سم الله الرحمن الرحيم
সকল প্রশংসা আল্লাহর। অসংখ্য দরুদ নাযিল হোক তাঁর নবীর উপর বারবার।
বাংলা ভাষার ব্লগগুলোতে বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানের বিভিন্ন থিওরী সম্পর্কে অনেক আলোচনা থাকলেও সাইন্টিফিক মেথড বা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি সম্পর্কে তেমন কোন আলোচনা চোখে পড়লোনা। অথচ যেসব কথা বিজ্ঞানের নামে চালিয়ে দেয়া হয়, সেগুলো কোনটা কতটুকু গ্রহণযোগ্য, কোনটা বিজ্ঞানের কথা হিসাবে চালানোর উপযুক্ত আর কোনটা উপযুক্ত না ইত্যাদি বুঝতে হলে সাইন্টিফিক মেথড সম্পর্কে খুব ভালো করে ধারণা থাকা চাই। তানাহলে অনেক সময় কিন্তু বিজ্ঞানের নামে বিভিন্ন গাঁজাখুরি কথাও মেনে নিতে হবে। তাই আমি এখন সাধারণ মানুষের উপযোগী করে সাইন্টিফিক মেথড সম্পর্কে আলোচনা করবো, যাতে করে যারা বিজ্ঞান নিয়ে পড়েনি, তারাও কোন থিওরী শুনলে মোটামুটি আইডিয়া করতে পারে যে, এই থিওরীটি কোন পর্যায়ের।অবশ্যই মনযোগ দিয়ে মুক্ত মন নিয়ে পড়তে হবে, সত্যকে গ্রহণ করার মানসিকতা নিয়ে পড়তে হবে।খামোখাই কয়েকজন বিজ্ঞানীর প্রতি অন্ধ ভক্তি বিজ্ঞানকে শুধু পিছিয়েই দিবে।
বিজ্ঞানীরা কিভাবে সাইন্টিফিক মেথডের সাহায্যে ধাপে ধাপে কোন ঘটনার পিছনের অজানা কারণ বের করে সেটা আপনারা নিচের চিত্রগুলো দেখলেই একটা সংক্ষিপ্ত ও সরল ধারণা পেয়ে যাবেন।
আমরা হয়তো অনেকেই উপলব্ধি করিনা যে, আমরা সবাই কিন্তু যার যার পরিমণ্ডলে এক একজন বিজ্ঞানী। কোন কিছু ঘটতে দেখলে একজন বিজ্ঞানী যেমন সেই ঘটনার পিছনে কারণ আনুসন্ধান করেন, তেমনি একজন সাধারণ মানুষও কিন্তু তাই করে। এবং এই কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে একজন বিজ্ঞানী যেমন ধাপে ধাপে পর্যায়ক্রমে অগ্রসর হয়, তেমনি একজন সাধারণ মানুষও সেই ধাপে ধাপেই অগ্রসর হয়। তবে সাধারণ মানুষ শুধু তার দৈনন্দিন জীবনের ঘটনাবলীর ক্ষেত্রেই তার চিন্তাধারাকে সীমাবদ্ধ রাখে, কিন্তু বিজ্ঞানীরা প্রকৃতির অনেক কিছু নিয়েই চিন্তা করেন, গবেষণা করেন, আরো অনেক কিছু করেন। এখন আমি আমাদের দৈনন্দিন জীবন থেকে কিছু উদাহরণ দিবো এবং দেখতে চেষ্টা করবো যে, এসব ক্ষেত্রে আমরা কিভাবে চিন্তা করি। ফলে আপনারা নিজেরাই বুঝে নিতে পারবেন যে আপনারাও যার যার পরিমণ্ডলে এক একজন বিজ্ঞানী; আপনার চিন্তার পদ্ধতি আর একজন বিজ্ঞানীর চিন্তার পদ্ধতির মধ্যে খুব বেশী তফাৎ নেই। এরপর আমি সাইন্টিফিক মেথডের কিছু সীমাবদ্ধতা নিয়ে আলোচনা করবো।
উদাহরণঃ ১
১-যেমন ধরেন আপনি বাইরে থেকে এসে দেখলেন আপনার ঘরের জানালার কাঁচ ভাঙ্গা। এটা একটা চাক্ষুষ বাস্তব ঘটনা।বিজ্ঞানের ভাষায় এটা হলো observation
২-আপনি কিন্তু এখন একজন বিজ্ঞানীর মতই এই ঘটনার কারণ খুঁজবেন যে , কেন কাঁচটি ভাঙ্গলো।বিজ্ঞানের ভাষায় এই ধাপটি হলো Asking a question
৩-এরপর দেখুন কাঁচটি কেন ভাঙ্গল এটা বের করতে গেলে প্রথমে আমাদের কমনসেন্স ও পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে , খেয়াল করুন কি বলছি আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আমাদের মাথায় মোটামুটি একটা লিস্ট তৈরী হবে বা আগে থেকে একটা লিস্ট তৈরী থাকে যে, মোট কি কি কারণে কাঁচটি ভাঙ্গতে পারে। যেমন ১-কোন চোর ভাঙ্গতে পারে ২-কেউ ঢিল দিয়ে ভাঙ্গতে পারে ৩-ভুমিকম্পে ভাঙ্গতে পারে ৪-কোন উচ্চ শব্দের কারণে ভাঙ্গতে পারে ৫-কোন শক্তিশালী রশ্মি নিক্ষিপ্ত হওয়ার কারণে ভাঙ্গতে পারে ৬-কোন বল লেগে ভাঙ্গতে পারে ইত্যাদি। এটা হলো প্রথম কাজ । বিজ্ঞানের ভাষায় এগুলো হলো সব উক্ত ঘটনার সম্ভাব্য ব্যাখ্যা বা হাইপোথিসিস বা থিওরী।
৪-লিস্ট তৈরী হওয়ার পর আমরা কি করি? এরপর আমরা স্থান কাল পাত্র বিবেচনা করে,পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে কোন কারণটা বেশী সম্ভাব্য সেটা নির্বাচন করি। এই ধাপগুলো কিন্তু অটোমেটিকই আমাদের ব্রেনে কয়েক মুহূর্তের মধ্যে ঘটে যায়। যাইহোক যখন আপনি একটি বেশী সম্ভাব্য কারণ নির্বাচন করলেন,তখন বিজ্ঞানের ভাষায় বললে বলতে হয় যে, আপনি উক্ত ঘটনার কি কারণ হতে পারে সেটার একটি হাইপোথিসিস বা থিওরী দিলেন।
৫-এই ধাপে এসে আমরা প্রমাণ খুঁজি। কিসের প্রমাণ? ঐ যে আমরা ৪নং ধাপে একটি অধিক সম্ভাব্য কারণ অনুমান করেছি সেটার জন্য প্রমাণ খুঁজি যে,এই কারণেই যে হয়েছে,অন্য কোন কারণে যে হয়নি এর প্রমাণ কি। যেমন ধরেন, আপনি যদি এখন একথা বলেন যে বা এই থিওরী দেন যে,কাঁচটি কেউ ঢিল দিয়ে ভেঙ্গেছে ;শুধু বললেই কি এটা সাব্যস্ত হয়ে যাবে যে কাঁচটি ঢিলের কারণেই ভেঙ্গেছে? না,কোনদিনও সাব্যস্ত হবে না। কারণ,আরো অনেক কারণেই কাঁচ ভাঙ্গতে পারে। তবে আপনি কাঁচ ভাঙ্গার একটি ব্যাখ্যা করেছেন বলা যাবে,কারণ ঢিলের কারণেও কাঁচ ভাঙ্গা সম্ভব। কিন্তু এই ব্যাখ্যা শুধু দিলেই হবে না,এটা সাব্যস্ত করতে হলে আপনাকে আলাদা প্রমাণ দেখাতে হবে যে,বাস্তবেও ঢিলের কারণেই কাঁচ ভেঙ্গেছে;অন্য কোন কারণে ভাঙ্গেনি। প্রমাণ না করে শুধু ব্যাখ্যা করে,শুধু থিওরী কপচিয়ে কিন্তু আপনি পাশের বাড়ীর দুষ্ট ছেলেটির উপর কোন অভিযোগ আনতে পারেন না।(ঠিক এমনি আপনি সমুদ্রের কিনারে দাঁড়িয়ে দেখলেন যে,তীরের দিকে আগমনকারী জাহাজের প্রথমে মাস্তুল দেখা যায় এরপর আস্তে আস্তে পুরো জাহাজ দেখা যায়, এটা হলো একটি ঘটনা। এরকম কেন হলো ? সেটার ব্যাখ্যা দেয়া হলো এই বলে যে পৃথিবী আসলে গোলাকার। কিন্তু শুধু ব্যাখ্যা করলেই হবেনা, আপনাকে প্রমাণ দেখাতে হবে যে,গোলাকার বলেই এমন ঘটছে,অন্য কোন কারণে নয়।দিগন্তে বা দূরেতো আমরা কত কিছুই ভুল দেখি। নিম্ন মরীচিকা দেখি,ঊর্ধ্ব মরীচিকা দেখি,রেললাইন দূরে গিয়ে মিলে যেতে দেখি, দিগন্তে চাঁদকে তুলনামূলক বড় দেখি ইত্যাদি।এরকম জাহাজের মাস্তুল আগে দেখা যাওয়ার ব্যাপারটিতো আমাদের দেখার ভুল বা সীমাবদ্ধতার কারণেও হতে পারে,বা অন্য কোন কারণে হতে পারে; যেটাই হোক ,প্রমাণ দেখাতে হবে শুধু ব্যখ্যা করলেই সেটা বিজ্ঞান হয়ে যাবেনা। বিজ্ঞানীরা কি প্রমাণ দেখিয়েছেন নাকি এই ব্যাখ্যাকেই প্রমাণ হিসাবে চালিয়ে দিচ্ছেন? এখানেই নিজেকে চিনে নেন। আপনি কি মুক্তমনা নাকি বদ্ধমনা, গোঁড়া। আর শুনেন ছবি বা ভিডিও এগুলো কোন প্রমাণ নয়।কেননা ছবি বা ভিডিওগুলো যে আসল , বানোয়াট নয় সেটা কে প্রমাণ করবে। এখানে আবেগের কোন জায়গা নেই। আপনি যখন আপনার থিওরীর উপর ভিত্তি করে কোরআনের কোন আয়াতকে ভুল বলবেন তখন আগে আপনার থিওরীর পক্ষে অকাট্য প্রমাণ দিতে হবে। গালাগালি করে কোন লাভ নেই। সত্য বড় নির্মম আর তিক্ত।) যাইহোক আসেন এবার আগের কথায়। আপনি যে আপনার থিওরীর প্রমাণ বের করবেন, এটা কিভাবে করবেন? বিজ্ঞানের ভাষায় একটু কঠিন করে বললে বলতে হয় ,আপনি এখন আপনার এই ঢিলের কারণে কাঁচ ভাঙ্গার থিওরীর উপর ভিত্তি করে,একটি প্রেডিকশন করবেন। আর সহজ বাংলায় এভাবে বলা যায় যে,আপনি এখন চিন্তা করবেন যে,ঢিলের কারণে কাঁচ ভাঙ্গলে,এর রেজাল্ট কি দাঁড়াবে? ঘরে একটা ঢিল পাওয়া যাওয়ার কথা। নাকি?
৬-এই ধাপে এসে আপনি ঘরে ঢিল খুঁজতে শুরু করবেন। এটাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে টেস্ট বা এক্সপেরিমেন্ট। অর্থাৎ আপনার চতুর্থ ধাপে অনুমান করা হাইপোটি ঠিক না বেঠিক সেটা আপনি এখন টেস্ট করছেন। যদি ঘরে ঢিল খুঁজে পান, তাহলে বুঝা গেলো যে আপনার অনুমান করা হাইপোটি ঠিক আছে।তখন এটা প্রকৃত থিওরী হিসেবে মর্যাদা পাবে। (আসলেই কি তাই? এমনও তো হতে পারে যে,জানালার কাঁচ ভাঙ্গার পর কেউ ঢিল মেরেছে।চিন্তা করুন।) আর যদি ঘরে ঢিল খুঁজে না পান তাহলে বুঝা যাবে যে আপনার অনুমান করা থিওরীটি ঠিক নয়। (আসলেই কি তাই? এমনও তো হতে পারে যে, ঢিলটি এমন চিপায় গিয়ে ঢুকেছে যে আপনি খুঁজে পাননি।) যাইহোক ঢিল খুঁজে না পেয়ে যখন আপনি বুঝলেন যে আপনার থিওরিটি ঠিক নয়, তখন আপনি আবার ৪নং ধাপে ফিরে যাবেন। ৩নং ধাপের লিস্ট থেকে আরেকটি কারণকে আপনি বাছাই করবেন এবং আরেকটি হাইপোথিসিস বা থিওরি দিবেন। আবার টেস্ট করবেন এভাবে চলবে। তবে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এই অনুসন্ধানকে বেশী সামনে চালাইনা। কারণ দরকার হয়না।((আর ঐ ব্র্যাকেটের মাঝে আসলেই কি তাই বলে আমি প্রকৃতপক্ষে বুঝাতে চাচ্ছি যে আমাদের এই চিন্তা পদ্ধতি অর্থাৎ একটি প্রেডিকশন করে থিওরীকে যাচাই করার পদ্ধতি কখনোই ১০০% নির্ভুল নয়। এই পদ্ধতি অনুসরণ করে ঠিকমত আগালেও ভুল হতে পারে,হয়।তো,এত সহজ সরল ঘটনাতেই যখন এই অবস্থা,বিজ্ঞানীরাতো আরো জটিল সব ঘটনা নিয়ে কাজ করে। সেখানে যে কি সব গোঁজামিল তারা নিজেরা গিলছে আর আমাদেরকে গিলাচ্ছে সেটা শুধু সর্বজ্ঞানী স্রষ্টাই বলতে পারবে।))
উদাহরণঃ২
ধরুন,আপনার ফ্রিজটি খুলে আপনি দেখতে পেলেন যে,ফ্রিজের ভিতরের বাতি বন্ধ। এখানেও কিন্তু উপরের ধাপগুলোর মতই আপনার চিন্তা একজন বিজ্ঞানীর মত পর্যায়ক্রমে অগ্রসর হবে।
১-ফ্রিজের বাতি বন্ধ। এটা হলো অবজারবেশন।
২-এখন প্রশ্ন হলো কেন বাতি বন্ধ?
৩-বাতি বন্ধ হওয়ার কারণসমূহের একটা লিস্ট তৈরী হবে কমনসেন্স ও পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে। এই ধাপটি সব সময় ও সবার ক্ষেত্রে নাও হতে পারে।
৪-একটি অধিক সম্ভাব্য এবং প্রায়ই ঘটে এমন একটি কারণ আপনার মাথায় দ্রুত জাগবে। আপনি এখন একটি হাইপো বা থিওরী দিবেন যে,কারেন্ট চলে গেছে,এজন্যই হয়তো ফ্রিজের বাতি বন্ধ।
৫-এবার আপনি আসলেই কারেন্ট গিয়েছে কিনা তার প্রমাণ খুঁজবেন। সেই জন্য মনে মনে একটা প্রেডিকশন করবেন যে, কারেন্ট যদি চলেই গিয়ে থাকে তাহলে তো অন্য কোন বাতিও না জ্বলার কথা।
৬-এবার আপনি আপনার এই প্রেডিকশন ঠিক কিনা সেটা টেস্ট করবেন। আপনি কোন বাতির সুইচ অন করবেন। যদি সেই বাতি না জ্বলে তাহলে বুঝবেন যে, আপনার অনুমান করা কারণটি তথা আপনার দেয়া হাইপোথিসিসটি ঠিকই আছে অর্থাৎ কারেন্ট আসলেই চলে গেছে।(আসলেই কি তাই? এমনও তো হতে পারে যে,বাতিটি ফিউজ হয়ে গিয়েছিলো) আর যদি সেই বাতি জ্বলে উঠে তাহলে বুঝবেন যে আপনার কারেন্ট চলে যাওয়ার হাইপোথিসিসটি ঠিক নয়। তখন আবার ৪নং ধাপে ফিরে গিয়ে আরেকটি কারণ তথা আরেকটি হাইপোথিসিস দাঁড় করাবেন। এভাবে চলবে।
উদাহরণঃ৩
আবার ধরুন, আপনি আপনার রুমে বসে আছেন। আপনার রুমের দরজাটির দুই পাটের। হঠাত দরজাটিতে একটু আওয়াজ হলো এবং তা একটু ভিতরের দিকে ঢুকে গেলো। এখানেও কিন্তু আপনার বৈজ্ঞানিক মন এর কারণ অনুসন্ধানে লেগে যাবে ধাপে ধাপে।
১- দরজাতে আওয়াজ হলো। এটা হলো পর্যবেক্ষণকৃত ঘটনা বা ফেনোমেনন(phenomenon)
২-এমন কেন হলো?
৩-এবার দরজাতে আওয়াজ হওয়ার কি কি কারণ থাকতে পারে, সেগুলোর একটা মোটামুটি লিস্ট আপনার মাথায় কমনসেন্স আর পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে তৈরী হবে বা আগে থেকেই তৈরী আছে। যেমনঃ (ক) কোন মানুষ ধাক্কা দিয়েছে, (খ) কোন বিড়াল ধাক্কা দিয়েছে (গ) বাতাসের কারণে আওয়াজ হয়েছে ইত্যাদি । ((বিঃদ্রঃ-একেতো এই ধাপটি সর্বক্ষেত্রে আর সর্বজনে হয়না, আর যখন হয় তখনও আমরা এই ধাপটি খুব দ্রুত অতিক্রম করে চতুর্থ ধাপে চলে যাই। তাই এই ধাপটি সবাই উপলব্ধি করতে পারেনা এবং এই ধাপের কথা সাইন্টিফিক মেথড সম্পর্কিত লেখাগুলোতেও পাওয়া যায়না। তবে কমপক্ষে এতটুকুতে নিশ্চয়ই আপনারা একমত হবেন যে,আপনার আমার মাথায় লিস্ট তৈরী হোক বা না হোক,বাস্তব জগতে তথা প্রকৃতিতে কিন্তু একটা ঘটনা কি কি কারণে ঘটে তার একটা লিস্ট থাকে।))
৪-এবার আপনি একটি অধিক সম্ভাব্য ও প্রায়ই ঘটে এমন একটি কারণকে নির্বাচন করে একটা থিওরী দিবেন। (আসলে এটা হাইপোথিসিস। কিন্তু এটাকে অনেক সময়ই থিওরীও বলা হয়।) যেমন ধরেন আপনি বলবেন যে দরজায় মনে হয় কোন লোক এসেছে এবং দরজায় ধাক্কা দিয়েছে।(এখন একটু ভালো করে খেয়াল করুন, কোন কারণে এই ঘটনাটি প্রায়ই ঘটে এটা আপনি কিভাবে বুঝবেন? যদি এই ঘটনা এর আগেও আপনার জীবনে বেশ কয়েকবার ঘটে থাকে তাহলেই আপনি বুঝতে পারবেন কোন কারণটি প্রায়ই ঘটে। আবার অধিক সম্ভাব্য কারণ কোনটি হবে এটাও কিন্তু আপনি তখনই বের করতে পারবেন যখন আপনার উক্ত ঘটনার পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানা থাকবে তখন। তানাহলে কিন্তু নয়। আলোচ্য ঘটনা থেকে দূরের কাউকে যদি আপনি এই ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করেন তাহলে সে হয়তো আপনাকে কয়েকটা থিওরী দিতে পারবে যে, হয়তো এই কারণে দরজাতে আওয়াজ হয়েছে, বা ঐ কারণে হয়েছে বা অমুক কারণে হয়েছে। কিন্তু সে যেহেতু পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানেনা, তাই সে কিন্তু অধিক সম্ভাব্য কারণ নির্ণয় করতে পারবেনা। এরপর সেটা প্রমাণ করাতো অনেক দূরের কথা। পারিপার্শ্বিক অবস্থা বলে আমি বুঝাতে চাচ্ছি যে, এই যেমন ধরুন ১ম উদাহরণের কাঁচ ভাঙ্গার ঘটনার ক্ষেত্রে, সেখানে পাশের রাস্তায় ছেলে পেলেরা বল খেলে কিনা? বা ঢিলাঢিলি করে কিনা? বা সেখানে চোর যাওয়ার কোন সুযোগ আছে কিনা? বা সেখানে ঐ সময় কোন ভুমিকম্প হয়েছিলো কিনা? ইত্যাদি । এই কথাগুলো বললাম কেন? এই জন্যই যে এই ধাপের ক্ষেত্রে আমাদেরকে বিজ্ঞানের কয়েকটি শাখার কিছু নামে বিজ্ঞানী ধোঁকা দিয়ে থাকে। কোন ঘটনা হয়তো কোন গবেষক প্রথম মাত্র পর্যবেক্ষণ করলো,এরপর কিছু অপর্যাপ্ত রিসার্চ করে সে একটা থিওরী দিয়ে দেয়। এরপর এটাকে প্রমাণ করার আগেই বিজ্ঞান নামে চালিয়ে দেয়। এরপর বলা শুরু করে যে এই দেখো ধর্মগ্রন্থে বিজ্ঞান বিরোধী কথা আছে। )
৫-এই ধাপে আপনি ৪নং ধাপে দেয়া থিওরীর উপর ভিত্তি করে একটি প্রেডিকশন করবেন যে,কোন লোক এসে থাকলেতো মুখে আওয়াজ করবে। কিছু জিজ্ঞাসা করলে মুখে উত্তর দিবে।
৬- এই ধাপে আপনি আপনার প্রেডিকশনটি ঠিক কিনা সেটা টেস্ট করবেন। তাই আপনি জিজ্ঞাসা করবেন যে,কে? যদি কেউ বলে যে আমি অমুক; তাহলেতো বুঝে গেলেন যে ৪নং ধাপে আপনার অনুমান করা থিওরীটি ঠিকই আছে। আর যদি কেউ কিছু না বলে তখন বুঝলেন যে,অনুমান করা থিওরীটি মনে হয় ঠিকনা। তখন আবার ৪নং ধাপে ফিরে গিয়ে আরেকটি কারণ বাছাই করবেন। এরপরে আবার প্রেডিকশন আবার টেস্ট ।এখন একটু খেয়াল করুন,কে?এটা বলার পর কেউ কোন আওয়াজ দিলোনা; এটা কিন্তু অকাট্য দলীল নয় যে,কোন মানুষ নক করেনি। তাই আপনি কিন্তু উঠে দরজার কাছে গিয়ে আবার এটাও যাচাই করবেন যে,আসলেই কি কোন মানুষ আসেনি। আবার খেয়াল করুন, ধরেন আপনি উঠে গিয়ে দেখলেন দরজার সামনে কোন মানুষ নেই,এতেই কি প্রমাণ হয়ে যাবে যে কোন মানুষ আসেনি? এমনও তো হতে পারে যে, আপনার কোন বন্ধু দরজায় নক করে এখন দুষ্টুমি করে লুকিয়ে আছে। নাকি? এবার বুঝলেনতো ভালো করে একটু আগে যে ১ম উদাহরনের সময় বলে আসলাম যে, এভাবে প্রেডিকশন করে থিওরীকে যাচাই করাটা কখনো কখনো একদম সুস্পষ্ট ও সহজ সরল ঘটনার ক্ষেত্রেই ভুল হতে পারে।সেখানে বিজ্ঞানের কোন কোন ক্ষেত্রের অস্পষ্ট ও জটিল ঘটনার ক্ষেত্রে ভুল হওয়াটা একেবারে স্বাভাবিক। দেখেন,আমাদের দৈনন্দিন জীবনের চোখের সামনে ঘটা একেবারে সাধারণ ঘটনা,এখানেই কত প্যাঁচ। যদিও আমরা জটিলতা অনুভব করিনা। কারণ এখানে আমরা সব যাচাই করতে পারছি এবং সহজে যাচাই করতে পারছি এবং অল্প সময়ে যাচাই করতে পারছি। কিন্তু বিজ্ঞানীরা কাজ করে অনেক আগের,লক্ষ বছর আগের ঘটা ঘটনা নিয়ে,বা অনু পরমানুর অদৃশ্য জগত নিয়ে,বা লক্ষ কোটি মাইল দূরের গ্রহ নক্ষত্র নিয়ে,অনেক জটিল সব ঘটনা নিয়ে। এখন আপনি নিজের বিবেক খাটিয়ে একটু চিন্তা করেন যে, যেই তিনটি উদাহরণ নিয়ে আমি আলোচনা করলাম এগুলো হলো আমাদের একেবারে চোখের সামনের অতি সহজ ঘটনা। এসব ঘটনার আগপিছ, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, নাড়ী নক্ষত্র সব আমাদের জানা আছে। তাই এইসব ঘটনার ক্ষেত্রে আমরা এই ছয়টি ধাপ সহজেই অতিক্রম করতে পারি। কিন্তু বিজ্ঞানীরা যেসব জটিল ঘটনা নিয়ে কাজ করে সেক্ষেত্রে এই ধাপগুলো অতিক্রম করা অনেক অনেক কঠিন, সেক্ষেত্রে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা পদে পদে। তাহলেই চিন্তা করুন জটিল কোন কিছুর ক্ষেত্রে, কোন থিওরী দিয়ে দেয়া, আবার সেটা প্রমাণ করার আগেই বিজ্ঞানের নাম করে সারা বিশ্বের সাধারণ মানুষকে গিলানো এটা কত বড় জোচ্চুরি,কত বড় দাগাবাজি। আবার এই রকম কাল্পনিক থিওরীর উল্টা কোন কথা ধর্মগ্রন্থে থাকলে সেটাকে বিজ্ঞানবিরোধী বলা কত বড় নির্লজ্জতা। এর চেয়েও খারাপ হলো,কোন ধর্মীয় স্কলার যদি এইসব কাল্পনিক থিওরীর সাথে ধর্মগ্রন্থকে মিলানোর জন্য ধর্মগ্রন্থের নিজস্ব কোন মনগড়া ব্যখ্যা করে সেটা।
দেখুন এতক্ষণ আমি সাইন্টিফিক মেথডের সাথে মিলিয়ে মিলিয়ে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের তিনটি ঘটনা ব্যাখ্যা করলাম। এই ব্যাখ্যা করার পাশাপাশি কিন্তু আমি কয়েক জায়গায় দেখিয়ে দিয়েছি যে সাইন্টিফিক মেথডের কোন কোন জায়গায় বিজ্ঞানীরা ফাঁক রেখে চলে যায়। এবার আমি শুধু ১ম উদাহরণটি ব্যবহার করে এই ধাপগুলোর সীমাবদ্ধতা তুলে ধরবো এবং দেখাতে চেষ্টা করবো মোটামুটি কোন কোন জায়গায় কিছু নাস্তিক ,ধাপ্পাবাজ, নামে বিজ্ঞানী আমাদেরকে বিজ্ঞানের নাম করে গাঁজাখুরি সব থিওরী গিলাচ্ছে আর ধর্মগ্রন্থে বিজ্ঞান বিরোধী কথা আছে বলে চেচামেচি করছে। যাইহোক আসুন তাহলে জানালার কাঁচ কেন ভাঙ্গল আবার সেটার বিশ্লেষণ করি।
১-প্রথমে আপনার অবজারবেশন হলো এই যে, আপনার রুমের জানালার কাঁচ ভেঙ্গে গেছে। দেখুন এই যে আপনি এই ঘটনাটি দেখলেন এটা কিন্তু একটা সুস্পষ্ট ঘটনা, আপনার চোখের সামনের ঘটনা। এখানে ভুল হওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই। কিন্তু বিজ্ঞানীরা (বিশেষ করে মহাকাশ বিজ্ঞানীরা,বিবর্তনবাদীরা, কোয়ান্টাম ফিজিক্সওয়ালারা)কিন্তু বেশীরভাগ সময়ই এত সুস্পষ্ট ঘটনা নিয়ে গবেষণা করেনা। তারা অনেক দূরের বা অনেক আগের অস্পষ্ট পরিবর্তিত ফসিল বা অনেক অনেক ক্ষুদ্র জিনিষ নিয়ে গবেষণা করে। অনেক ক্ষেত্রেই তাদের এই প্রথম ধাপেই অর্থাৎ পর্যবেক্ষণের মধ্যেই ঘাটতি থাকে, অস্পস্টতা থাকে, ভুল থাকে। তাহলে পরের ধাপগুলো যে কতটুকু সঠিক হবে সেটা আপনার আল্লাহপ্রদত্ত সাধারণ কমনসেন্স বা আকল দিয়ে বুঝে নিন ।
২-এবার আপনি কারণ খুঁজবেন। এটা চতুষ্পদ জন্তুরাও করবে। কেউ বলবেনা যে, জানালার কাঁচটি বিনা কারণে ভেঙ্গে গেছে।
৩-এই ধাপে এসে কাঁচ ভাঙ্গার সম্ভাব্য কারণগুলোর একটি মোটামুটি লিস্ট আপনার মাথায় তৈরী হবে, এরপর স্থান, কাল ও পাত্র বিবেচনা করে; পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে আমাদের মাথায় কিন্তু বেশী সম্ভাব্য কারণটিও জাগবে । সব ১/২ সেকেন্ডেই হয়ে যাবে । এরপর আপনি বেশী সম্ভাব্য কারণটির জন্য প্রমাণ খোঁজ করবেন, যদি সেটার কোন প্রয়োজন থাকে। নইলে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা এত প্রমাণের পিছনে ছুটিনা সাধারণত। কারন, দরকার হয় না। হ্যাঁ, কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ দাঁড় করাতে গেলে তখন কিন্তু প্রমাণ লাগবে। যাইহোক,এখন খেয়াল করুন যে,কাঁচ ভাঙ্গার ঘটনাই হোক বা যেকোন ঘটনাই হোক এটা সম্পর্কে যার পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞান যত বেশী তিনি কিন্তু ততবেশী সম্ভাব্য কারণ বের করতে পারবেন। যার ভূমিকম্প সম্পর্কে পূর্বের কোন আইডিয়া নাই,যার শক্তিশালী রশ্মি সম্পর্কে পূর্বের কোন আইডিয়া নাই সে কিন্তু এগুলোকে তার লিস্টেই রাখবেনা,এগুলো নিয়ে সে কোন চিন্তাই করবেনা। অথচ এদিকে যদি এমন হয় যে ভূমিকম্পের কারণেই কাঁচ ভেঙ্গেছে,তাহলে কিন্তু সে সারা জীবনেও কাঁচ ভাঙ্গার কারণ বের করতে পারবেনা। কারণ সেতো ৩নং ধাপে করা তার মাথার লিস্ট থেকেই কোন একটা কারণ অনুমান করে নির্বাচন করবে,এরপর প্রেডিকশন করবে,এরপর টেস্ট করবে কিন্তু প্রত্যেকবারই সে ভুল করবে,কারণ তার গোঁড়াতেই ভুল। ঠিক এরকম ভুল কিন্তু বিজ্ঞানীরাও করেন।
৪-এই ৪নং ধাপের আলোচনাটি আপনি উপরের ৩নং উদাহরণের ৪নং ধাপ থেকে পড়ে নিন।
৫- এই ধাপে এসে আপনি একটি প্রেডিকশন করবেন যে,যদি ঢিলের কারণেই কাঁচটি ভেঙ্গে থাকে তাহলে তো রুমে সেই ঢিলটি পাওয়া যাওয়ার কথা। কিন্তু এইযে আপনি প্রেডিকশন করলেন এটা কিন্তু আপনার পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে করলেন। ঢিল কি জিনিস,এটা মারলে পরে এর ফল কি হয় ইত্যাদি কিন্তু আপনি আগে থেকেই ভালো করে জানেন। একটা রুমের মাঝে ঢিল খোঁজা তেমন কঠিন কিছুনা। আপনি কাঁচ ভাঙ্গার যতগুলো থিওরী দেন না কেন সেগুলো মোটামুটি আপনি সহজেই যাচাই করতে পারবেন। কিন্তু বিজ্ঞান কাজ করে ঐ যে বললাম অনেক সূক্ষ্ম বা অনেক দূরের জিনিষ নিয়ে। সেখানে সঠিকভাবে কারণের লিস্ট তৈরী করা,সঠিকভাবে প্রেডিকশন করা,এরপর সেটা যাচাই করা এগুলো অনেক ক্ষেত্রেই একদম অসম্ভব। কারণ ঐসব ব্যাপারে কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকেনা। এই জন্যই কোয়ান্টাম ফিজিক্সের,মহাকাশ বিজ্ঞানের থিওরীগুলোতে অনেক অনেক গোঁজামিল থাকে। এগুলো তারা জেনে বুঝেই মানুষকে গিলাচ্ছে। প্লীজ এই লিংকের পোষ্টে গিয়ে সেখানকার সাকিব ভাইয়ের ১৫ ও ১৬নং কমেন্ট দুটি পড়ে দেখুন।তাহলে এই গোঁজামিলের ব্যাপারটি আরেকটু সাফ হবে। আপনি যদি এতক্ষণের কথা বুঝে থাকেন, তাহলে স্টীফেন হকিঙ্গের নীচের কথাটিও বুঝবেন।
‘যে কোন physical theory সব সময়ই সাময়িক। এর অর্থ হলো, এটা একটা অনুমান (hypothesis) মাত্র। আপনি কখনই একে প্রমাণ করতে পারেন না। (সূত্রঃ Stephen W. Hawking, A Brief History of Time, Chapter-I: ‘Our Picture of the Universe`)
‘আমরা কখনোই নিশ্চিত হতে পারব না যে, আমরা সঠিক তত্ত্ব আবিষ্কার করেছি, কারণ তত্ত্ব প্রমাণ করা যায় না।` (সূত্রঃ পূর্বোক্ত, ‘The Unification of Physics`)।
৬- ধরেন, মিঃ ফালটু জানালার কাঁচ ভাঙ্গার একটা থিওরী দিলো যে, বল লেগে ভেঙ্গেছে। এখন ধরেন আপনার কাঁচ সম্পর্কে আইডিয়া নেই, এবং এই ঘটনার পরিপার্শ্বিক অবস্থাও আপনার জানা নেই। তাই আপনি মিঃ ফাল্টু মিয়াকে পাল্টা বলতে পারলেন না যে, ভাই অমুক কারনেও তো ভাঙ্গতে পারে। বল লেগেই যে ভেঙ্গেছে এটার প্রমাণ কি? এই যে আপনি বলতে পারলেন না, এতে করে কি মিঃ ফাল্টু মিয়ার থিওরী প্রমাণ হয়ে যাবে? নিশ্চয়ই নয়। আর কেমন হবে যদি মিঃ ফাল্টু সাহেব একথা বলে যে, বল লেগে ভাঙ্গেনি তো কি লেগে ভেঙ্গেছে তুমিই বলো। ঠিক এরকম কথা কিন্তু বিজ্ঞানের বিষয়গুলোতেও খাটে।
৭- ধরুন, কেউ একটা থিওরী/হাইপো দিলো যে, জানালার কাঁচটি আর্মির লোকেরা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় গুলি করে ভেঙ্গেছে। একথা কিন্তু ঠিক যে, একারণেও কাঁচটি ভাঙ্গা সম্ভব । কিন্তু আপনি কিন্তু এই থিওরীকে হেসেই উড়িয়ে দিবেন। কারণ আপনি আর্মি সম্পর্কে জানেন যে তারা পাড়া মহল্লায় আসেনা , আবার আসলেও খামোখা কোন বাড়ীতে তাঁরা গুলি করবেনা ইত্যাদি। কিন্তু যার নাকি এইসব জানা নেই, সে কিন্তু এটা বুঝতে পারবেনা যে এই থিওরীটা একটা ফালতু থিওরী। একই কথা কিন্তু অনেক বৈজ্ঞানিক থিওরীর ক্ষেত্রেও খাটে।যেমন জে জে থমসন আর রাদারফোর্ড ক্যাথোড রে নিয়ে বাহ্যিকভাবে কিছু এক্সপেরিমেন্ট করে সেটার অদেখা অদৃশ্য আভ্যন্তরীণ গঠন সম্পর্কে থিওরী দিয়ে দিলো। এখন তাদের এইসব থিওরী কি কোন কাজের থিওরী হয়েছে না ফালতু গালগল্প হয়েছে এটা আপনি কিন্তু বুঝতে পারবেন না। কারণ এই সম্পর্কে আপনার কোন জ্ঞান নেই। খোদ যারা এক্সপেরিমেন্ট করেছে তাদের জ্ঞানই এই ব্যাপারে সীমিত ।
আমার এই পোষ্টটি ব্যবহার করে আপনি এবার বিজ্ঞানীরা শীত গ্রীষ্ম হওয়ার যেই কারণের কথা বলে সেটা যাচাই করুন। দেখবেন কিছুনা, জাস্ট একটা থিওরী বলে কিছু ঘটনাকে এর সাথে মিলিয়ে ব্যাখ্যা করে দিয়েছে আরকি। এর কোন প্রমাণ নাই এবং এটা প্রমাণ করা কোন দিন সম্ভবও নয়। অথচ এই ফালতু একটা থিওরীর উপর ভিত্তি করে হাদীসে বিজ্ঞান বিরোধী কথা আছে বলে অপপ্রচার করা হচ্ছে। এদিকে আবার হাদীসে জাহান্নামের নিঃশ্বাস ছাড়ার কারণে শীত গ্রীষ্ম হওয়ার কথা কিন্তু স্পষ্ট করে বলা হয়নি। এরকম আরো অনেক থিওরীই দেখবেন জাস্ট অনুমান কিন্তু আমাদেরকে গিলানো হচ্ছে অকাট্য বৈজ্ঞানিক সত্য বলে। পৃথিবীর আহ্নিক গতি, বার্ষিক গতি, মহাকর্ষ বল, ইলেক্ট্রন, প্রোটন, বিবর্তন , বিগ ব্যাং ইত্যাদি অনেক কিছুই শুধুমাত্র কল্পিত হাইপোথিসিস।এগুলো দিয়ে অন্য একটা চাক্ষুষ ঘটনাকে ব্যাখ্যা করা হয় মাত্র। বিজ্ঞানী থমসন ইলেক্ট্রন আবিষ্কার করেননি বরং ইলেক্ট্রনের কথা কল্পনা করে ক্যাথোড রের ঘটনাকে ব্যাখ্যা করেছেন মাত্র। বিজ্ঞানকে এই যে ধোঁকাবাজির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে, এর পিছনে আছে কূট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য, আছে সম্রাজ্যবাদিতার কালো হাত।এই পোষ্টটি পড়ে দেখেন।
আর শুনেন, বিজ্ঞানের কঠিন কঠিন শব্দ আর জটিল অংকের কচকচানি দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এগুলো হলো সব গোঁজামিলকে আড়াল করার হাতিয়ার। আপনি দেখবেন শুধু, তার দাবী কী; আর সেটার প্রমাণ কি, কিসের ভিত্তিতে সে তার দাবী পেশ করছে। আর খেয়াল রাখবেন যে, অংকের সূত্র দিয়ে কিছু প্রমাণ করার আগে দেখতে হবে যে সূত্রের রাশিগুলোর যে মান আপনি বসাচ্ছেন সেটা ঠিক আছে কিনা। সেটা ঠিক না হলে সূত্রের মাধ্যমে যে রেজাল্ট আসবে সেটাও অটোমেটিকই ভুল হবে। যেমন দেখেন নীচের চিত্রে যে সূত্রটি আছে এটাতে কোন সন্দেহ নাই, কিন্তু a আর b এর যে মান আপনি বসাবেন সেটা কিন্তু একদম নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে। ধরেন a এর মান আপনি বসালেন ৩, এখন এই ৩ টা যে আসলেই ৩, একটু কমবেশি না এটা কিন্তু প্রমাণ করে নিতে হবে। আর এখানেই গোঁজামিল দেয়া হয়। তাই অংকের বাহার দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, অত অংক বুঝারও দরকার আপনার নেই। আপনি শুধু একটু খোঁজ নেন যে, রাশিগুলোর যে মান বসানো হয়েছে সেগুলো কিভাবে বের করা হয়েছে।
আলোচনা আপাতত এখানেই শেষ করছি। পরে হয়তো আরো কিছু এডিট করবো। আমাকে যেকোন ভুল ধরিয়ে দিলে আমি ইনশাআল্লহ নিঃসঙ্কোচে মেনে নিব। আর এই যে আমি এতক্ষণ আলোচনা করলাম এটা বিজ্ঞানের ২য় ধারার গবেষণা নিয়ে, ১ম ধারার গবেষণা নিয়ে নয়। এই কথাটি বুঝতে হলে ১ম কমেন্টটি পড়ুন। আল্লাহ্ হাফেজ।
আরেকটি পোষ্ট
নাস্তিকদের প্রশ্নঃ আল্লাহ্ কি এমন কোন পাথর বানাতে পারবেন, যা তিনি নিজেও উঠাতে পারবেন না?
দেখুন সমাজ পূজা আমাদেরকে কিভাবে মূর্খতার গহীন কালো অন্ধকারে ডুবিয়ে রেখেছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:২৬