সাদাকালো ড্রেসকোডটা খুব বিরক্ত লাগতো।মাজে মাজে ভাবতাম বড় হলে জীবনটা বুঝি খুব সুন্দর???
কিন্তু বড় হয়ে আজ যখন বাস্তবতার হাতছানিতে জীবনকে দেখেছি বুজতে পারি সাদাকালো ড্রেসকোডের সেই জীবনটাই ছিল রঙ্গীন।
..
হাফ টাইমে স্কুল পালানোর সেই সময়টা ভেবে খুব হাঁসি পায়।স্কুল পালানোর পর ভাবতাম পরদিন স্কুলে গিয়ে স্যারকে কি বলবো???
..
ক্লাস শুরু করার পূর্বে পিটি করানো হতো, পিটি না করার জন্য স্কুলের টয়লেটে, ছাদে, টেবিলের নিচে কতইনা লুকিয়েছি।যেদিন পিটি ফাঁকি দিতে পেরেছি মনে হতো ৩য় বিশ্বযুদ্ধ জিতেছি।
..
কখনো ক্লাসে মেয়েদের সাথে বসেছেন????কখনো মেয়েদের ব্যাগ থেকে খাবার চুরি করে খেয়েছেন???ভাবতেই কেমন যেন নিজেকে খুব অদ্ভুত মনে হচ্ছে।
..
একটা অদ্ভুদ ব্যাপার হয়তো সবাই লক্ষ করেছেন যেদিন পড়া শিখে স্কুলে যেতাম সেদিন স্যার পরা জিঙ্গেস করতোই না।খুব রাগ হতো খুব।
..
স্কুল জীবনে প্রায় সবারই বন্ধুদের দেয়া একটা নাম থাকে, আমার জোড়া নাম ছিল।বন্ধুরা জ্যাক বলে ডাকতো আর হ্যাটার্স বান্ধবীগুলো ডাম বলে ডাকতো।
..
স্কুলে একটা কালো প্যান্ট পরে যেতাম।খসখসে কাপড়।প্যান্টটা একটু বড় দেখে আম্মু হাতে সেলাই করে দিয়েছিল। বাকিটা জীবনের অনেক বড় একটি ইতিহাস।সেলাই করার পর প্যান্টটির পা দুটি অসমান হয়ে গিয়েছিল যা চোখে লক্ষনীয়।কি অদ্ভুতনা ব্যাপারটা একযুগে পৃথিবী কতইনা বদলে গেছে।
..
স্কুল ছুটির পর যখন বাসায় ফিরতাম মা তখন কাপড়ের আঁচল দিয়ে মুখটা মুছে ভাত খাইয়ে দিত।কর্মব্যস্ততা শেষে ক্লান্ত মুখ নিয়ে বাসায় ফিরি এখন আর কোন আঁচলের স্পর্শে নেই আমি।ভাবতেই খুব খারাপ লাগে খুব।
..
সপ্তাহঘুরে যখন ছুটিরদিন আসতো মনে হতো ঈদ এসেছে।সারাটি দিন খেলাধুলায় মেতে উঠা দিনগুলো ছিল সত্যিই রঙ্গীন।
..
তাইতো কবি বলেছেন-----
এসবের আজ কিছুই নেই ,
আছে কিছু কল্পনা ,
কত আজ বন্ধু আমার ,
কত আড্ডা আজ ...
তবুও যেন কিছু একটা খালি কেমন অসম্পূর্ণ ....
বিদায় বন্ধু ,বিদায় ফাঁকা ক্লাসরুম ,
বিদায় আড্ডা ,বিদায় গান,বিদায়ী নিরব অবুঝ মনের অভিমান
যদি কেউ বলে আমায় ,
জীবনের কোন সময় বেশী সুন্দর ,আনন্দময় ,আমি বলব স্কুলজীবন ,,
কলেজ জীবনের সাথে এই মধুর জীবনের অনেক ব্যবধান
ক্লাসে বসে টেবিলে ডৌল বাজিয়ে ,
তালি দিয়ে কত গান আর হাই বেঞে বসে কত আড্ডা।
..
সাদাকালো ড্রেস কোডের জীবনটা সত্যিই রঙ্গীন সময়।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৪৮