''রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেবো এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ''।
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম''
বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চে রেসকোর্সের ময়দানে দেয়া সেই ঐতিহাসিক ভাষণের কথাগুলোই সত্যি হয়ে দেখা দিয়েছিল সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালির ভাগ্যাকাশে। স্বাধীনতার সেই লাল সূর্যটাকে আমরা ঠিকই ছিনিয়ে এনেছিলাম। কিন্তু তার জন্য আমাদের মূল্য পরিশোধ করতে হয়েছিল প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি। ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে পাওয়া আমাদের এই স্বাধীনতা।
বঙ্গবন্ধু ৭ ই মার্চের ভাষণে বলেছিলেন,
আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোকদের উপর হত্যা করা হয়- তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইলো, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু-আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি, তোমারা বন্ধ করে দেবে।
বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন বাংলার বুদ্ধিজীবী, কবি, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার এবং শিল্পী সমাজ। কলমকে হাতিয়ার আর শব্দকে গোলা বানিয়ে তারা ঝাপিয়ে পড়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধের শব্দসৈনিকেরা যুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল বৃদ্ধি করার পাশাপাশি সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে বেঁধে রেখেছে একটি বাধনে।
১৯৭১ এর ২৫ শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী 'অপারেশন সার্চলাইট' এর মাধ্যমে মেতে উঠলো ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞে। নির্বিচারে হত্যা করল নিরস্ত্র বাঙ্গালিদের। গ্রেপ্তার হলেন বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সে রাতেই হত্যাযজ্ঞের পাশাপাশি দখল করে নেয় ঢাকাসহ পূর্ব পাকিস্তানের প্রায় সকল গণমাধ্যম। ২৫ শে মার্চের কালো রাত্রির বীভৎসতায় যখন হতাশার চাঁদরে আচ্ছাদিত পুরো জাতি। বহির্বিশ্বের কাছে তখনও অজানা কি হচ্ছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে। সকল গণমাধ্যম পাকিস্তানি হানাদারদের দখলে থাকায় এই নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞের খবর চাপা পরে যায়। ২৬ মার্চ সকাল বেলায় কিছু নির্ভীক বাঙালি এগিয়ে এলেন বেতারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর প্রেরিত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র প্রচার করার জন্য। বেলাল মোহাম্মদ এবং আবুল কাশেম সন্দীপসহ তৎকালীন চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের কয়েকজন বেতারকর্মী সিদ্ধান্ত নেন যে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে জনগণকে সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করতে। এ সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে তারা চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রকে কাজে লাগানোর চিন্তা করেন। তবে নিরাপত্তার কারণে আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রকে কাজে না-লাগিয়ে শহর থেকে কিছু দূরে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রকে ব্যবহার করেন। এই বেতার কেন্দ্রের নাম দেয়া হয় " স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র "। এখান থেকেই প্রচার করা হয় বঙ্গবন্ধু প্রেরিত স্বাধীনতার সেই বাণী। ২৬ শে মার্চ এই বেতার থেকেই এম এ হান্নান বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করেন। এই বেতার কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বেতার কর্মীরা শরণাপন্ন হন, পটিয়ায় অবস্থানরত তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান এর। ২৭ মার্চ মেজর জিয়াউর রহমান তার সৈন্য দল নিয়ে কালুরঘাট অবস্থান নেন। ২৭ মার্চ রাত ৮টায় এক নতুন লিখিত ও সম্প্রসারিত বক্তব্যের মাধ্যমে মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষ থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত একটি জাপানি জাহাজ সেই বার্তাটি শুনতে পায়। পরে রেডিও অস্ট্রেলিয়া ও বিবিসি থেকে বার্তাটি পুনঃপ্রচার করা হয়। সামরিক বাহিনীর একজন চৌকশ বাঙ্গালি অফিসারের সেই সময় স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ জনগনের ভিতর আস্থা ফিরিয়ে আনতে অনেক সাহায্য করেছিল। মেজর জিয়ার সেই ঘোষণাটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে।
মেজর জিয়ার স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ঘোষণা অডিও লিংক-
পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র এই নাম হতে বিপ্লবী অংশটি বাদ দেয়া হয় এবং নতুন নামকরণ করা হয় 'স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র'। ২৮ মার্চ প্রথম অধিবেশনে বিমান হামলায় করণীয় সম্পর্কে নির্দেশমালা প্রচারিত হয় এবং দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রথম একটি কথিকা পাঠ করা হয়। ৩০ মার্চ প্রভাতী অধিবেশনে প্রথম বারের মত জয় বাংলা, বাংলার জয় গানটি প্রচারিত হয়। এই বেতার থেকে প্রচারিত স্বাধীনতার ঘোষণা সেই সময় বহির্বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে। এই বেতার থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করা ছাড়াও দেশবাসীকে উজ্জীবিত করার কাজ করে গেছে। পাশাপাশি পাকিস্তানি হায়ানাদের বিরুদ্ধে প্রোপ্যাগান্ডা ছড়াতেও সফল হয়। এই বেতার থেকে প্রথম সফল প্রোপ্যাগান্ডা ছিল টিক্কা খানের নিহত হবার খবর। ৩০ মার্চ দুপুরের অধিবেশন শেষ হবার পর প্রায় ২টা ১০ মিনিটের দিকে বেতার কেন্দ্রে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী বিমান হামলা করে যার ফলে এ বেতার কেন্দ্রটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
,
স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্রের ইতিহাস সৃষ্টিকারী দশজন শব্দসৈনিক
১/ বেলাল মোহাম্মদ
২/ আবুল কাসেম সন্দিপ।
৩/ সৈয়দ আব্দুল শাকের
৪/ রাশিদুল হোসেন
৫/ আমিনুর রহমান
৬/ শারফুজ্জামান
৭/ মুস্তফা আনোয়ার
৮/ আবদুল্লাহ আল ফারুক
৯/ রেজাউল করিম চৌধুরী
১০/ কাজী হাবিব উদ্দিন
১৭ এপ্রিল শপথ-নেয়া মুজিবনগর সরকার আগে থেকেই চাইছিলেন একটা শক্তিশালী বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে। ১৭ এপ্রিল, ১৯৭১ কুষ্টিয়ার বৈদ্যনাথতলায় এই অস্থায়ী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশের পর মুক্তিযুদ্ধের প্রচার জোরদার করার উদ্দেশ্যে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রকে নতুন করে সংগঠনের দায়িত্ব অর্পিত হলো জনাব আবদুল মান্নান, এম এন-এর উপর। মুজিবনগর সরকার গঠনের পর মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ সরকার ও বেতারকেন্দ্রের কর্মীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ভারত সরকার বাংলাদেশ সরকারকে একটি শক্তিশালী ট্রান্সমিটার (৫০ কিলোওয়াট মিডিয়াম ওয়েভ) প্রদান করে। ২৫ শে মে কলকাতার বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের ৫৭/৮নং দোতলা বাড়িটিতে রাষ্ট্রপতি ও অন্যান্য মন্ত্রীদের আবাসের কক্ষের সাথের একটি কক্ষে উক্ত ট্রান্সমিটার দিয়ে সম্প্রচার শুরু হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি ও মন্ত্রীরা অন্য বাড়িতে উঠে যাওয়ার পর সেই ৫৭/৮ নম্বর বাড়িটিই স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের স্থায়ী কার্যালয়রূপে গড়ে ওঠে। এরপর থেকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান নিয়মিতভাবে সম্প্রচারিত হতে থাকে। মিডিয়াম ওয়েভ ৩৬১.৪৪ মিটার ব্যান্ডে প্রতি সেকেন্ডে ৮৩০ কিলো সাইকেলে , ২৫ শে মে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্প্রচার শুরু করল " স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র"। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নীতি নির্ধারণ , মুজিবনগর সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা, অর্থ সংগ্রহ ও কর্মচারী নিয়োগ ইত্যাদি দায়িত্ব পালনের জন্য তৎকালীন গণপরিষদ সদস্য জনাব আব্দুল মান্নানের পরামর্শদাতা হিসেবে রইলেন কামরুল হাসান, মুজিবনগর সরকারের তথ্য সচিব আনোয়ারুল হক খান, ও তথ্য বিভাগের ডিরেক্টর এম আর আখতার মুকুল। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এই বেতার কেন্দ্রটি মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় ফ্রন্ট হিসাবে কাজ করে গেছে। যুদ্ধকালীন সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র প্রবাসী সরকার এর প্রধান মুখপাত্রের কাজ করেছে। পাকিস্তানিদের মিথ্যাচারের উপযুক্ত জবাব দেয়ার পাশপাশি এই বেতার কেন্দ্রটি মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে। যে কোন যুদ্ধে জয়ের জন্য জনমত গঠন করাটা অত্যন্ত জরুরী যা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র অত্যন্ত সফলতার সাথে করে গেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রের পাশাপাশি এই শব্দ যোদ্ধাদের কণ্ঠ যুদ্ধ করে গেছে স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত।
শুধুমাত্র স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রই নয়, দেশে বিদেশে আরও অনেকেই শব্দকে হাতিয়ার করে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। “বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থা” নামে একদল তরুণ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে মুক্তিযোদ্ধা ও শরনার্থীদের দেশাত্মবোধক ও সংগ্রামী গান শুনিয়ে উজ্জীবিত করেছেন। মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতা লিয়ার লেভিন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় এই দলটির সাথে ঘুরে ঘুরে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেন। এই শিল্পীদের লড়াইয়ে ছিল না কোন অস্ত্র বন্দুক । অস্ত্র ছিল কণ্ঠ, গান আর বাদ্যযন্ত্র। এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেরিয়েছেন এই শিল্পিরা মুক্তির গান নিয়ে। মুক্তিকামী মানুষ আর মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা দানই ছিল তাঁদের মূল লক্ষ্য। দেশের গান, স্বাধীনতার গান, স্বপ্নের বাণী শোনাতেন তাঁরা। হতাশা, দুঃখ কষ্ট ছাপিয়ে যেন উজ্জীবিত করতে পারেন, তাই শিল্পীরা তাঁদের সম্বল গান আর সুর নিয়ে পাশে এসে দাঁড়ান বীরসেনাদের। প্রায় দুই দশক পর ১৯৯০ সালে ফুটেজগুলো সংগ্রহ করেন তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদ। ফুটেজগুলোর অংশবিশেষ ও জীবিতদের সাক্ষাৎকার নিয়ে মুক্তির গান নামে প্রামাণ্যচিত্রের রূপ দেওয়া হয়। মুক্তি পায় ১৯৯৫ সালে। ৮০ মিনিটের এই প্রামাণ্যচিত্রটি হয়ে উঠে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের অনন্য দলিল হিসাবে।
শব্দযুদ্ধ শুধু বাংলাদেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। বাংলাদেশ থেকে হাজার মাইল দূরে মার্কিন মুলুকে বাংলাদেশ এর মুক্তিযুদ্ধের সমর্থন আদায় এবং সাহায্যের জন্য আয়োজন করা স্মরণ কালের সবচেয়ে বড় কনসার্ট। ১ আগস্ট ১৯৭১ এ নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে যুদ্ধপীড়িত বাংলাদেশের শরণার্থীদের সাহায্য করার জন্য আয়োজিত হয় " কনসার্ট ফর বাংলাদেশ " নামের কনসার্টটি। এই মহৎ উদ্যোগটি ছিল বাংলাদেশের কিছু বিদেশী বন্ধুদের। যাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন - রবি শংকর, জর্জ হ্যারিসন, রিঙ্গো স্টার, এরিক ক্ল্যাপটন, বব ডিলান, লিয়ন রাসেল, বিলি প্রিস্টন।
প্রথম দিনের অনুষ্ঠান সুচি
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত । অগ্নিশিখা ( মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ অনুষ্ঠান ) ।
বাংলা সংবাদ। রক্তস্বাক্ষর ( গণমুখী সাহিত্য অনুষ্ঠান )।
বজ্রকন্ঠ ( বঙ্গবন্ধুর সকণ্ঠ বাণী )। জাগরণী। ইংরেজি সংবাদ।
চরমপত্র । দেশাত্মবোধক গান।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের জনপ্রিয় কিছু অনুষ্ঠান
চরমপত্র - রম্যকথিকা।
পরিকল্পনা - আব্দুল মান্নান
লেখক ও কথক - এম আর আখতার মুকুল।
ইসলামের দৃষ্টিতে - ধর্মীয় কথিকা।
কথক - সৈয়দ আলী আহসান।
জল্লাদের দরবার - নাটিকা।
লেখক - কল্যান মিত্র।
কথক - রাজু আহমেদ ও নারায়ণ ঘোষ।
বজ্রকন্ঠ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ভাষণের অংশ বিশেষ।
দৃষ্টিপাত - কথিকা
কথক- ডঃ মাজহারুল ইসলাম।
বিশ্বজনমত - সংবাদ ভিত্তিক কথিকা।
লেখক এবং কথক - সাদেকিন।
প্রতিনিধির কণ্ঠ
অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদের ভাষণ।
পিণ্ডির প্রলাপ - রম্যকথিকা।
কথক- আবু তোয়াব খান।
দর্পণ - কথিকা ।
কথক- আশরাফুল আলম।
প্রতিধ্বনি - কথিকা ।
কথক- শহিদুল ইসলাম।
কাঠগড়ায় আসামী - কথিকা ।
কথক - মুস্তাফিজুর রহমান।
রক্ত সাক্ষর - সাহিত্য
শামিম চৌধুরী
রনাঙ্গনে বাংলার নারী - কথিকা
বেগম উম্মে কুলসুম
সংবাদ পর্যালোচনা
লেখা আমির হোসাইন
পাঠ আশফাক রহমান
মীর জাফরের রোজনামচা
কল্যান মিত্র
বিশ্ব বিবেক ও বাংলাদেশ
মহাদেব সাহা
অগ্নিশিখা
মুক্তিবাহিনীর জন্য বিশেষ অনুষ্ঠান।
দেশাত্মবধক গানের অনুষ্ঠান।
বেতার কেন্দ্রের প্রশাসনিক গঠন
বিভিন্ন পদে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও কুশলীগণঃ
অনুষ্ঠান বিভাগীয়
নং ব্যক্তির নাম পদের নাম
১ শামসুল হুদা চৌধুরী সিনিয়ার প্রোগ্রাম অর্গানাইজার
২ আশফাকুর রহমান খান প্রোগ্রাম অর্গানাইজার
৩ মেজবাহ উদ্দীন আহমদ ঐ
৪ বেলাল মোহাম্মদ ঐ
৫ টি এইচ শিকদার প্রোগ্রাম প্রডিউসার
৬ তাহের সুলতান ঐ
৭ মুস্তফা আনোয়ার ঐ
৮ আব্দুল্লাহ আল ফারুক ঐ
৯ মাহমুদ ফারুক ঐ
১০ আশরাফুল আলম প্রোগ্রাম প্রডিউসার(চুক্তিবদ্ধ)
১১ আলী যাকের ইংলিশ প্রোগ্রাম প্রডিউসার
১২ নজরুল ইসলাম অনু প্রোগ্রাম প্রডিউসার(জয়বাংলা পত্রিকায় কর্মরত)
১৩ কাজী হাবিব উদ্দীন আহমদ সাব এডিটার(সঙ্গীত বিভাগ)
১৪ শহীদুল ইসলাম নিউজ রিডার, এনাউন্সার
১৫ আলী রেজা চৌধুরী ঐ
১৬ মনজুর কাদের ঐ
১৭ আবু ইউনুস এনাউন্সার
১৮ মোতাহের হোসেন ঐ
১৯ মোহাম্মদ মোহসিন রেজা ঐ
২০ এ কে শামসুদ্দীন প্রেজেন্টেশন সুপারভাইজার
২১ সমর দাশ মিউজিক ডাইরেক্টর
২২ সৈয়দ হাসান ইমাম প্রডিউসার(ড্রামা)
২৩ রণেশ কুশারী ঐ
২৪ সাদেকীন স্ক্রিপ্ট রাইটার
২৫ আবদুল তোয়াব খান ঐ
২৬ মোস্তাফিজুর রহমান ঐ
২৭ নাসীম চৌধুরী ঐ
২৮ ফয়েজ আহমেদ ঐ
২৯ বদরুল হাসান ঐ
৩০ সাইফুর রহমান রেকর্ডিং সুপারভাইজার(মিউজিক)
৩১ মনতোষ দে প্রযোজক
৩২ রঙ্গলাল দেব চৌধুরী শিল্পী
প্রকৌশল বিভাগীয়
নং ব্যক্তির নাম পদের নাম
১ সৈয়দ আবদুস শাকের রেডিও ইঞ্জিনিয়ার
২ রাশেদুল হোসেন টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট
৩ আমিনুর রহমান ঐ
৪ মোমিনুল হক চৌধুরী ঐ
৫ প্রণব দে টেকনিক্যাল অপারেটর
৬ রেজাউল করিম চৌধুরী ঐ
৭ এম শারফুজ্জামান ঐ
৮ হাবিবউল্লাহ চৌধুরী ঐ
বার্তা বিভাগীয়
নং ব্যক্তির নাম পদের নাম
১ কামাল লোহানী ইন-চার্জ-নিউজ
২ মনসুর মামুন সাব এডিটর
৩ আবুল কাসেম সন্দ্বীপ ঐ
৪ সুব্রত বড়ুয়া ঐ
৫ মৃণাল কুমার রায় ঐ
৬ রণজিত পাল চৌধুরী ঐ
৭ পারভীন হোসেন ইংলিশ নিউজ রিডার
৮ এজাজ হোসেন মনিটর
৯ রসূল আশরাফ চৌধুরী ঐ
১০ জাহিদ সিদ্দিকী উর্দূ নিউজ সাব-এডিটর
১১ শহীদুর রহমান ঐ
১২ নুরুল ইসলাম সরকার নিউজ রিডার
প্রশাসন বিভাগীয়
নং ব্যক্তির নাম পদের নাম
১ অনিল কুমার মিত্র একাউন্ট্যান্ট
২ আশরাফ উদ্দীন স্টেনোগ্রাফার
৩ কালীপদ রায় স্টেনোটাইপিস্ট
৪ মহীউদ্দীন আহমদ অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট
৫ আনোয়ারুল আবেদীন ঐ
৬ এস এস সাজ্জাদ স্টুডিও এক্সিকিউটিভ-কাম-রিসেপশনিস্ট
৭ দুলাল রায় কপিস্ট
৮ নওয়াব জামান চৌধুরী ঐ
৯ বরকত উল্লাহ ঐ
১০ একরামুল হক চৌধুরী ঐ
যেসব বুদ্ধিজীবী নিয়মিত অনুষ্ঠান সিরিজে অংশ নিয়েছেন তাঁরা ছিলেন সৈয়দ আলী আহসান (ইসলামের দৃষ্টিতে),চেনাকন্ঠ ছদ্দনামে - ডক্টর মাযহারুল ইসলাম( দৃষ্টিপাত), অধ্যাপক আবদুল হাফিজ ( দৃষ্টিপাত) ও জামিল শারাফি ছদ্দনামে- সাংবাদিক রণেশ দাশগুপ্ত (দৃষ্টিপাত), জাফর সাদেক ছদ্দনামে- মোহাম্মদ আবু জাফর ( দৃষ্টিপাত এবং রক্তের অক্ষরে লিখি),মুস্তাফিজুর রহমান ( দৃষ্টিপাত), আবদুল গাফফার চৌধুরী (পুতুল নাচের খেল), ফয়েজ আহমেদ (পর্যবেক্ষকের দৃষ্টিতে), সাদেকীন (বিশ্ব জনমত এবং রাজনৈতিক মঞ্চ), আমির হোসেন (সংবাদ পর্যালোচনা), গাজীউল হক (রণাঙ্গনের চিঠি), সলিমুল্লাহ (রাজনৈতিক পর্যালোচনা), অধ্যাপক শওকত ওসমান ( দেশবাসী সমীপে নিবেদন এবং ইয়াহিয়া জবাব দাও), ডঃ আনিসুজ্জামান ( কথিকা), অধ্যাপক বদরুল হাসান ( রক্তে রাঙ্গা ঈদ), মহাদেব সাহা ( বিশ্ব বিকেক ও বাংলাদেশ, এবং রক্ত দিয়ে রেখে গেলাম), তোয়াব খান ( পিণ্ডির প্রলাপ ), আব্দুর রাজ্জাক চৌধুরী ( দেয়ালের লিখন), আমিনুল হক বাদশাহ, কবি সিকান্দার আবু জাফর ( অভিযোগ ),এম আর আখতার মুকুল ( চরমপত্র ), আবুল কাশেম সন্দ্বীপ ( সাময়িকী), কবি আসাদ চৌধুরী ( রিপোর্ট ১৯৭১ এবং মৃত্যুহীন প্রাণ), কবি নিরমুলেন্দ গুন ( বাংলাদেশের পুনর্গঠন), চলচিত্রকার জহির রায়হান ( পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ), ডক্টর এ আর মল্লিক, ডক্টর অজয় রায়, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ডক্টর বেলায়েত হোসেন, ডক্টর এ জি সামাদ,ডক্টর মাদমুদ শাহ কোরেশী, ডক্টর এ কে এম আমিনুল ইসলাম,সন্তোষ গুপ্ত, অধ্যাপক অসিত রায় চৌধুরী ( স্বদেশ সকাল এবং বিপন্ন যখন), অধ্যাপক নরেন বিশ্বাস, অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু জাফর,দিলীপ কুমার ধর ( রণ দামামা ), জেবুন্নাহার আইভি ( কথিকা ), বুলবুল ওসমান, আবদুল জলিল, অনুপম সেন, রেজওয়ানুল হক, ডেভিড প্রণব দাশ ( বাইবেল পাঠ ও আলোচনা),অধ্যাপক আবু সুফিয়ান ( অভিজ্ঞতার আলোকে), কামাল মাহবুব ছদ্দনামে- মাহবুব তালুকদার ( মানুষের মুখ ), রণজিত পাল চৌধুরী ( দর্পণ ), মুস্তাফিজুর রহমান ( কাঠগড়ার আসামি ), রনেশ দাশগুপ্ত ( জনতার সংগ্রাম ), কল্যান মিত্র ( জল্লাদের দরবার- নাটিকা) এবং আরও অনেকে।
সঙ্গীত পরিচালনায় সমর দাস,সুজেয় শ্যাম, রফিকুল আলম। সঙ্গীত পরিচালনা ও কন্ঠদানে আবদুল জব্বার, অজিত রায়, আপেল মাহমুদ, রথীন্দ্রনাথ রায়, মান্না হক, এম এ মান্নান।
কন্ঠদানে ফেরদৌসি রহমান, শাহ আলী সরকার, সনজিদা খাতুন, কল্যাণী ঘোষ, অনুপ কুমার ভট্টাচার্য্য, মনজুর আহমদ, কাদেরী কিবরিয়া,সুবল দাস, হরলাল রায়, এস এম এ গনি বোখারী, শাহীন মাহমুদ, অনিল চন্দ্র দে, অরূপ রতন চৌধুরী, মোশাদ আলী, শেফালী ঘোষ, হেনা বেগম, মফিজ আঙ্গুর, লাকী আকন্দ, স্বপ্না রায়, মালা খান, রূপা খান, মাধুরী আচার্য, নমিতা ঘোষ, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী, আবু নওশের, রমা ভৌমিক, মনোয়ার হোসেন, অজয় কিশোর রায়, কামালউদ্দিন, মলয় ঘোষ দস্তিদার, মনজুলা দাশগুপ্ত, সুব্রত সেনগুপ্ত, উমা চৌধুরী, মোশররফ হোসেন, ঝর্ণা ব্যানার্জী, সুকুমার বিশ্বাস, তরুণ রায়, দীপা ব্যানার্জী, প্রবাল চৌধুরী, সরদার আলাউদ্দিন আহমদ, রফিকুল আলম, কল্যাণী মিত্র, মঞ্জুশ্রী নিয়োগী, লীনা দাশ, সকিনা বেগম, রেজওয়ানুল হক, অনীতা বসু, নীনা, কণা, মহিউদ্দীন খোকা, বাসুদেব, পরিতোষ শীল, মিতালি মুখার্জী, মলয় গাঙ্গুলী, তপন ভট্টাচার্য, চিত্তরঞ্জন ভুঁইয়া, শক্তি মহলানবীশ, তিমির নন্দী, মামুনাল চৌধুরী, আফরোজা মামুন,ইকবাল আহমদ, রঞ্জন ঘটক, মনোরঞ্জন ঘোষাল, তোরাব আলী শাহ, লায়লা জামান, বুলবুল মহলানবীশ, এম এ খালেক, মাকসুদ আলী শাহ, ফকির আলমগীর এবং আরও অনেকে।
সঙ্গীত বিভাগের কাজে সহযোগিতা প্রদান করেছেন কাজী হাবিবুদ্দিন (অনুষ্ঠান সচিব) ও রংগলাল দেব চৌধুরী (টেপ লাইব্রেরী ও দৈনন্দিন টেপ তালিকা)। যন্ত্রসঙ্গীতে ছিলেন সুজেয় শ্যাম, কালাচাঁদ ঘোষ, গোপীবল্লভ বিশ্বাস, হরেন্দ্র চন্দ্র লাহিড়ী, সুবল দত্ত, অবিনাশ শীল, সুনীল গোস্বামী, তড়িৎ হোসেন খান, দিলীপ দাশগুপ্ত, দিলীপ ঘোষ, জুলু খান, রুমু খান, বাসুদেব দাশ, সমীর চন্দ, শতদল সেন এবং আরো অনেকে।
নাট্যকার, নাট্য প্রযোজক এবং নাট্য শিল্পীগণের মধ্যে ছিলেন নাট্যশিল্পী হাসান ইমাম, সুভাষ দত্ত, সুমিতা দেবী, রাজু আহমেদ, নাট্যকার আবদুল জব্বার খান, নারায়ণ ঘোষ, কল্যাণ মিত্র, মামুনুর রশীদ, নাট্য প্রযোজক রণেন কুশারী, আতাউর রহমান, মাধুরী চ্যাটার্জী, নাজমুল হুদা মিঠু, ফিরোজ ইফতেখার, প্রসেনজিৎ বোস, অমিতাভ বসু, জহুরুল হক, ইফতেখারুল আলম, বুলবুল মহালনবীশ, করুণা রায়, গোলাম রব্বানী, মাসুদ নবী, অমিতা বসু, সৈয়দ দীপেন, লায়লা হাসান, মুক্তি মহালনবীশ, নন্দিতা চ্যাটার্জী এবং আরও অনেকে।
বার্তা বিভাগের বার্তা সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন কামাল লোহানী, ইংরেজি সংবাদ বুলেটিন তৈরী ম. মামুন, আলী যাকের, আলমগির কবির, এ কে এম জালালউদ্দিন, সুব্রত বড়ুয়া ও মৃণাল রায়; বাংলা সংবাদ বুলেটিন আবুল কাসেম সন্দীপ, রণজিৎ পাল চৌধুরী; বাংলা সংবাদ পাঠ কামাল লোহানী, হাসান ইমাম, আলী রেজা চৌধুরী, নূরুল ইসলাম সরকার, শহীদুল ইসলাম, আশরাফুল আলম ও বাবুল আখতার; ইংরেজি সংবাদ পাঠ পারভীন হোসেন, জরীন আহমদ ও ফিরোজ ইফতেখার। প্রকৌশল বিভাগ-প্রকৌশলের দায়িত্বে ছিলেন সৈয়দ আবদুস শাকের। সহযোগী প্রকৌশল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রাশেদুল হোসেন, আমিনুর রহমান, শারফুজ্জামান, মোমিনুল হক চৌধুরী, প্রণব রায়, রেজাউল করিম চৌধুরী ও হাবিবুল্লাহ চৌধুরী।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অনেক গান বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে।এখানে জনপ্রিয় গানগুলোর গীতিকার ও শিল্পিদের নাম উল্লেখ করা হল.
নং গানের প্রথম কলি গীতিকার সুরকার শিল্পী
জয় বাংলা,বাংলার জয় গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার সুরকার আনোয়ার পারভেজ শিল্পী শাহনাজ বেগম ( রহমতুল্লাহ )
আমার সোনার বাংলা গীতিকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সুরকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিল্পী কোরাস (সমবেত)
কারার ঐ লৌহকপাট গীতিকার কাজী নজরুল ইসলাম সুরকার কাজী নজরুল ইসলাম শিল্পী কোরাস
সোনা সোনা সোনা লোকে বলে সোনা গীতিকার আবদুল লতিফ সুরকার আবদুল লতিফ শিল্পী শাহনাজ বেগম ( রহমতুল্লাহ )
শোন একটি মুজিবরের থেকে গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার সুরকার সমর দাস শিল্পী আংশুমান রায়
মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে গীতিকার গোবিন্দ হালদার সুরকার আপেল মাহমুদ শিল্পী আপেল মাহমুদ
তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর শিল্পী কোরাস
পূর্ব দিগন্তে, সূর্য উঠেছে গীতিকার গোবিন্দ হালদার সুরকার সমর দাস শিল্পী কোরাস
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে গীতিকার গোবিন্দ হালদার সুরকার স্বপ্না রায় শিল্পী স্বপ্না রায়
আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো গীতিকার আবদুল গাফফার চৌধুরী সুরকার আলতাফ মাহমুদ শিল্পী কোরাস
সালাম সালাম হাজার সালাম গীতিকার ফজল-এ-খোদা শিল্পী ফজল-এ-খোদা
জনতার সংগ্রাম চলবেই গীতিকার সিকান্দার আবু জাফর শিল্পী কোরাস
বিচারপতি তোমার বিচার গীতিকার সলিল চৌধুরী শিল্পী কোরাস
নোঙ্গর তোল তোল গীতিকার নঈম গহর সুরকার সমর দাস শিল্পী কোরাস
ছোটদের বড়দের সকলের শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায়
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত বিখ্যাত স্লোগান
১। হানাদার পশুরা বাংলাদেশের মানুষ হত্যা করেছে- আসুন আমরা পশু হত্যা করি।
২। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মুক্তিযোদ্ধা এক একটি গ্রেনেড। শুধু পার্থক্য এই গ্রেনেড একবার ছুঁড়ে দিলে নিঃশেষ হয়ে যায়, আর মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের বার বার গ্রেনেড হয়ে ফিরে আসে।
৩। গ্রেনেড গ্রেনেড গ্রেনেড-শত্র“র প্রচন্ড গ্রেনেড হয়ে ফেটে পড়েছে মুক্তিযোদ্ধারা।
৪। বাংলার প্রতিটি ঘর আজ রণাঙ্গন-প্রতিটি মানুষ সংগ্রামী মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিটি মানুষ স্বাধীনতার জ্বলন্ত ইতিহাস।
৫। শত্র“পক্ষের গতিবিধির সমস্ত খবরাখবর অবিলম্বে মুক্তিবাহিনীর কেন্দ্রে জানিয়ে দিন।
৬। কোনো প্রকার মিথ্যা গুজবে কান দেবেন না, বা চূড়ান্ত সাফল্য সম্পর্কে নিরাশ হবেন না। মনে রাখবেন যুদ্ধে অগ্রাভিযান ও পশ্চাদাপসারণ দুটোই সমান গুরুত্বপূর্ণ।
৭। প্রতিটি আক্রমণের হিংসাত্মক বদলা নিন। সংগ্রামকে ঢেউয়ের মতো ছড়িয়ে দিন।
৮। শত্র“ কবলিত ঢাকা বেতার কেন্দ্রের মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত হবেন না। এদের প্রচার অভিযানের একমাত্র উদ্দেশ্যই হল আমাদের সাফল্য সম্পর্কে দেশবাসির মনে সংশয়, সন্দেহ ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা।
৯। পদ্মা, মেঘনা, যমুনার মাঝি, কৃষক, কামার, কুমার, তাঁতি, বীর ক্ষেত মজুর হাতে তুলে নিয়েছে মারণাস্ত্র। এদের বুকে জ্বলে উঠেছে অনির্বাণ আগুন। এরা মরণপণ করে রুখে দাঁড়িয়েছে নরখাদক দস্যূ সৈন্যের মোকাবিলা করতে।
১০। সাবাস বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়, জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার তবু মাথা নোয়াবার নয়।
১১। বর্বরতার জবাব আমরা রণাঙ্গনেই দিচ্ছি, রক্তের বদলে রক্ত নেব। চূড়ান্ত বিজয় আমাদের হবেই হবে।
১২। বাংলাদেশে আজ শত্র“ হননের মহোৎসব, প্রতিটি হানাদার দস্যূও বিশ্বাসঘাতকতা খতম করুন। ওদের বিষদাঁত ভেঙ্গে দিন, বাংলার স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রামে অটুট থাকুন।
১৩। পশ্চিম পাকিস্তানি পণ্যসামগ্রী ব্যবহার বর্জন করুন। শত্র“র বিরুদ্ধে অবরোধ গড়ে তুলুন।
১৪। ইয়াহিয়ার লেলিয়ে দেয়া কুকুর গুলোকে খতম করে আসুন আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ি।
১৫। আপনর ভোটে নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত সরকারই বাংলাদেশের বৈধ সরকার। স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ছাড়া আর কোনো হানাদার সরকারের আনুগত্য রাষ্ট্রদ্রোহিতারই শামিল।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত বিখ্যাত চরমপত্রের শেষ অনুষ্ঠানের পাণ্ডুলিপি-
চরমপত্র
১৬ ই ডিসেম্বর ১৯৭১
কি পোলারে বাঘে খাইলো? শেষ! আইজ থাইক্যা বঙ্গাল মুলুকে মছুয়াগো রাজত্ব শেষ। ঠাস কইর্যা একটা আওয়াজ হইলো। কি হইল? কি হইল? ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে পিয়াজী সা'বে চেয়ার থনে চিত্তর হইয়া পইড়া গেছিল। আট হাজার আস্টস চুরাশি দিন আগে ১৯৪৭ সালের ১৪ ই আগস্ট তারিখে মুছলমান- মুছলমান ভাই ভাই কইয়া, করাচি - লাহুর - পিণ্ডির মছুয়া মহারাজরা বঙ্গাল মুলুকে যে রাজত্ব কায়েম করছিল, আইজ তার খতম তারাবী হইয়া গেল।
এলায় কেমন বুঝতাছেন? বিচ্চুগ বাড়ির চোটে হেই পাকিস্তান কেমতে কইর্যা ফাকিস্তান হইয়া গেল? হেইর লাইগ্যা কইছিলাম, কি পোলারে বাঘে খাইলো? শ্যাষে । আইজ থাইক্যা বঙ্গাল মুলুকে মছুয়াগো রাজত্ব শেষ।
আইজ ১৬ ই ডিসেম্বর। চরমপত্রের শ্যাষের দিন আপনাগো বান্দার নামটা কইয়া যাই। বান্দার নাম এম আর আখতার মুকুল।
চরমপত্রের অডিও শুনতে পাবেন এখান থেকে - চরমপত্র
জোয়ান বায়েজ
অ্যালেন গিনসবার্গ
মুক্তিযুদ্ধে ভিনদেশী সাহিত্যিকদের অবদান
আমাদের কিছু বিদেশী বন্ধুর কথা
স্বাধীন বাংলা বেতারের শব্দ সৈনিক বাবুয়া বোস আর নেই
স্বাধীন বাংলা বেতারের শব্দ সৈনিক প্রসেনজিৎ বোস আর নেই
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক ও প্রধান সংগীত পরিচালক সমর দাসের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি
সুরকার ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক অজিত রায়ের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ১ম ভাওয়াইয়া গানের শিল্পী শাহ আলী সরকার
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী অজিত রায়ের জীবনী
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক ও প্রধান সংগীত পরিচালক সমর দাসের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি
মুক্তিযোদ্ধা চারণ কবি শিল্পী শাহ মোঃ বাঙালি
রণেশ দাশগুপ্ত
তথ্যসুত্র -
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ পঞ্চম খন্ড
আমি বিজয় দেখেছি - এম আর আকতার মুকুল।
চরমপত্র - এম আর আকতার মুকুল।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র - বেলাল মোহাম্মদ ।
একাত্তরের রণাঙ্গন - শামসুল হুদা চৌধুরী।
লক্ষ্ প্রানের বিনিময়ে - রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম।
http://www.theconcertforbangladesh.com/
সাউন্ড অফ ওয়ার
http://www.liberationwarbangladesh.org