ধৈর্য মানুষের অন্যতম মানসিক শক্তিগুলোর মধ্যে একটি। ধৈর্যশক্তি না থাকলে দীর্ঘমেয়াদী কোনো কাজই করা সম্ভব নয়। ধৈর্য সব মানুষের মধ্যেই থাকে, কারো কম, কারো বেশি। ধৈর্যশক্তি কম থাকলে মানুষ অল্পতেই রেগে যায়, কোনো কাজে সময় বেশি লাগলে সে কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে, অধ্যবসায় কমে যায়। ফলে উন্নতির পথে পদে পদে বাধা আসে।
ধৈর্যশক্তি কম থাকলে মানুষ চট করে রেগে যায়। রেগে গিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত নয়। কারণ রেগে গেলে সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনার শক্তি হ্রাস এবং তা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই জীবনে সামনে এগিয়ে যেতে হলে এবং সফল হতে হলে ধৈর্যশক্তির প্রয়োজন রয়েছে। আপনার ধৈর্য যদি কম হয়ে থাকে তাহলে তা কয়েকটি উপায়ে ধীরে ধীরে অনুশীলনের মাধ্যমে বৃদ্ধি করা সম্ভব। জেনে নিন উপায়গুলো।
মেডিটেশন করুন :
মেডিটেশন বা ধ্যান ধৈর্যশক্তি বাড়ানোর একটি কার্যকর পদ্ধতি। ধ্যান মানুষের মনকে শান্ত করতে সাহায্য করে, কাজের ভঙ্গিকে ধীর-স্থির করে, যা ধৈর্যশক্তি বৃদ্ধির লক্ষণ। মেডিটেশন বা ধ্যান করলে আত্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে মানুষ চট করে রেগে ওঠে না। এছাড়া ভালো-মন্দ বিচারের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায় যা ধৈর্যশক্তি বাড়ায়। প্রতিদিন নিয়ম মেনে একটি নির্দিষ্ট সময়ে ধ্যান করুন। সেটা হতে পারে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর অথবা রাতে ঘুমানোর আগে। একটি নির্দিষ্ট সময়ব্যাপী মেডিটেশন বা ধ্যানের চর্চা করুন।
অটোসাজেশন দিন :
অটোসাজেশন অর্থ নিজেই নিজেকে সাজেশন বা পরামর্শ দেয়া। ধৈর্য বৃদ্ধি করতে এ পদ্ধতিও বেশ কাজে দেয়। রেগে গেলে নিজেই নিজেকে শান্ত হতে বলুন। নিজেকে বোঝান যে, রেগে যাওয়া একটি খারাপ ব্যাপার, এতে নিজেরই ক্ষতি হয়, এর চেয়ে ঠান্ডা মাথায় সমস্যার সমাধান করা ভালো। এসব কথায় আত্মনিয়ন্ত্রণ করাটাই হলো অটোসাজেশন। কোনো কাজে মন না বসলে বা কাজ করতে করতে ধৈর্য হারিয়ে ফেললে একই পদ্ধতিতে নিজেকে বোঝান। নিজেকে ধৈর্য ধরতে বলুন, মনোযোগী হতে বলুন।
সৃজনশীল কাজ করুন :
সৃজনশীল কাজ আমরা শখের বশে করে থাকলেও জানেন কি, সৃজনশীল কাজ ধৈর্যশক্তি বাড়ায়? বিশেষ করে কারুশিল্প এক্ষেত্রে বেশি ফলদায়ক। কোনো সৃজনশীল কাজ করতে যথেষ্ট পরিমাণে মনোযোগের দরকার হয়ে। সেটা হতে পারে ছবি আঁকা, গানের অনুশীলন করা, কবিতা আবৃত্তির জন্য কবিতা মুখস্থ করা, সেলাই করা বা কোনো কিছু তৈরি করা ইত্যাদি। যে কাজটাই করবেন না কেন তাতে প্রয়োজন হবে মনোযোগের। আর যেহেতু এসব কাজ মনের আনন্দে করা হয় তাই মনোযোগটা স্বাভাবিকভাবেই চলে আসে। এই মনোযোগ ও কাজের প্রতি আগ্রহই ধৈর্যশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ধৈর্যশক্তি বৃদ্ধি করতে চাইলে সৃজনশীল কাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকুন এবং নিয়মিত এর চর্চা করুন।
দলবদ্ধভাবে কাজ করুন :
দলবদ্ধভাবে কাজ করলে ধৈর্যশক্তি স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পায়। কেননা তখন অন্যের মতামত শুনতে হয় এবং তাতে গুরুত্ব দিতে হয়। কাজ সঠিকভাবে করতে যথেষ্ট পরিমাণে ধীরস্থির হতে হয়, অধৈর্য হলে চলে না। কারণ এর সাথে অন্যরাও জড়িত থাকে। পরস্পরকে সহযোগিতা করতে হয় এবং ধৈর্য সহকারে অন্যের কথা ভাবতে হয়। দলবদ্ধভাবে কাজ করলে একটা দায়বদ্ধতার সৃষ্টি হয়, ফলে ধৈর্যশক্তি কিছুটা হলেও বাড়ে।
বিরক্তিকর পরিস্থিতি এড়িয়ে চলুন :
যেসব পরিস্থিতিতে পড়লে আপনি সহজেই বিরক্ত হন এবং যেসব মানুষজন আপনার বিরক্তির উদ্রেক করে তাদের যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। যেসব কাজ করতে গেলে সহজেই অধৈর্য হয়ে পড়েন, সেসব কাজ ধীরে ধীরে সময় নিয়ে করুন। কাজের মাঝে মাঝে বিরতি নিন। ধীরে ধীরে এই বিরতির সময়টা কমিয়ে আনুন এবং এক পর্যায়ে বিরতি বন্ধ করে দিন। ধীরে ধীরে কাজের সময়টাও কমিয়ে আনুন। এক সময় দেখবেন, স্বাভাবিক সময়েই অধৈর্য না হয়ে আপনি কাজটি করতে পারছেন।
যেসব বিষয়ে আপনি দ্রুত রেগে যান, সেসব বিষয় এড়িয়ে চলুন। একেবারেই তা সম্ভব না হলে এরকম পরিস্থিতি পড়লে আপনার প্রিয় কোনো বিষয়ের কথা ভাবুন। কোনো মজার স্মৃতি, প্রিয় মানুষ বা পছন্দের কোনো জিনিসের কথা ভাবলে রাগ আপনাতেই কমে আসবে।
.....আমাদের রাজনৈতিক গাদারা এটা মেনে চলবেন এবং এটা পরে ধৈর্য দরা শিখবেন........।