স্কুল জীবনে লেখা প্রথম কবিতাটা শিশু একাডেমি থেকে প্রকাশিত 'শিশু' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল ক্লাস ফোরে (সিক্সেও হতে পারে) থাকতে । খুব যে আহামরি কিছু হয়েছিলো তা কিন্তু নয় । কিন্তু কেন ছেপেছিল জানি না । সেই কবিতা (ছড়া) লেখার মূল অনুপ্রেরণা ছিল আমার মায়ের প্রিয়, মহা সুন্দরী (মায়ের ভাষ্যমতে), মৃত (মায়ের পিঠাপিঠি বড় ), কবি বোন বিয়ের পর সন্তান জন্ম দেবার সময় যিনি আর কবিতা না লিখেই এই ধরাধাম ত্যাগ করেছেন । যাকে আমরা কখনও দেখিনি । ছোট বেলা থেকে শুধু মায়ের মুখেই তার কথা শুনে শুনে তার একটা মায়াময় চেহারা আমরা এঁকে ফেলেছিলাম আমাদের মানস পটে ।
সেই না দেখা খালার কবি প্রতিভায় অনুপ্রাণিত হয়েই মূলত কবিতা লিখার আগ্রহ পেয়েছিলাম । অপরিণত বয়সে অপরিপক্ক লেখা পরিপক্ক কবি, পাঠকদের কাছে নস্যি...কিন্তু তার পরও মনে হলো লেখা গুলো কয়েকটি করে শেয়ার করি ।
প্রশ্ন ?
মাগো যুদ্ধ কেন হয় ?
কেন নয়- এ পৃথিবী শান্তিময় ?
আমরা কি চিরকাল
শোষিতই থাকব ?
সুখের আশা কি শুধু
মনের মাঝেই রাখব ?
(১৭)৫৭-তে যে স্বাধীনতা হারিয়েছিলাম
(১৯)৭১-এ কি তা ফিরে পেলাম ?
পরিবারে নিপীড়ন, সমাজে সন্ত্রাস
কারো কারো জেগে উঠে
দেশাত্ববোধ অকস্মাৎ ।
বক্তৃতা, মিছিল আর ধর্মঘট, অনশন
করে না তো সামাধান
বাড়ে শুধু টেনশন ।
স্বার্থের খাতিরে একত্রিত জনতা
স্বার্থ ভেঙ্গে গেলে
রয়নাতো একতা ।
একথায় সেকথায় এতোদূর এগুলাম
সবশেষে ধুরছাই পয়েন্টটাই হারালাম ।।
(গুলিবিদ্ধ সৈনিকের আত্নকথন)
হঠাৎ কী যেন মনে হলো-
মনে হলো কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছি আমি ।
আমার হাতটা -
আমার হাতের L.M.G ছিল কাঁধে ।
কিন্তু হাতটা ঝুলে পড়ে গেল মাটিতে
না না ওটা মাটিতে পড়লে চলবে কেন ?
যারা আমার মায়ের সামনে তার আদরের ধন
আমার ভাইকে কুকুরের মত কুরে কুরে মেরেছে
যারা আমার বাবার সামনে তার সোনামনি
আমার বোনটির সম্ভ্রম হরণ করেছে ।
আমি, হ্যাঁ হ্যাঁ আমি
আমি প্রতিশোধ নেব ।
আমি প্রতিশোধ নেব-ঐসব পশুদের,
যারা মানুষরূপি পশু ।
ওদের কি মা-বোন নেই ? বাপ-ভাই নেই ?
ওরা কি ওদের সম্মান করে না ? স্নেহ করে না ?
না না ওরা তো পশু
ওদের ভেতর মনুষত্ববোধ নেই ।
আমার কন্ঠ রোধ হয়ে যাচ্ছে কেন ?
বুকের পাজরের নিচে ব্যাথা
উহ্ !
আহ! এ যে রক্ত !
আমার হাতে রক্ত !
আমার শার্টে রক্ত !
চারদিকে এতো অন্ধকার কেন ?
আলোটা জ্বেলে দা্ও-
সূর্য কি ডুবে গেছে ?
আকাশে কি চাঁদ নেই ?
আমার L.M.G টা হাতে নিই ।
আমাকে যে প্রতিশোধ নিতে হবে
হ্যাঁ আমি প্রতিশোধ নেব ।
আমার মা-বাবা, ভাই-বোনকে
হারানোর প্রতিশোধ - আঃ আহঃ !
রংধনু
রংধনুর ঐ সাত রং
সাতটি বীরের প্রতীক ?
এই নিয়ে যে সারাক্ষণই
ভাবছে বসে আতিক ।
দুপুর বেলা ডাকছে মা তার
ভাত যে খেতে হবে-
খেতে বসলে রংধনু কি
আকাশটাতে রবে ?
রংধনুর ঐ লাল রং কি
সাতটি বীরের রক্ত ?
স্বাধীন করে বাংলাদেশকে
তাদের নাম হবে কি পোক্ত ?
এতো কিছু ভেবে তবুও
(আতিক) কিছুই খুজেঁ পায় না ।
সাতটি বীরের কথা সবই
জানা যে তার হয় না ।
[ছবিটা আমার স্কুল বয়সের কবিতার ডায়েরির কভার থেকে তোলা ।আর কবিতাগুলোও সব স্কুলে থাকতে লিখা । দেশের বর্তমান পরিস্থিতির রাজনীতির সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই । কবিতাগুলো থেকে কিছু কবিতা বেছে নিলাম ক্যাটাগরি করে । কবিতার ভুল মার্জনা আশা করলেও গঠনমুলক সমালোচনা কৃতজ্ঞতার সাথে গ্রহণীয়, তবে বানান ভুল দেখলে ধরিয়ে দিতে কার্পণ্য না করার অনুরোধ করা গেল ।]