সন্ধ্যা হলো-
মা তুমি কি ফিরলে এখন
অফিস থেকে?
এখন তোমার মোহন শাড়ির
গন্ধে ব্যাকুল দিনটি বুঝি
ফুরিয়ে এল সন্ধ্যা রাতে?
তোমার রঙীন গাড়িতে চেপে
আজও বুঝি ফিরলে তুমি
অনেক রাতে?
সেই সে কবে শিশু আমি
খেলে খেলে আপন মনে
ঘুমিয়ে গেছি ঘরের কোণে-
এসেছ তুমি হঠাৎ রাতে.....
একটা কেবল চুমু দিয়ে বলেছ আমায়,
বাবা আমার!
জীবন যে আজ কর্মভরা -
যেতে আমায় হবেই যে রে
অনেক দূরে..... অনেক দূরে....
কী জানি মা কত দূরে চেয়েছ যেতে!
দেখেছিলাম বছর বছর
যাচ্ছ তুমি স’রে স’রে আমার থেকে কোন সুদূরে!
মামণি আজ, পৌঁছলে কি চাঁদের চূড়োয়?
হাতছানি কি দেয় আজও
দূর গ্রহের স্বপ্নখানি?
তোমার ছোঁয়া চেয়ে চেয়ে
কাটল আমার শিশুবেলা,
কিশোর হয়ে দেখি আমি
মা বা বাবা কেউ নেই আর -
দুজনেরই নতুন জীবন ঘরকন্না।
আমার পরে আরো যেসব
বোন এলো আর ভাই এলো,
কেমন আছে তারা সবাই?
আজ বুঝিবা তারাও জাগে
মধ্যরাতে মামণিকে পাবে ব’লে?
সেদিন তোমায় দেখেছিলাম,
প্রিয় আমার মামণিগো,
পত্রিকার রঙীন পাতায় -
বুঝেছিলাম হয়েছ তুমি অনেক বড়,
গিয়েছ তুমি অনেক দূর .....
হয়ত গেছ সেই সুদূরে
যেখানে যেতে চেয়েছিলে!
জানিনা আজ মনে তোমার পড়ে কিনা
একটা অবোধ ছেলে তোমার
জন্মেছিল ভোরপ্রভাতে
মধ্যবিত্ত সংসারে! সে আজ কোথায়?
আছে কিনা জগতপারে জান কি তা?
হয়ত আবার ভাব কী যে, ও ছিলই
আমার পথের কাটা।
যা কিছুই ভাব তুমি
ক্ষণে ক্ষণে মনের মাঝে
জেগে ওঠে তোমার স্মৃতি;
ভাবি তখন একলা ব’সে,
নিছক কেবল যুক্তি দিয়ে যায়না মাপা,
বিজ্ঞ আমার মামণিগো,
মানব- জনম আবেগে বাঁধা।