ফারহান খুবই ভদ্র ও শান্ত স্বভাবের ছেলে।পড়াশোনায় সে বরাবরই ক্লাসের ফার্স্ট বয়।খেলাধুলা,অাড্ডা,ভ্রমণ সবদিক থেকেই সে এগিয়ে।এখন কাজের কথায় অাসা যাক "রক্ত দিন, জীবন বাঁচান" উক্তটি অনেক তাৎপর্য বহুল একথা অামরা সবাই মোটামুটি জানি।রক্তদানের মতো এত সুন্দর মহৎ একটি ট্রেন্ডের মাধ্যমে সমাজে অামরা একে অপরের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই।ফারহানের ব্লাডগ্রুপ যে 'ও' পজেটিভ অারিফ ভাই তা অনেক অাগ থেকেই জানে।তার রুমমেট, বন্ধু-বান্ধবরা সকলে নিয়মিত ব্লাড ডোনেট করলেও শান্ত ছেলে ফারহান সেক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম।তার রয়েছে ভিন্নধর্মী হাস্যকর একটি ইচ্ছা।।একদিন তার খুব কাছের বড় ভাই অারিফ তার এক নিকট অাত্বীয়কে ব্লাড দিতে বললে, উত্তরে ফারহান বলে.. ভাই ব্লাড দিতে পারি তবে এক শর্তে। অারিফ ভাই শর্তের কথা জানতে চাইলে ফারহান বলল,রোগীর অবশ্যই একটি লম্বা এবং সুন্দরী মেয়ে বা বোন অথবা অাত্বীয় থাকতেই হবে।এ শর্ত শুনে অারিফ ভাই তো হাসতে হাসতে অজ্ঞান হয়ে গেল। শর্ত শোনার পর অারিফ ভাই বলল,রোগীর খুব সুন্দরী এক মেয়ে অাছে।।একথা শুনে ফারহানতো মহাখুশি।সে কোন রকম যুক্তি তর্ক না করেই একপায়ে ব্লাড দিতে রাজি হয়ে গেল।
পেশেন্ট সম্পর্কে অারিফ ভাইয়ের অান্টি।পায়ের লিগামেন্ট অপারেশনের জন্য উনার একব্যাগ 'ও পজেটিভ' ব্লাড প্রয়োজন।রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে তিনি ভর্তি রয়েছেন।অান্টির এক ছেলে এক মেয়ে।অাঙ্কেল অবসর প্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা,বড়ছেলে অামেরিকায় থাকে অার একমাত্র ছোট মেয়ে অারিশা ইন্টারমিডিয়েট ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে।হাসপাতালে দেখাশোনা করার জন্য মেয়ে অার অাঙ্কেলই অাছেন।অারিফ ভাই যোগাযোগ করার জন্য অারিশাকে ফারহানের সেল নাম্বার দিলেন।পরের দিন গোধূলি বেলায় অারিশা ফারহানকে ফোন করে সালাম দিয়ে পেশেন্টের মেয়ের পরিচয় দেয়।দুজনের মধ্যে মিনিট চারেক কথা হয়।পরের দিন যথারীতি ফারহান রাত ৮টার দিকে ব্লাড দিতে ইবনে সিনা হাসপাতালে যায়।অারিশাকে দেখে ফারহান মনে মনে অনেক খুশি।অারিশা যেমনি লম্বা তেমনি সুন্দরী একবারে বলিউড হিরোইন ক্যাটরিনা কাইফের মত।প্রথম দর্শনেই ফারহান অারিশার অালবৎ প্রেমে পড়ে যায়।।অারিশা ফারহানকে ভাইয়া বলে সম্মোধন করে তার অাম্মু,অাব্বুর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।সুদর্শন, স্মার্ট এবং লম্বা গড়নের ছেলে ফারহানও চোখে লাগার মত।অারিশার অাম্মুতো ফারহানকে নিজের ছেলে বলে অলরেডি ডাকা শুরু করে।ব্লাড দেয়ার পর অারিশা ফারহানকে অনেক অাপ্যায়ন করে।।
তারপর থেকে ফারহান অারিশা একে অপরকে ফোন করে অান্টির খোঁজ খবর নেয়।তাদের মধ্যে ধীরে ধীরে সম্পর্ক অারও প্রগাঢ় হতে শুরু করে।একপর্যায়ে ফারহান অারিশাকে তার ভাল লাগার কথা বললে অারিশা তাতে সানন্দে সম্মতি দেয়।
এভাবে দুজনের কেমিষ্ট্রির এক বছর পাস করার পর অারিশা এইচএসসি পরীক্ষায় গল্ডেন এ+ পেয়ে কৃত্বিতের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়।তারপর সে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অভাবনীয় ফলাফল করে নৈপূণ্যের সহিত ঢাকা মেডিকেলে চান্স পায়।ততদিনে ফারহান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অাইবিএ থেকে এমবিএ কমপ্লিট করে স্বনামধন্য একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে এইচঅার হিসেবে হ্যান্ডসাম স্যালারিতে জয়েন করে।এভাবে কিছুদিন চলার পর উভয় পরিবারের সম্মতি ক্রমে ফারহান অারিশার মধু চন্দ্রিমা অনুষ্ঠিত হয়।বিয়ের এক বছর পর ফারহান অারিশার কোল জুড়ে মহান আল্লাহ তাহালা ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তানের উপহার দেন।মেয়েকে পেয়ে তাদের উভয় পরিবারে যেন খুশির জোয়ার বইতে শুরু করেছে..!!!সবশেষে ফারহান অারিশার 'ও পজেটিভ প্রেম'ও সফল হয়েছে।।। Email:siddick2021@gmail.com
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:২১