সম্রাট আকবরের সময় নাকি বাঘে মহিষে এক ঘাটে জল খেত, তো সে সময়ের এক রাজা ঠিক করলেন বাঘ আর মহিষকে তার প্রাসাদে দাওয়াত খাওয়াবেন। যেমন ভাবা তেমনি কাজ, বাঘ আর মহিষ এলো দাওয়াত খেতে, তাদের দুইজনের সামনে খুবই সমাদর করে বিশাল বিশাল দুইটা হরিণের রোস্ট খেতে দেওয়া হলো। বাঘ তো মহা খুশি! আহা এতো মজার সুস্বাধু খাবার কতদিন খাইনা বলেই ইয়ামি! ইয়ামি! বলে খাওয়া শুরু করলো…চেটে পুটে সবটা খেয়ে সাথে কোমল পাণীয় খেয়ে বোয়াক করে একটা তৃপ্তির ঢেকুর তুললো। এদিকে তো মহিষ বেচারা মন খারাপ করে, মুখ চুন করে বসে আছে, সে কি করে খাবে এই হরিণের মাংস!? কোনদিন খায়নি হরিণের মাংস, কি করে খেতে হয় তাও জানেনা, সবচেয়ে বড় কথা হলো তার শরীরের গঠণ, তার খাদ্যাভাসে, তার পরিপাকতন্ত্রের গঠণেই মাংস খাওয়ার কোন সুযোগ নেই। এই দেখে তো রাজার মাথায় হাত, হায়! হায়! মেহমান খেতে পাচ্ছেনা…
পরের বার আবার দাওয়াত দেওয়া হলো, এবার কিন্তু রাজা মশাই আর ভুল করলেন না। এবার দুজনের সামনেই নরম কচি তাজা তাজা সবুজ ঘাস দেওয়া হলো। মহিষের তো আজকে পোয়া বারো! জিভে জল এসে যাচ্ছে! সে আর সইতে না পেরে হম্ হম্ করে সুস্বাদু, পুষ্টিকর ঘাস খাওয়া শুরু করলো। বাঘ বেচারার তো গালে হাত, সে কি খাবে! ক্ষুধায় পেট চোঁ চোঁ করছে। এই দেখে রাজামশায় তো ফাঁপরে পরে গেলেন, কি মুশকিল! এদের দুজনকে তো ঠিক মতো মেহমানদারী করা যা্চ্ছে না।
পরের বার রাজা মশায় গত দুইবারের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বাঘ কে দিলেন বিশাল বড় আকারের হরিণের রোস্ট, আর মহিষকে দিলেন বিরাট বড় রাজ থালায় তাজা তাজা ঘাস। এইবার বাঘ আর মহিষ দুইজনেই পেট পুরে, আয়েশ করে খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে তুলতে হাসি মুখে রাজার কাছ থেকে বিদায় নিলেন। রাজাও এবার বুঝলেন যে কখন, কাকে, কিভাবে তার প্রয়োজন মতো, চাহিদা অনুয়ায়ী ব্যবস্থাপত্র দিতে হয়।