দোতলা লাল টিনের বাড়ি। উঁচু পাকা ভিটে। পেছনে পুকুর। অদূরে ফকিরবাড়ি মসজিদ। সামনে ছোট্ট উঠোন। তার ওপাশে লম্বা টানা সুদৃশ্য একতলা টিনের ঘর। তাও লাল রঙের। একতলা ওই লাল টিনের ঘরের গা ঘেঁষে চলে গেছে ফকিরবাড়ি রোড। একতলা ঘরটির দক্ষিণ পাশ দিয়ে ভেতরবাড়ি যাওয়ার পথ। উঠোনের ডান পাশে আরেকটি একতলা টিনের ঘর। বাম পাশে টিনের বেড়া।
নাজেম মিয়ার বাসা।
কিন্তু একসময় ওটি তারচেয়েও বেশি পরিচিত হলো ঝিলুদের বাসা হিসেবে। উঠোনের ঠিক মাঝখানে একটি কাঁঠাল গাছ। তার গায়ে ছুরি দিয়ে খোদাই করা ছিল-‘ঝিলু দি গ্রেট’, শুধু সেই কাঁঠাল গাছেই নয়,বাসার এখানে-সেখানে দেয়ালেও ঝিলু তার এই গ্রেটনেসের ঘোষণা লিখে রেখেছিল। তখন বয়স আর কত হবে, ঝিলু তখন পঞ্চম কি ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। আজ থেকে সাঁইত্রিশ-আটত্রিশ বছর আগের কথা। খুব সুন্দর ছকি আঁকত ঝিলু। ছবি আঁকা ছিল তার নেশা। কিন্তু সবচেয়ে বড় নেশা ছিল গান গাওয়া। দিন-রাত প্রায় সারাক্ষণ ঠোঁটে লেগে থাকত গানের কলি।
মুম্বাই ও কলকাতার ছায়াছবির হিট গানগুলো নির্ভুল সুরে নিখাদ দরদে গাইত ঝিলু।
তখন সে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। ঘুম থেকে উঠার পর প্রাতরাশ সেরে তার প্রথমে রুটিন ছিল কোরআন তেলাওয়াত। বরিশাল হালিমা খাতুন গার্লস স্কুলের কারি সাহেবকে তার বাবা এই তেলাওয়াত শিক্ষাদানের জন্য নিয়োগ করেছিলেন। অত্যন্ত সুকণ্ঠ ছিলেন কারি সাহেব। নানা ধরনের এলহান তার কণ্ঠে অত্যন্ত মোহন স্বাচ্ছন্দ্যে খেলা করত। ছাত্রটিও তার কাছে ছিল বেশ প্রিয়। সকলকে বলতেন, অনেক ‘তালবিলিম’ (তালবে ইল্ম) আমি দেখেছি। কতজনই তো আমার কাছে কোরআন শরিফ পড়ে, কতজনকেই তো তেলাওয়াত শেখালাম, কিন্তু ঝিলুর মতো এমনটি আর পাইনি। মাশাআল্লাহ, এত সুন্দর দরাজ গলা, এত সুন্দর এলহানের কাজ, চেষ্টা করলে ও একজন বড় কারি হতে পারবে।
রোজ সকালের এ রুটিনের কোনো নড়চড় নেই। এর মধ্যে শুক্রবার ছিল বিশেষ দিন। এ দিন ঝিলুর তেলাওয়াত শেষ হতেই কারি সাহেব জিজ্ঞেস করলেন, বারে বা ঝিলু, সোবহান আল্লাহ।আজকে তোর তেলাওয়াত খুব ভালো হয়েছে রে। কিন্তু তোকে তো এমনি কোনো এলহান আমি শিখাইনি। কোত্থেকে শিখলি? ঝিলু তখন মিটিমিটি হাসছে। কোনো জবাব দিচ্ছে না। অনেকক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পর সে যা জবাব দিল তা শুনে কারি সাহেব থ। সে আমলের একটি বিখ্যাত গজলের নাম করে ঝিলু বলল, হুজুর, আমি ওই গজলের সুরে পড়েছি। ভালো হয়নি? জবাব এল মুখে নয়, হাতে।
ঝিলুর গালে ঠাস করে এক চড় কশালেন কারি সাহেব। তারপর ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন। রাগে মুখ-চোখ তার লাল হয়ে গেছে। বাসার সবাই যখন ব্যাপারটি শুনল তখন আরেক দফা ঝড় বয়ে গেল। ঝিলু নির্বিকার।
সে বলল, আমাকে খামোকা গাল মন্দ করছ কেন? আমি অন্যায়টা করলাম কোথায় তাই বলো? সেই ঝড়েরর দাপট থেকে কারি সাহেবই আবার ঝিলুকে রক্ষা করলেন। বিকেলে তিনি নিজে থেকেই বাসায় এলেন। ঝিলুর বাবাকে বললেন, ওকে মাফ করে দিন। কোন গজলের সুরে ও আজ কোরআন তেলাওয়াত করেছে সে কথা এখন আর আমার মনে জাগছে না। যে নির্ভুল উচ্চারণ আর সুন্দর সুরে ও তেলাওয়াত করেছে তার রেশ এখনো আমার কানে বাজছে। সোবহান আল্লাহ, বড় সুন্দর! তবে লক্ষ রাখবেন, গানবাজনার পাগলামি বাতিকে যেন ওর সবকিছু নষ্ট না হয়ে যায়। সারা দিনই তো শুনি গান গায়। সেদিন শুনলাম রাতের বেলা রাস্তার পাশে বসে ও গান গাইছে।
রাস্তার পাশে ঝিলুদের বাসার সেই টানা লম্বা একতলা লাল ঘরটির মাঝবরাবর ছিল শানবাঁধানো দুটি বেঞ্চি। বাবা যখন দেশের বাড়িতে যেতেন তখন ঝিলু রাস্তার পাশের ওই বেঞ্চিতে বসে রাতের বেলা ঘন্টার পর ঘন্টা আপন মনে গান গাইত। রাতের বেলার ওই বেঞ্চি দুটি বোধ করি তাকে কোনো এক মোহন মায়ায় আকৃষ্ট করেছিল। যত বয়স বেড়েছে তত তার সংকোচন ও ভয় কেটেছে, রাতে এই পথের পাশে সঙ্গীত সাধনায় কোনো ছেদ পড়েনি। এটা ছিল ঝিলুর শিল্পীজীবনের উদ্গামকাল। বোধ হয় ভুল বললাম। উদ্গামপর্ব শেষে ওটা ছিল কৈশোরিক জটিলতা, ভীতি আর উদগ্র আগ্রহের টানাপড়েন থেকে উত্তরণের প্রথম ক্রান্তিকাল। একমাথা ঝাঁকড়া চুল, বুদ্ধিদীপ্ত চোখ, চালচলনে কখনো উদাসী বাউল, কখনো নিস্পৃহ নির্লিপ্ততায় সমাহিত, কখনো দুরন্ত ঝড়। অসম্ভব ভাবপ্রবণ, কিন্তু সঙ্গীত সাধনার জন্য সেদিন তিরস্কারেও নিরুৎসাহ নয়। আত্নীয়-স্বজনরা আফসোস করে বলতেন, ঝিলু একদম বখে যাচ্ছে। কেউ কেউ বলতেন, গান আর ছবি আঁকা- এই করে করে নাজেম মিয়ার ছেলেটি গোল্লায় যাচ্ছে।
ঝিলু এত ভালো ছেলে, কিন্তু এই গানবাজনার প্রতি এমন নেশা, এরপর তো যাবে অস্থানে-কুস্থানে। ছেলের আচরণে নাজেম মিয়াও বিলক্ষণ বিচলিত ছিলেন। ছেলেকে তিনি স্বভাবতই খুব ভালোবাসতেন, কিন্তু শ্নেহান্ধ পিতা তিনি ছিলেন না। তা ছাড়া তার নিজের ছকেবাঁধা চিন্তাধারা এবং মূল্যবোধের গন্ডির বাইরে ছেলে চলে যাক, পরিবারের ধ্যান-ধারণার বাইরে দলছুট হয়ে ঘুরে বেড়াক, তা তিনি বরদাশত করতে নারাজ ছিলেন। শিল্প ও সঙ্গীতানুরাগ তার কতটুকু ছিল তার পরিমাপ কেউ কোনোদিন করেনি; তবে শুনেছি তিনি চাইতেন ছেলের গান-বাজনার শখ থাকলে আপত্তি নেই, কিন্তু লেখাপড়া শেষ করে আর কিছু না হোক একজন ইঞ্জিনিয়ার হবে। ছেলেকে তিনি বকাঝকা করতে প্রায়ই। বলতেন, ‘বেডার কাণ্ড দেহো। ওরে আবাইগ্যা। গাছডার গায়ে তো লেইখা রাখছস-‘ঝিলু দা গ্রেট’ গান গাইয়া কি আর গ্রেট হইতে পারবি? নাম তো লেখাবি গিয়া যাত্রা বয়াতির দলে। ভাবপ্রবণ ঝিলু এতে খুব দুঃখ পেত।
কিন্তু কোনো জবাব দিত না। বাবার এই তিরস্কারের সামনে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকত। কখনো মা (আপন মা নন) এসে ছেলেকে ক্ষুদ্ধ পিতার সামনে থেকে সরিয়ে নিয়ে যেতেন। ছেলেবেলা থেকে বাসার চেয়ে পথের আকর্ষণই ছিল ঝিলুর কাছে লোভনীয়। গানের ভুবনের দামাল পাখির চোখে সে সময় নীড়ের চেয়ে বন্ধনহীন আকাশ নিবিড় ছায়া ফেলত।
শুনেছি ঘরের প্রতি তার একমাত্র আকর্ষণ ছিল তার দুই মায়ের জন্য-একজন তার আপন মা, যিনি ছিলেন অপ্রকৃতিস্থ; অপরজন তার বিমাতা, যাকে সে ভাবত ছোট মা এবং যার কাছে সে লালিত-পালিত হয়েছে। বহিমূর্খী এই উড়াল দেওয়া মনের জন্যই বোধ করি স্কুলজীবনে ঝিলু একবার বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এসব পরের কথা। এর আগের অনেক কথা আছে; কথা আছে তার পরের। সেদিনের তারা সবাই কি জানতেন, বরিশাল শহরের ফকিরবাড়ি রোডের লাল টিনের দোতলা বাড়ির নাজেম মিয়ার ছেলে ঝিলু হবে একদিন এ দেশের জনগণের প্রিয়তম স্বজন, গণসঙ্গীতের অমর শিল্পী আলতাফ মাহমুদ?
১৯৫০ সালে ধূমকেতু শিল্পী সংঘ - সংগঠনের সাথে যুক্ত হন তিনি। ‘৫২-র রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে আলতাফ মাহমুদ ছিলেন একজন সক্রিয় কর্মী। আলতাফ মাহমুদ যতগুলি গান করেছেন তার সবগুলিই দেশ, মা ও মাটিপ্রেম মেশানো। সময়টা ছিল স্বাধিকারের জন্য জাতিকে উজ্জীবিত করার। যার ফলে আলতাফ মাহমুদ সুরে সুরেই জাতির হৃদয়ে স্পন্দন তুলতে পেরেছিলেন। ১৯৬৬ সালের মধ্যেই শিল্পী আলতাফ মাহমুদ সুরারোপ, কণ্ঠদান এবং সঙ্গীত পরিচালনায় পূর্ণ প্রতিষ্ঠালাভ করেন। 'তানহা' ছায়াছবিতে আলতাফ মাহমুদ প্রথম এককভাবে সঙ্গীত পরিচালক হয়ে কাজ করেন। তাছাড়া ' বেহুলা','আঁকাবাঁকা', 'ক খ গ ঘ', 'কুঁচবরণ কন্যা', 'সুয়োরাণী দুয়োরাণী' প্রভৃতি চলচ্চিত্রে সংগীত পরুচালনা করেন এবং প্রথম দুটোতে অভিনয়ও করেন তিনি। 'বাঁশরী' ছবিতেও অতুলপ্রসাদের 'পাগলা মনটারে তুই বাঁধ' গানটি সহ বহু চলচ্চিত্রে কণ্ঠদান করেন।
১৯৭১ সালে বেহালা, তবলা, হারমোনিয়মের সাথে আলতাফ মাহমুদের হাতে উঠে আসে রাইফেল। শহরের যেখানেই মিছিল আর আলোচনা অনুষ্ঠান হয় সেখানেই আলতাফ মাহমুদ উপস্থিত থাকেন। শহীদ মিনারের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিচালনা ও কণ্ঠদান করেন তিনি। সেই সময় রাজারবাগ পুলিশ লাইনের ঠিক বিপরীত দিকে ৩৭০ নম্বর আউটার সার্কুলার রোডের বাসায় থাকতেন আলতাফ মাহমুদ। ২৫ মার্চ হানাদার বাহিনী তাদের মারণাস্ত্র দিয়ে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের টিনসেডগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেয়।
২৬ তারিখ সকালে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেন তিনি। ২৭ মার্চ কয়েক ঘণ্টার জন্য কার্ফ্যু শিথিল হলে আলতাফ মাহমুদ সবাইকে নিয়ে কমলাপুরের বৌদ্ধবিহারে আশ্রয় নেন। সেখানে ১৮ দিন থাকার পর আবার চলে আসেন রাজারবাগ পুলিশ লাইনের ৩৭০ আউটার সার্কুলার রোডের বাসায়। এখানে ফিরে এসে তিনি বিচলিত ও চিন্তিত হয়ে পড়েন।
দেশ, আত্মীয়-স্বজন এবং জনগণের দুরবস্থার কথা ভেবে অস্থিরতায় কাটে তাঁর সারাটি সময় এবং এ সময়ই তিনি মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন এবং ঢাকা শহরে কতগুলো অপারেশনে ক্র্যাক প্লাটুনের সাথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মোশাররফের নির্দেশে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে একটি অপারেশন হয় আলতাফ মাহমুদের অংশগ্রহণে।
আগস্টের শেষ সপ্তাহে স্থির করেন, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তিনি ঢাকা ত্যাগ করবেন; চলে যাবেন পশ্চিমবঙ্গে এবং সেখান থেকে কাজ করবেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে। কিন্তু তিনি যেতে পারেননি। কারণ তার আগেই বন্দি হন পাকিস্তানী হানাদারদের হাতে। তাঁদের প্ল্যাটুনের একজন গেরিলা ধরা পড়েন। তাদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তিনি আলতাফ মাহমুদের বাসার লেবু গাছের নিচে লুকিয়ে রাখা গোলাবারুদের কথা বলে দেন।
বাঙালীর মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে পাকিস্তানী বর্বর বাহিনী যখন তাদের নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পারে, তখন এ জাতিকে মেধাশূন্য করার জন্য ইতিহাসের বর্বরতম বুদ্ধিজীবী হত্যা শুরু করে। ৩০ আগস্ট ভোরবেলা আর্মিরা প্রথমে আলতাফ মাহমুদের পুরো বাড়িটি ঘিরে ফেলে। এরপর কয়েকজন ঘরে ঢুকে জিজ্ঞেস করে, 'আলতাফ মাহমুদ কৌন হ্যায়?' আলতাফ মাহমুদ জবাব দিলেন, 'আমি'।
এরপর আর্মিরা তাঁকে দিয়ে মাটি খুঁড়ে লেবু গাছের নিচে লুকিয়ে রাখা গোলাবারুদের ট্রাঙ্ক দুটি তাঁকে দিয়েই বের করে নেওয়ার পর তাঁকেসহ বাসার সকল পুরুষকে সঙ্গে নিয়ে চলে যায়।
রাতে রমনা থানা আর সারা দিন নাখালপাড়া এমপি হোস্টেলের টর্চার সেলে নির্যাতন করা হত। দুই দিন ধরে বর্বর অত্যাচারেও আলতাফ মাহমুদ ক্র্যাক প্লাটুনের কোনওও সদস্যর নাম বলেননি। বরং সাথে ধরা পড়া পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সব দায় দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে ১ লা সেপ্টেম্বর তাঁদের মুক্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এদিনের পর আলতাফ মাহমুদকে কেউ আর খুঁজে পাননি।
একাত্তরে লড়াইয়ে পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসক-শোষকরা তাঁবেদার সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি আলতাফ মাহমুদকে অকথ্য নির্যাতনের মাধমে কাবু করতে চেয়েছিল। পিশাচেরা যতই যাতনা বাড়িয়েছে তার রক্তমাংশের দেহের ওপর, ততই যেন ইস্পাতদৃঢ় আদর্শ মানুষ, অনুকরনীয় চরিত্র আর অকুতোভয় সৈনিক হিসেবে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন তিনি। তাই আলতাফ মাহমুদ আজ একটি জ্বলন্ত নাম, বারুদের মতো ছড়িয়ে আছে এ দেশের পথে-প্রান্তরে কোটি কোটি হৃদয়ের উষ্ণ আবাসে।
আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী আলতাফ মাহমুদের জন্মদিন। শুভ জন্মদিন 'ঝিলু দা গ্রেট'। আপনি থাকবেন আমাদের প্রতিটি নিঃশ্বাসে স্পন্দনে।
কভার ছবিটি সবার ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত।
তথ্য কৃতজ্ঞতা - সায়েদ হাসান টিপু, হেদায়েত হোসেন মোরশেদ
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৩২