প্রথমে দেখি একজন মাওলানা যদি এক ঘন্টার একটি ওয়াজ বা বয়ান করেন, তখন কোন বিষয়ে তিনি কতখানি সময় ব্যয় করেন ।
----
১) ২০ বিশ মিনিট তিনি ব্যয় করেন - নারী নিন্দা , নারী চর্চা করে - দুনিয়ার যত সব অরাজগতা হচ্ছে তার পিছনের অন্যতম কারন হোল নারী জাতি , নারীকে স্বাধীনতা দেওয়া যাবে না ইত্যাদি
২) ১৫ মিনিট ব্যয় করেন হিন্দু ধর্মকে গালাগালি করে , ৫ মিনিট বরাদ্দ ইহুদী নাসাদের গালমন্দ করার জন্য । এরা কাফের , এদের স্থান দোজখে , এরাই দুনিয়ার সব সমস্যার মূল ইত্যাদি ।
৩) ১৬ মিনিট বরাদ্দ , পহেলা বৈশাখ , স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, ভাষা দিবস পালন হারাম , হিন্দু ধর্ম চর্চার সামিল এবং মুসলমানদের ঈমাণ খারিজ হয়ে যাবে , এ সমস্ত দিবস পালন করলে ।
৪) ৪ মিনিট বরাদ্দ , ইসলামের নামে সন্ত্রাসের ব্যপারে , প্রথমে তারা বয়ান করে -- বিনা কারনে মানুষ হত্যা করা ইসলাম সম্মত নহে এবং যারা এই সব করে তারা সহি মুসলমান নহে ( ১ মিনিট ) এবং ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম । বাকি ৩ মিনিটের বয়ান --এগুলো ইহুদী নাসার যড়যন্ত্র , সমগ্র বিশ্ব জুড়ে মুসলমানদের অত্যাচার করা হচ্ছে , এগুলোকে প্রতিহত করতে হবে ইত্যাদি ।
---
মাত্র ৪ মিনিট যার আবার ৩ মিনিট ইহুদী নাসার ষড়যন্ত্র এবং মুসলমানরা অত্যাচারিত হচ্ছে । সত্য কথা বলতে কি , আসল সত্যটা
হোল প্রকৃত বিষয়টা নিয়ে মাওলানারা যদি ১৫ মিনিট সঠিক ব্যাখা দিত, তাহোলে কোন মুসলমান কোন দিন জংগিপণার দিকে ধাবিত হোত না কিন্তু আসল সত্যটা তারা বলে না এবং ইহুদী নাসা ষড়যন্ত্র বলেই এক কথায় সমস্যার মূল কারন হিসাবে মূল্যায়ন করেই খালাস । এর আসল কারনটা কি ভাই জানেন ---
যারা এই সব জংগিপনা এবং হত্যাকান্ড ,বোমাবাজি করছে ,তাদের প্রত্যেকটা একশন ইসলামিক দলিল--- হাদিস , মিশকাত শরিফ ইত্যাদি দ্বারা সমর্থিত , যারা জীবণ বাজি করে এই সমস্ত দলিল অনুসরন করছে , তাদের কি এক কথায় সহি মুসলমান নহে বলা যায় ? আই এস আই বলুন , জামাত বলুন , আল কায়দা, হারকাতুল জেহাদ , হেফাজত সহ সবার কর্মকান্ড ইসলামিক দলিল দ্বারা সমর্থিত । এখন ইসলামের নামে সন্ত্রাস বন্ধ করতে হলে , প্রথমে এই সমস্ত মারাত্বক দলিল গুলোকে খন্ডন করতে হবে , কোরান এবং কোরান সম্মত সহি হাদিস দিয়ে এবং এই সমস্ত ভ্রান্ত দলিল গুলো সাধারন মানুষকে বিভ্রান্ত যাতে করতে না পারে, তার জন্য যথেষ্ঠ সময় নিয়ে আলোচনা করতে হবে এবং মানুষের কাছে সঠিক বার্তাটা পৌছাতে হবে ।
মাত্র ৪ মিনিট দায়সার গ্রস্থ ভাবে কি কারনে কথা বলা হয় এবং মূল কারনটা ইহুদী নাসার ষড়যন্ত্র হিসাবে চালান হয় , তার কি কোন জবাব আছে ? হ্যা এর প্রধান কারন হোল যে সমস্ত দলিল গুলোর বিরুদ্ধে ওনারা কোন দিন দাড়াবেন না এবং কথা বলবেন না এবং তারা এ সমস্ত দলিল গুলোকে মনে মনে মান্য করেন , তাই এ গুলকে নিয়ে কন কথা তারা বলেন না । এগুলে এড়িয়ে গিয়ে ইহুদী নাসা যড়যন্ত্রকে মুখ্য কারন হিসাবে দাড় করার চেষ্টা করেন ।
মনে করুন হঠাৎ হুজুররা এই সমস্ত ভ্রান্ত দলিল গুলো বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছে এবং তাদের ১ ঘন্টার বয়াণের ৪০ মিনিট তারা ব্যয় করছে , মানুষকে এই সমস্ত ভ্রান্ত দলিল থেকে মুক্ত থাকতে ।
এবার বলুন ইহুদী নাসা বা র বা অন্য কোন অপশক্তির, কোন ক্ষমতা আছে মুসলমানদের জংগি বানাবার । কেউ যদি অপকর্ম করতে চায় , তখন তাকে সাহায্য করার জন্য কোন না কোন শক্তি দাড়িয়ে যায় । এটা যদি ইহুদী নাসার যড়যন্ত্র হয় তাহোলে একে মোকাবেলা করতে হবে ভ্রান্ত দলিল গুলোকে মোকাবেলা করে , কিন্তু সেটা কি কখনো করা হয় ?
এবার পাঠকরাই বিচার করুন আসল সমস্যাটা কি বিভ্রান্তকারি দলিল গুলোকে প্রতিহত না করে লালন করা ---- নাকি ইহুদী নাসার ষড়যন্ত্র ।
এই বিষয়টি নিয়ে আরেকটি পর্ব লিখা হয়েছে , সেটা পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন তাহোলে মোল্লারাই কি ইহুদী নাসার দালাল ?
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:২০