একখন্ড রোদ।অদ্ভূত এই পাগলীটার সাথে আস্তে আস্তে আমার সখ্যতা বাড়তে থাকে।মেয়েটার মধ্যে যেটা ছিলো খুব মায়া ছিলো,মায়াবতী নামটা যথার্থই ঠিক ছিল সেটা পরে বুঝেছিলাম।
অনেকক্ষণ পর অভিমানি ফোন ধরলো।
-হ্যালো?
-হু বলো
-ফোন ধরোনা কেন?
-এমনি,শরীর ভালো নেই।
-কেন?কি হয়েছে?
-নিহাল আপু কেমন আছে?
-জানিনা,কথা ঘোরাচ্ছো কেন?
-ওওওও
-রাখলাম আমি এগুলো শোনার জন্য আমি ফোন করিনি।
বলে ফোনটা কেটে দিলাম,এবার ওপাশ থেকে ফোন আসছে।ফোনটাই বন্ধ করে দিলাম।বুঝুক মজা।নিহালের জন্য একটা গিফট কিনতে হবে।
----
অদ্ভূদ একটা কষ্ট হচ্ছে রোদেলার,প্রীতম বার বার এরকম কেন করে।কাল কেমিস্ট্রি পরীক্ষা,বই খোলা কিচ্ছু পড়তে পারছেনা।টপটপ করে পানি পড়ছে চোখ দিয়ে।এতো জ্বর প্রীতমের মনেই নেই জ্বরের কথা!পরশুই জ্বরের কথা বলেছে,আর আজ? আর কেনইবা মনে করবে প্রীতম রোদেলার জ্বরের কথা?রোদেলা তো প্রীতমের গার্লফ্রেন্ড না,ওতো নিহাল না যে শতবার রাগ করলেও প্রীতম রাগ ভাঙ্গাতে ছুটে যাবে।ও রোদেলা,ও তো পাগল একটা মেয়ে!প্রীতম তো ওকে একজন ভালো বন্ধু মনে করে,ওর কি আসে যায় রোদেলা বাঁচলো না মরলো?
বুক ভেঙ্গে কান্না আসতে থাকে রোদেলার,এরকম ভুল কি করে করলো।অচেনা না দেখা কাওকে কি করে ভালবাসলো বোকার মতো?রসায়ন বইটায় মাথা রেখে অঝোরে কাদতে থাকে রোদেলা।বাইরের বিকেলটাকে খুব শূণ্য,বিষাদময় লাগে।
----
কয়েকদিন খোজ নেইনা, পাগলীর খবরও নেইনা।মনমেজাজ কিচ্ছু ভাললাগছেনা,নিহালের সাথে তুমুল ঝগড়া হয়েছে।রোদেলাকে ফোন দেওয়া যাক।যতবার নিহালের সাথে ঝগড়া হয়েছে প্রতিবার রোদেলা দুজনকেই মিলিয়ে দিয়েছে।রোদেলার মতো একটা মেয়েকে বন্ধু হিসেবে পেয়েছে এটা ওর ভাগ্য।সবসময় প্রীতমকে সাপোর্ট দেয় রোদেলা যেভাবে,নিহাল কেন,প্রীতমকে আজ পর্যন্ত কেউ এতোটা মানসিক সাপোর্ট দেয়নি।এতো ভাল একটা মেয়েকে কিনা কেউ কষ্ট দিয়েছে।ওর স্ট্যাটাস গুলো পড়লে মনে হবে,রোদেলার কেউ মন ভেঙ্গে তছনছ করে দিয়েছে।অসম্ভব ভালো লেখার হাত মেয়েটার,এতো ভালবাসে যাকে সে নাকি জানেনা!!
বার বার জানতে চেয়েছি ছেলেটা কে?মেয়েটা বলতেই চায়না
ধুর!ফোন কেন ধরছেনা মেয়েটা?আচ্ছা ওর না জ্বর ছিলো? ইশশশ খোজ নেওয়া উচিত ছিলো।নিজের উপর চরম বিরক্ত হলো প্রীতম,কি করে ও হ্যা?ওর একজন কাছের বন্ধু সে ওর খোজ নেওয়ার প্রয়োজন বোধ ও করেনা।
আকাশটা কালো হয়ে আসছে,এক্ষুণি জোর বৃষ্টি নামবে।হাতের সিগারেট টা ফেলে বাসার দিকে হাটতে লাগলো প্রীতম।
----
প্রীতম বার বার ফোন দিচ্ছে,ধরতে মন চাচ্ছে আরতো কখনো কথা হবেনা,ধরবে রোদেলা প্রীতমের ফোনটা?
না থাক,ব্যাগ গুছানোয় মন দিলো রোদেলা।ভীষণ কাঁদতে ইচ্ছে করছে,বাসায় এতো মানুষ কোথাও একটু লুকিয়ে কাঁদতে পারলে শান্তি হতো!পরশু ফ্লাইট।রোদেলার ভিসা হয়ে গেছে,চলে যাচ্ছে আমেরিকা চিরকালের মতো।কি হবে এখানে থেকে? বার বার প্রীতমকে অন্য কারও সাথে দেখতে কষ্ট হয়,রোদেলা চায়না প্রীতম আর নিহালের মাঝখানে থাকতে।চলে যাবে রোদেলা,হ্যাঁ চিরকালের মতো।
----
আচ্ছা মেয়েটা চলে যাচ্ছে কেন??প্রীতম কি আটকাবে?কেন আটকাবে? রোদেলাতো নিজের ক্যারিয়ারের কথাটাই ভাবছে,ওর কথা তো ভাবছেনা!
স্বার্থপর মেয়ে একটা ওর কথা একবারও ভাবলোনা।বোঝার চেষ্টাও করলো না প্রীতমকে। আচ্ছা
রোদেলাকে বলবে ও,যে হঠাৎ করে রোদেলার জন্য ওর কষ্ট হচ্ছে,ভালোবেসে ফেলেছে রোদেলাকে?
কেমন হবে সেটা?রোদেলা কি ওকে খুব খারাপ একটা ছেলে ভাববে?যে নিজএর গার্লফ্রেন্ডকে ছেড়ে ওকে ভালোবেসে ফেলেছে মনের অজান্তেই।
আচ্ছা একটা ফোন তো দেই
-এই কোথায় তুমি?
-প্রীতম এখন কেন ফোন দিচ্ছো,রাত ১টায় আমার ফ্লাইট আমি রেডি হচ্ছি।
-তোমাকে একটা কথা বলার ছিলো,আচ্ছা ঠিক আছে সাবধানে যেও।
-কি বলবে বলো?
-না, না কিছুনা! তুমি সাবধানে যেও,ভালো থেকো রোদেলা।
-আচ্ছা তুমিও ভালো থেকো,প্রীতম।
রেখে দিলাম ফোনটা,সবাই স্বার্থপর।নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে,নিজের নতুন জীবন নিয়ে ব্যস্ত রোদেলা।সেই জীবনে প্রীতমের জায়গা কোথায়? না,আর কখনো ও রোদেলার সাথে কথা বলবেনা।ফেসবুকে লগ ইন করে রোদেলাকে ব্লক করে দিলো ভাবলো কোনদিন আর রোদেলার কথা ভাববেও না।ছি,ছি এরকম একটা স্বার্থপর মেয়ের জন্য কিনা ও নিহালের মতো একটা মেয়েকে কষ্ট দিতে যাচ্ছিলো?
নিজেকে স্বান্তনা দিলো প্রীতম ,যা হয়েছে ভালই হয়েছে।
সারাসন্ধ্যা এলোমেলো ভাবে এদিক সেদিক ঘুরে বেড়ালো প্রীতম,রাতের আকাশে মাথার উপর দিয়ে প্লেনটাকে চলে যেতে দেখলো।
----
এয়ারপোর্টে অপেক্ষা করছে,সবার কাছ থেকে বিদায় নেওয়া হয়ে গেছে।রিপোর্ট টা এখনো ব্যাগে আছে।কাওকে দেখায়নি রোদেলা। হার্টে একটা ছিদ্র,খুব বেশইদিন আর বাঁচবেনা রোদেলা।নানিকেও বলেনি,বয়স হয়েছে খবরটা সহ্য করতে পারবেনা।মা বাবাকেও বলেনি রোদেলা,মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে,আরো দুটও ছোট ছোট ভাইবোন আছে ওর।ওর চিকিৎসাতে বাবার সব টাকা পানির মতো খরচ হয়ে যাবে।এই স্কলারশীপ টা নিজের মেধার জোরে পেয়েছে ,হাসলো মনে মনে ভালই হয়েছে সবার কাছ থেকে চলে যাচ্ছে।
বাবার মুখটা মনে করার চেষ্টা করলো,খুব কি মন খারাপ হচ্ছিলো বাবার?বোনটার কি খারাপ লাগছিলো?
রোদেলার নিজেরও কম কষ্ট হচ্ছেনা।আচ্ছা প্রীতমকে ফোন করবে?শেষবারের মতো?
সারাএয়ারপোর্ট এতো বড় জায়গা,এত ভিড়েও খুব একা লাগছে নিজেকে!চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে।কি করছে প্রীতম এখন?নিহালের সাথে কথা বলছে নিশ্চয়ই।হাতের নীল ফোনটার দিকে তাকালো,নষ্ট হয়ে গেছে একবছর হতে চলছে তবু যত্ন করে তুলে রেখেছে রোদেলা।প্রীতমের সাথে থাকাকালীন শেষ স্মৃতি।কখনো তো দেখা করা হয়নি ,নিজের চোখে কখনো দেখেনি।ইচ্ছে করেছে অনেকবার,বেশি দূর্বল হয়ে যাওয়ার ভয়ে কখনো দেখা করেনি রোদেলা।
আজ ফোনটার দিকে তাকিয়ে পুরোনো ধূলো জমা স্মৃতিগুলো আরো বেশি করে মনে পড়ছে।
এয়ারপোর্টের অ্যানাউন্সমেন্ট শোনা যাচ্ছে উঠতে হবে,চলে যেতে হবে ওকে।প্রীতমকে ছেড়ে সারাজীবনের মতো।
সারাজীবন?
খুব ব্যাঙ্গাত্মক লাগছে আজ কথাটা,ডাক্তার বলে দিয়েছে চিকিৎসা না করালে বড় জোর আর একবছর।নিজের মনেই হেসে উঠলো।অনন্ত সারাজীবনতো আর প্রীতমকে ছেড়ে থাকতে হবেনা।
আর দেরিনা না করে ব্যাগ-লাগেজ নিয়ে বোর্ডিং পাসের লাইনের দিকে এগোলো রোদেলা।
----
একবছর পর..
দরজা নক করছে কে?এতো সকালে?
প্রীতমের খুবই বিরক্ত লাগলো,সকাল সকাল ঘুম ভাঙ্গানোর মানে কি?সারারাত নিহালের সাথে কথা বলেছে,একটুও ঘুমোয়নি।তার উপর একটা আননোন নাম্বার এতোবার ফোন দিচ্ছিলো।
মুখে পানি দিয়ে দরজা খুললো,পোস্টম্যান দাড়িয়ে।আরে আজকালকার যুগে কে চিঠি লেখে?
না,চিঠি না
পার্সেল!
পার্সেল আবার কে পাঠালো ওকে?সাইন করে বিদায় করলো পোস্টম্যানকে।খুলে দেখলো চকলেট কালারের একটা ডায়েরী,সাথে একটা চিঠি।নাম লেখা মেঘলা!রোদেলার ছোট বোন,চিঠিটা তাড়াহুড়ো করে পড়তে লাগলো।
----
মুখোমুখি কফিশপে বসে আছে,মেঘলার দিকে চোখতুলে তাকাতে পারছেনা প্রীতম।ঝাপসা লাগছে চারপাশ,তীব্র অপরাধবোধ কাজ করছে।
-ভাইয়া জানেন আপু যখন ফিরে এলো তখন তাকানো যায়না ওর দিকে,চিকিৎসা করতেও মানা করে দিয়েছিলো।কাওকে বুঝতেও দেয়নি কি কঠিন অসুখ বাসা বেধেছে শরীরে।সারাক্ষণ আপনার কথা বলতো,আপনাকে ও শেষ সময়ে কত খুজেছে।খুব দেখতে চাইতো আপনাকে,খুব বোকা ছিলোতো, কাঁদতো আপনার জন্য।শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আপনার নাম নিচ্ছিলো।
বলতে বলতে কেঁদে ফেলে মেঘলা।
-আপনার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি,ভাইয়া মনে আছে আপনার ?আমি দুমাস আগে কতবার আপনাকে ফোন দিয়েছিলাম।আপনি আমার পরিচয় জানার পরও আপনি এড়িয়ে গেছেন।
মনে আছে প্রীতমের অনেকবারই ফোন দিয়েছিলো,রোদেলার বোন বলে ও ইগনোর করে গেছে।তখন ভেবেছিলো রোদেলা নতুন করে বোনকে দিয়ে যোগাযোগ করতে চাচ্ছে।
-ভাইয়া,আপু আপনাকে ডায়রীটা দিতে বলেছিলো,ওর শেষ ইচ্ছে ইচ্ছে ছিলো যেন আপনাকে ডায়রীটা দেওয়া হয়।
মেঘলা চলে গেল,গত দুদিনে বারবার ডায়রীটা পড়েছে প্রীতম।যতবার পড়েছে চোখ ভিজে উঠেছে।এতো অভিমান ছিলো রোদেলার কখনো বলেনি নিজের ভালোবাসার কথা।বন্ধু হয়ে ছায়ার মতো সাপোর্ট দিয়ে গেছে ওর মতো জেদী,অহংকারী একটা ছেলেকে।বারবার ওরসাথে খারাপ ব্যবহার করেছে,কতো কষ্ট পেয়েছে মেয়েটা,একটুও বুঝতে দেয়নি।দিনের পর দিন ওর অবহেলা,অত্যাচার গুলো মুখ বুজে সহ্য করে গেছে।মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত ওকে একইভাবে ভালোবেসে গেছে,নিঃস্বার্থভাবে।
আর প্রীতম খালি কষ্ট দিয়ে গেছে ভুল বুঝেছে,স্বার্থপর ভেবেছে রোদেলাকে দিনের পর দিন।
প্রীতমের কফিশপেই বাচ্চাছেলের মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো অঝোরে,কফিশপে আশেপাশের কপোতকপোতীরা বুঝতে পারলোনা একটা ব্রেকাপে এতো কাঁদার কি আছে!
----
আজ আবার বৃষ্টি পড়ছে,রোদেলার প্রিয় বৃষ্টি।ও চলে যাওয়ার এতো বছর পরে বেছে বেছে এইদিনটাতেই বৃষ্টি পড়ে।
এইদিনেই প্রথম ফেসবুকে পরিচয় হয়ছিলো ওর আর অভিমানির,এই দিনেই ওর অভিমানি শেষ অতৃপ্তির শ্বাসটুকু ফেলেছিলো নিঃস্বঙ্গভাবে।কবরের মাটিগুলো ভিজে যাচ্ছে,মাথার কাছে লাগানো বেলি ফুলের গাছটা থেকে ফুল কবরটাকে প্রায় ঢেকেই দিয়েছে।
এক বর্ষার দিনে রোদেলা বলেছিলো" আমি মারা গেলে প্রীতম আমার কবরটার মাথায় একটা বেলী ফুলের গাছ লাগিয়ে দিয়ো"।
দেখতে দেখতে কত বর্ষা পেরিয়ে যাচ্ছ।
খুব বলতে ইচ্ছে করছে প্রীতমের
"অভিমানি দেখো আজ আমি এসেছি,তোমার প্রিয় বর্ষায় আমি এসেছি।তোমাকে অনেক গল্প বলার আছে এই বাজে ছেলেটার গল্প!তুমি শুনবেনা?তুমি কি দেখতে পারছো ওপার থেকে,এই বাজে ছেলেটাকে?শুনতে পারছো?
আমিও তোমাকে ভালোবেসেছিলাম,এক মুহুর্তের জন্য হলেও,এক সেকেন্ডের জন্য হলেও,আমি ভালোবেসেছিলাম তোমাকে!
অবিরাম বর্ষণে প্রীতম কেঁদে যায় একলা,রোদেলার কবরের পাশে নিশ্চুপভাবে।
#ডেডিকেটেড_টু_অ্যাংরি_বার্ডস
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:১৮