একদিন প্রতিবেশী হীরেনদা'র বোন বেনু বলেছিল
"ঝোপের তলের জোনাক গুলো প্রাণধিক প্রিয় আমার
শতাব্দী ধরে পোষে রেখেছি, ঠিক তোমার জন্য,
তুমি চাইলে সমস্তই পেতে পার নির্দ্বিধায় "
বালিকার বাসনায় হেসেছিলাম বিপুল অবহেলে।
অভিমানে আড়ষ্ট বেনু আর কোনদিনও কিচ্ছু বলেনি-
ও চলে যাবার পর জোনাক গুলো ভীষণ একা আঁধারে!
তখন আমি তোমার মোহে বিভোর হলাম চন্দ্রিমা!
তোমার রূপের শানিত শিহরণ
টিমটিমে দরিদ্র নীলাভ আলো এগুলোকে পিষেছিল
ছলনায়।
চন্দ্রিমা, ধরণীতে এমন স্বর্গীয় আলোকে-অর্থাৎ
বেনুর বুকের খাঁচাকে বাজেয়াপ্ত করেছি প্রথমবার
আর শেষবার বুঝেছি কি অাশ্চর্য জীবনবোধে অনুযোগহীন জোনাক গুলো জ্বলছিল
বেনুর বাহু বন্ধনে।
কেন ভাবছি তবে শুকনো পাতার মতো ঝরে যাওয়া এসব কথা?
অামার চোখের মনি যেদিন চাঁদ হয়ে গিলে খেয়েছিল গগনের সমস্ত তারকা
সেদিন তোমার প্রতিশ্রুতির তিথি চন্দ্রিমা!
তোমার স্পর্শ নিতে মোহের সায়রে ভেসেছি
বেনুর বাসনাকে পায়ের তলার ভেলা করে।
বুকের ভেতর ভাবের তরঙ্গ তোলে মুখোমুখি -চন্দ্রিমা
দাড়িয়েছি আমি এক আবেগের অটল হিমালয়।
সেদিন বেনুর চোখে জল দেখেছি প্রথমবার,
আমায় সে দ্বিতীয় বারের মতো কিছু বলল -
আমার বুকপোড়া গন্ধে কি না কাতর হয়েছে আজ,
আমার সেই পুরনো হাসি, তার কন্ঠরোধ করলো আরো একবার -
চন্দিমা, তখনো বসন্তে ফুল্লরিত এক 'শ কোটি বাগান
আমার কম্পিত কলেবরে অকৃপণ হেসেছে,
নিবেদনে তোমার।
মুদিত নয়নে নিশুতি রাত, মাতাল রোমান্স, নিগূঢ় স্বপ্ন -
চন্দ্রিমা, তুমি আমি একাকার।
তন্দ্রা শেষে কঠোর কন্ঠে বিদায় ভাষন তোমার-
বুঝলাম চন্দ্রিমা চিরকাল, তুমি চুরকাল অরুণ দেবতার।
লাঞ্চিত, দলিত, বিবর্ণ আমি ফিরি পাষাণ চন্দ্রিমা ছেড়ে,
প্রায়শ্চিত্ত আমার বেনুদের মজা পুকুরের ধারে
নিকষ অন্ধকারে জোনাকিরা আজও বেনুহীন আলো জ্বালে
নিতান্তই দরিদ্র স্বর্গীয় আলো যদি আমাকে বরণ করে
প্রেম আর ভালবাসার পূর্ণ কোলাহলে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৭