আজ বিশ্ব পুরুষ দিবস!
অনেকেই হয়তো অবাক! পুরুষ জন্যও কোনো দিবস আছে নাকি! জানেন না তাইনা? জানবার কথাও না। আর জানবেন বা কিরে।পুরুষ দিবসের জন্য তো আর মার্কেটিং হয় না!! ৮ ই মার্চ বিশ্ব নারী দিবসে পত্রিকার সাথে আলাদা সাপ্লিমেন্ট পাওয়া যায়, দিবস কেন্দ্রিক চ্যানেলে চ্যানেলে টকশো হয়, ফেসবুকের সব পেইজে নারীদের সুখ-দুঃখ লিপিবদ্ধ হয়। কিন্তু পুরুষ দিবসে কি হয়? কিচ্ছু না। পুরুষ দিবস আছে কি না তাও অনেকেই জানে না। সত্যি বলতে কি আমি নিজেও জানতাম না। আজকে পুরুষ নিয়ে একটা আর্টিকেল চোখে পড়ল হঠাৎ! আর কি আমিও জেনে গেলাম। জানেন কি একটা সংসারের বোঝা টানতে টানতে, পাবলিক বাসে ঝুলে ঝুলে আসা একজন পুরুষ যার ৩০০ টাকার শার্ট হলেই চলে কিন্তু ছোট মেয়েটার জন্য একটা ভালো পোশাক না হলেই না, এদের কাছে পুরুষ দিবস থাকলেই কি না থাকলেই কি, সব দিনই এক। এই যে নারী দিবস নিয়ে এতো এতো কথা আওড়ানো হয়,টকশো হয়,নারী স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা হয়। কখনো ভেবে দেখেছেন কি যে পুরুষ জাতি শোষিত হতে পারে!
না, ভাবেন নি। পুরুষ মানেই তো ধর্ষক। পুরুষ মানেই পশু,জানোয়ার। হ্যাঁ, ছয় বছরের ছোট্ট মেয়েটাকে আর ৭০ বছরের বুড়ি মহিলাটকে যে পুরুষ খুবলে খায় সেও পুরুষ আবার যে নিজের বোনকে অপ্রস্তুত পরিস্থিতিতে না ফেলার জন্য নিজে গিয়ে দোকান থেকে ন্যাপকিন কিনে আনে সেও পুরুষ। পার্থক্য শুধু চিন্তায়, রুচিতে আর শিরদাঁড়ায়। পুরুষ মানেই যে ধর্ষক এটা ভাবা হচ্ছে একধরণের অসুস্থ, হ্যাঁ চিন্তার অসুস্থতা।
মেয়েরা রাস্তাঘাটে ছেলেদের ইভটিজিং এর স্বীকার হচ্ছেন, বিচার চাচ্ছেন। সব ক্ষেত্রে না হলেও মোটামুটি সবাই-ই বিচার পাচ্ছেন। কিন্তু একজন ছেলে খ্যাত হলে, পায়ে হাওয়াই চপ্পল পরে রাস্তা দিয়ে হাঁটলে কতো মেয়ে তাকে নিয়ে হাসে, এটা ওটা বলে তাও সে কর্ণপাতই করেনা। কারন সে পুরুষ মানুষ যে! তার সহ্য ক্ষমতা অনেক!!
একজন পুরুষ যার মাথায় পুরো পরিবারের দায়িত্ব, ক্যারিয়ার, ভালোবাসার মানুষকে দেয়া প্রতিশ্রুতি সব যখন থাকে তখন তার দুচোখ যা দেখে তা আমরা সাধারন চর্মচক্ষু দিয়ে দেখতে পাইনা।
রিকশায় যাচ্ছেন, রেস্টুরেন্টে খাচ্ছেন সবকিছুর বিল দিতে হবে পাশে দাঁড়ানো ছেলেবন্ধুটার। তার মাস চলুক বা না চলুক তাকেই দিতে হবে কারন সে পুরুষ মানুষ। আরেকটা বড় বিষয় হচ্ছে বিয়ে। মেয়েরা চাইলেই একটা যোগ্যতাসম্পন্ন পাত্র জোগাড় করতে পারে। কিন্তু পুরুষদের আগে যোগ্য হতে হয় তারপর বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। বয়স ৩২ আর ৪২ হোক তাতে কিছু আসে যায়না। বিয়ের প্রসঙ্গে পুরুষ যদি পাত্রীর হাইট বা গায়ের রং নিয়ে কথা তোলে তবে সে রেসিস্ট, অশিক্ষিত, বর্বর, ন্যারো মাইন্ডের। কিন্তু কনেপক্ষ যখন জিজ্ঞেস করে যে বাবা, তোমার বেতন কত তখন সেটা হয় স্বাভাবিক প্রশ্ন।
একজন পুরুষ যদি নারীর ভরণপোষণ না দিতে পারে তবে সে কাপুরুষ। আর একজন নারী যদি সংসারে কিছু টাকা নাও দেয় তাতে সমাজের কিচ্ছু যায় আসেনা।
একটা পরিবারের দায়িত্ব, সবার স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব, নিজের ক্যারিয়ার গড়বার দায়িত্ব, ভালোবাসার মানুষটাকে দেয়া কথা রাখবার দায়িত্ব, নারীকে আগলিয়ে রাখার দায়িত্ব ইত্যাদির বোঝা বহনকারী পুরুষ সমাজের সবাইকে বিশ্ব পুরুষ দিবসের শুভেচ্ছা।।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:২৫