প্রাককথন:
পেশাগত কারণে জটিল ব্যস্ততার মধ্যে আছি, ভাবছিলাম কিছুদিন ব্লগের বাইরে থাকবো। কিন্তু এতে বেশ কিছু ভালো পোস্ট পড়া থেকে বঞ্চিত হবো।
আমি এখানে ভালো পোস্ট-এর কথা বললাম। চাইলে এই কথাকেও নঞর্থকভাবে নিয়ে ক্যাচাল করা যায়। কিন্তু আমি আশাবাদী মানুষ। তাই ক্যাচালের চিন্তা মাথায় নিয়ে লিখতে বসিনি।
সাধারন/ নতুন ব্লগার:
আমার ব্লগিয় বয়স ৭ মাস ৫ দিন। এক পোস্টে বর্ষপুর্তিতে হাফপ্যান্ট থেকে ফুলপ্যান্টে উঠায় অভিনন্দন জানিয়েছিল ব্লগার দূর্যোধন। সেই নিয়ে কিঞ্চিত অস্বস্তিতে আছি
ব্লগার হিসেবে আমি অনেকের চেয়েই নতুন। কিন্তু নতুন হিসেবেও আমার যা মনে হয়েছে তাই বলার জন্যই লিখতে বসা আর সব সাধারন ব্লগারদের মতোই। যারা ক্যাচাল করতে ব্লগে আসেনি, যারা ভালো পোস্ট পড়তেই ব্লগে এসেছে।
উদ্দেশ্য:
আমি অনেককেই জিজ্ঞেস করেছি কেন ব্লগে এসেছে?
- শখের বশে এসেছে
-প্রিয় বন্ধুর লেখো পড়তে এসেছে
-নিজের মনের কথা প্রকাশ করতে এসেছে যেন অনেকেই জানতে পারে সমাজের অজানা অনেক কথা
-ব্লগারদের মানসিকভাবে পাশে থাকার জন্য এবং সেই সাথে পেশাগত উন্নয়নের জন্য
-আমি নিজে এলাকার এক ছোটভাইয়ের দেয়া লিংকের কবিতা পড়তে সামুকে চিনেছিলাম। কিন্তু সেটা আমার জন্য উপযুক্ত একটা সময় ছিল। কারণ আমি সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মানুষগুলোনিয়ে কাজ করতে আগ্রহী এবং এদের মধ্যে বড় একটা অংশই নারী, তাই আমার পোস্টের টার্গেট মুলত নারী। প্রথম আলোতে লেখা পাঠিয়ে অধির হয়ে অপেক্ষা করছিলাম ছাপবে হয়তো কিন্তু তখনও বুঝিনি যে অনেকেই নারীদের অধিকারের ব্যাপারে সচেতনতার কথা বল্লেও সেটার গভীরতা কতোটুকু! তাই নিজের চিন্তা ভাবনাকে প্রকাশ করতে বই প্রকাশনার কাজটা করতে বাধ্য হয়েছিলাম, যাতে সহজেই আমার মেসেজ অনেকের কাছেই পৌছানো সম্ভব হয়।
সেজন্য ব্লগটা নিজের কাজের একটা ক্ষেত্র হিসেবে আমার জন্য উপযুক্ত একটা জায়গা।
ভালো লেখক ব্লগার:
আমার এই অল্প ব্লগীয় বয়সে আমি দেখেছি অনেকেই অনেক ভালো লিখছেন, যারা বিখ্যাত হয়ে গেছেন তারা তাদের অবস্থানকে ইতোমধ্যেই শক্ত করে নিয়েছেন নিজেদের লেখার গুনে, ব্লগীয় ইন্টারেকশানের গুনে।
পাখিদের কথা:
অনেকেই ভালো লিখেন, এমন পোস্টে আমি যেয়ে হতাশ হয়েছি তাদের পোস্টে কমেন্টের হাতে গোনা সংখ্যা দেখে! খারাপ লেগেছে যে এমন ভালো পোস্টেগুলোর যথার্থ সম্মান দেওয়া হচ্ছে না। ভয় পেয়েছি এই ভেবে যে, ওই সব পোস্টে কমেন্ট খরার কারণে এতো ভালো লেখার এই নিভৃতচারী লেখক না তার আগ্রহই হারিয়ে ফেলে!
ব্লগীয় ইন্টারেকশান:
কেউ যদি শুধু নিজে ভালো লিখে তার পোস্ট সামুর মতো একটা কমিউনিটি ব্লগে পোস্ট করে চলে যায় আর তার পোস্টেই শুধু মন্তব্যের জবাব দিয়ে থাকেন বা স্কিপও করে জবাব দিয়ে থাকেন, অন্যদের পোস্টে যেতে তার অনীহা তবে তাদের বলবো-
-আপনি যেমনটি আশা করছেন যে আপনার ভালো লেখা অন্যরা পড়ুক তেমনি অন্য ভালো লেখকরাও আশা করতেই পারে তাদের পোস্ট পড়ার জন্য।
সিন্ডিকেট ব্লগিং:
পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সব কিছুর মুলে রয়েছে সিন্ডিকেট। আমি যখন আমার পড়শির বাড়িতে যাবো তখন কিন্তু একসময় সেও আমার বাড়িতে আসবে, গড়ে উঠবে সখ্যতা। এটা কি এক ধরনের সিন্ডিকেটিং নয়??!! পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রেও কিন্তু এই সিন্ডিকেটিংটা চলে আসে। ভারত যদি আমাদের ন্যায্য দাবী ঠিক মতো মেনে নিত তবে কিন্তু আমরা ভারতীয় পন্য বর্জন করতাম না, ইসরাঈল যদি মুসলিমদের উপর এমন অত্যাচার না করতো তবে কিন্তু সেদেশেও আমাদের যাতায়াত হয়তো অবাধই থাকতো।
তবে, আমার কথা হচ্ছে এই পড়শীর সাথে সখ্যতা হতে যেয়ে যেন আমরা পড়শীর অন্যায়টাকেও মেনে না নিই। তাকে যেন আমাদের দায়বদ্ধতার ব্যাপারে সচেতন করতে সক্ষম হই।
দায়বদ্ধতা:
কষ্ট করে একটা পোস্ট দেয়ার পর সবাই মন্তব্য আশা করে, সবাই চায় তার পোস্ট হিট হোক তবে সবারই যেন মাথায় থাকে যে দেশের বিশাল এক জনগোষ্ঠেীর ক্ষুদ্র একটা অংশ আমরা যারা ব্লগিং করছি তারা যেন দেশের দায়বদ্ধতার কথা ভুলে না যাই । আনন্দ করার জন্য অনেক কিছু আছে, আমি নিজে রোটারেক্ট আন্দোলনের সাথে খুব সফল ভাবে ছিলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনসিসি-র হয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অনেক আনন্দও করেছি। শুধু হালকা আনন্দের জন্য ব্লগটাকে ব্যবহারের আগে আরেকবার ভাব উচিত আমাদের দায়িত্ব নিয়ে।
নারী ব্লগার:
আরেকটা কথা নারী ব্লগারদের ব্লগীং করতে নিরুৎসাহিত না করে, অর্থাৎ ব্লগে তাদের দেখেই যেন পুরুষ ব্লগারদের মনে জীববৃত্তির উদ্রেক না হয় সেব্যাপারে ফেরেশতা ব্লগারদের অনুরোধ রইলো, কারণ তাদের জৈবিক চাহিদা মেটানোর জন্য সারা দেশে বহুত মাংসপিন্ড আছে, নারীর মেধাকে ধ্বংস করবেন না প্লিজ...
আর নারীদেরও বলি ন্যকামি করে ব্লগিং না করে বরং নিজেদের মেধার স্ফুরন ঘটান যেটা আপনার ভেতর সুপ্ত হয়ে আছে সেটাকে প্রকাশিত করে মহিমান্বিত হোন।
হয়তো আরো অনেক কথাই মনে আসে কিন্তু এই মুহুর্তে আর লিখতে ইচ্ছে করছে না।
সবাই ভালো থাকুন।
সুস্থ্য ধারার ব্লগিংয়ে নিজে উৎসাহিত হোন অন্যদেরকে উৎসাহতি করুন।