ডোমঘরেও ধর্ষিত তনু: দেহ নয়, ধর্ষনের শিকার তনুর পোশাক!
আতিয়ার রহমান: তনুর শরীর থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষায় মোট চারজনের ডিএনএ প্রোফাইলের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি প্রোফাইল তনুর রক্তের। বাকি তিনটি প্রোফাইল পৃথক তিনজনের। পরীক্ষায় এই তিনজনের বীর্যের আলামত পাওয়া গেছে।-প্রথম আলো:
এর আগে তনুর প্রথম ময়নাতদন্তে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। ড. নাজমুল করিম খান বলেন, ঢাকা ল্যাবরেটরিতে তনুর ডিএনএ টেস্ট করা হয়। সেখানে কাপড়-চোপড় পরীক্ষা করে তিনজনের বীর্য পাওয়া গেছে।-নতুন সময়:
তবে কি ডোমঘরেও ধর্ষিত তনু! অপরাধ গোপন করা আর অপরাধ করা সমান কথা। প্রথম রিপোর্ট বলছে তনুর দেহ ধর্ষিত হয়নি-আর দ্বিতীয় রিপোর্ট বলছে পোশাককে ধর্ষণ কররা হয়েছে। আর এ ধর্ষণকাণ্ডে রক্ত ধর্ষকদের রক্ত দিয়ে সাহায্য করেছে তনু আর তিন জন দিয়েছে বীর্য। তার মানে এটাই স্পষ্ট দেহ নয়, ধর্ষনের শিকার তনুর পোশাক! বাহ! কি মজার তথ্য। কিন্তু আমরা কাদের সাধুবাদ জানাবো বা সন্দেহ করবো? তনুকে যারা ধর্ষিত নয় প্রমাণ করতে চেয়েছিল তাদের নাকি যারা এতোদিন পর আবার তনুকে ধর্ষিত প্রমান করতে চায় তাদের?
বেশ কিছু দিন ধরেই কিছু কিছু মিডিয়ায় ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রচার হচ্ছিল তনু ইস্য নিয়ে এতো মাতামাতি কেন? বড় কোন রাঘব-বোয়ালকে এরিয়ে যাওয়ার জন্য নয় তো? প্রায়ই তো কত তনু ধর্ষনের শিকার হয়, প্রাণ দেয়, কই তাদের নিয়া তো এতা মাতামাতি দেখিনা? আপনাদের বলছি- ভাই তনু কোন মাতামাতির বিষয় না-আপনাদের বক্তব্যের কারনে তনুর প্রতিবাদের ব্যানারে তনুর বদলে তনুসহ--লেখা হচ্ছে, এটাই আপনাদের সফলতা-ব্যাস এর বেশী কিছুই না। তবে তনুকে নিয়ে যারা মাতামাতি করছে সত্যি-ই তাদের কোন উদ্যেশ্য আছে! আপনাদের এই কথার সাথে আমি একমত আগে ছিলাম না তবে এখন হতে চাচ্ছি। কারনও স্পষ্ট- একটি মেয়েকে কিছু পাষন্ড কূড়েকূড়ে খেল-তাদের ধরার খবরতো নেই-আছে বরং তার ধর্ষিত হওয়ার বর্ণনা নিয়ে ব্যস্ততা।এই একই তনু যে খুন হয়েছে তা নিয়ে প্রশাসনসহ আমাদের মাথা ব্যাথা এখন অনেকটাই কমে গেছে। আমার দৃষ্টিতে তনু মরার আগে ধর্ষিত হয়নি- মরে গিয়ে ধর্ষিত হচ্ছে।আর এবারও তনুকে ধর্ষণ করছি আমরা-মিডিয়া, প্রশাসন আর অতি উৎসাহী পাঠকরা।আমরাই এবার ডোমঘরেও তনুকে ধর্ষণ করছি।
গত ৪ এপ্রিল প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, তনুর মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হয়নি। তবে তনু ধর্ষিতও হয়নি। প্রতিবেদনে তনুর মাথার পেছনের জখমের কথা গোপন করা হয় এবং গলার নিচের আঁচড়কে পোকার কামড় বলে উল্লেখ করা হয়। এখানে প্রশ্ন হচ্ছে এরা কারা যারা তনুকে ধর্ষিত নয় প্রমাণ করতে চায়? কি উদ্যেশ্য ছিল তাদের? তাদের সাথে কি তনু হত্যাকারীদের যোগসাযোস আছে? তবে কি তনুর হত্যাকারীরা ডোমঘরেও নিয়ন্ত্রন চালাচ্ছে? নাকি শুধু ইস্যূবাজির জন্যই তনুকে বার বার ব্যবহার করা হচ্ছে?
“মাফ করেন বাংলা মা--আমি তনুর হয়ে বলছি--অনেক হয়েছে, আর পারি না, মরেইতো গেছি-এইবার মাফ করেন! অন্তত কবরে-তো শান্তিতে থাকতে দেন। এজন্যই বিধাতা নিজেরে গায়েব কইরা রাখছে না হয় আপনারা তারেও ছাড়তেন না। থাক আর বাড়ছিনা থামলাম।
প্রথম প্রতিবেদনে তথ্য গোপন নিয়ে বিতর্ক ওঠার পর (দেশের রাজা-একটু মজা কইরা কইলাম মাইন্ড কইরেন না) পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে দ্বিতীয় দফা লাশের ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দেন আদালত। এরপর কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামদা প্রসাদ সাহার নেতৃত্বে তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড ৩০ মার্চ দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করে। প্রথম আলো বলছে, সিআইডির একটি সূত্র জানায়, ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন কিছুদিন আগেই সিআইডির কাছে এসেছে। তারা বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও অবহিত করেছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মামলাটির তদন্ত চলছে। তদন্তাধীন বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না।
বেশ ভালো কথাই বলেছেন খান সাহেব। খুব ভালো আপনি চালিয়ে যান-আমার আপনার উপড় ভরসা আছে-আমি মনে করি তনু যদি বিচার পায় তবে- আপনার করনেই পাবে। যদি কখনো ভুলেও খান সাহেব আমার এই লেখাটা পড়েন -তবে আপনাকে পাম দিলাম মনে করার কোন কারণ নেই- কারন আমি সত্যি কথাই বলেছি।বিশ্বাস করা ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নেই। আসলে বাংলাদেশে এখন যেটা চলছে তা একটা চলচ্চিত্র ছাড়া আর কিছুই না-যার নাম “বাংলাদেশ”। এই চলচ্চিত্রের ডিরেক্টর প্রডিউসরের কথা না হয় না-ই বলি। তবে এর অভিনেতাদের আমরা সবাই চিনি। তা যাই হোক এ বিষয়ে না হয় পরেই লিখবো।এটা বাকিতে রইলো।
হ্যা...যে কথা বলছিলাম, তনুকে যারা মাতামাতি বলছেন তাদের আবার বলি- এই কমন স্লোগানটা হয়তো সাবই আমরা জানি শুনি বা দেই বা দিয়েছি। এক মুজিব লোকান্তরে লক্ষ্য মুজিব ঘরে ঘরে। এই স্লোগানটার মানে সবার কছে একই কিন্তু ছোটবেলায় আমি যখন শুনেছি তখন এর মানেটা আমার কাছে অন্যরকম মনে হয়েছে। আমার দৃস্টিতে “এক মুজিব লোকান্তরে লক্ষ্য মুজিব ঘরে ঘরে” এর মানে দাড়ায় বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছে, সেটা আমাদের ব্যার্থতা ছিল। তাই বলে হাসিনা-খালেদাকে স্বপরিবারে হত্যা হতে দেয়া যাবেনা। তাই লক্ষ্য মুজিব ঘরে ঘরে। তাদের রক্ষা করা এবং এই হত্যার বিচার করার দৃঢ় প্রত্যয়ই এই স্লোগানের অর্থ দাড়ায়। যা এই সরকার কিঞ্চিৎ হলেও সফল করেছে - তারা জাতীর পিতার হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে।তাই খান সাহেবদের উপড় জাতীর বিশ্বাস আছে-বিশ্বাস আছে আমারও ।এজন্যই বলছি এক তনু লোকান্তরে লক্ষ্য তনু তোমার ঘরে। তাদের রক্ষা করতে তনুর হত্যার সুষ্ঠ্য বিচার পেতে তনুকে নিয়ে একটু-আধটু মাতামাতি করাটা বোধায় দোষের কিছু না।
এদিকে খান সাহেবকে দ্বিতীয় দফা ময়না তদন্তের রিপোর্ট সম্পর্কে অবগত করলেও গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন জমা দেয়নি ওই মেডিকেল বোর্ড। এর মধ্যে পার হয়েছে ৪৬ দিন। কবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেওয়া হবে, তা-ও নিশ্চিত করে বলছেন না মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা। মঙ্গলবার রাতেই জানা যায় এবার তনুর স্বজনদের ডিএনএ টেস্ট করানো হবে। চালিয়ে যান চালিয়ে যান- এইবার পায়জামার ধর্ষককে খুইজা বেড় করলেই আসল খুনিকে পাওয়া যাবে। যাক এতো দিন পর হলেও খুনিকে খোজার কার্যক্রমতো শুরু হলো। হাফ ছাড় তনু হাফ ছাড়-এবার একটু দমনে।
সত্যিই এই মেডিকেল বোর্ড পারেও- মরারে একবার তদন্ত করে কবর দিয়ে দ্বিতীয় দফায় আবার তাকে কবর থেকে তুলে ধর্ষিত প্রমাণ করলো- পারে তো মরারে ডাইকা এই ভাবে বলে “ দেখ তনু ভালায় ভালায় কইয়াদে ধর্ষন হইছস-তুই রক্ত দিছস ওরা বীর্য দিছে-শিকার কইরা আবার মর- তাইলে সবাইরে কইতে পারমু হ তনু ধর্ষিত হইছে তনু স্বীকার গেছে”।
এখানে পরিস্থিতি এমন দাড়াচ্ছে যে মনে হচ্ছে তনু মরে গিয়ে আরো বেশী বিপদে আছে- ডোমঘরেও ধর্ষিত হচ্ছে- দেহ নয়, ধর্ষনের শিকার তনুর পোশাক!পোশাকে দ্বিতীয় দফায় বীর্য পেয়েছে আর প্রথম দফায় দেহে ধর্ষনের কোন আলামত পাওয়া যায়নি।
বাহ! কি খবর.... শুনে একবারে তাজ্জব বনে যাচ্ছে কবি, ও কবি-নির্বাক হইও না-লিখতে হবেতো-তুমি না লিখলে একাত্তরে শরীরের রক্ত গরম হতো না। তুমি না লিখলে সেবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম হতো না। আমরাও স্বাধীনতা পেতাম না। তুমি আবার লেখ এবারের সংগ্রাম লেখ কবি এবারের সংগ্রাম লেখ......জাতী আজ আবার বিপদ গ্রস্থ, আরেকটা আঙুলের ইশারার দরকার.....আরেকটা স্বাধীনতা দরকার। আমাদের বোধ শক্তি বোথা হয়ে গেছে আর সয়না- এই বোধ শিক্তিকে আবার ৭-ই মার্চে নিয়ে যেতে হবে। আবার ধার দিতে হবে। এবার পাক হানাদার বা রাজাকার না, নিজেদের থেকে মুক্তি চায় জাতী..... মুক্ত কর হে.....মুক্ত কর........।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১৬ দুপুর ২:৩৪