জীবনে বন্ধুত্বের গুরুত্ব সম্পর্কে বলাটা আসলে বাহুল্য ছাড়া কিছু নয়। কেননা বন্ধু ছাড়া জীবন অসম্ভব। বেশিরভাগ মানুষেরই একটি নির্দিষ্ট ফ্রেন্ড সার্কেল রয়েছে। সার্কেলের বন্ধুবান্ধবের মধ্যে সবাই যে ভালোবাসার সম্পর্কে থাকেন তা নয়। আবার সম্পর্ক থাকলেও বন্ধুদের আড্ডায় অনেকেই নিজের প্রেমিক-প্রেমিকাকে নিয়ে আসেন না। কিন্তু যদি প্রেমিক/প্রেমিকা ও বন্ধুদের মধ্যে ভালো চেনা জানা থাকে, তবে অনেকেই দলবেঁধে আড্ডা দিয়ে থাকেন। একই ক্যাম্পাসে প্রেম হলেও ঘটে একই ঘটনা।
আপাত দৃষ্টিতে সম্পর্কের জন্য এই কাজটি অনেক ভালো সন্দেহ নেই। কিন্তু কিছু কিছু কাজ অবশ্যই আছে যেগুলো প্রেমিক-প্রেমিকা যুগলদের উচিত নয় বন্ধুবান্ধবের সামনে করা। এতে বন্ধুরা বিরক্ত হয়, বাড়াবাড়ির পর্যায়ে গেলে বন্ধুত্ব ভেঙেও যায়। হয়তো মনের অজান্তেই কিছু কাজ করে ফেলছেন যেগুলো বন্ধুদের চোখে আপনাকে করে তুলছে অপ্রিয়, দূর নিয়ে যাচ্ছে ফ্রেন্ড সার্কেল হতে। আসুন জেনে নেই সেই কাজগুলো যা বন্ধুবান্ধবের সামনে করা একদমই উচিত নয় প্রেমিক প্রেমিকাদের।
নিজেদের মত কথা বলা
অনেক সময় আড্ডায় একসাথে থাকলেও বন্ধুবান্ধবের সামনেই আলাদা ভাবে কথা বলতে দেখা যায় প্রেমিক প্রেমিকাদের। এই কাজটি করা একদমই উচিত নয়। একসাথে একটি সার্কেলে থাকা মানে সবার সাথেই কথার আদান-প্রদান হওয়া। যদি নিজেদের মাঝেই কথা বলার থাকে তবে আড্ডায় না যাওয়াই ভালো। একসাথে বসে কথা বললে সবাইকেই সময় দেয়া উচিত।
সব সময় একসাথে থাকা
সবথেকে বিরক্তিকর যে জিনিষটি বন্ধুবান্ধবের সামনে ইদানিংকার জুটিরা করে থাকেন তা হলো সবসময় একসাথে আঠার মত লেগে থাকা। আপনি যদি আপনার প্রেমিক/প্রেমিকার সাথে দিনের ২৪টি ঘণ্টাই ফোনে বা বাস্তবে ব্যস্ত থাকেন, তবে বন্ধুবান্ধবের চোখে আপনি নিঃসন্দেহে অপ্রিয় ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি পাবেন। জীবনে প্রতিটি সম্পর্কেরই গুরুত্ব আছে। সবাইকে প্রাপ্য গুরুত্ব দেয়া শিখতে হবে। বন্ধু বান্ধপব মিলে কোথাও বেড়াতে গেলে সবাইকেই সময় দিন। সর্বক্ষণ যদি ফোনে কথা বলতে ব্যস্ত থাকেন, কিংবা সঙ্গীকে সাথে নিয়ে যান সব স্থানে-সেটা কখনোই বন্ধুত্বের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়।
ঝগড়া করা
একসাথে আড্ডায় মেতে থাকলেও হুটহাট মাথা গরম করে ঝগড়া লিপ্ত হতে দেখা যায় অনেক প্রেমিক প্রেমিকাকেই। কিংবা আগের ঝগড়ার সূত্র ধরে পুনরায় ঝগড়ায় লিপ্ত হয়ে পড়েন। মুহূর্তের মধ্যে তারা ভুলে যান সাথে কেউ আছেন কিংবা সামনে আরও মানুষ আছেন। এই কাজটি করা উচিত নয় একদমই। এতে করে আপনার বন্ধুদের সামনে আপনারা নিজেদেরই অপমান করছেন এবং বন্ধুদের অপ্রস্তুত করে দিচ্ছেন। দয়া করে এই কাজটি করবেন না।
ম্যাচ-মেকিং
নিজেরা সম্পর্কে আছেন বলে যে আপনার বন্ধুকেও সব সময় সম্পর্কে জড়ানোর জন্য টিপস দিতে হবে, এই চিন্তা ঝেড়ে ফেলে দিন। আপনি সম্পর্কে থেকে খুশি আছেন থাকুন। দেখা হলেই সিঙ্গেল বন্ধুবান্ধবকে ‘সমস্যা কী? সম্পর্কে যাচ্ছিস না কেন?খুঁজে দিতে হবে নাকি কাউকে? ওর এক ফ্রেন্ডকে ঠিক করেছি তোর জন্য’- এই ধরনের কথা বলা থেকে বিরত থাকুন।
অতিরিক্ত ভালোবাসা প্রদর্শন
যদিও এই ব্যাপারটি ছেলেদের মধ্যে বেশী দেখা যায়। তারপরও প্রেমিক-প্রেমিকা উভয়রই বন্ধুদের সামনে একে অপরের প্রতি অতিরিক্ত ভালোবাসা প্রদর্শন বন্ধ করুন। ছেলেরা বন্ধুবান্ধবের সামনে এই ধরনের ভালোবাসা প্রদর্শন করতে বেশী পছন্দ করেন। এই ধরনের ‘শো অফ’ করা বাদ দিন। এতে আপনার বন্ধুবান্ধব লজ্জাকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হবেন। এবং পরবর্তীতে হয়তো তিনি আপনাদের সাথে থাকতে হলে চিন্তা করবেন।
সব কথায় প্রেমিক/ প্রেমিকাকে টেনে আনা
অনেকের মধ্যেই এই ব্যাপারটি লক্ষ্য করা যায়, বিশেষ করে মেয়েদের মাঝে। সব কথায় সে কী করে, সে হলে কী করত, তার কী ভালো লাগে, আমরা একসাথে থাকলে এই করি, আমরা ভবিষ্যতে এটা করব, সেটা হবে- এই ধরনের কথা বার্তা বন্ধুবান্ধবের সাথে সকল আড্ডায় বলা বন্ধ করুন। যে কোনো ধরনের কথার সূত্র ধরে আপনার ভালোবাসা সম্পর্ককে টেনে আনবেন না।