ঘুমোতে দেবেনা আমায়
কাঁচা ধান-মাখা হাতের ঘ্রাণ,
অথবা খড়ের আড়ালে জড়ানো,
ফাঁপানো গায়ের গন্ধ;
অথবা হেমন্তের সন্ধ্যায়,
সিদ্ধ ধানের ধূয়া-মাখা, লাল লিলির মত
ধুলো মলিন বাঙ্গালী নারীর বুকের ফসল;
কিংবা ঘর্মস্নাত বালিকার ফ্রগের আঁটশে বাতাস,
অথবা খোঁপা করা ভেজা কেশÑ
মাখনের মত মসৃন একটি মুখ,
কোনদিন ঘুমোতে দেবেনা আমায়।
ইরিনা, বার বার মানা করি,
জানালার পর্দা করোনা উন্মোচন,
বাড়িওনা নগ্ন নির্জন হাত,
আকাশের সাথে করোনা আলিঙ্গন,
এই হিমেল রাতে
খেলোনা ছলনা পাশা-
রাত্রিরা জেগে থাক,
দীর্ঘ যুগের ’পরে ভর করে,
আমাকে ঘুমোতে দাও, নক্ষত্রের রাতে,
শিশির যেমন হাওয়ার পাখায়,
নিঃশব্দে ঘুমিয়ে থাকে।
কিষাণ কন্যা, ঘুরে ঘুরে দখিনা দ্বার ধরে,
দাড়িওনা নরম রোদেলায়;
কার্ত্তিকে দিওনা হেলান, হেমন্তের গায়-
ঘুরোনাকো জড়ো ফসলের মাঠ,
কুড়িওনা কচি ধানে কুসুম সোনার।
বেঁধোনাকো বেতফুল বিহগি বক্কমূলে-
খুঁজে নাও বারেক, মানস কল্পনার।
অঞ্জলি ভরে বিলাও বটফল ভালবাসায়,
বেলফুল ঝরোক বনো ছায়,
অবারিত আমার এ আপার বাংলায়;
বউ কথা কও কর্নে বাজোক মধুর লজ্জায়,
অনিদ্রিত আমি জেগে আছি শুধু সে আশায়।