somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মানসিক চাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করার উপায়

১৭ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা সাধারণত সবসময়ই কোন না কোন মানসিক চাপে থাকি। মানসিক চাপ থেকে নিজেকে উত্তরণের জন্যে কিন্তু আমরা নিজেরাই উদ্যোগী হলে এই সব নিত্যদিনের সমস্যা থেকে নিজেদেরকে মুক্ত রাখতে পারি। আর তার জন্যে আত্ননিয়ন্ত্রণ, আন্তরিকতাই যথেষ্ট।খুব বেশি ভুমিকায় না গিয়ে সরাসরি আমাদের প্রাত্যহিক জীবন থেকে তৈরী হওয়া কিছু মানসিক সমস্যা নিয়ে নিজের মতো করে লিখার চেষ্টা করলাম।

অবাস্তব প্রত্যাশাঃ
আমাদের প্রত্যাশা অনেক সময়ই আমাদের সামর্থের চেয়ে বেশিই হয়ে যায়। যদিও মানুষ তার আশার সমান বড়। কিন্তু ধরুণ আপনি একজন গৃহ ব্যবস্থাপক। এক বা দুই বা ততোধিক সন্তানের জননী (জনক বলছি না বিশেষ কারণে) । আপনার পক্ষে এমতাবস্থায় নতুন করে ঘরের বাইরে বা ঘর থেকে দুরে কোথাও ৯ টা ৫টা চাকুরী নিতে গেলে আপনার কাছের অনভ্যস্থ মানুষগুলো কোনভাবেই আপনাকে সহযোগিতা করবে না। সেক্ষেত্রে আপনাকে বিকল্প উপায় খুজেঁ নিতে হবে। কেননা বিকল্প উপায় খুজেঁ না নিলে হয় আপনি জেদ করে চাকুরীতে গেলেন আপনার সন্তানদের সমস্ত দায়ভার কাজের মানুষটির উপর দিয়ে অথবা সন্তানদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে। অথবা চাকুরীতে না গিয়ে নিজে হতাশায় নিমজ্জিত হলেন। তাই নিজেকে হতাশা থেকে বাঁচানোর জন্যে আপনাকে বিকল্প পথ খুজেঁ বের করতেই হবে। এই বিকল্প উপায় কোন সৃজনশীল কাজও হতে পারে। তা লেখালেখি থেকে শুরু করে অন্য যে কোন ধরনের কাজ হতে পারে।

অহেতুক সময় সীমাঃ
অনেকেই রুটিন অনুসরণ করে কাজ করতে পছন্দ করেন। কিন্তু সংসার জীবনটা পুরোপুরি রুটিন মেনে চলা সম্ভব নয়। তাই সময়গুলোকে নিজের মতো করে ব্যবহার করুন। তবে তা যেন যথেচ্ছা না হয়। সারারাত কাজ করে দিনের অনেকটা সময় ঘুমানো বা সারাদিন ঝিমানো কোন কাজের কথা না। অনেককেই দেখা যায় রাত জেগে কাজ করে দিনের অনেকটা সময় ঘুমায়...যদিও এই কাজটা অনেকেই নির্জনতায় কাজ করার জন্যেই করে থাকেন। তবে আমাদেরকে সচেতন থাকতে হবে যেন শরীর তার প্রয়োজনীয় বিশ্রাম পায়। এবং এই বিশ্রাম নেয়াটা যেন এমন সময়ে না হয় যখন আপনার অন্য কোন প্রয়োজনীয় কাজ করার সময়।

সমস্যাকে মোকাবেলা করতে শেখাঃ
অনেক সময়ই কাজের চাপ বেড়ে গেলে আমরা তা দুরে সরিয়ে রাখি পরে করবো ভেবে। এতে প্রকৃতপক্ষে নিজেরই ক্ষতি করা হয়। কেননা সেই কাজটা কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করে শেষ করতে না পারলে তা আমাদের মাঝে বোঝা হয়ে হতাশার সৃষ্টি করে। কাজেই প্রয়োজনীয় কাজটি যতোই তিক্ত হোক তা কষ্ট করে হলেও করে ফেলতে হবে সময় মতোই। উদাহরণ স্বরূপ অনেক কথাই বলা যায়, কিন্তু ধরুন আপনি যাদের সাথে কথা বলতে পছন্দ করুন, গল্প করে মজা পান শুধু তাদেরকেই ফোন করে আলাপ চারিতা চালান। কিন্তু অনেকদিন ফোন করা হয় না এমন কাউকে হঠাৎ করেই আপনার খুব দরকার পরে গেল, তখন তাকে শুধু নিজের দরকারে ফোন করাটা খুবই অশভোনীয় এবং যাকে ফোন করলেন তিনিও যে সবসময় এই অভ্রাসটিকে সাদরে গ্রহণ করবেন তা কিন্তু নয়। আবার ধরুন, আপনার পরিচিত কেউ হাসপাতালে বা রোগাক্রান্ত। তাকে সশরীরে দেখতে যেতে না পারলেও অন্তত ফোন করে খোঁজ নেয়াটাও আপনার একটা সামাজিক সমস্যাকে কমিয়ে দিচ্ছে।

স্বনির্ভরতাঃ
এটা খুবই জরূরী। আমরা স্বনির্ভরতা বলতে সাধারণ অর্থনৈতিক নির্ভরতাকেই বুঝে থাকি। কিন্তু নিজের চারপাশের কাজগুলোকে অন্যের উপর নির্ভর করে না করে নিজে নিজে করাটাও স্বনির্ভরতা। অনেককেই দেখা যায় শপিংয়ে যাবে, তার সাথে যাওয়ার জন্যে অন্য কাউকে জোর করেই নিয়ে যাচ্ছে, হয়তো যে সাথে যাচ্ছে সে অনুরোধে ঢেকি গিলেই যাচ্ছে।

কাজের গতিঃ
যে কাজটি যে সময়ে শেষ করতে হবে তা ঠিক সময়ে শেষ করতে আমরা সাধারণতই গরিমসি করে থাকি এতে আমরা সাধারণতই পিছিয়ে পরি। কেউ কেউ বলতে পারেন, এভাবেই তো জীবনটা কেটে গেল...ঠিক সময়ে কাজ করলে তো আজ আমি অমুক থাকতাম, তমুক থাকতাম। কিন্তু যদি বুঝতেই পাচ্ছেন তবে এখন থেকেই চেষ্টা করুন না কেন...আর হতাশা নয় অমুক তমুক হওয়ার...যা আছেন সেই অবস্থাটাকেই নিজের মন মতো করে নিন।

পারিবারিক জীবন উপভোগঃ
কাজের চাপে অস্থির হয়ে আমরা নিজেদের কাছের মানুষগুলোর প্রতিও অনেক সময় উদাসীন থাকি। কিন্তু কাছের মানুষগুলোর সাথে সময়গুলো ভালো না কাটানোর চেষ্টাকে বলবো আত্নহত্যার সামিল। কেননা কাছের মানুষগুলোই আপনার সুখ, সমৃদ্ধির প্রধান নিয়ামক। কাজেই তাদের প্রতি মনোযোগ দেয়াটা, সুন্দর সময় কাটানোর চেষ্টা করা এবং তা বাস্তবে কাজে লাগানো নিজের সুখি জীবনের জন্যেই জরূরী।

শ্রোতা এবং দর্শকের ভুমিকা নিনঃ
অনেকেই অনেক কথা বলছে। কিন্তু শ্রোতা বা দর্শক কমই ... যদি সময়গুলো খারাপ যায় তবে অন্যের কথা শুনুন। দেখুন অন্যে কি করছে। তা উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন। তাতে বরং কখনো কখনো আপনার মঙ্গলই হবে। আর সময় যখন নিজের অনুকুলে না থাকে তখন বলার চেয়ে শোনার অভ্যেসটাই কাজে লাগে।

চাহিদার অযৌক্তিকতাঃ
আপনার হয়তো কোন কিছু কিনতে ইচ্ছে করছে বা একটা নতুন ডিগ্রী অর্জন করতে ইচ্ছে করছে বা কোন একটা দেশ ভ্রমণ করতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু তা কতোটা সময়োপযোগী বা তা কতোটুকু আপনার জন্যে এই মুহুর্তে যৌক্তিক তা নিজের কাছেই জিজ্ঞেস করুন । এতে সেই ডিগ্রী নিতে না পারার বা সেই দেশটাতে ভ্রমণ করতে না পারার বা সেই মূল্যবাদ দ্রব্যটি কিনতে না পারার হতাশা , কষ্টটা দূর হয়ে যাবে।

সময়গুলো নিজের নিয়ন্ত্রনে রাখুন। ভালো থাকুন সর্বদা।


বিশেষ কৃতজ্ঞতা ড. গার্গী দত্ত।


এধরণের আগের পোস্ট
♣জীবনটা আরো সুন্দর হতে পারে কতো সহজেই!♣
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
নিজস্ব ব্লগ সাইটেও প্রকাশিত হয়েছে।
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৪
১২৬টি মন্তব্য ১২৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×