প্রভাস ভাবনা
খোরশেদ আলম ৷
কুয়েত এসেছি প্রায় ৫ মাস চলছে ৷ এখন ও কুয়েতের পরিবেশের সাথে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারি নাই৷বাংলাদেশের চারদিকে গাছ পালা,আর এখানে গাছপালা নেই বললেই চলে৷ শুধু মাঝে মাঝে খেজুর গাছ দেখা যায় ৷ তবে তা সংখ্যার তুলনায় নগন্য ৷ তাছাড়া আমি যাদের সাথে কাজ করি তারা অধিকাংশ ইন্ডিয়ান, কেরালা,তামিল৷ তাদের সাথে আমার ভাষা গত সমস্যা দেখা দেয়৷ তাই যখন কোন বাংলাদেশীকে পাই কথা বলি৷ তখন আমার খুব ভাল লাগে ৷ তখন আমার মনে হয় যে আমি বাংলাদেশে আছি৷ আমি কাজ করি কুয়েতের সবচেয়ে বড় তেল রিফাইনারি মিনা আহাম্মদিতে৷এখানে তেল রিফাই করা হয়৷ একদিন কাজের ফাকে দেখি ১৩-১৪ বছরের এক বালক চুপচাপ বসে আছে,পাশে বড় আকারের পলিথিন ব্যাগ৷ তার মানে ছেলেটি পড়ে থাকা কাগজ আর্বজনা পরিষ্কার করে ৷তাই আমি পুরো পুরি ভাবে সিউর হলাম ছেলেটি বাংলাদেশী৷কারন এসব কাজ বাংলাদেশী লোক সবচেয়ে বেশী করে ৷ আমি ছেলেটির পাশে বসলাম৷ছেলেটি আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইল৷ও ভাবছে হয়ত আমি ইন্ডিয়ান না বাংলাদেশী৷আমাকে এখানে অনেকে ইন্ডিয়ান মনে করে ৷ অনেকে বলে আমাকে নাকি ইন্ডিয়ান মনে হয়৷ তাছাড়া আমার কাদে পাইপ মাপার থিকনেস মেশিন। যাহোক আমি ছেলেটির পাশে বসলাম ৷ বললাম তোমার নাম কি ? ছেলেটি অনেকটা ভুত দেখার মত চমকে উঠল ৷ নিচের দিকে তাকিয়ে বলল, আবুল কালাম ৷
: জেলার নাম কি ? রাজশাহী নওগাঁ।
: বিদেশ আসার জন্য তা কত টাকা খরচ হয়েছে?
প্রায় ২ লক্ষ টাকা।
:বেতন কত ?
২০KD,থাকা কোম্পানীর,খাওয়া নিজের। প্রায় ৩ মাস ধরে এসেছি। কিন্তু এখনো বেতন দেয়নি।
:তা বেতন পাওনি। তাহলে খাবার পাও কেথায় ?
:এক দিন না খেয়ে ছিলাম। মাঝে মাঝে আমাদের কোম্পানির বাংলাদেশী লোকেরা দিলে খাই, আর না দিলে না খেয়ে থাকি। এ বলে ছেলেটি কেঁদে ফেলে। যে ছেলে ২ লক্ষ টাকা দিয়ে কুয়েতে আসে।আর সে ছেলে ধনবান দেশে এসে না খেয়ে থাকে ।হায়রে দুনিয়া।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:৪৩