মূলঃমাওলানা আব্দুল মাজীদ দরিয়াবাদী রহ.
অনুবাদঃমাওলানা আতাউল্লাহ আব্দুল জলীল
৩.ইউরোপের নামে বাতিকগ্রস্ত মানসিকতা
এই কল্পনাও করতেও অক্ষম ছিল যে স্বয়ং এ চিত্রেই কোনো কারসাজি ও জালিয়াতি আছে এবং এ গ্রন্থকারের কথাও মিথ্যা হতে পারে। তাহকীক ও অনুসন্ধান হোক না-হোক কথা সেটাই সত্য যা চিত্র থেকে প্রতিফলিত হচ্ছে। কোনো আর্যসমাজী, কোনো খ্রিস্টবাদী কিংবা অন্য কোনো ইসলামের শত্রুর সঙ্গে তর্ক-বিতর্কে পরাজিত হওয়া ছাড়াই বছরের পর বছরের মেহনত, পরিশ্রম ও অতি যত্নে গড়া দুর্গ এভাবে মুহূর্তেই তাসের ঘরের মতো ধসে পড়ল। রাসূল হিসেবে নবীজীর সত্তার ব্যাপারে শ্রদ্ধাপূর্ণ স্বতন্ত্র বিশ্বাস, রাসূল হিসেবে নবীসত্তার অর্থ এমনকি একজন মহামানব কিন্তু শ্রেষ্ঠতম মানব হওয়ার ধারণাটাও ধীরে ধীরে হৃদয় থেকে তিরোহিত হয়ে গেল। ঈমান ও ইসলামের সুমহান দৌলত সামান্যতেই চরম ধীকৃত ধর্মদ্রোহিতায় পর্যবসিত হলো―আমার আত্মজীবনীর এ অংশটুকু প্রতিটি মুসলমানের গভীর চিন্তা-ভাবনা করে পড়া উচিত। ধর্মীয় পরিবেশে লালিত-পালিত, ধর্মীয় আবহে বেড়ে উঠা কিশোর―বলা ভালো ধর্মীয় পরিবেশে বেড়ে উঠা যুবক―শয়তানের প্রাথমিক দু-এক দফার আক্রমণে কত সহজেই ধরাশায়ী হয়ে পড়ল। ভ্রষ্টতার কত অসংখ্য দরজা খুলে রাখা হয়েছে। আর শয়তান হানা দেওয়ার কত অসংখ্য পথ তৈরি করে রাখা হয়েছে! অবস্থা এতদূর গড়ানোর পর নামায-রোযার অস্তিত্ব আর কীভাবে থাকতে পারে!প্রথমে নিয়মিত থেকে অনিয়মিত হলো। নামাযের প্রতি যত্ন ও পাবন্দি ছুটে গেল। নামায ছুটতে শুরু করল। একাধারে কয়েক ওয়াক্ত ছুটতে লাগল। এমনকি একসময় একেবারেই ছুটে গেল। ওযু, তেলাওয়াত, রোযা―এসবের সঙ্গেও আর কোনো সম্পর্ক রইল না। প্রথম প্রথম আব্বাজানের কিছুটা ভয় ও লেহাজ ছিল, কিন্তু তা আর কতক্ষণ কাজে দেওয়ার! লখনৌ থেকে যখন সীতাপুর তাঁর কাছে যেতাম, তখন নামাযের সময় হলে তার কাছ থেকে কেটে পড়তাম। এদিকে-সেদিক সরে পড়তাম। কখনো কখনো ঘুমের ভান করতাম। জুমার নামাযের বিষয়টি বড় কঠিন হয়ে দাঁড়াল। প্রথম প্রথম আব্বাজান আমাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়ার অনেক চেষ্টা করেছেন। আমি অপদার্থকে যখন উঠাতেই পারতেন না, আর সময়ও শেষ হওয়ার উপক্রম হতো, তখন তিনি আমাকে আপন অবস্থায় রেখে মসজিদে চলে যেতেন। হৃদয়ের কী অবস্থা নিয়ে যেতেন―এখন এটা কে বলতে পারবে? বাকি অংশ পড়ুন
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৫৭